সদরে অন্দরে-আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে by মোস্তফা হোসেইন
শহীদজায়া আছিয়া খানমকে একটু স্বাচ্ছন্দ্য দিতে ছেলে গেছেন ইতালি। বিদেশে থেকে সুখের স্বপ্ন দেখেন মুশতাক। কিন্তু সব স্বপ্ন মিলিয়ে যায় মায়ের মৃত্যুতে। গত মঙ্গলবার মা-ই চলে গেলেন দুনিয়া ছেড়ে। ছেলে খবর পেয়েছেন মায়ের মৃত্যুর। জানতে পেরেছেন, বাড়িতে এসেছে অনেক আত্মীয়স্বজন।
তাদেরও খোঁজখবর নিয়েছেন বিদেশে বসে। কিন্তু বুধবারই তাঁকে আরেকটি খবর শুনতে হলো। জানতে পারলেন, মায়ের দাফন শেষে বাড়িভর্তি মানুষ যখন ক্লান্তিতে বিছানায় গেছে, সেই সময়টায়ই হামলে পড়েছে ডাকাতদল। কাটা ঘায়ে নুনের ছিঁটা দেওয়ার মতো ঘটনা যাকে বলে।
এই ঘটনা কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামের। কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের লাগোয়া একটি বাড়ির। সড়কের সুবিধা এলাকার পুলিশ প্রশাসন নিতে না পারলেও ডাকাতরা ঠিকই নিয়েছে। ঘটনা জানাতে থানার কাছেও যায়নি কেউ। যেমনি যায়নি আছিয়া খানমেরই প্রতিবেশী ফজলু খাঁর বাড়ির কেউ। সেখানেও সপ্তাহকাল আগে হয়েছে ডাকাতি। মালকড়ি, টাকাপয়সা নিয়ে গেছে অনেক। প্রায় প্রতি রাতেই কোনো না কোনো বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে ওই এলাকায়। পুলিশের খাতায় লেখা হচ্ছে এসব ঘটনার দুয়েকটি মাত্র। বুধবার রাতেই একই জেলার মনোহরগঞ্জে ঘটে গেল নারকীয় ঘটনা। ১১ বছর বয়সের একটি শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ডাকাতের হাতে। ডাকাত ধরতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু পাঁচ ডাকাত ধরা পড়ে জনতার হাতে। প্রশাসন যখন আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হয় তখন সাধারণ মানুষ নিজের আবেগ আর তাৎক্ষণিক বিবেচনাকেই শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে। পুলিশ ধরেনি কিংবা ধরতে পারেনি। ধরেছে জনতা, বিচারও করেছে তারা। নৃশংস ডাকাতদের মতোই নৃশংস হয়ে পড়েছে তারা। পিটিয়ে হত্যা করে ডাকাতদের। তার আগে পর্যন্ত পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবোধক। এরকম ঘটনা ঘটছে দেশের অন্য অনেক জায়গায়ও। আর এই ব্যর্থতা কিংবা অবহেলার কারণে একই সময় উত্তেজিত জনতার হাতে বিনা বিচারে প্রাণ গেছে পাঁচজনের এবং ডাকাতের গুলিতে একটি শিশুর।
এমন অবস্থা তো চলছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। পুলিশ নাগরিক নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। পুলিশকেও মানুষ দূর গ্রহের কেউ বলেই মনে করছে। মানুষ জানছে, পুলিশ আছে প্রটোকল ডিউটি করার জন্য। মামলা-মোকদ্দমায় বাদি-বিবাদির হিসাব-নিকাশ করতে। সুতরাং ডাকাতি হলো কি না হলো তাতে পুলিশের কিছু যায় আসে না। ডাকাতি হচ্ছে, প্রবাসী পরিবারগুলোতে, গ্রামের তুলনামূলক অবস্থাসম্পন্ন মানুষের বাড়িতে। শহরের ছিনতাই থেকে ভিন্ন কৌশলে। জানমালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে শহরে। বিশেষ করে মনোহরগঞ্জের প্রবাসী পরিবারগুলোর বেশির ভাগই এখন কুমিল্লা কিংবা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে ডাকাতের ভয়ে। প্রশাসন নির্বিকার। যেমনি সীমান্ত এলাকাবর্তী এলাকাগুলোতেও নির্বিঘ্নে আসছে ফেনসিডিলসহ মাদকসামগ্রী। আর পুলিশ জেনেও না জানার ভান করছে। গোটা পরিস্থিতির দায় পড়ছে সরকারের ওপর।
এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য সংশ্লিষ্ট দুটি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এই নিবন্ধ লেখার সময়। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বে নিয়োজিত মোট ২২ সিপাহির টহল, আসামি আনা-নেওয়াসহ পুলিশি কার্য সম্পাদনের জন্য থানায় আছে মাত্র একটি পিকআপ। যে গাড়িটি আবার মাঝেমধ্যেই ব্যবহার হয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা ভিআইপিদের প্রটোকল দায়িত্ব পালনের কাজে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে এমন জায়গাও আছে, যেখানে কোনো গাড়িই যায় না। আর এ কারণেই কি না কে জানে সেখানে পুলিশকে চলাফেরা করতে হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশায়। যার জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে টহল দেওয়ার গরজ হবে কোন কারণে। যখন তাদের কোথাও যেতে হয়, স্বাভাবিক কারণেই তারা অটোরিকশা ব্যবহার করে অলিখিত সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে। যাকে আইন প্রয়োগে বেআইনি পদক্ষেপ হিসেবে যে কেউ গণ্য করতে পারে। আর সেই বেআইনি সুবিধাটা যদি চোর-ডাকাতের মতো কারো কাছ থেকে আসে তাহলেও কী অবাক হওয়ার কিছু থাকবে?
চুরি হতো আগে সিঁধ কেটে। হালের চোর-ডাকাতরা সিঁধ কাটার পরিশ্রম করতে নারাজ। শহরে যেমন ছিনতাই কৌশলকে বেছে নিয়েছে তেমনি গ্রামে চলে ডাকাতি। তার পরও গরু চুরি সনাতনী কারবার এখনো গৃহস্থের ঘুম হারাম করে দেয়। এটা মনে করার কোনো কারণ নেই, ডাকাতি কিংবা চুরি শুধু কুমিল্লার গ্রামগুলোতেই হচ্ছে। আর চোর-ডাকাতরা বিচারের পরিবর্তে গণধোলাই খেয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনাও শুধু এক জায়গায়ই নয়। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার করমাদি গ্রামের ইছারউদ্দিনের বাড়ি থেকে গরু চুরি করতে এসে ধরা পড়ে মন্টু মিয়া। ধৃত গরুচোরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা আইনানুগ হলেও তাদের সেই বোধ হয়নি। নিশ্চিত বলা যায়, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের জনতার মতো গাংনীর মানুষও মনে করেছে উটকো ঝামেলায় জড়িয়ে লাভ নেই। কিংবা তাদের ধারণা হতে পারে, সুষ্ঠু বিচার হবে না গরু চোরের। চরম শাস্তির সুবাদে হয়তো এলাকায় চোরের উপদ্রব কমতে পারে। মানুষের মধ্যে যখন আইনের শাসনের প্রতি আস্থা কমে যায়, তখনই তারা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখায়। এসব ঘটনা মানুষের আস্থাহীনতারই প্রমাণ। কিন্তু এটা কাম্য নয়। আর এসব ঘটনা সব সময় যে আবেগই কাজ করে তা নয়, ব্যক্তিগত দুরভিসন্ধিও বাস্তবায়ন করা হয়। ঢাকার আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল ডাকাত সন্দেহ করে। কিন্তু পরে দেখা যায়, তারা আদৌ ডাকাত ছিল না। সেটা বিচারাধীন আছে। হয়তো প্রকৃত দোষীরা শাস্তিও পাবে। কিন্তু এই ঘটনা মানুষের মনে যে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে তা দূর করা সহজ ব্যাপার নয়। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গায় হাতিকাটা গ্রামে আজগারকে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছে বলে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তাকেও আমলে না এনে পারা যায় না। আজগারকে তাড়ি খাওয়ার অভিযোগে ধরা হয়। আর সেই অপরাধে পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আইনকে হত্যা করার নামান্তর বলতে দ্বিধা থাকার কথা নয়।
দেশের অবনতিশীল পরিস্থিতিকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে পুলিশকে দায়িত্বশীল, দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য রাজধানীতে পিপার স্প্রে করা হচ্ছে, সেই মেধা ও শক্তি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় ব্যয় করা হোক। তা না হলে সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভ কোটি পিপারের স্প্রেকেও হার মানাবে। আইনের শাসন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
mhussain_71@yahoo.com
