পানির জন্য যুদ্ধ-বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে
সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল। চাইলেই পানি মেলে। কিন্তু যদি সুপেয় পানির প্রসঙ্গ ওঠে, তবে তা সংগ্রহে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয় সাধারণ মানুষকে। পান বা রান্নার কাজের জন্য পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হয়।
বৃষ্টির সময় জমিয়ে রাখা পানিতে কিছুদিন চললেও, এ পানি ফুরিয়ে গেলে শুরু হয় নতুন সংকট। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়। অনেককে দৈনন্দিন কাজ বাদ দিয়ে পানি সংগ্রহের কাজে যেতে হয়। এতে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবারের সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেল, মংলা অঞ্চলের অনেক মানুষকে প্রতিলিটার পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে খরচ করতে হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পানি রীতিমতো দুর্মূল্য সেখানে। বোধগম্য কারণেই অনেকে পানি সংগ্রহের ক্লেশ সহ্য করতে পারেন না। লবণাক্ত পানি ব্যবহার করে তারা নানাবিধ রোগের শিকার হন। সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে সুপেয় পানির জোগানদাতা নদী। কিন্তু নদীর স্রোত কমে গেলে তাতে লবণাক্ত পানির মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে সুপেয় পানির প্রবাহ বাড়াতে হলে নদীর প্রবাহ ঠিক করতে হবে। স্রোতের প্রবাহ ঠিক থাকলে নদীই সুপেয় পানির উৎস হতে পারে। এ কাজটি কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। কিন্তু উপকূলীয় অঞ্চলে পানি সংকট দূর করতে এর বিকল্পও নেই। স্থানীয় লোকজন বৃষ্টির পানি জমিয়ে ব্যবহার করে। এটি ভালো পদ্ধতি। কিন্তু বড় জলাধার না থাকলে পর্যাপ্ত পানি জমানো ও তা সংরক্ষণ করা কঠিন। তাই বৃষ্টির পানি জমানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকা উচিত। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের উদ্যোগ থাকা দরকার। স্থানীয় সরকারগুলো উদ্যোগ নিলে পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার হতে পারে। আবার দূর থেকে পানি এনে সংকটাপন্ন এলাকায় কম মূল্যে বিতরণের ব্যবস্থাও করা সম্ভব। প্রয়োজনে পানি শোধনাগারের কথাও ভাবতে হবে। লবণাক্ত পানি শোধন করে তা মানুষের জন্য সহজলভ্য করা কঠিন। কেননা, এটি ব্যয়সাপেক্ষ। কোনো সাহায্যদাতা প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় এমন শোধনাগার স্থাপন করা যেতে পারে। উপকূলবর্তী মানুষের পানির কষ্ট লাঘবের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা তৈরি করে তাদের টিকে থাকার উপায় তৈরি করে দেওয়া দরকার।
No comments