চারুশিল্প প্রকৃতির গানে মা-ছেলের যুগলবন্দী by সৈয়দ গোলাম দস্তগীর
ছোট্ট মেয়ে বসে আছে, দূরে একটা বাবলাগাছ।
একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে গাছটার দিকে। পেছন থেকে এসে মা মেয়েকে বলে, কী
দেখিস? মেয়ে বলে, দেখো মা, ওটা হলো গাছপাখি। মা অবাক হয়ে বলে, কী আবোলতাবোল
বলছিস, ওটা তো বাবলাগাছ।
তুই যে কী দেখিস, গাছ দেখে বলবি গাছপাখি। কাঠের একটা টুকরা দেখে বলবি, বেড়ালকাঠ। আমার চোখে তো ওসব ধরা পড়ে না।
সাধারণ মাধ্যমের চোখ যা দেখতে পায় না, অনুসন্ধিৎসু সৃজনস্পৃহার চোখ তা দেখতে পায় বলেই বলা হয়, তার তৃতীয় নয়ন আছে। যার ছাপ মিলল মা-ছেলের যুগলবন্দিতে।
মা আমাদের অতিপরিচিত মুখ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী এবং ছেলে কারু তিতাস। শিল্পী প্রিয়ভাষিণী প্রথাগত শিল্পশিক্ষা নেননি। ছেলে আমাদের প্রথাগত শিল্পশিক্ষার সর্বোচ্চ ধাপ অতিক্রম করেছেন। এ দুই প্রজন্মকে একসঙ্গে এক আয়োজনে দেখা একটু ভিন্নতর অভিজ্ঞতা বটেই।
শিল্পী প্রিয়ভাষিণীর প্রথম যে প্রদর্শনী যশোরে আজ থেকে প্রায় ২০-২২ বছর আগে হয়েছে, তখন থেকে আজ অবধি তিনি নানা ধরনের নিরীক্ষায় রত আছেন। প্রথম দিকে শুধু প্রকৃতি, কবিতা, জীবনানন্দ, রবীন্দ্রনাথ আর বিভূতিভূষণে আবদ্ধ থাকলেও আস্তে আস্তে বিষয় হিসেবে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধ, আন্দোলন-সংগ্রাম, একাত্তরের গণহত্যাসহ সমকালীন নানা বিষয়। যেমন এবারের প্রদর্শনীতে আছে ‘গণজাগরণ’, ‘রানা প্লাজা’, ‘মিছিল’ ইত্যাদি শিরোনামের কাজ। বিষয়গুলো এত বেশি সাম্প্রতিক যে বলে দিতে হয় না কোন প্রসঙ্গে এই কাজগুলো। ‘রানা প্লাজা’ শিরোনামের কাজটি করেছেন উইপোকায় খাওয়া কাঠের টুকরা দিয়ে। বিষয়বৈচিত্র্যে বেঙ্গল গ্যালারির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর আগে ২৭ নম্বরে বেঙ্গল গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত তাঁর প্রদর্শনীর অপু-দুর্গা বা বিহঙ্গ থেকে অনেকটাই বৈচিত্র্যময়। এবার একটি পেইন্টিংও আছে তাঁর ইট-সুরকি আর কাঠের গুঁড়া দিয়ে তৈরি। রাবীন্দ্রিক ধাঁচের রচনা।
এবার আসা যাক ছেলে কারু তিতাস প্রসঙ্গে। ওর কাজের সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৯৫-এর দিকে। বনজ প্রকৃতি নিয়ে কাজ করছিলেন তখন। কাজগুলো উপস্থাপনায় প্রাথমিকভাবে গ্রাফিক কোয়ালিটির আধিক্য আর কিছু আলংকারিক উপাদানগত দুর্বলতা থাকলেও পর্যায়ক্রমে তা হয়ে ওঠে একটি পরিণত প্রকাশধারা।
এবারের প্রদর্শনীতে ওই সিরিজের একটি কাজ বর্তমান, যা ঋদ্ধ প্রকাশের স্বাক্ষর বহন করে। এরপর তিনি রত হয়েছেন নানা নিরীক্ষায়। হয়তো এটা নতুন কোনো বাঁক নেওয়ার আগের প্রস্তুতি। এ ধরনের প্রবণতা বহু সৃজনশীল শিল্পীর মধ্যে লক্ষণীয়। তবে তাঁর এই নতুন ভাষা তৈরির যে প্রচেষ্টা তা কখনো কখনো সামান্য সংশয় সৃষ্টি করেছে, যখন আপাতদৃষ্টিতে একটি নন-অবজেকটিভ কাজ, যার শিরোনাম প্রকৃতি উপস্থাপিত হচ্ছে কিছু আয়তক্ষেত্রের আকৃতির দ্বারা। এ ধরনের ছোটখাটো অসংগতি ছাড়া তাঁর কাজগুলো দক্ষতার স্বাক্ষর বহন করে। এই অনন্য আয়োজনে একটি দুর্বলতা প্রায় সব দর্শকেরই নজরে এসেছে, তা হলো এর সম্পাদনা ও উপস্থাপনা। কাজের ডিসপ্লের ক্ষেত্রে এবং নির্বাচনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাই আরও একটু সচেতন হলে প্রদর্শনীটি সর্বময় সুন্দর হতো বলে মনে হয়।
