নতুন প্রজন্মের জাহানারা ইমাম by মহিউদ্দিন আহমেদ
লাকি আক্তার। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইংরেজী বিভাগের ছাত্রী। বাড়ি ফেনী জেলায়। টানা তিন দিন-তিন রাত তার দৃপ্তে
স্লোগানে গর্জে উঠেছে শিশু-কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বণিতা।
রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে বজ্রকণ্ঠে তাঁর নতুন সেøাগান শাহবাগ স্কয়ারকে
জনসমুদ্রে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধ না দেখা মেয়েটি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির
দাবির সাহসী ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর শুনে অনেকে তাঁকে এ প্রজন্মের জাহানারা ইমাম
উপাধি দিয়েছেন।
রক্তচোষা জানোয়ার মানুষ বেশি যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে তিন দিন তিন রাত অবিরাম সেøাগান দিয়ে শাহবাগ এলাকা কাঁপিয়ে রেখেছেন তিনি। মুষ্টিবদ্ধ হাত উর্ধে ছুড়ে জ্বালাময়ী সেøাগানে সেøাগানে উজ্জীবিত করে রেখেছেন নানা বয়সী মানুষকে। তাঁর বলিষ্ঠ সেøাগান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে লাখো কণ্ঠে। ঘৃণিত, চিহ্নিত মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে লাকির তৈরি সেøাগান এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্লগ, ফেসবুকসহ সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে তার ছবি সেøাগানটি। তিন দিন তিন রাত সময়ের মধ্যে আড়াই ঘণ্টা ছাড়া বাকি সময় তিনি মঞ্চে থেকে সেøাগানের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন। এত দীর্ঘ সময় একনাগাড়ে সেøাগান দেয়ার ক্ষমতা দেখে বিস্মিত সবাই। লাকির কণ্ঠে ‘ক’-তে কাদের মোল্লা, ‘ন’-নিজামী, ‘গ’-তে গোলাম আযম, ‘স’-তে সাঈদী, ‘জ’-তে জামায়াত, ‘র’-তে রেটিনা সেøাগান বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘তুই রাজাকার তুই রাজাকার।’ ‘ফ-তে ফোকাস, জবাই কর জবাই কর, ই-তে ইসলামী ব্যাংক, জবাই কর জবাই কর।’ এই রকম নানা সেøাগান দিয়ে প্রতিবাদে সমবেতদের উৎসাহ যোগান দিয়ে যাচ্ছেন লাকি। সেøাগানের সময় অগ্নিমূর্তি হয়ে ওঠেন যেন, মুখের পেশী কেঁপে কেঁপে ওঠাটাও সহজেই চোখে পড়ে। নিজেকে উজাড় করে সর্বশক্তি নিয়ে যখন সেøাগান দেন, লালচে আভা পড়ে গালে, নাকের ডগায়।
এত কিছুর পরও তাঁর মধ্যে কোন ধরনের ক্লান্তি তাঁকে স্পর্শ করেনি। ২২ উর্ধবয়সের মেয়েটি সেøাগান দিতে গিয়ে যেমন কেঁপে ওঠেন, কাঁপিয়ে তোলেন উপস্থিত জনতাকে। সেøাগান দেয়ার সময় তার চেহারায় যে অগ্নিরূপ ভেসে ওঠেন তাতে মনে হয় মুহূর্তে লাকি গুঁড়িয়ে দিতে চান কাদের মোল্লা, নিজামী-কামারুজ্জামান, মুজাহিদের আস্তানা। মুছিয়ে দিতে চান রাজাকারের গাড়িতে দেশের পতাকা ওড়ানোর ঘৃণা। টানা এক ঘণ্টা সেøাগান দেয়ার পর একটু গলা ভেজানোর জন্য সভাস্থল থেকে বের হলে শুক্রবার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় লাকির। