সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শেষ পর্যন্ত বাশারই জিতবেন? by শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
টানা দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার
গৃহযুদ্ধে দেশটির অনেক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ১৬ লাখ সাধারণ মানুষ
প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়ে কাটাচ্ছে মানবেতর জীবন।
এ
পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০ হাজার লোক নিহত হয়েছে এ যুদ্ধে। যুদ্ধ শেষে হওয়ার কোনো
লক্ষণ নেই। একবার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত সেনারা সাঁড়াশি
অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের হটিয়ে দেয় তো আরেকবার বিদ্রোহী বাহিনী কোণঠাসা
করে তোলে সরকারি সেনাদের।
তাহলে সিরিয়াযুদ্ধের পরিণতি কী? এ প্রশ্ন এখন সবার মনে। কিন্তু এর সহজ কোনো উত্তর নেই। তবে বিদেশি হস্তক্ষেপের হিসাব বাইরে রাখলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অবস্থান এখনো বিদ্রোহীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি মজবুত। প্রতিবেশী লেবাননের কট্টরপন্থী ইসলামি শিয়াগোষ্ঠী হেজবুল্লাহ সম্প্রতি প্রকাশ্যে বাশারের পক্ষে লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে। মিত্র রাশিয়া ও ইরান সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। বাশারের অনুগত সেনাদের সবল রাখতে রাশিয়া জাহাজ ভরে অস্ত্র আর গোলাবারুদ দিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের কয়েকটি পর্যায়ে বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ল বলে মনে হলেও বাস্তবে তা থেকে তারা অনেক দূরে। সিরিয়ায় বাশারের সরকারকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে সক্রিয়ভাবে সরাসরি সহযোগিতা করছে হেজবুল্লাহ ও রাশিয়া। ইরানের ভূমিকাটা অন্য রকম। তারা মূলত সমর্থন দিচ্ছে পার্শ্বরেখা থেকে। শিয়া প্রাধান্যপুষ্ট দেশ ইরান চায় সিরিয়ায়ও বাশারের শিয়া সরকার টিকে থাকুক। বাশারকে তারা প্রয়োজনে অর্থসহ যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আবার কট্টর শিয়া সংগঠন হেজবুল্লাহর বড় পৃষ্ঠপোষক এই ইরান। সংগঠনটি চায় বাশার ক্ষমতায় থাকুন। বাশার ও হেজবুল্লাহর অভিন্ন শত্রু ইসরায়েল।
হেজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সহায়তায়ই সিরীয় সেনারা সমপ্রতি বিদ্রোহীদের দখল থেকে কুশায়ের শহর পুনরুদ্ধার করেছে। লেবানন সীমান্তের কাছের গুরুত্বপূর্ণ শহরটি সরকারি সেনাদের পুরো নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় যুদ্ধে বাশারের কৌশলগত অবস্থান মজবুত হয়েছে।
হেজবুল্লাহ যোদ্ধাদের উপস্থিতি যে বাশারের শক্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে, এ কথা বিদ্রোহীরাই এখন স্বীকার করছে। আহমেদ নামের বাশারবিরোধী এক সাবেক যোদ্ধার ভাষ্য, ‘হেজবুল্লাহর উপস্থিতি যুদ্ধে বড় ধরনের ব্যবধান তৈরি করেছে। কারণ, এই যোদ্ধারা সত্যিকারের সৈনিক। তারা আমৃত্যু লড়ে।’
বাশারের সেনাদের জন্য প্রধান ভরসা রাশিয়ার সমর্থন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে কার্যত একমাত্র সিরিয়াই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাবমুক্ত রয়েছে। রাশিয়া চায় না, বাশার পরাজিত হয়ে এ দেশটিও পশ্চিমাদের করতলগত হোক। এতে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে রাশিয়ার যেমন দূরত্ব সৃষ্টি হবে, তেমনি দেশটিতে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার নামে ধর্মীয় উগ্রপন্থার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তা রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার একমাত্র নৌঘাঁটি সিরিয়ার উপকূলেই।
কাজেই রাশিয়া নিজের স্বার্থেই বাশারের সমর্থনে কাজ করছে। পরিস্থিতি বিচার করলে বাশারের পক্ষে থাকলে রাশিয়ার অনেক লাভ। এক দিকে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আসছে, একই সঙ্গে সিরিয়ার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে উপস্থিতি বজায় রাখা যাচ্ছে। সর্বোপরি প্রতিদ্বন্দ্বী পশ্চিমা দেশগুলোকেও একটা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
বাহরাইনে আরব বসন্তের ঝড় ওঠার সময় সৌদি আরবের সহযোগিতায় দেশটির কর্তৃপক্ষ কঠোর হাতে বিদ্রোহ দমন করে। তখন যুক্তরাষ্ট্র বাহরাইনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল। রাশিয়ার প্রতিরক্ষাবিষয়ক বিশ্লেষক রুজলান পুকভ এ প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন রাখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তখন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন?’
বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলেন, ‘সিআইএ, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যদি তুরস্কের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কাছে সমরাস্ত্র পাঠাতে পারে, সেখানে সিরিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রিতে রাশিয়ার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
বিশ্লেষকদের তথ্যমতে, সিরিয়ায় এখন রাশিয়ার তৈরি প্রায় পাঁচ হাজার ট্যাংক রয়েছে। পদাতিক সেনাদের লড়াই করার মতো ভারী সাঁজোয়া যান রয়েছে আড়াই হাজারের মতো। এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
দৃশ্যত পরিস্থিতি এখন বাশারের অনুকূলে। গত ডিসেম্বরে জার্মানি মন্তব্য করেছিল, বাশার এখন পতনের শেষ ধাপে রয়েছেন। এখন তারাই বলছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
সামপ্রতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ গৃহযুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে। স্যান ডিয়েগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বারবারা ওয়াল্টারের তথ্যমতে, ১৯৪৫ সাল থেকে যেসব গৃহযুদ্ধ হয়েছে, সেগুলো গড়ে ১০ বছর করে টিকেছে।
কিছু বিশ্লেষক সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে প্রতিবেশী লেবাননের গৃহযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছেন। ওই গৃহযুদ্ধ ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলেছে। ওয়াল্টারের মতে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধও আরও বহু বছর চলবে। আর পরিণতিতে বাশারের বিজয় আসবে না।
এর বিপরীত মন্তব্যও আছে। কিছু পর্যবেক্ষকের ভাষ্য, ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের আগে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ১৮টি প্রদেশের মধ্যে ১৫টিরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। এরপরও দাপটের সঙ্গে আবার এসব প্রদেশে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনেন। দেশ শাসন করে যান আরও ১২টি বছর। সে তুলনায় বাশারের অবস্থান অনেক ভালো। ১৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে একমাত্র রাক্কা এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। প্রভাবশালী রাশিয়া ও চীন সিরিয়ার পাশে থাকায় জাতিসংঘেও ইচ্ছামতো উদ্যোগ নিতে পারছে না মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের গতিবিধি বুঝে দফায় দফায় যুদ্ধের কৌশল পাল্টাচ্ছেন বাশার। বিদ্রোহীদের পর্যুদস্ত করতে মারাত্মক রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদও ভালোই। সবমিলিয়ে সাদ্দামের চেয়ে অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে বাশার। এসব কারণে বিশেষজ্ঞদের অন্তত একটি অংশ মনে করে, দেরিতে হলেও গৃহযুদ্ধে হয়তো শেষ পর্যন্ত বাশারই জিতবেন।
তাহলে সিরিয়াযুদ্ধের পরিণতি কী? এ প্রশ্ন এখন সবার মনে। কিন্তু এর সহজ কোনো উত্তর নেই। তবে বিদেশি হস্তক্ষেপের হিসাব বাইরে রাখলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অবস্থান এখনো বিদ্রোহীদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি মজবুত। প্রতিবেশী লেবাননের কট্টরপন্থী ইসলামি শিয়াগোষ্ঠী হেজবুল্লাহ সম্প্রতি প্রকাশ্যে বাশারের পক্ষে লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে। মিত্র রাশিয়া ও ইরান সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। বাশারের অনুগত সেনাদের সবল রাখতে রাশিয়া জাহাজ ভরে অস্ত্র আর গোলাবারুদ দিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের কয়েকটি পর্যায়ে বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ল বলে মনে হলেও বাস্তবে তা থেকে তারা অনেক দূরে। সিরিয়ায় বাশারের সরকারকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে সক্রিয়ভাবে সরাসরি সহযোগিতা করছে হেজবুল্লাহ ও রাশিয়া। ইরানের ভূমিকাটা অন্য রকম। তারা মূলত সমর্থন দিচ্ছে পার্শ্বরেখা থেকে। শিয়া প্রাধান্যপুষ্ট দেশ ইরান চায় সিরিয়ায়ও বাশারের শিয়া সরকার টিকে থাকুক। বাশারকে তারা প্রয়োজনে অর্থসহ যেকোনো সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আবার কট্টর শিয়া সংগঠন হেজবুল্লাহর বড় পৃষ্ঠপোষক এই ইরান। সংগঠনটি চায় বাশার ক্ষমতায় থাকুন। বাশার ও হেজবুল্লাহর অভিন্ন শত্রু ইসরায়েল।
হেজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সহায়তায়ই সিরীয় সেনারা সমপ্রতি বিদ্রোহীদের দখল থেকে কুশায়ের শহর পুনরুদ্ধার করেছে। লেবানন সীমান্তের কাছের গুরুত্বপূর্ণ শহরটি সরকারি সেনাদের পুরো নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় যুদ্ধে বাশারের কৌশলগত অবস্থান মজবুত হয়েছে।
