২৩৪ পাম্প বন্ধ, পানির অভাবে ধুঁকছে ঢাকা! by অরূপ দত্ত
তীব্র দাবদাহে সারা দেশের মতোই হাঁসফাঁস
করছে রাজধানীবাসী। এমন পরিস্থিতিতে নগরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পানির
তীব্র সংকট। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় ওয়াসার পানির পাম্প বন্ধ থাকায়
কয়েক দিন ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
>>বন্ধ হয়ে গেছে মগবাজারের নয়াটোলার এই পানির পাম্পটিও। গতকাল বিকেলে তোলা ছবি । প্রথম আলো
পাম্প
বন্ধ রাখার কারণ হিসেবে বিদ্যুতের সমস্যার কথা উল্লেখ করে ওয়াসা বলছে,
বিদ্যুতের সমস্যা আরও তীব্র হলে সব জেনারেটর ব্যবহার করা হবে। একই সঙ্গে
ওয়াসার কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীতে পানির সংকট নেই। এটি সাময়িক
সমস্যা।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওয়াসার গতকাল মঙ্গলবারের দৈনিক প্রতিবেদনেই প্রায় ২০ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদিত হওয়ার তথ্য রয়েছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুতের সমস্যার কারণে গতকাল ওয়াসার ৬৭০টি গভীর নলকূপের মধ্যে ২৩৪টিই বেশির ভাগ সময় বন্ধ ছিল। ‘বিদ্যুৎবিভ্রাটের জন্য’ পানির পাম্পে ৫৩৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল পানি উৎপাদন করার কথা ছিল ২৪৯ কোটি ৩৬ লাখ লিটার। এর মধ্যে উৎপাদন সম্ভব হয়েছে ২২৯ কোটি ৩৫ লাখ লিটার। ওয়াসার তথ্যমতে, সাধারণভাবে রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২২৫ কোটি লিটার এবং উৎপাদনক্ষমতা ২৪২ কোটি লিটার। গরমের সময় চাহিদা ও উৎপাদন দুটিই বাড়ে।
ওয়াসার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে লো-ভোল্টেজ, হাই ভোল্টেজ এবং লোডশেডিংয়ের কারণে গভীর নলকূপের অনেক পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে। অথচ ওয়াসার বেশির ভাগ পাম্পেই জেনারেটর রয়েছে। এগুলোর জন্য নিয়মিত তেল খরচের হিসাবও দেওয়া হয়।
ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ ডি এম কামরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যা আরও তীব্র হলে সব জেনারেটর ব্যবহার করা হবে। তিনি দাবি করেন, শীতলক্ষ্যা নদীর পানির স্তর নেমে গিয়ে দূষণ বেড়ে যাওয়ায় সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারে উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে। গরমের কারণে পানির ব্যবহারও বেড়ে গেছে। পানির সমস্যা কমানোর জন্য পুরো জনবল কাজে লাগানো হচ্ছে বলে দাবি করেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পানির কষ্ট, ভোগান্তি: গতকাল মগবাজার পাগলা মাজার গলির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা পানির দাবিতে খোদ ওয়াসা ভবনে এসে হাজির হন। তাঁরা ব্যবস্থাপনা পরিচালককে না পেয়ে অন্য কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রথম আলোকে তাঁদের কয়েকজন বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে নয়াটোলা গভীর নলকূপ বন্ধ।
নগরের গোপীবাগ বালুর মাঠ এলাকায় ওয়াসার পাম্প হাউসের সামনে গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার সময়ও পানি সংগ্রহের জন্য বিশাল লাইন দেখা যায়। গোপীবাগ, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, অভয় দাস লেন, পেয়াদাপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় পানির চরম সংকটের কারণেই এই ভিড়। গোপীবাগের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন জানান, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পানির জন্য অপেক্ষা করছেন। এখনো তাঁর সামনে অন্তত ১০০টি বালতি, কলসি বা জ্যারিকেন রয়েছে।
মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদী হাউজিং লিমিটেড এলাকায় তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানির তীব্র সংকট চলছে। এলাকার গৃহিণী কানিজ বাতুলসহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তিন-চার দিন ধরে দিনে দুই ঘণ্টাও পানি থাকছে না। সমস্যা নিরসনে এলাকার বাড়িওয়ালারা ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়ে গেলেও কোনো কাজ হয়নি।
বাড্ডার ভাটারা এলাকায় চার দিন ধরে পানির সমস্যা। পানির কষ্টে আছেন এলাকার প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা। একই সমস্যা তেজগাঁও তেজকুনী পাড়া, মিরপুর ১, ২, ৫, ১০, ১২, ১৩, ১৪ নম্বর সেকশন, বড়বাগ, মধ্য পীরেরবাগ, মনিপুর, সেনপাড়া পর্বতা, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কল্যাণপুর, ইব্রাহিমপুর, কাফরুল, পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকা, কাঁঠালবাগান, হাজারীবাগ, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোড, সলিমুল্লাহ রোড, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি এলাকায়। অনেক জায়গায় ময়লা ও দুর্গন্ধের কারণে পানি থাকলেও ব্যবহার করা যায় না।
