কালের কণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা-আগে ছাত্রলীগকে কালিমামুক্ত করুন
কালের কণ্ঠের বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় ছাত্রলীগের মামলা করার হিড়িক। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক খবরে শাসকদলের অনুসারী ছাত্রসংগঠনটির আঁতে ঘা লেগেছে। কেন্দ্র থেকে মামলা করার নির্দেশ গেছে। জেলায় জেলায় সেই নির্দেশ পালন শুরু হয়েছে। সব জেলায়ই মামলা হতে পারে।
জেলায় জেলায় মামলা করার উদ্দেশ্য স্পষ্ট- পত্রিকাটিকে কিছুটা হলেও হয়রানি করা।
বর্তমান ছাত্ররাজনীতির নেতিবাচক দিক নিয়ে প্রকাশিত যে প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে কালের কণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেটির প্রতিবাদ এলে তা যথারীতি প্রকাশিত হয়। একজন প্রতিবেদক যখন কোনো প্রতিবেদন তৈরি করেন, তখন প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তিনি নিয়ম অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করেন। এটা সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কর্তব্য। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে শুধু ছাত্রলীগ নয়, ছাত্রদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সম্পর্কেও একই রকম তথ্য রয়েছে। কিন্তু ছাত্রলীগ এতে বড় বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছে।
ছাত্রলীগ একটি পুরনো সংগঠন। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে এ সংগঠনের অবদান খাটো করে দেখার কারণ নেই। ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনসহ দেশের সব রাজনৈতিক আন্দোলনে ছাত্রলীগ বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছে। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আদায়ের সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা উজ্জ্বল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখেছে। তখনকার ছাত্রলীগ নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যুদ্ধোত্তর দেশ পুনর্গঠনেও সংগঠনটির ভূমিকা ছিল। ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল অতীত নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন আছে বলে মনে হয় না। আজকের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা, যাঁরা জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁদের অনেকেরই ছাত্ররাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রলীগের মাধ্যমে। মানতেই হবে, এ সংগঠন অনেক নেতা ও সংগঠকের জন্ম দিয়েছে। সেটা ছাত্রলীগের সোনালি ইতিহাস। প্রশ্ন হচ্ছে, অতীতের সেই ছাত্রলীগ এবং আজকের ছাত্রলীগকে কি এককাতারে রেখে বিচার করা যাবে? অতীতের ছাত্রলীগের সঙ্গে কি আজকের ছাত্রলীগকে মিলিয়ে দেখা যাবে? যে ছাত্রলীগে এক সময়ে মেধার চর্চা ছিল, সেটি আজ পেশিশক্তির ক্রীড়নক- এমন মন্তব্য কেউ করলে সেটা কি বাড়িয়ে বলা হবে? বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে নিয়োগ বাণিজ্য পর্যন্ত যেসব অপকর্মের কথা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সব কিছুর সঙ্গেই ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। বিগত চার বছরের কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগের মানহানি হয়নি। সংগঠনটি যখন কিছুসংখ্যক নেতা বা কর্মীর কার্যকলাপে সমালোচিত হয়, যখন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই কোন্দল করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পড়ে থাকে সতীর্থ ছাত্রের লাশ; তখন মানহানি হয় না। বছর দুয়েক আগে যখন বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ওবায়দুল কাদের অবাধ্য ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তুলতে বলেছিলেন, তখন তাদের মানহানি হয়নি। ছাত্রলীগের বাড়াবাড়িতে ক্ষুব্ধ ও বিব্রত প্রধানমন্ত্রী যখন সংগঠনটির নেতাদের সাক্ষাৎ দেন না, এমনকি সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন, তখনো তাদের মানহানি হয়নি; তখন কারো বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করেনি। সর্বশেষ অবরোধের দিন বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডেও ছাত্রলীগের সম্মানহানি হয়নি বা ছাত্রলীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য কালিমালিপ্ত হয়নি। অথচ কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন ছাত্রলীগের ক্ষতির কারণ হয়েছে! তাই জেলায় জেলায় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে।
ছাত্ররাজনীতির নামে বাংলাদেশে কী চলছে, তা সবারই জানা। ছাত্রলীগকে অতীত ঐতিহ্যে ফিরিয়ে আনতে হলে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে আসতে হবে। অভ্যন্তরীণ দলাদলির অবসান ঘটিয়ে ছাত্রদের নিয়ে নতুন করে সংগঠনটি গড়তে হবে। টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজির যে কালিমা সংগঠনটির গায়ে লেগেছে তা মুছে ফেলতে হবে। মামলা করে নয়, ছাত্রলীগের মান রক্ষায় এবং সোনালি ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এটিকে কথিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও অস্ত্রধারীদের কবলমুক্ত করতে হবে।