হেজবুল্লাহ যোদ্ধাদের উপস্থিতি যে বাশারের শক্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে, এ কথা বিদ্রোহীরাই এখন স্বীকার করছে। আহমেদ নামের বাশারবিরোধী এক সাবেক যোদ্ধার ভাষ্য, ‘হেজবুল্লাহর উপস্থিতি যুদ্ধে বড় ধরনের ব্যবধান তৈরি করেছে। কারণ, এই যোদ্ধারা সত্যিকারের সৈনিক। তারা আমৃত্যু লড়ে।’
বাশারের সেনাদের জন্য প্রধান ভরসা রাশিয়ার সমর্থন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে কার্যত একমাত্র সিরিয়াই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাবমুক্ত রয়েছে। রাশিয়া চায় না, বাশার পরাজিত হয়ে এ দেশটিও পশ্চিমাদের করতলগত হোক। এতে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে রাশিয়ার যেমন দূরত্ব সৃষ্টি হবে, তেমনি দেশটিতে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার নামে ধর্মীয় উগ্রপন্থার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তা রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার একমাত্র নৌঘাঁটি সিরিয়ার উপকূলেই।
কাজেই রাশিয়া নিজের স্বার্থেই বাশারের সমর্থনে কাজ করছে। পরিস্থিতি বিচার করলে বাশারের পক্ষে থাকলে রাশিয়ার অনেক লাভ। এক দিকে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আসছে, একই সঙ্গে সিরিয়ার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে উপস্থিতি বজায় রাখা যাচ্ছে। সর্বোপরি প্রতিদ্বন্দ্বী পশ্চিমা দেশগুলোকেও একটা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
বাহরাইনে আরব বসন্তের ঝড় ওঠার সময় সৌদি আরবের সহযোগিতায় দেশটির কর্তৃপক্ষ কঠোর হাতে বিদ্রোহ দমন করে। তখন যুক্তরাষ্ট্র বাহরাইনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল। রাশিয়ার প্রতিরক্ষাবিষয়ক বিশ্লেষক রুজলান পুকভ এ প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন রাখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তখন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন?’
বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলেন, ‘সিআইএ, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যদি তুরস্কের মাধ্যমে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কাছে সমরাস্ত্র পাঠাতে পারে, সেখানে সিরিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রিতে রাশিয়ার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
বিশ্লেষকদের তথ্যমতে, সিরিয়ায় এখন রাশিয়ার তৈরি প্রায় পাঁচ হাজার ট্যাংক রয়েছে। পদাতিক সেনাদের লড়াই করার মতো ভারী সাঁজোয়া যান রয়েছে আড়াই হাজারের মতো। এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
দৃশ্যত পরিস্থিতি এখন বাশারের অনুকূলে। গত ডিসেম্বরে জার্মানি মন্তব্য করেছিল, বাশার এখন পতনের শেষ ধাপে রয়েছেন। এখন তারাই বলছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
সামপ্রতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ গৃহযুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে। স্যান ডিয়েগোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বারবারা ওয়াল্টারের তথ্যমতে, ১৯৪৫ সাল থেকে যেসব গৃহযুদ্ধ হয়েছে, সেগুলো গড়ে ১০ বছর করে টিকেছে।
কিছু বিশ্লেষক সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে প্রতিবেশী লেবাননের গৃহযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছেন। ওই গৃহযুদ্ধ ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলেছে। ওয়াল্টারের মতে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধও আরও বহু বছর চলবে। আর পরিণতিতে বাশারের বিজয় আসবে না।
এর বিপরীত মন্তব্যও আছে। কিছু পর্যবেক্ষকের ভাষ্য, ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের আগে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ১৮টি প্রদেশের মধ্যে ১৫টিরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। এরপরও দাপটের সঙ্গে আবার এসব প্রদেশে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনেন। দেশ শাসন করে যান আরও ১২টি বছর। সে তুলনায় বাশারের অবস্থান অনেক ভালো। ১৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে একমাত্র রাক্কা এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। প্রভাবশালী রাশিয়া ও চীন সিরিয়ার পাশে থাকায় জাতিসংঘেও ইচ্ছামতো উদ্যোগ নিতে পারছে না মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের গতিবিধি বুঝে দফায় দফায় যুদ্ধের কৌশল পাল্টাচ্ছেন বাশার। বিদ্রোহীদের পর্যুদস্ত করতে মারাত্মক রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদও ভালোই। সবমিলিয়ে সাদ্দামের চেয়ে অনেক বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে বাশার। এসব কারণে বিশেষজ্ঞদের অন্তত একটি অংশ মনে করে, দেরিতে হলেও গৃহযুদ্ধে হয়তো শেষ পর্যন্ত বাশারই জিতবেন।
No comments