সুন্দরবনকে বাঁচান by সুজন মজুমদার
প্রকৃতির অপরূপ আমাদের এই বাংলাদেশ। পাখির কলরব আর কুয়াশামাখা সকালের নরম বাতাস দোলা দিয়ে যায় আমাদের ধানক্ষেত। সেই অনন্য জন্মস্থান আমার কাদা-জল, নদী-সমুদ্র আর সবুজের প্রাণের বাগেরহাট। যে জেলার মংলা নদীর কূল ঘেঁষে বয়ে চলা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন।
যাকে আমরা চিহ্নিত করে থাকি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য আর অহঙ্কারের প্রতীক হিসেবে। আর সেই সুন্দরবনকে চিরদিনের জন্য ধ্বংস করার লক্ষ্যে এর অতি সনি্নকটে (সাভানা এলাকায়) বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র। সবচেয়ে চরম সত্য, আগের মতো এখন আর নেই সুন্দরবনের রূপরেখা। ১৭ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটারের চেয়েও যার আয়তন ছিল বেশি, আর সেখানে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। শুধু এখানেই শেষ নয়, এই সর্বনাশা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ছাই, তরল বর্জ্য, বিষাক্ত পারদ নির্গত হবে। আর এসব ছাই, বিষাক্ত পারদ, কয়লা বর্জ্য, ধোঁয়া এবং অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ধ্বংস করবে পরিবেশ তথা মানুষ, ঘেরের মাছ, মংলা বন্দর ও সুন্দরবনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যেসব উপজাত উৎপন্ন হয় সেগুলো হচ্ছে_ কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, পারদ, আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম কোবাল্ট, লেড, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, রেডিওটিকাইড প্রভৃতি। এগুলো পরিবেশে নির্গত হলে তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটে। পশু ও মানুষ এতে আক্রান্ত হলে বংশপরম্পরায় ক্যান্সার ও সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হয়। আমেরিকান ফুসফুস অ্যাসোসিয়েশন ১১ মার্চ ২০১১ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত দূষণকারী পদার্থের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ১৩ হাজার পর্যন্ত মানুষ মারা যায়। গবেষণায় বলা হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র খোলা অবস্থায় দৈনিক প্রায় ৩২৫০ পাউন্ড বিষাক্ত পারদ নির্গত হবে। সালফারের কারণে দ্রুত মাটির উর্বরতা শক্তি কমে গিয়ে বাড়াবে কৃষকের দরিদ্রতা ও সামাজিক বৈষম্য। এই তাপবিদ্যুতের কারণে মাত্র ২০ বছরের মধ্যে ২৩টি কারণে অস্তিত্ব হারাবে সুন্দরবন। বাগেরহাটে এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে বেশ ফলাওভাবে এর উপকার ও অপকার সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সব জেনেশুনেও আমরা যেন অসহায়।
বাগেরহাট জেলার রামপাল অতিপরিচিত একটি জনপদ। অতএব, সেখানে সর্বনাশা কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নয়। ১৯৭৭ সালের ঐতিহ্য উত্তরাধিকার স্বীকৃতি দেওয়া সুন্দরবনকে বাঁচাতে, দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে বাঁচাতে, দেশ বাঁচাতে অবশ্যই রামপালে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিহত করা দরকার।
য়রামপাল, বাগেরহাট
sujan5april@gmail.com
বাগেরহাট জেলার রামপাল অতিপরিচিত একটি জনপদ। অতএব, সেখানে সর্বনাশা কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নয়। ১৯৭৭ সালের ঐতিহ্য উত্তরাধিকার স্বীকৃতি দেওয়া সুন্দরবনকে বাঁচাতে, দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষকে বাঁচাতে, দেশ বাঁচাতে অবশ্যই রামপালে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিহত করা দরকার।
য়রামপাল, বাগেরহাট
sujan5april@gmail.com
No comments