চলে গেলেন নির্মল সেন
জীবনভর মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। করেছেন সাংবাদিকতা ও রাজনীতি। সব ক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন ত্যাগের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। নিজেকে উৎসর্গ করেছেন দেশ ও জাতির কল্যাণে। সহায়-সম্পদ দান করেছেন নারীশিক্ষার জন্য।
সবশেষে দেহটিও দিয়ে গেছেন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তায়। সর্বত্যাগী এই কিংবদন্তি নির্মল সেন গতকাল মঙ্গলবার ইহলোক ত্যাগ করেছেন।
নির্ভীক সাংবাদিক-কলামিস্ট এবং বাম রাজনীতিক রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মারা যান। 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই' উক্তির জন্য খ্যাত এই বরেণ্য ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, ন্যাপ, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
৮২ বছর বয়স্ক নির্মল সেন কয়েক বছর ধরে কোটালীপাড়ার দীঘিরপাড় গ্রামের নিজ বাড়িতে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন। ২১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে তাঁর শরীরের রক্তচাপ কমে যায়। ২২ ডিসেম্বর সকালে তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে তিনি অধ্যাপক সিরাজুল হকের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নির্মল সেন ২০০৩ সালে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলেও তাঁর শরীরের এক পাশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত থেকে যায়। পরে তিনি ঢাকায় কয়েক বছর অবস্থান করে অর্থ সংকটের কারণে চলে যান গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সভাপতি নির্মল সেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তোপখানা রোর্ডের পার্টি অফিসে নিয়ে আসা হবে। এরপর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১১টায় এবং তারপর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে রাখা হবে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুসারে মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করা হবে।
১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট কোটালীপাড়ার দীঘিরপাড় গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম। তাঁর বাবা ছিলেন কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক। দেশ বিভাগের সময় তাঁর মা-বাবা, ভাইবোনসহ পরিবারের সব সদস্য বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতা চলে যান। কিন্তু মাতৃভূমির প্রতি অগাধ ভালোবাসার কারণে নির্মল সেন জন্মভূমি ত্যাগ করতে পারেননি। ঝালকাঠিতে পিসির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে তিনি বড় হয়েছেন। তিনি ঝালকাঠির কলসকাঠি বিএম একাডেমী থেকে ১৯৪৪ সালে ম্যাট্রিক, বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও এমএ পাস করেন।
নির্মল সেনের রাজনীতি শুরু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৪২ সালে নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় মহাত্মা গান্ধীর 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। সেই সময় তিনি ১৬ দিন স্কুলের গেটে শুয়ে থেকে ধর্মঘট করেন। কলেজজীবনে যোগ দেন তৎকালীন স্বাধীনতাকামী অনুশীলন সমিতিতে।
ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রমিক-কৃষক-সমাজবাদী দল প্রতিষ্ঠায় অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন শ্রমিক-কৃষক-সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে তা গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি নামে রূপান্তরিত হয়। রাজনীতি করতে গিয়ে তাঁকে ১৬ বার কারাবাস করতে হয়েছে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে পাঁচদলীয় জোটের নেতা হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
নির্মল সেন পেশাজীবনে সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৫৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের সহসম্পাদক হিসেবে তাঁর সাংবাদিকতা জীবন শুরু। পরে যোগ দেন দৈনিক আজাদে। ১৯৬৪ সালে প্রেস ট্রাস্টের দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় যোগ দেন তিনি, যা স্বাধীনতার পর দৈনিক বাংলা নামে প্রকাশিত হয়। সরকারি মালিকানাধীন এই পত্রিকা ১৯৯৭ সালে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এখানেই কর্মরত ছিলেন।
১৯৭২-৭৩ সালে নির্মল সেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং ১৯৭৩-৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অতিথি শিক্ষকও ছিলেন তিনি। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ছিলেন।
'অনিকেত' ছদ্মনামে লেখা তাঁর কলামটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই' নামের কলাম লিখে তিনি ব্যাপক আলোচিত হন। তাঁর রচিত বইগুলো হলো 'আমার জবানবন্দি', 'মা জন্মভূমি', 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই', 'বার্লিন থেকে মস্কো', 'লেনিন থেকে গর্বাচেভ', 'মানুষ সমাজ রাষ্ট্র এবং আমার জীবনে '৭১-এর যুদ্ধ'।
নির্মল সেন ব্যক্তিজীবনে ছিলেন চিরকুমার। তিনি নানা ক্ষেত্রে ত্যাগের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার পশ্চাৎপদ মেয়েদের শিক্ষায় নিজ বাড়িটি গত ২৫ জুলাই শিক্ষাসচিব বরাবর রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানে 'সাংবাদিক নির্মল সেন মহিলা কলেজ' স্থাপন করা হবে।
অসুস্থতার কারণে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারলেও কিছুদিন আগে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবাদে এক সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। তখন তিনি বলেছিলেন, "সাংবাদিকদের কোনো অনুষ্ঠানে এত দিন আসিনি, কারণ তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ছিল না। আজ এসেছি এ কারণে যে, আমার নতুন-পুরনো বন্ধুরা একসঙ্গে এসে তাঁদের সহকর্মীর হত্যার বিচার চান। আমি অনেক দিন আগে আমার এক লেখায় বলেছিলাম, 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই'। আজও বলছি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।"