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ফাঁসির দাবিতে এসেছি। রাজাকারদের ফাঁসি নিশ্চিত করে ঘরে ফিরব। তাঁকে নিয়ে সমবেতদের মধ্যে এত প্রশংসা, খবরের কাগজে তাঁর ছবি ছাপানো, টেলিভিশনে বার বার তাঁকে দেখানো- এসবের কিছুই তিনি জানেন না। তবে এই টুকু সে বুঝতে পেরেছেÑ অল্প কয়জন মানুষ নিয়ে মঙ্গলবার তারা যে সেøাগান শুরু করে, সেই সেøাগান এখন লাখো কণ্ঠে এক সঙ্গে ধ্বনিত হয়। লাকি বলেন, ছোটবেলা থেকেই রাজাকারদের ঘৃণা করি। তাদের বিরুদ্ধে এত বড় আন্দোলনে সেøাগান দিতে পেরে তিনি গর্বিত। ২০০৯ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট নিরসের দাবি আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে লাকি আন্দোলন করতে শিখেন। শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তিনি চাঁদা তুলে আন্দোলন করতেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মাঝে মাঝে নড়বড়ে হয়ে যেত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তখন যেসব শিক্ষক প্রশাসনবিরোধী আন্দোলনের জন্য বাঁকা চোখে দেখতেন এখন তাঁরাও লাকিকে নিয়ে গর্ব করেন।
তার বিভাগের শিক্ষক ড. শাহীনুর শাহবাগ স্কয়ারে এসে লাকির সেøাগান শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। কিন্তু তাঁর দুই চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, শিক্ষক হিসেবে লাকির এই ভূমিকা কেমন লাগছে? তিনি জানালেন, লাকি এখন আর জগন্নাথ বিশ্ববিদালয়ের গর্ব নয়। সে এখন পুরো জাতির গর্ব। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তার মতো বলিষ্ঠ কণ্ঠ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ড. শাহীনুর বলেন, লাকির এ সাহসী ভূমিকা একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা। বাংলাদেশ নারীদের অসীম শক্তির যেন প্রতীক হয়ে উঠেছেন এই তরুণী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী শেষ বর্ষের ছাত্রী লাকির গ্রামের বাড়ির ফেনী। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। ঢাকার মালেকা বানু আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে মাধ্যমিক এবং মাইলস্টোন স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ২০০৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি।
রক্তচোষা জানোয়ার মানুষ বেশি যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে তিন দিন তিন রাত অবিরাম সেøাগান দিয়ে শাহবাগ এলাকা কাঁপিয়ে রেখেছেন তিনি। মুষ্টিবদ্ধ হাত উর্ধে ছুড়ে জ্বালাময়ী সেøাগানে সেøাগানে উজ্জীবিত করে রেখেছেন নানা বয়সী মানুষকে। তাঁর বলিষ্ঠ সেøাগান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে লাখো কণ্ঠে। ঘৃণিত, চিহ্নিত মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে লাকির তৈরি সেøাগান এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্লগ, ফেসবুকসহ সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে তার ছবি সেøাগানটি। তিন দিন তিন রাত সময়ের মধ্যে আড়াই ঘণ্টা ছাড়া বাকি সময় তিনি মঞ্চে থেকে সেøাগানের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন। এত দীর্ঘ সময় একনাগাড়ে সেøাগান দেয়ার ক্ষমতা দেখে বিস্মিত সবাই। লাকির কণ্ঠে ‘ক’-তে কাদের মোল্লা, ‘ন’-নিজামী, ‘গ’-তে গোলাম আযম, ‘স’-তে সাঈদী, ‘জ’-তে জামায়াত, ‘র’-তে রেটিনা সেøাগান বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘তুই রাজাকার তুই রাজাকার।’ ‘ফ-তে ফোকাস, জবাই কর জবাই কর, ই-তে ইসলামী ব্যাংক, জবাই কর জবাই কর।’ এই রকম নানা সেøাগান দিয়ে প্রতিবাদে সমবেতদের উৎসাহ যোগান দিয়ে যাচ্ছেন লাকি। সেøাগানের সময় অগ্নিমূর্তি হয়ে ওঠেন যেন, মুখের পেশী কেঁপে কেঁপে ওঠাটাও সহজেই চোখে পড়ে। নিজেকে উজাড় করে সর্বশক্তি নিয়ে যখন সেøাগান দেন, লালচে আভা পড়ে গালে, নাকের ডগায়।
