সংসারে মানুষ দুই প্রকার by রণজিৎ বিশ্বাস
যুক্তির সাপোর্ট নিয়ে জোরের সঙ্গেই আমরা বলতে পারবো_ সংসারে মানুষ সকল প্রকারে দু'প্রকার। সিরিয়ালি ও সিস্টেম্যাটিক্যালি বলার উপায় হয়তো বা'র করা যাবে। কিন্তু সে পথে আমরা হাঁটবো না। কয়েক জীবন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু পথের শেষ মিলবে না। তাই খাবলা খাবলা বলবো।
নিজেদের মানুষের মধ্যে যারা লিঙ্গবিচারে ফেমিনিন, তারা দু'ধরনের। কারও কাছে নিজের মানুষটি সর্বনিকৃষ্ট, কারও কাছে সর্বোৎকৃষ্ট। খুব জোরের সঙ্গে কথাটি বলছি, কারণ দু'প্রকৃতির প্রতিনিধিই আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি। একজন বাড়িতে আছেন, তিনি প্রথম প্রকৃতির; একজন বাড়িতে আসার স্বপ্ন দেখিয়ে অন্যের বাড়িতে চলে গেছেন, তিনি দ্বিতীয় প্রকৃতির।
বন্ধু পরিচয়ে পরিচিত লোকেরা দু'রকম। কেউ বন্ধুর সমান, কেউ বন্ধুর বাড়া। এটি এক বিবেচনা। আরেক বিবেচনায় কেউ শত্রুর সমান, কেউ শত্রুর চেয়ে ভয়াবহ। ভাগ্যক্রমে সব ধরনের বন্ধুই আমার জুটেছে। সব ধরনের বন্ধুই একে একে আমাকে ছেড়েছে।
সহপাঠীরা কেউ কেউ বন্ধুত্বের পর্যায়ে_ গ্র্যাজুয়েশন পায়, কেউ কোনোদিনই পায় না। সকল বন্ধু সহপাঠী নাও হতে পারে; তবে সহপাঠীদের মধ্যে কেউ কেউ বন্ধু হতেও পারে।
শিক্ষা বিচারে মানুষ দু'প্রকার। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত। অশিক্ষিতদের মধ্যে কিছু আছে ডিগ্রিধারী অশিক্ষিত, তারা খুব ভয়াবহ। আরেক প্রকার আছে, যারা ভাগ্যবঞ্চনার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদের কেউ কেউ আবার স্বশিক্ষিত। এমন স্বশিক্ষিত এক লোকের কাছেই এই লোকের শোনা_ 'এক ধরনের ফুলে বাগান সুন্দর হয় না'_ কান থেকে মাথায় নেওয়ার পর থেকে যা তিনি খেয়ে না খেয়ে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন।
মানুষ হাসে হাসুক, তবু তিনি 'মরতে দম তক' কাজটি করে যাবেন বলে পণ করেছেন। বাকি তার মর্জি, যিনি সর্বশক্তিমান।
ভালো কথা শোনার নিরিখেও মানুষ দু'প্রকার। কেউ শোনে কিন্তু মাথায় নেয় না; কেউ শোনেও, মাথায়ও নেয়। যারা মাথায় নেয়, তাদের কেউ তা মানে, কেউ মানে না। যারা মানে, তাদের এক ভাগ অন্যের বেলায় তার প্রতিফলন দেখতে চায়, নিজের বেলায় নয়। সবার স্ত্রী স্বাধীন থাকুক, আমারটি নয়, সবার কন্যা বাইরে যাক, আমারটি নয়।
যারা শিক্ষিত, তাদের কাউকে কাউকে দেখলে তাদের মতো হতে ইচ্ছে করে; আর কাউকে কাউকে দেখলে তাদের মতো না হওয়ার জন্য ভালো লাগে। স্বস্তি মেলে।
