ধর্ম- নারী নির্যাতন ও ধর্ষণকে ‘না’ বলুন by মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান
দেশে-বিদেশে কত বিচিত্র পন্থায় নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটছে। ঘরে-বাইরে, শিক্ষাঙ্গনে-কর্মস্থলে সর্বত্র মেয়েদের নানা প্রকার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। সুযোগ পেলেই একশ্রেণীর বখাটে পুরুষ নারীর প্রতি নির্দয় আচরণ করে থাকে।
দেশে নারী নির্যাতনবিরোধী কঠোর আইন রয়েছে, কিন্তু এর যথাযথ প্রয়োগের অভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হচ্ছে না। তাই নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মসজিদের ইমাম, খতিব ও ধর্মীয় নেতাদের সচেতনতা সৃষ্টির গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে।
বর্তমানে সারা দুনিয়ায় নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ঘৃণ্য অপরাধ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ধর্ষণের ফলে অনেকের মৃত্যু হয়, কেউ আত্মহত্যায় বাধ্য হয়। নির্যাতনকারী পুরুষ নারীকে হত্যা করতেও দ্বিধা করছে না, আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ মান্য করছে না। এসবের মূলে রয়েছে মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম-প্রীতি ও ভালোবাসার অভাব। নারী নির্যাতনকারী ব্যক্তি সমাজের মানুষের কাছে ঘৃণিত এবং আল্লাহর কাছেও নিকৃষ্ট। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ অশালীন ও দুশ্চরিত্র ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন।’ (তিরমিজি) তিনি আরও বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে খারাপ, যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করে।’ (বুখারি)
পবিত্র কোরআনে নারীদের অত্যন্ত সম্মান দেখানো হয়েছে এবং ইসলামে নারীদের নির্যাতন করার সুযোগ নেই। নারী নির্যাতনকারীকে ঘৃণ্য অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেসব কারণে নারীরা সমাজে নির্যাতিত হয়, সেসব থেকে বিরত থাকতে মুসলমানদের আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয়ো না, নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩২)
ইসলামের বিধান অনুযায়ী স্বামী স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিকভাবে কোনো প্রকার নির্যাতন বা প্রহার করবে না। স্ত্রীর ওপর যদি স্বামী কোনো কারণে রেগে যায়, তবু তাকে অশ্লীলভাবে গালিগালাজ করবে না। স্ত্রীর সঙ্গে যদি ঝগড়া হয় এবং স্ত্রী স্বামীর কথা না শোনে তাহলে তাকে সদুপদেশ দিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি (স্ত্রীর) মুখমণ্ডলের ওপর আঘাত কোরো না, তাকে অশ্লীল গালিগালাজ কোরো না এবং গৃহ ব্যতীত অন্য কোথাও তাকে পৃথক করে রেখো না।’ (আবু দাউদ)
সারা বিশ্বে অর্থের লোভে বিদেশে নারী পাচার করা হয়। যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর করে বা শ্বাসরুদ্ধ করে, বিষ প্রয়োগে হত্যা এবং অ্যাসিড নিক্ষেপ করে নারীর ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব লোমহর্ষক নির্যাতন বন্ধের উপায় খুঁজে বের করে সমস্যার সমাধানকল্পে ধর্মপ্রাণ জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালানো জরুরি। নারী নির্যাতন বন্ধে অভিভাবক মহলের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা দরকার। সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে যে নারী-পুরুষ মিলে যে ঘর-সংসার, সেখানে প্রত্যেকেরই গুরুত্ব, মর্যাদা, অধিকার ও ভূমিকা রয়েছে।
ইসলামের বৈবাহিক রীতি অনুযায়ী দুজন আল্লাহভীরু নারী ও পুরুষ পরস্পরকে পছন্দ করে যে নীড় বাঁধে সে সুখের ঘরে একে অপরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হতে পারে না। পারিবারিক জীবনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে পারস্পরিক বিশ্বাস ও ভালোবাসাই ঘরের বন্ধনটি সুদৃঢ় এবং শান্তিময় করে রাখতে পারে। ইসলামে নারীদের অনেক বেশি মর্যাদা ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ইসলাম ধর্মের প্রকৃত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। নারী-পুরুষের সুন্দর শান্তিময় জীবন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও পুরুষদের ওপর নিয়মানুযায়ী (সুন্দর ও মধুময় আচরণ স্ত্রীদেরও প্রাপ্য) অধিকার আছে।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২৮)