নির্মল সেনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ ও ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
নির্ভীক সাংবাদিক-কলামিস্ট এবং বাম রাজনীতিক রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মারা যান। 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই' উক্তির জন্য খ্যাত এই বরেণ্য ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, ন্যাপ, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
৮২ বছর বয়স্ক নির্মল সেন কয়েক বছর ধরে কোটালীপাড়ার দীঘিরপাড় গ্রামের নিজ বাড়িতে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন। ২১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে তাঁর শরীরের রক্তচাপ কমে যায়। ২২ ডিসেম্বর সকালে তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে তিনি অধ্যাপক সিরাজুল হকের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নির্মল সেন ২০০৩ সালে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলেও তাঁর শরীরের এক পাশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত থেকে যায়। পরে তিনি ঢাকায় কয়েক বছর অবস্থান করে অর্থ সংকটের কারণে চলে যান গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সভাপতি নির্মল সেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তোপখানা রোর্ডের পার্টি অফিসে নিয়ে আসা হবে। এরপর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ১১টায় এবং তারপর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে রাখা হবে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুসারে মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করা হবে।
১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট কোটালীপাড়ার দীঘিরপাড় গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম। তাঁর বাবা ছিলেন কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক। দেশ বিভাগের সময় তাঁর মা-বাবা, ভাইবোনসহ পরিবারের সব সদস্য বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতা চলে যান। কিন্তু মাতৃভূমির প্রতি অগাধ ভালোবাসার কারণে নির্মল সেন জন্মভূমি ত্যাগ করতে পারেননি। ঝালকাঠিতে পিসির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে তিনি বড় হয়েছেন। তিনি ঝালকাঠির কলসকাঠি বিএম একাডেমী থেকে ১৯৪৪ সালে ম্যাট্রিক, বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও এমএ পাস করেন।
নির্মল সেনের রাজনীতি শুরু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৪২ সালে নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় মহাত্মা গান্ধীর 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। সেই সময় তিনি ১৬ দিন স্কুলের গেটে শুয়ে থেকে ধর্মঘট করেন। কলেজজীবনে যোগ দেন তৎকালীন স্বাধীনতাকামী অনুশীলন সমিতিতে।
ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রমিক-কৃষক-সমাজবাদী দল প্রতিষ্ঠায় অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন শ্রমিক-কৃষক-সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে তা গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি নামে রূপান্তরিত হয়। রাজনীতি করতে গিয়ে তাঁকে ১৬ বার কারাবাস করতে হয়েছে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে পাঁচদলীয় জোটের নেতা হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
নির্মল সেন পেশাজীবনে সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৫৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের সহসম্পাদক হিসেবে তাঁর সাংবাদিকতা জীবন শুরু। পরে যোগ দেন দৈনিক আজাদে। ১৯৬৪ সালে প্রেস ট্রাস্টের দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় যোগ দেন তিনি, যা স্বাধীনতার পর দৈনিক বাংলা নামে প্রকাশিত হয়। সরকারি মালিকানাধীন এই পত্রিকা ১৯৯৭ সালে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি এখানেই কর্মরত ছিলেন।
১৯৭২-৭৩ সালে নির্মল সেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং ১৯৭৩-৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অতিথি শিক্ষকও ছিলেন তিনি। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ছিলেন।
'অনিকেত' ছদ্মনামে লেখা তাঁর কলামটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই' নামের কলাম লিখে তিনি ব্যাপক আলোচিত হন। তাঁর রচিত বইগুলো হলো 'আমার জবানবন্দি', 'মা জন্মভূমি', 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই', 'বার্লিন থেকে মস্কো', 'লেনিন থেকে গর্বাচেভ', 'মানুষ সমাজ রাষ্ট্র এবং আমার জীবনে '৭১-এর যুদ্ধ'।
নির্মল সেন ব্যক্তিজীবনে ছিলেন চিরকুমার। তিনি নানা ক্ষেত্রে ত্যাগের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার পশ্চাৎপদ মেয়েদের শিক্ষায় নিজ বাড়িটি গত ২৫ জুলাই শিক্ষাসচিব বরাবর রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানে 'সাংবাদিক নির্মল সেন মহিলা কলেজ' স্থাপন করা হবে।
অসুস্থতার কারণে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারলেও কিছুদিন আগে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবাদে এক সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। তখন তিনি বলেছিলেন, "সাংবাদিকদের কোনো অনুষ্ঠানে এত দিন আসিনি, কারণ তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ছিল না। আজ এসেছি এ কারণে যে, আমার নতুন-পুরনো বন্ধুরা একসঙ্গে এসে তাঁদের সহকর্মীর হত্যার বিচার চান। আমি অনেক দিন আগে আমার এক লেখায় বলেছিলাম, 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই'। আজও বলছি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই।"
নির্মল সেনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ ও ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
No comments