তিন মাসের মধ্যে ‘ফল’ চায় বিএনপি by সেলিম জাহিদ
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার-ব্যবস্থার দাবিতে জানুয়ারি থেকে নতুন উদ্যমে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। পর্যায়ক্রমে আন্দোলনকে তুঙ্গে নিয়ে আগামী মার্চ মাসের মধ্যে একটা ‘ফল’ পাওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে দলটি পরিকল্পনা কষছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
নতুন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব না হলে ২৬ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঢাকায় গণসংযোগের মাধ্যমে শেষ হবে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের ২০১২ সালের কর্মসূচি। ওই দিন জোট নেতাদের নেতৃত্বে একই কর্মসূচি দেশের সব মহানগরে একযোগে পালন করা হবে। এই কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হলে ‘তিন, পাঁচ বা সাত দিনের টানা হরতাল’ দেওয়া হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার বিএনপির মুখপাত্র তরিকুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি জানান।
অবশ্য, ২৪ ডিসেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের শুনানি রয়েছে। ওই দিন তাঁকে জামিনে মুক্তি না দিলে এ মাসেই আরেকটি হরতালের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানায়।
সংবিধান অনুযায়ী, আগামী বছরের অক্টোবরে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছে সরকার। এমতাবস্থায় আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই আন্দোলনকে কেন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায়, এ নিয়ে বিএনপি ও এর অন্যতম শরিক জামায়াতের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁদের দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে। আবার মার্চের মাঝামাঝি শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই, মধ্যবর্তী এই সময়টা সব সময় আন্দোলনের জন্য উপযুক্ত সময়। একই সঙ্গে বিএনপির আশঙ্কা, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো আগামী বছরের মাঝামাঝি বা তার আগে নিষ্পত্তি করে ফেলতে পারে সরকার। এতে তাঁদের সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার ষড়যন্ত্র আছে বলেও দলটির নেতারা বিশ্বাস করেন। এ ছাড়া আছে জামায়াতে ইসলামীর চাপ। কারণ, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের কয়েক নেতার বিচারের রায়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপকে কেন্দ্র করে তাঁর পদত্যাগের পর জামায়াত খানিকটা স্বস্তিতে রয়েছে। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ একাধিক নেতা বলেছেন, আগামী স্বাধীনতা দিবসের আগে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কয়েকজনের রায় ঘোষণা হতে পারে। এর আগে সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছিলেন, এ বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের কয়েকজন নেতার বিচারের রায় হবে। জামায়াতের নেতারা মনে করছেন, ডিসেম্বরের ভেতর রায় ঘোষণার বিষয়টি ঠেকাতে পেরেছেন। কিন্তু গত কয়েক দিনে জামায়াত-শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হওয়ায় এবং পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় আবার উদ্বেগের মধ্যে পড়েছে দলটি।
এসব মিলিয়ে মার্চ মাসের মধ্যে সরকারকে একটা বড় ধরনের ধাক্কা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ৯ ডিসেম্বর রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি সফল হওয়ার পর আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপির ভেতরে আস্থা তৈরি করেছে। সামনে হরতালের পাশাপাশি রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের কর্মসূচিও দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী অথবা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত মানবপ্রাচীর কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে।
অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনদুর্ভোগ বাড়ে এমন কর্মসূচি এত দিন আমরা সীমিত রাখার চেষ্টা করেছি। আশা করি, সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের বিষয়ে জনদাবির প্রতি সম্মান দেখাবে। যদি তা না করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই লাগাতার হরতাল, অবরোধসহ এ ধরনের কর্মসূচি দিতে হবে।’
জানা গেছে, কঠোর আন্দোলনের ব্যাপারে খালেদা জিয়া নিজেও আগ্রহী। উদাহরণ হিসেবে তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ৯ ডিসেম্বর রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির পরদিন রাতে তিন সহযোগী সংগঠন—ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে যান। এ সময় তিনি ছাত্রদলের এক নেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তোমরা নাকি হরতাল চাও না?’ এরপর খালেদা জিয়া বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ সফল করতে না পারলে তোমরা বিপদে পড়বে, আমাকেও বিপদে ফেলবে।’ এ সময় তিনি হরতাল-অবরোধসহ আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচি পালনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন।
বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্যসচিব আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী বছর হচ্ছে সরকারের শেষ বছর। সরকার চাইছে ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে। আর, আমরা যা চাই তা করতে হলে, এর আগেই বিষয়টি ফয়সালা করা ছাড়া উপায় নেই।’
