এখনও মেলেনি হিসাব! by তন্ময় হক
মিথ্যা তথ্য বারবার প্রচার করলে এক সময়
মানুষ তা বিশ্বাস করতে শুরু করে। এই ছিল হিটলারের সহযোগী গোয়েবলসের তত্ত্ব।
গোয়েবলস এই তত্ত্বের প্রয়োগ ঘটিয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালিয়ে গিয়েছিলেন
১৯৪৫ সাল পর্যন্ত।
এই তত্ত্বকেই মনে হয় অনুসরণ করেছেন
হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ এবং বিএনপি ও জামায়াতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গত ৫
মে মতিঝিলের শাপলা চত্বর দখল করে রেখে কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয়
হেফাজতে ইসলাম। ১৩ দফা দাবি নিয়ে এই সংগঠনটি আন্দোলন করে। আশপাশের এলাকায়
ভাংচুর, অগি্নসংযোগ, গাছ কেটে ফেলার মতো ঘটনাগুলো ঘটে। বাণিজ্যিক
গুরুত্বপূর্ণ স্থান মতিঝিলের শাপলা চত্বরকে নিরাপদ স্থানে পরিণত করতে যৌথ
অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে এই অভিযানে যোগ দেয় র্যাব।
এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় 'অপারেশন শাপলা'। রাতের আঁধারে অভিযান পরিচালনা
করা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। তবে গোয়েবলসীয় অপপ্রচার শুরু হয় অভিযানের ফলে নিহতদের
সংখ্যা নিয়ে। শাপলা চত্বরের অভিযানের ফলে 'গণহত্যা' সংঘটিত হয়েছে বলে
অভিযোগ আনে হেফাজতে ইসলাম। এই অভিযানে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক মারা গেছে
বলে দাবি করে সংগঠনটি।
নানামুখী প্রচারের ফলে এই সংখ্যাটি আলোচনায় স্থান নেয়। হেফাজতে ইসলামের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীও একই ধরনের প্রচার চালিয়ে যায়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কয়েকজন নেতা দাবি করেছেন, ৩ হাজারের মতো লোক নিহত হয়েছে শাপলা চত্বরের অভিযানের ফলে। গত ৬ মে হেফাজতে ইসলামের একজন নেতা এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। ফেসবুকে বাঁশের কেল্লা পেজ থেকে নানা ধরনের ছবি শেয়ার করে অপপ্রচারের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ফটোশপের মাধ্যমে অনেক ছবি এডিট করে শেয়ার করা হয়েছে। এমনকি বাইরের দেশের ঘটনার ছবিকে শাপলা চত্বরের ছবি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। তীব্র এই অপপ্রচারের ফলে শাপলা চত্বরের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সমাজের নানা স্তর থেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বেনজীর আহমেদ গত ৮ মে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় সহিংসতায় মোট ১১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তিনজন পথচারী রয়েছেন। একই সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলামের নিহত ও নিখোঁজ সদস্যের নামের তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়। প্রাথমিকভাবে হেফাজতে ইসলামও তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দেয়। কিন্তু প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও কোনো রকমের তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি হেফাজতে ইসলাম। ৬ জুন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে জানা যায়, হেফাজতে ইসলামের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা সম্পর্কে সম্যকভাবে জ্ঞাত নন। একজন নেতা আরেকজন জানে বলে দায় এড়িয়েছেন। একজন নেতা জানিয়েছেন, কিছু নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনো নাম প্রকাশ করতে পারেননি সেই নেতা।
শাপলা চত্বরের অভিযানের ঘটনায় আড়াই থেকে তিন হাজার নিহত ও কয়েক হাজার নিখোঁজ হওয়ার কথিত অভিযোগের বিপরীতে নামের তালিকা প্রকাশ করতে না পারার ব্যাপারটি বিবেচনায় নিতে হবে। বড় তালিকা প্রস্তুত করার ঘোষণা দিয়ে ৭০ জনের নামের তালিকাও করতে পারেনি হেফাজতে ইসলাম। তাহলে কি শাপলা চত্বরের অভিযান নিয়ে মিথ্যাচার করেছে হেফাজতে ইসলাম? প্রশ্ন তাহলে উঠতেই পারে_ ধর্মকে হেফাজত করার জন্য যে সংগঠনটি ঢাকা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়েছে তারা নিজেদের স্বার্থে কেন মিথ্যাচারের আশ্রয় নিল?
নানামুখী প্রচারের ফলে এই সংখ্যাটি আলোচনায় স্থান নেয়। হেফাজতে ইসলামের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীও একই ধরনের প্রচার চালিয়ে যায়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কয়েকজন নেতা দাবি করেছেন, ৩ হাজারের মতো লোক নিহত হয়েছে শাপলা চত্বরের অভিযানের ফলে। গত ৬ মে হেফাজতে ইসলামের একজন নেতা এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান। ফেসবুকে বাঁশের কেল্লা পেজ থেকে নানা ধরনের ছবি শেয়ার করে অপপ্রচারের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ফটোশপের মাধ্যমে অনেক ছবি এডিট করে শেয়ার করা হয়েছে। এমনকি বাইরের দেশের ঘটনার ছবিকে শাপলা চত্বরের ছবি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। তীব্র এই অপপ্রচারের ফলে শাপলা চত্বরের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সমাজের নানা স্তর থেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বেনজীর আহমেদ গত ৮ মে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের সময় সহিংসতায় মোট ১১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও তিনজন পথচারী রয়েছেন। একই সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলামের নিহত ও নিখোঁজ সদস্যের নামের তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়। প্রাথমিকভাবে হেফাজতে ইসলামও তালিকা প্রকাশের ঘোষণা দেয়। কিন্তু প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও কোনো রকমের তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি হেফাজতে ইসলাম। ৬ জুন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে জানা যায়, হেফাজতে ইসলামের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা সম্পর্কে সম্যকভাবে জ্ঞাত নন। একজন নেতা আরেকজন জানে বলে দায় এড়িয়েছেন। একজন নেতা জানিয়েছেন, কিছু নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনো নাম প্রকাশ করতে পারেননি সেই নেতা।
শাপলা চত্বরের অভিযানের ঘটনায় আড়াই থেকে তিন হাজার নিহত ও কয়েক হাজার নিখোঁজ হওয়ার কথিত অভিযোগের বিপরীতে নামের তালিকা প্রকাশ করতে না পারার ব্যাপারটি বিবেচনায় নিতে হবে। বড় তালিকা প্রস্তুত করার ঘোষণা দিয়ে ৭০ জনের নামের তালিকাও করতে পারেনি হেফাজতে ইসলাম। তাহলে কি শাপলা চত্বরের অভিযান নিয়ে মিথ্যাচার করেছে হেফাজতে ইসলাম? প্রশ্ন তাহলে উঠতেই পারে_ ধর্মকে হেফাজত করার জন্য যে সংগঠনটি ঢাকা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়েছে তারা নিজেদের স্বার্থে কেন মিথ্যাচারের আশ্রয় নিল?
No comments