ধর্মপ্রাণ মানুষ চেষ্টা করলে সব ধরনের লোভ-লালসা এবং ধন-সম্পদের মোহকে সংযম, ভালোবাসা, আন্তরিক সদিচ্ছা ও আল্লাহভীতির মাধ্যমে আয়ত্তে আনতে সক্ষম। এ জন্য তাদের সুবিচারক, সুবিবেচক, সচেতন ও বিচক্ষণ হতে হবে। নিজের সন্তানের প্রতি যেমন মায়া-মমতাবোধ রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে অন্যের সন্তানের প্রতিও মায়া-মমতাবোধ ও ভালোবাসাকে জাগ্রত করতে হবে, তাহলে পৃথিবীতে সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সমাজে এমন সচেতনতার বিকাশ প্রয়োজন, যাতে কেবল আইনের ভয়ে নয়, বরং দায়িত্ব ও কর্তব্যের আহ্বানে পুরুষেরা নারীর প্রতি সুন্দর ও মর্যাদাবোধসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবে। সেই সঙ্গে মা-বোনদেরও নিজ নিজ মানবিক মর্যাদা ও অধিকার-কর্তব্যের প্রতি সজাগ থাকা উচিত। পুরুষ ও নারী কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়; বরং দুয়ে মিলেই সমাজ। এ সচেতন দৃষ্টিভঙ্গির লালন ও নীতি-নৈতিকতার বিকাশের মধ্যেই নিহিত আছে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের বীজমন্ত্র।
নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। সমাজে নারী ও পুরুষের যে ন্যায্য অধিকার ও গুরুত্ব রয়েছে, পুরুষেরা গভীরভাবে উপলব্ধি না করলে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে না। কারণ, নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই নির্যাতনের মূল সূত্রটি লুক্কায়িত আছে। এ মনোভাব পাল্টানোর জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের পাশাপাশি দেশের আলেম সমাজ ও সচেতন নাগরিকদের প্রধান দায়িত্ব নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার লক্ষ্যে সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধ, সুনীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা। নারীর প্রতি পুরুষের যখন পরিপূর্ণ আস্থা আসবে এবং প্রেম-প্রীতি ও মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারবে, তখনই পৃথিবী শান্তির নীড় হবে। ইসলামি জীবন-দর্শনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে পবিত্র কোরআনের সূরা আন-নূরে আল্লাহ তায়ালা যে সুন্দরতম বিধান দিয়েছেন, তা অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসূ। ইসলামের বিধান যথাযথ কার্যকর হলে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন চিরতরে বন্ধ হবে এবং মানবজীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। সুতরাং নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ইসলামের সামাজিক বিধিবিধানগুলো ব্যাপক প্রচার ও প্রসার করতে ধর্মীয় নেতাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
বর্তমানে সারা দুনিয়ায় নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ঘৃণ্য অপরাধ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ধর্ষণের ফলে অনেকের মৃত্যু হয়, কেউ আত্মহত্যায় বাধ্য হয়। নির্যাতনকারী পুরুষ নারীকে হত্যা করতেও দ্বিধা করছে না, আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ মান্য করছে না। এসবের মূলে রয়েছে মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম-প্রীতি ও ভালোবাসার অভাব। নারী নির্যাতনকারী ব্যক্তি সমাজের মানুষের কাছে ঘৃণিত এবং আল্লাহর কাছেও নিকৃষ্ট। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ অশালীন ও দুশ্চরিত্র ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন।’ (তিরমিজি) তিনি আরও বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে খারাপ, যার অশ্লীলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করে।’ (বুখারি)
পবিত্র কোরআনে নারীদের অত্যন্ত সম্মান দেখানো হয়েছে এবং ইসলামে নারীদের নির্যাতন করার সুযোগ নেই। নারী নির্যাতনকারীকে ঘৃণ্য অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেসব কারণে নারীরা সমাজে নির্যাতিত হয়, সেসব থেকে বিরত থাকতে মুসলমানদের আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয়ো না, নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩২)
ইসলামের বিধান অনুযায়ী স্বামী স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিকভাবে কোনো প্রকার নির্যাতন বা প্রহার করবে না। স্ত্রীর ওপর যদি স্বামী কোনো কারণে রেগে যায়, তবু তাকে অশ্লীলভাবে গালিগালাজ করবে না। স্ত্রীর সঙ্গে যদি ঝগড়া হয় এবং স্ত্রী স্বামীর কথা না শোনে তাহলে তাকে সদুপদেশ দিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি (স্ত্রীর) মুখমণ্ডলের ওপর আঘাত কোরো না, তাকে অশ্লীল গালিগালাজ কোরো না এবং গৃহ ব্যতীত অন্য কোথাও তাকে পৃথক করে রেখো না।’ (আবু দাউদ)
