বিদ্যুতের ভর্তুকি রেন্টালেই যাবে by আরিফুজ্জামান তুহিন
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ খাতে
গতবারের চেয়ে বেশি বরাদ্দ ও ভর্তুকি রেখে মহাজোট সরকারের শেষ বাজেট গতকাল
বৃহস্পতিবার পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ ও ভর্তুকি মিলিয়ে ২৪ হাজার ৭৫৯
কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নয়ন বরাদ্দ ১১ হাজার ৩৫১ কোটি ২০ লাখ
টাকা, আর ভর্তুকি ও কিছু অনুষঙ্গী খরচ বাবদ বরাদ্দ ১৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা।
ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদা সামাল দিতে ২০১৭ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা ১৯
হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী।
সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এবারও ভর্তুকির টাকা রেন্টাল-কুইক রেন্টাল থেকে
বিদ্যুৎ কিনতে খরচ হবে।
এদিকে দেশের কয়লা উত্তোলনের ব্যাপারে বর্তমান সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে না বলে বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থাৎ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ অন্যান্য কয়লাখনির কয়লা উন্মুক্ত না সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতে তোলা হবে তা নির্ধারণের ভার পরবর্তী সরকারের ওপর রেখে দিলেন তিনি। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির বিষয়েও বিলম্বের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ খাতের বিশাল বরাদ্দ চলে যাবে বেসরকারি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটে- এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, গতবারের ভর্তুকির পুরো টাকাই চলে গেছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে।
জানা গেছে, সরকারি ও আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) লাভ করলেও রেন্টাল ও কুইক রেন্টালে ভর্তুকির শতভাগ চলে যাচ্ছে। সরকারের বর্তমান মেয়াদে বিদ্যুতের দাম ছয় দফায় ৪৭ শতাংশ বাড়ানোর পরও ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ছে। গত বছর ভর্তুকির পুরো টাকাই গেছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল থেকে উৎপাদিত মাত্র এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে। এটা মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৫ শতাংশ মাত্র। এ সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত একটিও বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসেনি। তাই রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ওপরই ভরসা করতে হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাজেটে বিদ্যুতে বরাদ্দ বেশি বা কম- এর ওপর কিন্তু বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন নির্ভর করে না। কারণ দেশের বিদ্যুৎ খাত ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি খাতে।' বেসরকারীকরণ না থামাতে পারলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে মনে করেন তিনি।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন বরাদ্দ ৯ হাজার ৫৪ কোটি টাকা এবং ভর্তুকি পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ সালে উন্নয়ন বরাদ্দ ছিল আট হাজার ১৫১ কোটি টাকা; খরচ হয়েছে সাত হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা এবং ভর্তুকি ছিল ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা; খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।
গতকাল বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে দেওয়া 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়নের পথনকশা : অগ্রগতির ধারা' শীর্ষক পুস্তিকায় অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, ২০০৯-এর জানুয়ারিতে বাংলাদেশের মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১৮৩ কিলোওয়াট আওয়ার। বর্তমানে এ হার ২৯২ কিলোওয়াট আওয়ার। চার বছরে মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহার ৬০ শতাংশ বেড়েছে বলে তাঁর দাবি। গতবার মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৬৫ কিলোওয়াট আওয়ার।
অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের জন্য জ্বালানি খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ ও ভর্তুকি মিলিয়ে ১০ হাজার ২০৫ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ভর্তুকি সাত হাজার ৯৫০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বরাদ্দ দুই হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে জ্বালানি খাতে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। ভর্তুকি রাখা হয়েছিল ছয় হাজার ২০০ কোটি টাকা, তবে বছর শেষে তা বেড়ে ১৫ হাজার ২৩০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া এবং দেশে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশাল এ অর্থ ব্যয় হয় বলে জানা গেছে।
জ্বালানি বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের টাকা দিয়ে ১০টি কূপ খনন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কম্পানিগুলোর মোট এক লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার মোট ১৮টি স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণ, নির্দিষ্ট চাপে গ্যাস সরবরাহের জন্য আশুগঞ্জ ও এলেঙ্গায় দুটি কম্প্রেসার স্টেশন স্থাপন এবং বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা তোলা হবে।