এ অবস্থায় পানির গাড়ির জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়ে ভিড় করছেন ভুক্তভোগীরা। বেশির ভাগই ব্যর্থ হচ্ছেন। লালমাটিয়া এলাকার বাসিন্দা মহসীন আশরাফ বলেন, রোববার ‘সিরিয়াল’ দিয়ে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি পাননি।
ঢাকা ওয়াসার পানিবাহী গাড়ির সংখ্যা ৪০টি। কিন্তু ওয়াসার গতকালের হিসাব থেকে দেখা যায়, নগরের ২৯৪টি এলাকা থেকে গাড়িতে পানি সরবরাহ চেয়েছে লোকজন। দেওয়া সম্ভব হয়েছে মাত্র ১৬০টি বাড়িতে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওয়াসার গতকাল মঙ্গলবারের দৈনিক প্রতিবেদনেই প্রায় ২০ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদিত হওয়ার তথ্য রয়েছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুতের সমস্যার কারণে গতকাল ওয়াসার ৬৭০টি গভীর নলকূপের মধ্যে ২৩৪টিই বেশির ভাগ সময় বন্ধ ছিল। ‘বিদ্যুৎবিভ্রাটের জন্য’ পানির পাম্পে ৫৩৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল পানি উৎপাদন করার কথা ছিল ২৪৯ কোটি ৩৬ লাখ লিটার। এর মধ্যে উৎপাদন সম্ভব হয়েছে ২২৯ কোটি ৩৫ লাখ লিটার। ওয়াসার তথ্যমতে, সাধারণভাবে রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২২৫ কোটি লিটার এবং উৎপাদনক্ষমতা ২৪২ কোটি লিটার। গরমের সময় চাহিদা ও উৎপাদন দুটিই বাড়ে।
ওয়াসার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে লো-ভোল্টেজ, হাই ভোল্টেজ এবং লোডশেডিংয়ের কারণে গভীর নলকূপের অনেক পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে। অথচ ওয়াসার বেশির ভাগ পাম্পেই জেনারেটর রয়েছে। এগুলোর জন্য নিয়মিত তেল খরচের হিসাবও দেওয়া হয়।
ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ ডি এম কামরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যা আরও তীব্র হলে সব জেনারেটর ব্যবহার করা হবে। তিনি দাবি করেন, শীতলক্ষ্যা নদীর পানির স্তর নেমে গিয়ে দূষণ বেড়ে যাওয়ায় সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারে উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে। গরমের কারণে পানির ব্যবহারও বেড়ে গেছে। পানির সমস্যা কমানোর জন্য পুরো জনবল কাজে লাগানো হচ্ছে বলে দাবি করেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পানির কষ্ট, ভোগান্তি: গতকাল মগবাজার পাগলা মাজার গলির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা পানির দাবিতে খোদ ওয়াসা ভবনে এসে হাজির হন। তাঁরা ব্যবস্থাপনা পরিচালককে না পেয়ে অন্য কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রথম আলোকে তাঁদের কয়েকজন বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে নয়াটোলা গভীর নলকূপ বন্ধ।
নগরের গোপীবাগ বালুর মাঠ এলাকায় ওয়াসার পাম্প হাউসের সামনে গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার সময়ও পানি সংগ্রহের জন্য বিশাল লাইন দেখা যায়। গোপীবাগ, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, অভয় দাস লেন, পেয়াদাপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় পানির চরম সংকটের কারণেই এই ভিড়। গোপীবাগের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন জানান, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পানির জন্য অপেক্ষা করছেন। এখনো তাঁর সামনে অন্তত ১০০টি বালতি, কলসি বা জ্যারিকেন রয়েছে।
মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদী হাউজিং লিমিটেড এলাকায় তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানির তীব্র সংকট চলছে। এলাকার গৃহিণী কানিজ বাতুলসহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তিন-চার দিন ধরে দিনে দুই ঘণ্টাও পানি থাকছে না। সমস্যা নিরসনে এলাকার বাড়িওয়ালারা ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়ে গেলেও কোনো কাজ হয়নি।
বাড্ডার ভাটারা এলাকায় চার দিন ধরে পানির সমস্যা। পানির কষ্টে আছেন এলাকার প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা। একই সমস্যা তেজগাঁও তেজকুনী পাড়া, মিরপুর ১, ২, ৫, ১০, ১২, ১৩, ১৪ নম্বর সেকশন, বড়বাগ, মধ্য পীরেরবাগ, মনিপুর, সেনপাড়া পর্বতা, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কল্যাণপুর, ইব্রাহিমপুর, কাফরুল, পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকা, কাঁঠালবাগান, হাজারীবাগ, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোড, সলিমুল্লাহ রোড, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি এলাকায়। অনেক জায়গায় ময়লা ও দুর্গন্ধের কারণে পানি থাকলেও ব্যবহার করা যায় না।
এ অবস্থায় পানির গাড়ির জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়ে ভিড় করছেন ভুক্তভোগীরা। বেশির ভাগই ব্যর্থ হচ্ছেন। লালমাটিয়া এলাকার বাসিন্দা মহসীন আশরাফ বলেন, রোববার ‘সিরিয়াল’ দিয়ে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি পাননি।
ঢাকা ওয়াসার পানিবাহী গাড়ির সংখ্যা ৪০টি। কিন্তু ওয়াসার গতকালের হিসাব থেকে দেখা যায়, নগরের ২৯৪টি এলাকা থেকে গাড়িতে পানি সরবরাহ চেয়েছে লোকজন। দেওয়া সম্ভব হয়েছে মাত্র ১৬০টি বাড়িতে।
No comments