পদত্যাগের পর রাজধানী ছাড়লেন বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট
পদত্যাগে বাধ্য হলেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ব্লেইস কমপাওরে। গতকাল শুক্রবার পদত্যাগের পর তিনি রাজধানী উয়াগেদুদু ছেড়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে পালিয়েছেন বলে জানান ফরাসি একটি কূটনৈতিক সূত্র। এর আগে এক বিবৃতিতে পদত্যাগের কথা জানিয়ে তিনি তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান জানান। তবে দেশটির সেনাবাহিনী দাবি করে, প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনীর প্রধান হনরে ত্রাওরে বলেছেন, তিনি রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। প্রেসিডেন্ট কমপাওরের পদত্যাগের দাবিতে হাজারো মানুষ গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করে। কোণঠাসা প্রেসিডেন্ট কমপাওরে বলেছিলেন, তিনি অন্তত আগামী বছরের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের বিবৃতির কথা প্রচারিত হওয়ার কিছু আগেই অবশ্য সেনাবাহিনীর তরফ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয় কমপাওরে আর ক্ষমতায় নেই। সেনা সদর দপ্তরের বাইরে সমবেত বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে কর্নেল বাউরেইমা ফারতা বলেন, প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর ঘোষণা শুনে বিক্ষোভকারীরা বিজয় উল্লাস করে।
বিরোধী দলের প্রধান জেফিরিন দিয়াব্রে জনসমাবেশ স্থলগুলোতে অবস্থানের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রেসিডেন্ট কমপাওরে ২৭ বছর ধরে দারিদ্র্যপীড়িত দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন। আরেক দফা মেয়াদ বাড়ানোর উদ্দেশে গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোট শুরুর আগেই হাজারো বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হয়। একপর্যায়ে হুড়মুড় করে ভবনটিতে ঢুকে পড়ে অগ্নিসংযোগ করে। এই প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে পূর্বপরিকল্পিত ভোট বাতিল করা হয়। তবে বিরোধীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকে। গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, বুরকিনা ফাসোর ভাগ্য দেশটির জনগণই নির্ধারণ করবে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বুরকিনা ফাসো বিশ্বের তৃতীয় দরিদ্রতম দেশ। তবে সন্ত্রাসবাদবিরোধী মার্কিন লড়াইয়ের সহযোগী হিসেবে পাশ্চাত্য একে কিছু গুরুত্ব দিয়ে থাকে। খরাকবলিত দেশটিতে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত একাধিকবার সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। ১৯৮৩ সালে ক্যাপ্টেন টমাস সাঙ্কারা ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৮৭ সালে তাঁর একসময়ের সহকর্মী ব্লেইস কমপাওরের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে সাঙ্কারা নিহত হন। এর পর থেকে কমপাওরে দেশটিতে বহুদলীয় রাজনীতি ফিরিয়ে আনেন।
No comments