ভোজনবিচারে মানুষ দু'প্রকার। একপক্ষ খাবার দেখলে হামলে পড়ে, আর কেউ রয়েসয়ে অগ্রসর হয়। কেউ খাওয়ার জন্য বাঁচে ও কেউ বেঁচে থাকার প্রয়োজনে খায়। যারা কম কম করে খায়, তারা বেশি খাওয়ার জন্য ও বেশিদিন ধরে খাওয়ার জন্য বেঁচে থাকে; যারা বেশি বেশি করে খায়, কম দিনেই তাদের জীবন ফুরিয়ে যায়, তারা বেশি খেতে পারে না ও বেশিদিন ধরে খেতে পারে না। কেউ আনন্দ পায় খেয়ে, কেউ পায় খাইয়ে।
সাক্ষাৎবিচারে মানুষ দু'রকম। কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়ে গেলে ভালো লাগে। মন বলে_ আরও আগে যদি হতো এই সাক্ষাৎ, বড় ভালো হতো। আর কারও কারও সঙ্গে আকস্মিক সাক্ষাতে গায়ে জ্বর ওঠে। মন বলে_ কোন অশুভক্ষণেই না ঘুম ভেঙেছে আজ! দেখা হলো তো হলো, ওর সঙ্গে হতে হবে! ব্যাড লা'ক! সাক্ষাতের পর দু'জন দু'দিকে হাঁটার সময় কদমে কদমে যখন দু'কদম দূরত্ব তৈরি হয়, তখন বড় আনন্দ লাগে, বড় স্বস্তি জোটে।
মুক্তিযুদ্ধ বিচারে মানুষ রকমে রকমে দু'রকম। কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে, আর কারও বেলায় মুক্তিযোদ্ধা হওয়াটি ছিল পুরোপুরিই এক চান্সের ব্যাপার। কেউ যাচ্ছিল হয়তো কোন পাপের কাজ করতে, পথে দেশপ্রেমিক কিছু মানুষের চাপে পড়ে কিংবা তাদের হাতে প্রহৃত হওয়ার ভয়ে_ সে কিস্তির মুখ ঘুরিয়ে দিল মুক্তিযুদ্ধের দিকে। হতেই পারে এমন! এটি কোনো কল্পচিত্র নয়! আমাদের দেশে এমন কিছু কখনও কারও বেলায় হয়েছে কি-না, যারা তথ্যসন্ধানী তারা ভেবে দেখতে পারে।
যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকেনি, তাদের একপক্ষ সাধারণভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, আরেকপক্ষ যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে কেউ আছে মানবেতর, কেউ পাশবেতর।
বন্ধু পরিচয়ে পরিচিত লোকেরা দু'রকম। কেউ বন্ধুর সমান, কেউ বন্ধুর বাড়া। এটি এক বিবেচনা। আরেক বিবেচনায় কেউ শত্রুর সমান, কেউ শত্রুর চেয়ে ভয়াবহ। ভাগ্যক্রমে সব ধরনের বন্ধুই আমার জুটেছে। সব ধরনের বন্ধুই একে একে আমাকে ছেড়েছে।
সহপাঠীরা কেউ কেউ বন্ধুত্বের পর্যায়ে_ গ্র্যাজুয়েশন পায়, কেউ কোনোদিনই পায় না। সকল বন্ধু সহপাঠী নাও হতে পারে; তবে সহপাঠীদের মধ্যে কেউ কেউ বন্ধু হতেও পারে।
শিক্ষা বিচারে মানুষ দু'প্রকার। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত। অশিক্ষিতদের মধ্যে কিছু আছে ডিগ্রিধারী অশিক্ষিত, তারা খুব ভয়াবহ। আরেক প্রকার আছে, যারা ভাগ্যবঞ্চনার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। তাদের কেউ কেউ আবার স্বশিক্ষিত। এমন স্বশিক্ষিত এক লোকের কাছেই এই লোকের শোনা_ 'এক ধরনের ফুলে বাগান সুন্দর হয় না'_ কান থেকে মাথায় নেওয়ার পর থেকে যা তিনি খেয়ে না খেয়ে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন।