সাধারণ মাধ্যমের চোখ যা দেখতে পায় না, অনুসন্ধিৎসু সৃজনস্পৃহার চোখ তা দেখতে পায় বলেই বলা হয়, তার তৃতীয় নয়ন আছে। যার ছাপ মিলল মা-ছেলের যুগলবন্দিতে।
মা আমাদের অতিপরিচিত মুখ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী এবং ছেলে কারু তিতাস। শিল্পী প্রিয়ভাষিণী প্রথাগত শিল্পশিক্ষা নেননি। ছেলে আমাদের প্রথাগত শিল্পশিক্ষার সর্বোচ্চ ধাপ অতিক্রম করেছেন। এ দুই প্রজন্মকে একসঙ্গে এক আয়োজনে দেখা একটু ভিন্নতর অভিজ্ঞতা বটেই।
শিল্পী প্রিয়ভাষিণীর প্রথম যে প্রদর্শনী যশোরে আজ থেকে প্রায় ২০-২২ বছর আগে হয়েছে, তখন থেকে আজ অবধি তিনি নানা ধরনের নিরীক্ষায় রত আছেন। প্রথম দিকে শুধু প্রকৃতি, কবিতা, জীবনানন্দ, রবীন্দ্রনাথ আর বিভূতিভূষণে আবদ্ধ থাকলেও আস্তে আস্তে বিষয় হিসেবে উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধ, আন্দোলন-সংগ্রাম, একাত্তরের গণহত্যাসহ সমকালীন নানা বিষয়। যেমন এবারের প্রদর্শনীতে আছে ‘গণজাগরণ’, ‘রানা প্লাজা’, ‘মিছিল’ ইত্যাদি শিরোনামের কাজ। বিষয়গুলো এত বেশি সাম্প্রতিক যে বলে দিতে হয় না কোন প্রসঙ্গে এই কাজগুলো। ‘রানা প্লাজা’ শিরোনামের কাজটি করেছেন উইপোকায় খাওয়া কাঠের টুকরা দিয়ে। বিষয়বৈচিত্র্যে বেঙ্গল গ্যালারির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর আগে ২৭ নম্বরে বেঙ্গল গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত তাঁর প্রদর্শনীর অপু-দুর্গা বা বিহঙ্গ থেকে অনেকটাই বৈচিত্র্যময়। এবার একটি পেইন্টিংও আছে তাঁর ইট-সুরকি আর কাঠের গুঁড়া দিয়ে তৈরি। রাবীন্দ্রিক ধাঁচের রচনা।
এবার আসা যাক ছেলে কারু তিতাস প্রসঙ্গে। ওর কাজের সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৯৫-এর দিকে। বনজ প্রকৃতি নিয়ে কাজ করছিলেন তখন। কাজগুলো উপস্থাপনায় প্রাথমিকভাবে গ্রাফিক কোয়ালিটির আধিক্য আর কিছু আলংকারিক উপাদানগত দুর্বলতা থাকলেও পর্যায়ক্রমে তা হয়ে ওঠে একটি পরিণত প্রকাশধারা।
এবারের প্রদর্শনীতে ওই সিরিজের একটি কাজ বর্তমান, যা ঋদ্ধ প্রকাশের স্বাক্ষর বহন করে। এরপর তিনি রত হয়েছেন নানা নিরীক্ষায়। হয়তো এটা নতুন কোনো বাঁক নেওয়ার আগের প্রস্তুতি। এ ধরনের প্রবণতা বহু সৃজনশীল শিল্পীর মধ্যে লক্ষণীয়। তবে তাঁর এই নতুন ভাষা তৈরির যে প্রচেষ্টা তা কখনো কখনো সামান্য সংশয় সৃষ্টি করেছে, যখন আপাতদৃষ্টিতে একটি নন-অবজেকটিভ কাজ, যার শিরোনাম প্রকৃতি উপস্থাপিত হচ্ছে কিছু আয়তক্ষেত্রের আকৃতির দ্বারা। এ ধরনের ছোটখাটো অসংগতি ছাড়া তাঁর কাজগুলো দক্ষতার স্বাক্ষর বহন করে। এই অনন্য আয়োজনে একটি দুর্বলতা প্রায় সব দর্শকেরই নজরে এসেছে, তা হলো এর সম্পাদনা ও উপস্থাপনা। কাজের ডিসপ্লের ক্ষেত্রে এবং নির্বাচনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাই আরও একটু সচেতন হলে প্রদর্শনীটি সর্বময় সুন্দর হতো বলে মনে হয়।
No comments