জাতিসংঘের প্রতিবেদন-দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে এগিয়ে বাংলাদেশ
বিশ্ব অর্থনীতি এক সংকটপূর্ণ সন্ধিক্ষণ পার করছে। মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সংকট ও বিনিয়োগে খরার কারণে গত এক দশকের মধ্যে ২০১২ সালে সবচেয়ে মন্থর গতিতে এগিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি।
তবে এর মধ্যেও প্রবাসী আয় এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ওপর ভর করে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রেখেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি ও পর্যালোচনা বিভাগের 'বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস-২০১৩' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে একটি মন্থর বছর পার করলেও ২০১৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং পরিবহন ও জ্বালানি প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি ভোগ্যপণ্যের বিক্রি কমায় গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তা ছাড়া উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে ২০১২ সালে 'কিছুটা ধীরগতি'র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক চিত্র 'অনুকূল' ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এর পেছনে প্রবাসী আয় ও ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিই মূল ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করে জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি ও পর্যালোচনা বিভাগ।
বলা হয়, ২০১২ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রবাসী শ্রমিকদের আয় দেশগুলোর বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিতে কিছুটা ভারসাম্য এনেছে। বিদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে ৫.৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হওয়ার পর ২০১২ সালে এ অঞ্চলের গড় দেশজ উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ৪.৪ শতাংশ হারে। তবে ভারতের ক্রমাগত উন্নতির প্রভাবে এ অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ২০১৩ সালে ৫ শতাংশ ও ২০১৪ সালে ৫.৭ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। আর বাংলাদেশ ২০০৯ সালে ৫.৭ শতাংশ, ২০১০ সালে ৬.১ শতাংশ, ২০১১ সালে ৬.৭ শতাংশ, ২০১২ সালে ৬.২ শতাংশ, ২০১৩ সালে ৬.৩ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৬.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘের অর্থনীতিবিদরা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু এলাকায় খরা, খাদ্যের উচ্চমূল্য, স্থানীয় মুদ্রার উল্লেখযোগ্য দরপতন এবং জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ অঞ্চলে গড় ভোক্তা মূল্য সূচক ২০১১ সালে ১১.২ থেকে বেড়ে ২০১২ সালে ১১.৬ হয়েছে। তবে ২০১২ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি তুলনামূলক কম হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কম রাখা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুদান ও ইয়েমেনের মতো যে দেশগুলো রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ২০১০ ও ২০১১ সালে তাদের বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশসহ আফ্রিকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতির দেশ ভারতের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ২০১০ সালের ৯.৬ শতাংশ থেকে ২০১২ সালে নেমে আসে ৫.৫ শতাংশে, যা গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর দক্ষিণ এশিয়ার মোট জিডিপির তিন-চতুর্থাংশের জোগান ভারত থেকে আসে বলে এর প্রভাব পড়েছে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ওপর। তবে কিছুটা জোরদার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও পুঁজি বিনিয়োগের ওপর ভর করে ভারতের জিডিপি ২০১৩ সালে বেড়ে ৬.১ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৬.৫ শতাংশে দাঁড়াবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অংশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তার শঙ্কা অর্থনীতিতে সংশয় তৈরি করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে নেপাল ও পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমেছে। পর পর চার বছর পাকিস্তানে মোট বিনিয়োগ কমেছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের তেল রপ্তানি হ্রাস ও রিয়ালের অবমূল্যায়নের কারণে দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশে গড় মূল্যস্ফীতি ২০১৩ সালে কমে ১০.৬ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৯.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বাংলাদেশসহ আরো কয়েকটি দেশে প্রবাসী আয় বাড়লেও দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমবাজারকে মৌলিক কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কম উৎপাদনশীল কাজের প্রাধান্য, ব্যাপক কর্মজীবী দরিদ্র মানুষ, নারীদের কম অংশগ্রহণ ও উচ্চমাত্রার যুব বেকারত্ব।
বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতা এবং আঞ্চলিক বা দেশীয় ঝুঁকির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির সামনে কিছুটা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইউরোপ বা চীনের অর্থনীতির পতন হলে দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহও ঝুঁকিতে পড়বে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি ও পর্যালোচনা বিভাগের 'বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস-২০১৩' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে একটি মন্থর বছর পার করলেও ২০১৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং পরিবহন ও জ্বালানি প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি ভোগ্যপণ্যের বিক্রি কমায় গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তা ছাড়া উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে ২০১২ সালে 'কিছুটা ধীরগতি'র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক চিত্র 'অনুকূল' ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এর পেছনে প্রবাসী আয় ও ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধিই মূল ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করে জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি ও পর্যালোচনা বিভাগ।
বলা হয়, ২০১২ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার প্রবাসী শ্রমিকদের আয় দেশগুলোর বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিতে কিছুটা ভারসাম্য এনেছে। বিদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে ৫.৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হওয়ার পর ২০১২ সালে এ অঞ্চলের গড় দেশজ উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ৪.৪ শতাংশ হারে। তবে ভারতের ক্রমাগত উন্নতির প্রভাবে এ অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ২০১৩ সালে ৫ শতাংশ ও ২০১৪ সালে ৫.৭ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। আর বাংলাদেশ ২০০৯ সালে ৫.৭ শতাংশ, ২০১০ সালে ৬.১ শতাংশ, ২০১১ সালে ৬.৭ শতাংশ, ২০১২ সালে ৬.২ শতাংশ, ২০১৩ সালে ৬.৩ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৬.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে বলে ধারণা করছেন জাতিসংঘের অর্থনীতিবিদরা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার কিছু এলাকায় খরা, খাদ্যের উচ্চমূল্য, স্থানীয় মুদ্রার উল্লেখযোগ্য দরপতন এবং জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এ অঞ্চলে গড় ভোক্তা মূল্য সূচক ২০১১ সালে ১১.২ থেকে বেড়ে ২০১২ সালে ১১.৬ হয়েছে। তবে ২০১২ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি তুলনামূলক কম হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কম রাখা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুদান ও ইয়েমেনের মতো যে দেশগুলো রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ২০১০ ও ২০১১ সালে তাদের বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশসহ আফ্রিকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতির দেশ ভারতের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি ২০১০ সালের ৯.৬ শতাংশ থেকে ২০১২ সালে নেমে আসে ৫.৫ শতাংশে, যা গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর দক্ষিণ এশিয়ার মোট জিডিপির তিন-চতুর্থাংশের জোগান ভারত থেকে আসে বলে এর প্রভাব পড়েছে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ওপর। তবে কিছুটা জোরদার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও পুঁজি বিনিয়োগের ওপর ভর করে ভারতের জিডিপি ২০১৩ সালে বেড়ে ৬.১ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৬.৫ শতাংশে দাঁড়াবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অংশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তার শঙ্কা অর্থনীতিতে সংশয় তৈরি করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে নেপাল ও পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমেছে। পর পর চার বছর পাকিস্তানে মোট বিনিয়োগ কমেছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের তেল রপ্তানি হ্রাস ও রিয়ালের অবমূল্যায়নের কারণে দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশে গড় মূল্যস্ফীতি ২০১৩ সালে কমে ১০.৬ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৯.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বাংলাদেশসহ আরো কয়েকটি দেশে প্রবাসী আয় বাড়লেও দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমবাজারকে মৌলিক কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কম উৎপাদনশীল কাজের প্রাধান্য, ব্যাপক কর্মজীবী দরিদ্র মানুষ, নারীদের কম অংশগ্রহণ ও উচ্চমাত্রার যুব বেকারত্ব।
বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতা এবং আঞ্চলিক বা দেশীয় ঝুঁকির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির সামনে কিছুটা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইউরোপ বা চীনের অর্থনীতির পতন হলে দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহও ঝুঁকিতে পড়বে।
No comments