এ ছাড়া বাপেক্স শক্তিশালীকরণ, গ্যাসের মজুদ বাড়াতে নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার এবং বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্রগুলোর বর্তমান মজুদ নিরূপণ, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উৎপাদিত গ্যাস চট্টগ্রামসহ দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে সরবরাহের লক্ষ্যে গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া গ্যাসের উপজাত থেকে পেট্রল, ডিজেল প্রভৃতি পেট্রোলিয়াম পদার্থের সরবরাহ বৃদ্ধি ও এলএনজি আমদানি করা হবে। পাশাপাশি বাপেক্সের মাধ্যমে ৪৫০ বর্গকিলোমিটার টু-ডি ও ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার থ্রি-ডি সাইসমিক সার্ভে করা হবে এবং দুটি উৎপাদন কূপ ও চারটি উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে।
এদিকে দেশের কয়লা উত্তোলনের ব্যাপারে বর্তমান সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে না বলে বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থাৎ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ অন্যান্য কয়লাখনির কয়লা উন্মুক্ত না সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতে তোলা হবে তা নির্ধারণের ভার পরবর্তী সরকারের ওপর রেখে দিলেন তিনি। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির বিষয়েও বিলম্বের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ খাতের বিশাল বরাদ্দ চলে যাবে বেসরকারি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেটে- এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, গতবারের ভর্তুকির পুরো টাকাই চলে গেছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে।
জানা গেছে, সরকারি ও আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) লাভ করলেও রেন্টাল ও কুইক রেন্টালে ভর্তুকির শতভাগ চলে যাচ্ছে। সরকারের বর্তমান মেয়াদে বিদ্যুতের দাম ছয় দফায় ৪৭ শতাংশ বাড়ানোর পরও ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ছে। গত বছর ভর্তুকির পুরো টাকাই গেছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল থেকে উৎপাদিত মাত্র এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে। এটা মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৫ শতাংশ মাত্র। এ সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত একটিও বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসেনি। তাই রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ওপরই ভরসা করতে হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাজেটে বিদ্যুতে বরাদ্দ বেশি বা কম- এর ওপর কিন্তু বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন নির্ভর করে না। কারণ দেশের বিদ্যুৎ খাত ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি খাতে।' বেসরকারীকরণ না থামাতে পারলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে মনে করেন তিনি।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন বরাদ্দ ৯ হাজার ৫৪ কোটি টাকা এবং ভর্তুকি পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ সালে উন্নয়ন বরাদ্দ ছিল আট হাজার ১৫১ কোটি টাকা; খরচ হয়েছে সাত হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা এবং ভর্তুকি ছিল ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা; খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।
গতকাল বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে দেওয়া 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়নের পথনকশা : অগ্রগতির ধারা' শীর্ষক পুস্তিকায় অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, ২০০৯-এর জানুয়ারিতে বাংলাদেশের মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১৮৩ কিলোওয়াট আওয়ার। বর্তমানে এ হার ২৯২ কিলোওয়াট আওয়ার। চার বছরে মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহার ৬০ শতাংশ বেড়েছে বলে তাঁর দাবি। গতবার মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৬৫ কিলোওয়াট আওয়ার।
অন্যদিকে আগামী অর্থবছরের জন্য জ্বালানি খাতে উন্নয়ন বরাদ্দ ও ভর্তুকি মিলিয়ে ১০ হাজার ২০৫ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ভর্তুকি সাত হাজার ৯৫০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বরাদ্দ দুই হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে জ্বালানি খাতে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। ভর্তুকি রাখা হয়েছিল ছয় হাজার ২০০ কোটি টাকা, তবে বছর শেষে তা বেড়ে ১৫ হাজার ২৩০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া এবং দেশে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশাল এ অর্থ ব্যয় হয় বলে জানা গেছে।
জ্বালানি বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের টাকা দিয়ে ১০টি কূপ খনন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কম্পানিগুলোর মোট এক লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার মোট ১৮টি স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণ, নির্দিষ্ট চাপে গ্যাস সরবরাহের জন্য আশুগঞ্জ ও এলেঙ্গায় দুটি কম্প্রেসার স্টেশন স্থাপন এবং বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন কয়লা তোলা হবে।
এ ছাড়া বাপেক্স শক্তিশালীকরণ, গ্যাসের মজুদ বাড়াতে নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার এবং বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্রগুলোর বর্তমান মজুদ নিরূপণ, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উৎপাদিত গ্যাস চট্টগ্রামসহ দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে সরবরাহের লক্ষ্যে গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া গ্যাসের উপজাত থেকে পেট্রল, ডিজেল প্রভৃতি পেট্রোলিয়াম পদার্থের সরবরাহ বৃদ্ধি ও এলএনজি আমদানি করা হবে। পাশাপাশি বাপেক্সের মাধ্যমে ৪৫০ বর্গকিলোমিটার টু-ডি ও ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার থ্রি-ডি সাইসমিক সার্ভে করা হবে এবং দুটি উৎপাদন কূপ ও চারটি উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে।
No comments