বিএসইসি ভবনে অগ্নিকাণ্ড- আগের তদন্ত কমিটির সব সুপারিশ মানা হয়নি
রাজধানীর কাওরান বাজারের বিএসইসি ভবনে দ্বিতীয়বারের মতো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটলো। এর আগে ২০০৭ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ এক আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি, আরটিভি, দৈনিক আমার দেশসহ অন্তত ২০টি প্রতিষ্ঠান। আগুনে পোড়ার সেই ঘটনার অনুসন্ধানে গঠন করা হয়েছিল চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সুপারিশের আলোকে নেয়া হয়নি তেমন কোন উদ্যোগ। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ বলেন, ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না। আগুন নেভাতে ভবনের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং পদ্ধতি কোন কাজেই লাগেনি। তবে বিএসইসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী বলেন, ভবনে সব ধরনের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল। এর আগে আগুন লাগার পর তদন্ত কমিটি যেসব সুপারিশ করেছিল তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিএসইসি ভবন সূত্রে জানা গেছে, আগেরবার আগুন লাগার পর প্রথম দিকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা তোড়জোড় হলেও পরে আবারও তা থিতিয়ে পড়ে। ভবনের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নামকাওয়াস্তে কিছু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বসানো রয়েছে। যার বেশিরভাগই অকেজো বলে জানা গেছে। এছাড়া ভবনের নিজস্ব ট্যাংকিতে অগ্নিনির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত পানি ছিল না। গতকালের আগুনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পাশের মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা থেকে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সূত্র জানায়, বহুদিন ধরে বিএসইসি ভবনে অগ্নিনির্বাপণের কোন মহড়াও হয়নি। এমনকি অগ্নিনির্বাপণে প্রশিক্ষিত কোন জনবলও নেই। নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা থাকেন তাদেরই অগ্নিনির্বাপণের কর্মী হিসেবে ধরা হয়। গতকাল অগ্নিকাণ্ডের পর এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক আলী ফালুও অভিযোগ করে বলেন, বারবারই এ ভবনে আগুন লাগে, আমি বারবারই ক্ষতিগ্রস্ত হই। তদন্ত হয় কিন্তু রিপোর্ট পাই না। তদন্ত কি হয় তা জানা যায় না। বাস্তবায়নও হয় না। সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডের পর বিএসইসি ভবনে আরও অন্তত ৬ বার ছোটখাটো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। তবে এসবে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাই আগুন নিভিয়ে ফেলে। কয়েকবার আগুন আতঙ্কে ভবনের লোকজন নিচেও নেমে আসে। ২০০৭ সালের আগুনে তিন জন মারা গিয়েছিল।
No comments