দক্ষ শ্রমিক তৈরিতে ৩০ জেলা সদরে ৩৫ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হচ্ছে by মিজান চৌধুরী
জুনের মধ্যেই দ শ্রমিক তৈরি করতে ৩০টি জেলা সদরে ৯শ' কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫টি প্রশিণ কেন্দ্র হচ্ছে। প্রতিটি পরিবারে একজন করে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার এ উদ্যোগ নিচ্ছে।
সাধারণ মানুষকে ওইসব কেন্দ্র থেকে প্রশিণের মাধ্যমে দ করে বিদেশে পাঠানো হবে। প্রশিণ কেন্দ্রের এ প্রকল্প সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খুব শ্রীঘই একনেক সভায় সরকার এর অনুমোদন দিতে যাচ্ছে।প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনী ইশতেহার প্রতিটি পরিবারে একজন করে কর্মসংস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী বিদেশের শ্রম বাজারকেও বেছে নেয়া হয়েছে। অভ্যনত্মরীণ শ্রম বাজারে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার নির্বাচনের প্রতিশ্রম্নতি বাসত্মবায়ন করবে। সূত্র মতে, বর্তমান ৩৮টি প্রশিণ কেন্দ্র বিদ্যমান রয়েছে। ওইসব প্রশিণ কেন্দ্র থেকে বছরে বিদেশগামী কমপ ে৪০ হাজার কর্মী দ হয়ে বের হচ্ছে। নতুন ৩৫টি প্রশিণ কেন্দ্র গড়ে উঠলে আরও ৪০ হাজার দ কর্মী বছরে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। মোটা ৮০ হাজার কর্মী বিদেশে যাওয়ার আগে বছরে এসব প্রশিণ কেন্দ্র থেকে দতা অর্জন করতে পারবে। বর্তমান নতুন ৩৫টি প্রশিণ কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি হবে মেরিন ইনস্টিটিউট টেকনোলজি। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৪ কোটি ৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা। মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, চাঁদপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাট জেলায় ওই ৫টি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এই প্রশিণ কেন্দ্রের আসন হবে ১২শ'। ৩০টি হবে কারিগরি প্রশিণ কেন্দ্র। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণ বাড়িয়া, ফেনী, কক্সবাজার, নিলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, নওগাঁ, সাতীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নড়াইল, মাগুরা, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদরে প্রশিণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। ১৮ হাজার ৬৪০টি আসন হবে এসব প্রশিণ কেন্দ্রের।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুধাকর দত্ত জনকণ্ঠকে জানান, এসব প্রশিণ কেন্দ্রের মাধ্যমে দ কর্মী গড়ে তোলা হবে। বিশেষ করে বিদেশের বাজারে চাহিদা বেশি দ কর্মীর। ওই আলোকে এ উদ্যোগ সরকার নিয়েছে। বর্তমান প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়ে অর্থনীতিতে গুরম্নত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দ শ্রমিক প্রেরণ করা হলে রেমিটেন্স পাঠানো আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, এই অর্থবছরের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শুরম্ন হবে। মেরিন ইনস্টিটিউট টেকনোলজি থেকে কর্মীরা বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৮০ শতাংশের চাকরি হয়ে যায়। বিদেশের বাজারে এর চাহিদা প্রচুর। ওই হিসাবে এর প্রশিণের সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে সিক্স জি ওয়েল্ডিং, মিগ ওয়েল্ডিং, ইঞ্জিন ফিটার, কম্পিউটার গ্রাফিক্স ও মেকানিক্যাল বিষয়ে সেখানে প্রশিণ দেয়া হবে। এছাড়া সিভিল কন্সট্র্রাকশন, ওয়েল্ডিং ফেব্রিকেশন, ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক্স, কম্পিউটার, অটোমোবাইল, হাউজ কিপার, আর্টিটেকচার, ড্রাফটিং অটোকেট, মেশিন টুলস অপারেটর_এই দশটি বিষয়ে কারিগরি সেন্টারে প্রশিণ দেয়া হবে। দুই মাস থেকে সবের্াচ্চ ২ বছর পর্যনত্ম বিভিন্ন মেয়াদে এখানে প্রশিণ চলবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিণ বু্যরোর(বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান ৬৭ লাখ লোক বিদেশে কাজ করছে। এ বছর আরও ৬ লাখ লোক বিদেশে পাঠানোর ল্য রয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ৩৩ হাজার ৮৪৭ জন কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশে গেছে। গত বছরের তুলনায় জানুয়ারিতে ৩৩.১৫ শতাংশ লোক কম বিদেশে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব মতে, জুলাই থেকে জানুয়ারি এই সাত মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ৬৪৮ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকা। শুধু জানুয়ারিতে রেমিটেন্স আসার পরিমাণ হচ্ছে ৯০ কোটি ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
সূত্র মতে, বিশ্বমন্দার কারণে অনেক দেশে লোক নেয়ার পরিমাণ কমছে। এ জন্য সরকার নতুন নতুন শ্রম বাজার খুঁজছে। বিশেষ করে যুদ্ধবিধসত্ম দেশ ইরাকে অনেক লোকের চাহিদা বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। সরকার খুব সতর্ক ও গুরম্নত্বের সঙ্গে ইরাকের বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এই প্রশিণ কেন্দ্রের মাধ্যমে দ কর্মী গড়ে তোলা হলে বিদেশের বাজারে গিয়ে কাজের কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। বিদেশে এজনকে সরকার চাকরির ব্যবস্থা করতে পারলে দেশে একটি চাকরি ফাঁকা হয়। ওই স্থানে অন্য আরেকজন প্রবেশ করতে পারবে। এ জন্য এক পরিবারে এক চাকরি প্রতিশ্রম্নতি বাসত্মবায়ন করতে গিয়ে সরকার বিদেশের শ্রম বাজারকে বেছে নিয়েছে।
No comments