মানুষ হাসে হাসুক, তবু তিনি 'মরতে দম তক' কাজটি করে যাবেন বলে পণ করেছেন। বাকি তার মর্জি, যিনি সর্বশক্তিমান।
ভালো কথা শোনার নিরিখেও মানুষ দু'প্রকার। কেউ শোনে কিন্তু মাথায় নেয় না; কেউ শোনেও, মাথায়ও নেয়। যারা মাথায় নেয়, তাদের কেউ তা মানে, কেউ মানে না। যারা মানে, তাদের এক ভাগ অন্যের বেলায় তার প্রতিফলন দেখতে চায়, নিজের বেলায় নয়। সবার স্ত্রী স্বাধীন থাকুক, আমারটি নয়, সবার কন্যা বাইরে যাক, আমারটি নয়।
যারা শিক্ষিত, তাদের কাউকে কাউকে দেখলে তাদের মতো হতে ইচ্ছে করে; আর কাউকে কাউকে দেখলে তাদের মতো না হওয়ার জন্য ভালো লাগে। স্বস্তি মেলে।
ভোজনবিচারে মানুষ দু'প্রকার। একপক্ষ খাবার দেখলে হামলে পড়ে, আর কেউ রয়েসয়ে অগ্রসর হয়। কেউ খাওয়ার জন্য বাঁচে ও কেউ বেঁচে থাকার প্রয়োজনে খায়। যারা কম কম করে খায়, তারা বেশি খাওয়ার জন্য ও বেশিদিন ধরে খাওয়ার জন্য বেঁচে থাকে; যারা বেশি বেশি করে খায়, কম দিনেই তাদের জীবন ফুরিয়ে যায়, তারা বেশি খেতে পারে না ও বেশিদিন ধরে খেতে পারে না। কেউ আনন্দ পায় খেয়ে, কেউ পায় খাইয়ে।
সাক্ষাৎবিচারে মানুষ দু'রকম। কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়ে গেলে ভালো লাগে। মন বলে_ আরও আগে যদি হতো এই সাক্ষাৎ, বড় ভালো হতো। আর কারও কারও সঙ্গে আকস্মিক সাক্ষাতে গায়ে জ্বর ওঠে। মন বলে_ কোন অশুভক্ষণেই না ঘুম ভেঙেছে আজ! দেখা হলো তো হলো, ওর সঙ্গে হতে হবে! ব্যাড লা'ক! সাক্ষাতের পর দু'জন দু'দিকে হাঁটার সময় কদমে কদমে যখন দু'কদম দূরত্ব তৈরি হয়, তখন বড় আনন্দ লাগে, বড় স্বস্তি জোটে।
মুক্তিযুদ্ধ বিচারে মানুষ রকমে রকমে দু'রকম। কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে, আর কারও বেলায় মুক্তিযোদ্ধা হওয়াটি ছিল পুরোপুরিই এক চান্সের ব্যাপার। কেউ যাচ্ছিল হয়তো কোন পাপের কাজ করতে, পথে দেশপ্রেমিক কিছু মানুষের চাপে পড়ে কিংবা তাদের হাতে প্রহৃত হওয়ার ভয়ে_ সে কিস্তির মুখ ঘুরিয়ে দিল মুক্তিযুদ্ধের দিকে। হতেই পারে এমন! এটি কোনো কল্পচিত্র নয়! আমাদের দেশে এমন কিছু কখনও কারও বেলায় হয়েছে কি-না, যারা তথ্যসন্ধানী তারা ভেবে দেখতে পারে।
যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকেনি, তাদের একপক্ষ সাধারণভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, আরেকপক্ষ যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে কেউ আছে মানবেতর, কেউ পাশবেতর।
No comments