এই ঘটনা কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামের। কুমিল্লা-মিরপুর সড়কের লাগোয়া একটি বাড়ির। সড়কের সুবিধা এলাকার পুলিশ প্রশাসন নিতে না পারলেও ডাকাতরা ঠিকই নিয়েছে। ঘটনা জানাতে থানার কাছেও যায়নি কেউ। যেমনি যায়নি আছিয়া খানমেরই প্রতিবেশী ফজলু খাঁর বাড়ির কেউ। সেখানেও সপ্তাহকাল আগে হয়েছে ডাকাতি। মালকড়ি, টাকাপয়সা নিয়ে গেছে অনেক। প্রায় প্রতি রাতেই কোনো না কোনো বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে ওই এলাকায়। পুলিশের খাতায় লেখা হচ্ছে এসব ঘটনার দুয়েকটি মাত্র। বুধবার রাতেই একই জেলার মনোহরগঞ্জে ঘটে গেল নারকীয় ঘটনা। ১১ বছর বয়সের একটি শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ডাকাতের হাতে। ডাকাত ধরতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু পাঁচ ডাকাত ধরা পড়ে জনতার হাতে। প্রশাসন যখন আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হয় তখন সাধারণ মানুষ নিজের আবেগ আর তাৎক্ষণিক বিবেচনাকেই শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে। পুলিশ ধরেনি কিংবা ধরতে পারেনি। ধরেছে জনতা, বিচারও করেছে তারা। নৃশংস ডাকাতদের মতোই নৃশংস হয়ে পড়েছে তারা। পিটিয়ে হত্যা করে ডাকাতদের। তার আগে পর্যন্ত পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবোধক। এরকম ঘটনা ঘটছে দেশের অন্য অনেক জায়গায়ও। আর এই ব্যর্থতা কিংবা অবহেলার কারণে একই সময় উত্তেজিত জনতার হাতে বিনা বিচারে প্রাণ গেছে পাঁচজনের এবং ডাকাতের গুলিতে একটি শিশুর।
এমন অবস্থা তো চলছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। পুলিশ নাগরিক নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। পুলিশকেও মানুষ দূর গ্রহের কেউ বলেই মনে করছে। মানুষ জানছে, পুলিশ আছে প্রটোকল ডিউটি করার জন্য। মামলা-মোকদ্দমায় বাদি-বিবাদির হিসাব-নিকাশ করতে। সুতরাং ডাকাতি হলো কি না হলো তাতে পুলিশের কিছু যায় আসে না। ডাকাতি হচ্ছে, প্রবাসী পরিবারগুলোতে, গ্রামের তুলনামূলক অবস্থাসম্পন্ন মানুষের বাড়িতে। শহরের ছিনতাই থেকে ভিন্ন কৌশলে। জানমালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে শহরে। বিশেষ করে মনোহরগঞ্জের প্রবাসী পরিবারগুলোর বেশির ভাগই এখন কুমিল্লা কিংবা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে ডাকাতের ভয়ে। প্রশাসন নির্বিকার। যেমনি সীমান্ত এলাকাবর্তী এলাকাগুলোতেও নির্বিঘ্নে আসছে ফেনসিডিলসহ মাদকসামগ্রী। আর পুলিশ জেনেও না জানার ভান করছে। গোটা পরিস্থিতির দায় পড়ছে সরকারের ওপর।
এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য সংশ্লিষ্ট দুটি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এই নিবন্ধ লেখার সময়। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বে নিয়োজিত মোট ২২ সিপাহির টহল, আসামি আনা-নেওয়াসহ পুলিশি কার্য সম্পাদনের জন্য থানায় আছে মাত্র একটি পিকআপ। যে গাড়িটি আবার মাঝেমধ্যেই ব্যবহার হয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা ভিআইপিদের প্রটোকল দায়িত্ব পালনের কাজে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে এমন জায়গাও আছে, যেখানে কোনো গাড়িই যায় না। আর এ কারণেই কি না কে জানে সেখানে পুলিশকে চলাফেরা করতে হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশায়। যার জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে টহল দেওয়ার গরজ হবে কোন কারণে। যখন তাদের কোথাও যেতে হয়, স্বাভাবিক কারণেই তারা অটোরিকশা ব্যবহার করে অলিখিত সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে। যাকে আইন প্রয়োগে বেআইনি পদক্ষেপ হিসেবে যে কেউ গণ্য করতে পারে। আর সেই বেআইনি সুবিধাটা যদি চোর-ডাকাতের মতো কারো কাছ থেকে আসে তাহলেও কী অবাক হওয়ার কিছু থাকবে?