এত কিছুর পরও তাঁর মধ্যে কোন ধরনের ক্লান্তি তাঁকে স্পর্শ করেনি। ২২ উর্ধবয়সের মেয়েটি সেøাগান দিতে গিয়ে যেমন কেঁপে ওঠেন, কাঁপিয়ে তোলেন উপস্থিত জনতাকে। সেøাগান দেয়ার সময় তার চেহারায় যে অগ্নিরূপ ভেসে ওঠেন তাতে মনে হয় মুহূর্তে লাকি গুঁড়িয়ে দিতে চান কাদের মোল্লা, নিজামী-কামারুজ্জামান, মুজাহিদের আস্তানা। মুছিয়ে দিতে চান রাজাকারের গাড়িতে দেশের পতাকা ওড়ানোর ঘৃণা। টানা এক ঘণ্টা সেøাগান দেয়ার পর একটু গলা ভেজানোর জন্য সভাস্থল থেকে বের হলে শুক্রবার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় লাকির। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ফাঁসির দাবিতে এসেছি। রাজাকারদের ফাঁসি নিশ্চিত করে ঘরে ফিরব। তাঁকে নিয়ে সমবেতদের মধ্যে এত প্রশংসা, খবরের কাগজে তাঁর ছবি ছাপানো, টেলিভিশনে বার বার তাঁকে দেখানো- এসবের কিছুই তিনি জানেন না। তবে এই টুকু সে বুঝতে পেরেছেÑ অল্প কয়জন মানুষ নিয়ে মঙ্গলবার তারা যে সেøাগান শুরু করে, সেই সেøাগান এখন লাখো কণ্ঠে এক সঙ্গে ধ্বনিত হয়। লাকি বলেন, ছোটবেলা থেকেই রাজাকারদের ঘৃণা করি। তাদের বিরুদ্ধে এত বড় আন্দোলনে সেøাগান দিতে পেরে তিনি গর্বিত। ২০০৯ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট নিরসের দাবি আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে লাকি আন্দোলন করতে শিখেন। শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তিনি চাঁদা তুলে আন্দোলন করতেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে মাঝে মাঝে নড়বড়ে হয়ে যেত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তখন যেসব শিক্ষক প্রশাসনবিরোধী আন্দোলনের জন্য বাঁকা চোখে দেখতেন এখন তাঁরাও লাকিকে নিয়ে গর্ব করেন।
তার বিভাগের শিক্ষক ড. শাহীনুর শাহবাগ স্কয়ারে এসে লাকির সেøাগান শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। কিন্তু তাঁর দুই চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, শিক্ষক হিসেবে লাকির এই ভূমিকা কেমন লাগছে? তিনি জানালেন, লাকি এখন আর জগন্নাথ বিশ্ববিদালয়ের গর্ব নয়। সে এখন পুরো জাতির গর্ব। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তার মতো বলিষ্ঠ কণ্ঠ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ড. শাহীনুর বলেন, লাকির এ সাহসী ভূমিকা একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের নারী মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা। বাংলাদেশ নারীদের অসীম শক্তির যেন প্রতীক হয়ে উঠেছেন এই তরুণী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী শেষ বর্ষের ছাত্রী লাকির গ্রামের বাড়ির ফেনী। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। ঢাকার মালেকা বানু আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে মাধ্যমিক এবং মাইলস্টোন স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ২০০৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি।
No comments