সারা বিশ্বে অর্থের লোভে বিদেশে নারী পাচার করা হয়। যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর করে বা শ্বাসরুদ্ধ করে, বিষ প্রয়োগে হত্যা এবং অ্যাসিড নিক্ষেপ করে নারীর ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব লোমহর্ষক নির্যাতন বন্ধের উপায় খুঁজে বের করে সমস্যার সমাধানকল্পে ধর্মপ্রাণ জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালানো জরুরি। নারী নির্যাতন বন্ধে অভিভাবক মহলের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা দরকার। সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে যে নারী-পুরুষ মিলে যে ঘর-সংসার, সেখানে প্রত্যেকেরই গুরুত্ব, মর্যাদা, অধিকার ও ভূমিকা রয়েছে।
ইসলামের বৈবাহিক রীতি অনুযায়ী দুজন আল্লাহভীরু নারী ও পুরুষ পরস্পরকে পছন্দ করে যে নীড় বাঁধে সে সুখের ঘরে একে অপরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হতে পারে না। পারিবারিক জীবনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে পারস্পরিক বিশ্বাস ও ভালোবাসাই ঘরের বন্ধনটি সুদৃঢ় এবং শান্তিময় করে রাখতে পারে। ইসলামে নারীদের অনেক বেশি মর্যাদা ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ইসলাম ধর্মের প্রকৃত জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে। নারী-পুরুষের সুন্দর শান্তিময় জীবন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও পুরুষদের ওপর নিয়মানুযায়ী (সুন্দর ও মধুময় আচরণ স্ত্রীদেরও প্রাপ্য) অধিকার আছে।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২৮)
ধর্মপ্রাণ মানুষ চেষ্টা করলে সব ধরনের লোভ-লালসা এবং ধন-সম্পদের মোহকে সংযম, ভালোবাসা, আন্তরিক সদিচ্ছা ও আল্লাহভীতির মাধ্যমে আয়ত্তে আনতে সক্ষম। এ জন্য তাদের সুবিচারক, সুবিবেচক, সচেতন ও বিচক্ষণ হতে হবে। নিজের সন্তানের প্রতি যেমন মায়া-মমতাবোধ রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে অন্যের সন্তানের প্রতিও মায়া-মমতাবোধ ও ভালোবাসাকে জাগ্রত করতে হবে, তাহলে পৃথিবীতে সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সমাজে এমন সচেতনতার বিকাশ প্রয়োজন, যাতে কেবল আইনের ভয়ে নয়, বরং দায়িত্ব ও কর্তব্যের আহ্বানে পুরুষেরা নারীর প্রতি সুন্দর ও মর্যাদাবোধসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবে। সেই সঙ্গে মা-বোনদেরও নিজ নিজ মানবিক মর্যাদা ও অধিকার-কর্তব্যের প্রতি সজাগ থাকা উচিত। পুরুষ ও নারী কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়; বরং দুয়ে মিলেই সমাজ। এ সচেতন দৃষ্টিভঙ্গির লালন ও নীতি-নৈতিকতার বিকাশের মধ্যেই নিহিত আছে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের বীজমন্ত্র।
নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। সমাজে নারী ও পুরুষের যে ন্যায্য অধিকার ও গুরুত্ব রয়েছে, পুরুষেরা গভীরভাবে উপলব্ধি না করলে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে না। কারণ, নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই নির্যাতনের মূল সূত্রটি লুক্কায়িত আছে। এ মনোভাব পাল্টানোর জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের পাশাপাশি দেশের আলেম সমাজ ও সচেতন নাগরিকদের প্রধান দায়িত্ব নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার লক্ষ্যে সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধ, সুনীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা। নারীর প্রতি পুরুষের যখন পরিপূর্ণ আস্থা আসবে এবং প্রেম-প্রীতি ও মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারবে, তখনই পৃথিবী শান্তির নীড় হবে। ইসলামি জীবন-দর্শনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে পবিত্র কোরআনের সূরা আন-নূরে আল্লাহ তায়ালা যে সুন্দরতম বিধান দিয়েছেন, তা অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসূ। ইসলামের বিধান যথাযথ কার্যকর হলে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন চিরতরে বন্ধ হবে এবং মানবজীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। সুতরাং নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ইসলামের সামাজিক বিধিবিধানগুলো ব্যাপক প্রচার ও প্রসার করতে ধর্মীয় নেতাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
No comments