চুরি হতো আগে সিঁধ কেটে। হালের চোর-ডাকাতরা সিঁধ কাটার পরিশ্রম করতে নারাজ। শহরে যেমন ছিনতাই কৌশলকে বেছে নিয়েছে তেমনি গ্রামে চলে ডাকাতি। তার পরও গরু চুরি সনাতনী কারবার এখনো গৃহস্থের ঘুম হারাম করে দেয়। এটা মনে করার কোনো কারণ নেই, ডাকাতি কিংবা চুরি শুধু কুমিল্লার গ্রামগুলোতেই হচ্ছে। আর চোর-ডাকাতরা বিচারের পরিবর্তে গণধোলাই খেয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনাও শুধু এক জায়গায়ই নয়। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার করমাদি গ্রামের ইছারউদ্দিনের বাড়ি থেকে গরু চুরি করতে এসে ধরা পড়ে মন্টু মিয়া। ধৃত গরুচোরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা আইনানুগ হলেও তাদের সেই বোধ হয়নি। নিশ্চিত বলা যায়, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের জনতার মতো গাংনীর মানুষও মনে করেছে উটকো ঝামেলায় জড়িয়ে লাভ নেই। কিংবা তাদের ধারণা হতে পারে, সুষ্ঠু বিচার হবে না গরু চোরের। চরম শাস্তির সুবাদে হয়তো এলাকায় চোরের উপদ্রব কমতে পারে। মানুষের মধ্যে যখন আইনের শাসনের প্রতি আস্থা কমে যায়, তখনই তারা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখায়। এসব ঘটনা মানুষের আস্থাহীনতারই প্রমাণ। কিন্তু এটা কাম্য নয়। আর এসব ঘটনা সব সময় যে আবেগই কাজ করে তা নয়, ব্যক্তিগত দুরভিসন্ধিও বাস্তবায়ন করা হয়। ঢাকার আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল ডাকাত সন্দেহ করে। কিন্তু পরে দেখা যায়, তারা আদৌ ডাকাত ছিল না। সেটা বিচারাধীন আছে। হয়তো প্রকৃত দোষীরা শাস্তিও পাবে। কিন্তু এই ঘটনা মানুষের মনে যে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে তা দূর করা সহজ ব্যাপার নয়। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গায় হাতিকাটা গ্রামে আজগারকে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছে বলে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তাকেও আমলে না এনে পারা যায় না। আজগারকে তাড়ি খাওয়ার অভিযোগে ধরা হয়। আর সেই অপরাধে পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আইনকে হত্যা করার নামান্তর বলতে দ্বিধা থাকার কথা নয়।
দেশের অবনতিশীল পরিস্থিতিকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে পুলিশকে দায়িত্বশীল, দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য রাজধানীতে পিপার স্প্রে করা হচ্ছে, সেই মেধা ও শক্তি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় ব্যয় করা হোক। তা না হলে সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভ কোটি পিপারের স্প্রেকেও হার মানাবে। আইনের শাসন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
mhussain_71@yahoo.com
No comments