সাভারে ডলফিন দেখতে হাজার হাজার লোক
নিজস্ব সংবাদদাতা, সাভার, ১৮ জানুয়ারি সোমবার সকালে সাভারে পৌরসভার ব্যাংক টাউন এলাকার নদী থেকে একটি ডলফিনসদৃশ বিরল প্রজাতির প্রাণী মৃতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
আনুমানিক ৩শ' কেজি ওজনের প্রাণীটি লম্বায় প্রায় ৭ ফুট, এর লেজের দিক ডলফিনের মতো হলেও মুখ ডলফিনের মতো না হওয়ায় এটি ডলফিন নয় বলে জানিয়েছেন এক বিশেষজ্ঞ। এর মুখ খানিকটা শুশুকের মতো লম্বা ও বেশ কয়েকটি দাঁতযুক্ত। এলাকাবাসীর ধারণা, আশপাশের ডায়িং কারখানাগুলো থেকে নির্গত অপরিশোধিত বিষাক্ত তরল বর্জ্যের কারণে নদীর জলজ প্রাণী বেঁচে থাকার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়ার কারণে প্রাণীটি শাখা নদীতে ঢুকে পড়ে।জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টার দিকে নদীর পাড় ধরে গার্মেন্টস কর্মীরা কাজে যাওয়ার সময় প্রাণীটিকে সেখানে দেখতে পায় এবং পাশেই কর্মরত কয়েকজন নির্মান শ্রমিককে জানায়। তখন ৭/৮ জন নির্মাণ শ্রমিক সাঁতরে ওই চরে গিয়ে মৃত ডলফিনসদৃশ্য প্রাণীটিকে বড় দড়ি দিয়ে বেঁধে চর থেকে নদীর তীরে নিয়ে আসে। এরপর সাগর, জালাল, মিন্টু, নান্টু, মামুন, রয়েল, বাবুসহ ১০/১২ জন নির্মাণ শ্রমিক প্রাণীটিকে বাঁশে ঝুলিয়ে পাশর্্ববর্তী একটি ভবনের কাছে এনে রাখে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দূর-দূরানত্ম থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রাণীটিকে একনজর দেখতে সেখানে ছুটে আসে। খবর পেয়ে সাভার থানার পুলিশ সেখানে ছুটে যায়। এরপর যান স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার মোঃ তৌহিদ জং মুরাদ। তিনি বিরল এ প্রাণীটির মৃতু্যর কারণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন কারখানা থেকে নির্গত তরল বর্জ্যের কারণে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে নদীর পানি। এই বিষাক্ত পানিতে টিকতে না পেরে মৃতু্য হয়েছে এ বিরল প্রাণীটির।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ আব্দুস সালাম ছবি দেখে বলেন, প্রাণীটির লেজের দিক ও গায়ের রং দেখে মনে হয় এটি ডলফিন। কিন্তু মুখটি কিছুটা লম্বা, সরম্ন ও অনেক দাঁত থাকায় এটিকে ডলফিন বা ওই প্রজাতির কোন প্রাণী বলা যায় না। তবে এ প্রাণীটি ডলফিনের কোন উপপ্রজাতি হতে পারে। এরা সাধারণত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর মোহনা এলাকায় বিচরণ করে থাকে। বর্ষা মৌসুমে যখন বংশী-ধলেশ্বরী নদীর পানি বেশি ছিল তখন প্রাণীটি এ নদীতে প্রবেশ করতে পারে। পূর্বে কখনও সাভার এলাকায় এ ধরনের কোন প্রাণী ধরা পড়ার কথা তিনি শোনেননি বলে জানান।
No comments