গণসংযোগের প্রস্তুতি: ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় খালেদা জিয়ার গণসংযোগ কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ওই দিন রাজধানী ঢাকার পাঁচটি অঞ্চলে খালেদা জিয়া পথসভা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে মিরপুর, রমনা-তেজগাঁও, সূত্রাপুর-কোতোয়ালি, সবুজবাগ-খিলগাঁও ও উত্তরা-বাড্ডা অঞ্চল। গতকাল ঢাকায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছাড়াও দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভা করা হয়। এতে কর্মসূচি সফল করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য, ২৪ ডিসেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন আবেদনের শুনানি রয়েছে। ওই দিন তাঁকে জামিনে মুক্তি না দিলে এ মাসেই আরেকটি হরতালের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানায়।
সংবিধান অনুযায়ী, আগামী বছরের অক্টোবরে বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছে সরকার। এমতাবস্থায় আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই আন্দোলনকে কেন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায়, এ নিয়ে বিএনপি ও এর অন্যতম শরিক জামায়াতের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁদের দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে। আবার মার্চের মাঝামাঝি শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই, মধ্যবর্তী এই সময়টা সব সময় আন্দোলনের জন্য উপযুক্ত সময়। একই সঙ্গে বিএনপির আশঙ্কা, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো আগামী বছরের মাঝামাঝি বা তার আগে নিষ্পত্তি করে ফেলতে পারে সরকার। এতে তাঁদের সাজা দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার ষড়যন্ত্র আছে বলেও দলটির নেতারা বিশ্বাস করেন। এ ছাড়া আছে জামায়াতে ইসলামীর চাপ। কারণ, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের কয়েক নেতার বিচারের রায়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপকে কেন্দ্র করে তাঁর পদত্যাগের পর জামায়াত খানিকটা স্বস্তিতে রয়েছে। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ একাধিক নেতা বলেছেন, আগামী স্বাধীনতা দিবসের আগে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কয়েকজনের রায় ঘোষণা হতে পারে। এর আগে সরকারের মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছিলেন, এ বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের কয়েকজন নেতার বিচারের রায় হবে। জামায়াতের নেতারা মনে করছেন, ডিসেম্বরের ভেতর রায় ঘোষণার বিষয়টি ঠেকাতে পেরেছেন। কিন্তু গত কয়েক দিনে জামায়াত-শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হওয়ায় এবং পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় আবার উদ্বেগের মধ্যে পড়েছে দলটি।
এসব মিলিয়ে মার্চ মাসের মধ্যে সরকারকে একটা বড় ধরনের ধাক্কা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ৯ ডিসেম্বর রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি সফল হওয়ার পর আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপির ভেতরে আস্থা তৈরি করেছে। সামনে হরতালের পাশাপাশি রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের কর্মসূচিও দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী অথবা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত মানবপ্রাচীর কর্মসূচিও দেওয়া হতে পারে।
অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনদুর্ভোগ বাড়ে এমন কর্মসূচি এত দিন আমরা সীমিত রাখার চেষ্টা করেছি। আশা করি, সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের বিষয়ে জনদাবির প্রতি সম্মান দেখাবে। যদি তা না করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই লাগাতার হরতাল, অবরোধসহ এ ধরনের কর্মসূচি দিতে হবে।’
জানা গেছে, কঠোর আন্দোলনের ব্যাপারে খালেদা জিয়া নিজেও আগ্রহী। উদাহরণ হিসেবে তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ৯ ডিসেম্বর রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির পরদিন রাতে তিন সহযোগী সংগঠন—ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে যান। এ সময় তিনি ছাত্রদলের এক নেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তোমরা নাকি হরতাল চাও না?’ এরপর খালেদা জিয়া বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ সফল করতে না পারলে তোমরা বিপদে পড়বে, আমাকেও বিপদে ফেলবে।’ এ সময় তিনি হরতাল-অবরোধসহ আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচি পালনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন।
বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্যসচিব আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী বছর হচ্ছে সরকারের শেষ বছর। সরকার চাইছে ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে। আর, আমরা যা চাই তা করতে হলে, এর আগেই বিষয়টি ফয়সালা করা ছাড়া উপায় নেই।’
গণসংযোগের প্রস্তুতি: ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় খালেদা জিয়ার গণসংযোগ কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ওই দিন রাজধানী ঢাকার পাঁচটি অঞ্চলে খালেদা জিয়া পথসভা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে মিরপুর, রমনা-তেজগাঁও, সূত্রাপুর-কোতোয়ালি, সবুজবাগ-খিলগাঁও ও উত্তরা-বাড্ডা অঞ্চল। গতকাল ঢাকায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছাড়াও দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভা করা হয়। এতে কর্মসূচি সফল করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
No comments