জামিন মিলছে চাঞ্চল্যকর খুনের মামলায়ও by এস এম রানা
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় অনেক আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামিদের পাশাপাশি মামলার একমাত্র আসামিও কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় পুলিশ এবং ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের আশঙ্কা, খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া এই আসামিরা জামিন পেয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারে।
জানা যায়, কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রী মজুমদার হিমু হত্যাকাণ্ডের মামলায় শাহ সেলিম টিপু ও তার ছেলে রিয়াদ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কফিল উদ্দিন হত্যা মামলার আত্মস্বীকৃত আসামি জাহিদ মাহমুদ এবং সুলতানা হত্যা মামলার আসামি মহিউদ্দীন এখনো কারাগারে আছে। এ ছাড়া স্ত্রী নাসিমা বেগম হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নূরুল আমিন চলতি বছরের ৮ মার্চ কারাগারের ভেতরে সিঁড়ি থেকে পড়ে মারা যায়।
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার খবরে পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলছেন, এসব খুনের মামলার আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। এর পরও উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাচ্ছে।
ওই আসামিদের মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার সর্বোত্তম দেওয়ান। তিনি বলেন, আদালত থেকে জামিন আদেশ আসার পর নিয়ম অনুযায়ী আসামিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'উচ্চ আদালত নিশ্চয়ই আইন মোতাবেক জামিন দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'চাঞ্চল্যকর এসব মামলার আসামিদের জামিন শুনানির সময় উচ্চ আদালতে পুলিশের কোনো প্রতিনিধি থাকে না। তাই খুনের বিষয়ে বিস্তারিত আদালতের নজরে আনার সুযোগ অনেক সময় হয় না। যদি পুলিশের প্রতিনিধি রাখা সম্ভব হতো, তবে সে ক্ষেত্রে খুনের আদ্যপান্ত আদালতের নজরে আনা যেত।'
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদের জামিন বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয় না। এখানে জামিন শুনানিকালে আমরা কঠোরভাবে বিরোধিতা করি। কিন্তু উচ্চ আদালতে জামিন শুনানির দায়িত্ব অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের। যদি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত, তবে এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত আসামিরা জামিন পাওয়ার কথা নয়।' তিনি বলেন, 'আত্মস্বীকৃত এই আসামিরা জানে, মামলায় তাদের দোষ প্রমাণিত হলে ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে। ফলে জামিন পাওয়ার পর তাদের দেশান্তরিত হওয়ার সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে মামলার বাদীপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তারা আইন-আদালতের ওপর আস্থা হারাবে।'
ফারজানা আক্তার মিলি হত্যা : চলতি বছরের ২২ এপ্রিল দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফারজানা আক্তার মিলিকে (৩৩) হত্যার পর লাশ চার টুকরো করা হয়। পরে দুই টুকরো বাসার ফ্রিজে রেখে অন্য দুই টুকরো নিয়ে ফেনীর ছাগলনাইয়া যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে স্বামী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জুয়েল। স্ত্রীকে হত্যার পর টুকরো করার কথা স্বীকার করে সাইফুল চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেয়। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। গত ২৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার হওয়া সাইফুল উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়।
প্রকৌশলী নিজাম হত্যা : গত বছরের ৮ ডিসেম্বর নগরীর জিইসি মোড় এলাকা থেকে অটোরিকশাযোগে রাঙ্গুনিয়া যাওয়ার পথে প্রকৌশলী নিজাম খুন হন মলম পার্টির সদস্যদের হাতে। এ ঘটনায় পুলিশ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার ইউনুছ মিয়ার ছেলে মলম পার্টির সদস্য মনিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেয় মনির। এ মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া চার আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। মনিরকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, নিজামসহ দুটি হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম আদালতে মামলার নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বায়েজিদ বোস্তামী থানার এ মামলায় মনির হোসেন, কাদের ওরফে সুজন, মোহাম্মদ রাজন ও জসিম উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে মলম পার্টির সদস্য মনির হোসেন গ্রেপ্তার হয় ২০ জানুয়ারি। আর উচ্চ আদালত মনিরের ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন ৫ নভেম্বর। এ জামিন আদেশ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছার পর ১৪ ডিসেম্বর মুক্তি পায় সে। একই মামলার মোহাম্মদ রাজন গত বছরের ২১ ডিসেম্বর এবং সুজন চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ২২ মার্চ এ দুজনেরও অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। একই মামলার আসামি জসিম উদ্দীন গ্রেপ্তার হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। আর গ্রেপ্তারের দুই মাসের মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পায় সে।
সারিমা রহমান মিধাত হত্যা : ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সারিমা রহমান মিধাতকে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়। ঘটনার দুই দিন তার বন্ধু এস এম তোহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আদালতে জবানবন্দি দিয়ে তোহা খুনের দায় স্বীকার করে। বর্তমানে মামলাটি দ্রুতবিচার আদালতে বিচারাধীন। এর মধ্যে গত ১৮ অক্টোবর উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চে শুনানি শেষে ছয় মাসের জন্য তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা হয়। ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মামুন।
তোহার জামিন পাওয়ার খবর শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে মিধাতের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, 'চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একাধিকবার জামিন আবেদন করেছিল তোহা। কিন্তু প্রতিবারই আমি কৌঁসুলি নিয়োগের সুযোগ পেয়েছি এবং জামিনের বিরোধিতা করেছি। এবার উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করা হলো, অথচ আমি জানিই না। তাই কৌঁসুলি নিয়োগের সুযোগও পাইনি।' তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল উপস্থিত থাকার পরও চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার আসামির জামিন কিভাবে হলো, আমি বুঝতে পারছি না।'
