রাষ্ট্রের কলঙ্ক by অলিউর রহমান ফিরোজ
সন্ত্রাসী বিকাশ জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তার মতো একজন ভয়াবহ সন্ত্রাসী যখন বের হয় আর তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অগোচরে বিষয়টি যখন ঘটে, তখন বুঝতে হবে রাষ্ট্রের গলদটি আসলে কোথায়? একজন সন্ত্রাসী বের হওয়ার সময় কারারক্ষী এবং সংশিল্গষ্ট কর্মকর্তাদের নজর এড়িয়ে তো আর সন্ত্রাসী বিকাশ বের হতে পারেনি।
তাহলে কেন তারা বিষয়টি প্রশাসন ও পুলিশকে অবগত করেনি? তার দুটি কারণ হতে পারে। এক. তারা রাষ্ট্রের আনুকূল্য পেয়েই বের হয়েছে; দুই. বিরাট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কারারক্ষী থেকে শুরু করে ওপর মহলকে ম্যানেজ করেই কাজটি করেছে। বের হওয়ার সময় কয়েকটি গাড়ি এসেছে তাকে নিয়ে যেতে। একজন সন্ত্রাসীর অপরাধের রেকর্ডের বিষয়ে কারা কর্মকর্তাদের অজানার কথা নয়। সেখানে তাদের ব্যর্থতায় যেভাবে বিকাশ বের হলো তার দায় কারা কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্র এড়াতে পারে না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় হত্যা মামলার আসামি থেকে শুরু করে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা ছাড়া পেয়ে সমাজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তার ফল ভালো হওয়ার কথা নয়। একজন বিশ্বজিৎ যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন তাতে আঁতকে উঠতে হয়। সুরতহাল রিপোর্টে তার শরীরে ২৩টি কোপের দাগ পাওয়া গেছে। অবাক বিষয় হলো, রিপোর্টে তার হত্যাকাণ্ডের বিষয় উলেল্গখ করা হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে বিরোধী দলের লোক ভেবে ডাক্তার তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসেননি। চিকিৎসা পেশায় কোনো দল থাকতে পারে না। তাদের সনদ দেওয়ার আগে কীভাবে আর্তমানবতার সেবা করতে হবে তার বিষয়টি পড়ানো হয়। কিন্তু আমাদের সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে অরাজকতা ঢুকে পড়েছে। চিকিৎসকরা যদি সুষ্ঠু চিকিৎসা দিয়ে বিশ্বজিৎকে সারিয়ে তুলতে পারতেন, তাহলে রাষ্ট্রের এত বড় কলঙ্ক হতো না। দেশে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সরকার এভাবে বিশ্বজিৎকে হত্যার পর তা মানুষের মনে কতটা দাগ ফেলতে পেরেছে তা ভেবে দেখতে হবে। আওয়ামী লীগের আগের আমলে তারা যে ভুল করেছিল সেখান থেকে তারা কোনো শিক্ষা নিতে পারেনি বলেই এর আগে তাদের বড় ধরনের ভরাডুবি হয়েছিল। কিন্তু এবার আওয়ামী লীগ তো পরিপকস্ফ এক দল। কিন্তু এবার কেন আগের অভিজ্ঞতা তারা কাজে লাগাবে না তা আমার জানা নেই।
য়মিরাপাড়া, রিকাবীবাজার, মুন্সীগঞ্জ
য়মিরাপাড়া, রিকাবীবাজার, মুন্সীগঞ্জ
No comments