বর্তমান ছাত্ররাজনীতির নেতিবাচক দিক নিয়ে প্রকাশিত যে প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে কালের কণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেটির প্রতিবাদ এলে তা যথারীতি প্রকাশিত হয়। একজন প্রতিবেদক যখন কোনো প্রতিবেদন তৈরি করেন, তখন প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তিনি নিয়ম অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করেন। এটা সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কর্তব্য। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে শুধু ছাত্রলীগ নয়, ছাত্রদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সম্পর্কেও একই রকম তথ্য রয়েছে। কিন্তু ছাত্রলীগ এতে বড় বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছে।
ছাত্রলীগ একটি পুরনো সংগঠন। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে এ সংগঠনের অবদান খাটো করে দেখার কারণ নেই। ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনসহ দেশের সব রাজনৈতিক আন্দোলনে ছাত্রলীগ বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছে। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আদায়ের সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা উজ্জ্বল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখেছে। তখনকার ছাত্রলীগ নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যুদ্ধোত্তর দেশ পুনর্গঠনেও সংগঠনটির ভূমিকা ছিল। ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল অতীত নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন আছে বলে মনে হয় না। আজকের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা, যাঁরা জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁদের অনেকেরই ছাত্ররাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রলীগের মাধ্যমে। মানতেই হবে, এ সংগঠন অনেক নেতা ও সংগঠকের জন্ম দিয়েছে। সেটা ছাত্রলীগের সোনালি ইতিহাস। প্রশ্ন হচ্ছে, অতীতের সেই ছাত্রলীগ এবং আজকের ছাত্রলীগকে কি এককাতারে রেখে বিচার করা যাবে? অতীতের ছাত্রলীগের সঙ্গে কি আজকের ছাত্রলীগকে মিলিয়ে দেখা যাবে? যে ছাত্রলীগে এক সময়ে মেধার চর্চা ছিল, সেটি আজ পেশিশক্তির ক্রীড়নক- এমন মন্তব্য কেউ করলে সেটা কি বাড়িয়ে বলা হবে? বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে নিয়োগ বাণিজ্য পর্যন্ত যেসব অপকর্মের কথা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সব কিছুর সঙ্গেই ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। বিগত চার বছরের কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগের মানহানি হয়নি। সংগঠনটি যখন কিছুসংখ্যক নেতা বা কর্মীর কার্যকলাপে সমালোচিত হয়, যখন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই কোন্দল করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পড়ে থাকে সতীর্থ ছাত্রের লাশ; তখন মানহানি হয় না। বছর দুয়েক আগে যখন বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ওবায়দুল কাদের অবাধ্য ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তুলতে বলেছিলেন, তখন তাদের মানহানি হয়নি। ছাত্রলীগের বাড়াবাড়িতে ক্ষুব্ধ ও বিব্রত প্রধানমন্ত্রী যখন সংগঠনটির নেতাদের সাক্ষাৎ দেন না, এমনকি সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন, তখনো তাদের মানহানি হয়নি; তখন কারো বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করেনি। সর্বশেষ অবরোধের দিন বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডেও ছাত্রলীগের সম্মানহানি হয়নি বা ছাত্রলীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য কালিমালিপ্ত হয়নি। অথচ কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন ছাত্রলীগের ক্ষতির কারণ হয়েছে! তাই জেলায় জেলায় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে।
ছাত্ররাজনীতির নামে বাংলাদেশে কী চলছে, তা সবারই জানা। ছাত্রলীগকে অতীত ঐতিহ্যে ফিরিয়ে আনতে হলে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে আসতে হবে। অভ্যন্তরীণ দলাদলির অবসান ঘটিয়ে ছাত্রদের নিয়ে নতুন করে সংগঠনটি গড়তে হবে। টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজির যে কালিমা সংগঠনটির গায়ে লেগেছে তা মুছে ফেলতে হবে। মামলা করে নয়, ছাত্রলীগের মান রক্ষায় এবং সোনালি ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এটিকে কথিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও অস্ত্রধারীদের কবলমুক্ত করতে হবে।
No comments