এ মামলার বাদীপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, চট্টগ্রামের আদালতে আসামি পক্ষ একাধিকবার জামিন আবেদন করেও ব্যর্থ হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসে আসামি।
জানা যায়, কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রী মজুমদার হিমু হত্যাকাণ্ডের মামলায় শাহ সেলিম টিপু ও তার ছেলে রিয়াদ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কফিল উদ্দিন হত্যা মামলার আত্মস্বীকৃত আসামি জাহিদ মাহমুদ এবং সুলতানা হত্যা মামলার আসামি মহিউদ্দীন এখনো কারাগারে আছে। এ ছাড়া স্ত্রী নাসিমা বেগম হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নূরুল আমিন চলতি বছরের ৮ মার্চ কারাগারের ভেতরে সিঁড়ি থেকে পড়ে মারা যায়।
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার খবরে পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলছেন, এসব খুনের মামলার আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। এর পরও উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাচ্ছে।
ওই আসামিদের মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার সর্বোত্তম দেওয়ান। তিনি বলেন, আদালত থেকে জামিন আদেশ আসার পর নিয়ম অনুযায়ী আসামিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'উচ্চ আদালত নিশ্চয়ই আইন মোতাবেক জামিন দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'চাঞ্চল্যকর এসব মামলার আসামিদের জামিন শুনানির সময় উচ্চ আদালতে পুলিশের কোনো প্রতিনিধি থাকে না। তাই খুনের বিষয়ে বিস্তারিত আদালতের নজরে আনার সুযোগ অনেক সময় হয় না। যদি পুলিশের প্রতিনিধি রাখা সম্ভব হতো, তবে সে ক্ষেত্রে খুনের আদ্যপান্ত আদালতের নজরে আনা যেত।'
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদের জামিন বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয় না। এখানে জামিন শুনানিকালে আমরা কঠোরভাবে বিরোধিতা করি। কিন্তু উচ্চ আদালতে জামিন শুনানির দায়িত্ব অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের। যদি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত, তবে এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের আত্মস্বীকৃত আসামিরা জামিন পাওয়ার কথা নয়।' তিনি বলেন, 'আত্মস্বীকৃত এই আসামিরা জানে, মামলায় তাদের দোষ প্রমাণিত হলে ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে। ফলে জামিন পাওয়ার পর তাদের দেশান্তরিত হওয়ার সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে মামলার বাদীপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তারা আইন-আদালতের ওপর আস্থা হারাবে।'
ফারজানা আক্তার মিলি হত্যা : চলতি বছরের ২২ এপ্রিল দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফারজানা আক্তার মিলিকে (৩৩) হত্যার পর লাশ চার টুকরো করা হয়। পরে দুই টুকরো বাসার ফ্রিজে রেখে অন্য দুই টুকরো নিয়ে ফেনীর ছাগলনাইয়া যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে স্বামী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জুয়েল। স্ত্রীকে হত্যার পর টুকরো করার কথা স্বীকার করে সাইফুল চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেয়। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। গত ২৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার হওয়া সাইফুল উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়।
প্রকৌশলী নিজাম হত্যা : গত বছরের ৮ ডিসেম্বর নগরীর জিইসি মোড় এলাকা থেকে অটোরিকশাযোগে রাঙ্গুনিয়া যাওয়ার পথে প্রকৌশলী নিজাম খুন হন মলম পার্টির সদস্যদের হাতে। এ ঘটনায় পুলিশ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার ইউনুছ মিয়ার ছেলে মলম পার্টির সদস্য মনিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেয় মনির। এ মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া চার আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। মনিরকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, নিজামসহ দুটি হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম আদালতে মামলার নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বায়েজিদ বোস্তামী থানার এ মামলায় মনির হোসেন, কাদের ওরফে সুজন, মোহাম্মদ রাজন ও জসিম উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে মলম পার্টির সদস্য মনির হোসেন গ্রেপ্তার হয় ২০ জানুয়ারি। আর উচ্চ আদালত মনিরের ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন ৫ নভেম্বর। এ জামিন আদেশ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছার পর ১৪ ডিসেম্বর মুক্তি পায় সে। একই মামলার মোহাম্মদ রাজন গত বছরের ২১ ডিসেম্বর এবং সুজন চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ২২ মার্চ এ দুজনেরও অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। একই মামলার আসামি জসিম উদ্দীন গ্রেপ্তার হয় গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। আর গ্রেপ্তারের দুই মাসের মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পায় সে।
সারিমা রহমান মিধাত হত্যা : ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সারিমা রহমান মিধাতকে ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়। ঘটনার দুই দিন তার বন্ধু এস এম তোহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আদালতে জবানবন্দি দিয়ে তোহা খুনের দায় স্বীকার করে। বর্তমানে মামলাটি দ্রুতবিচার আদালতে বিচারাধীন। এর মধ্যে গত ১৮ অক্টোবর উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চে শুনানি শেষে ছয় মাসের জন্য তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা হয়। ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মামুন।
তোহার জামিন পাওয়ার খবর শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে মিধাতের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, 'চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একাধিকবার জামিন আবেদন করেছিল তোহা। কিন্তু প্রতিবারই আমি কৌঁসুলি নিয়োগের সুযোগ পেয়েছি এবং জামিনের বিরোধিতা করেছি। এবার উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করা হলো, অথচ আমি জানিই না। তাই কৌঁসুলি নিয়োগের সুযোগও পাইনি।' তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল উপস্থিত থাকার পরও চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার আসামির জামিন কিভাবে হলো, আমি বুঝতে পারছি না।'
এ মামলার বাদীপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, চট্টগ্রামের আদালতে আসামি পক্ষ একাধিকবার জামিন আবেদন করেও ব্যর্থ হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসে আসামি।
No comments