জলের গান দূরে থাকা মেঘ by আলতাফ শাহনেওয়াজ
‘দূরে থাকা মেঘ তুই দূরে দূরে থাক...।’—অন্যসব গায়েনদের মতো নয়, নিজেদের গানের মতোই তাঁরা যেন খানিকটা দূরে থাকা মানুষ। গান নিয়ে তাঁদের বোঝাপড়াটা একটু আলাদা।
শখে গান করতে করতে যে একদিন গানের দল হয়ে উঠবেন, তাঁদের যে নিজস্ব স্টুডিও থাকবে—এসব তাঁদের কল্পনায়ও ছিল না। কিন্তু আমরা এখন মিরপুরের রূপনগরে তাঁদের নিজস্ব স্টুডিওতে। নানা রঙের ছোপে বর্ণিল ছোট্ট এই ঘরে টুংটাং বাজছে গিটার। আর সেখানে কনক আদিত্য, রাহুল আনন্দ, শরিফ, রানা, জ্যাম, জার্নাল ও সঞ্জয়—গানের দল ‘জলের গান’-এর এই সদস্যরা বসে আছেন বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে।
আপনাদের শুরুটা কীভাবে?
জলের গানের সঙ্গে আড্ডায় প্রশ্নচ্ছলে এভাবে কথা যখন শুরু হলো, তখন কনক আর রাহুলই যেন মূল কথক। বাকি সবাই শুনছেন। কেননা, জলের গান গড়ে ওঠার পেছনে চারুকলাপড়ুয়া এই দুই বন্ধুর অবদান তো কম নয়, তাঁদের দুজনের যুগলবন্দীতেই তো কত-শত গানের জন্ম! গিটারের ওপর হাত রেখে বলছিলেন রাহুল আনন্দ, ‘চারুকলায় কনক ও আমি একই ব্যাচে পড়তাম। এফ রহমান হলে থাকতাম পাশাপাশি ঘরে। দুজনই আগে থেকে একটু-আধটু গানবাজনা করতাম। সে সময় আমাদের বাদ্যযন্ত্র চেয়ার-টেবিল, ইট-কাঠ—দুর্দান্ত সেসব দিন! ওই সময় এক বন্ধুর জন্য গান লিখতে শুরু করলাম আমরা। প্রথমে গান লিখল আমাদের বন্ধু শাওন আকন্দ। ‘দূরে থাকা মেঘ’, ‘উড়ছি কেন কেউ জানে না’, ‘কাগজের নৌকা’—এ গানগুলো ওই সময়ে লেখা। মূলত শাওনের লেখা গান দিয়েই শুরু হলো আমাদের।’
একনাগাড়ে কথা বলতে বলতে এবার বন্ধু কনক আদিত্যের দিকে তাকালেন রাহুল। দুই বন্ধুর এই দৃষ্টি বিনিময়ের মধ্যে যেন কিছু একটা ছিল। কথা বলতে শুরু করলেন কনক, ‘শুরুটা হয়েছিল চারুকলায়। চারুকলার বিভিন্ন স্থানে হরহামেশাই গানের আসর বসাতাম আমরা—মনের খেয়ালে গাওয়ার মতো। একসময় দেখলাম, লোকজন আমাদের গান পছন্দ করছে। যখনই গান শুরু করি, দেখি অনুরোধ—অমুকটা গাও, তমুকটা গাও...। তত দিনে আমরা একটা দল হয়ে উঠেছি। তবে তখনো আমাদের গানের দলের কোনো নাম ছিল না! ‘জলের গান’ নাম হলো ২০০৬ সালে। সেও আরেক মজার ঘটনা।’
যোগ করলেন রাহুল, ‘স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো সুফি উৎসবে ডাক পেলাম। তখনই দরকার পড়ল নামের। আমিই নাম দিলাম—‘জলের গান।’
এরপর আপনাদের সেই জলের গানের ঢেউয়ে পাওয়া গেল বাংলা গানের কানাকড়ি—আমরা যেই এটুকু বলেছি, অমনি এবার কনকের মুখে কথা, ‘কথা ও সুর দিয়ে গানের মধ্যে আমরা আসলে চিত্রকল্প আঁকতে চেয়েছি। চারুকলায় পড়ালেখা করেছি। গানের মাধ্যমে তাই আমরা একটা ছবিও আঁকতে চাই। “সুয়া যাও যাওরে যাওরে তেপান্তর”, কিংবা “কাগজের নৌকা কেউ বানিয়েছে তা, চুপচাপ ভাসিয়েছে জলে, রেলগাড়ি ঝমাঝম, কেউ বেশি কেউ কম, নিজস্ব কথাটুকু বলে”—এসব গানের মধ্যে চিত্রকল্প আছে না?’
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংগীতযন্ত্র বাজানোর পাশাপাশি তাঁরা নিজেরা বেশ কয়েকটি যন্ত্র তৈরি করেছেন—চন্দ্রবান, তারাবান—এমন মধুর সব নাম!
‘আমাদের পূর্বপুরুষ নিজেদের গানের যন্ত্র নিজেরা বানাতেন। তাঁদের মতো করে আমরাও একটু চেষ্টা করছি। সেটা অবশ্য গানের প্রয়োজনেই।’—এ কথা বলতে বলতে আবারও বললেন রাহুল, ‘এখন গান পরিবেশন করবেন অমুক, এই চেতনা নিয়ে আমরা গান করি না, সবুজ ঘাসের ওপর বসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে গান করতেই ভালোবাসি আমরা। অর্থের বিনিময়ে সিডিতে নয়, চাই নিজেদের গানগুলোকে ভিন্ন কোনো পন্থায় মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে।’
জলের গানের সদস্যদের সব কথা, সব জল কি ফুরাল? নিজেদের গানের মতো তাঁরাও তো দূরে থাকা মেঘ। দূরের মেঘের সব কথা, সব জল কখনোই হয়তো ফুরায় না।
আপনাদের শুরুটা কীভাবে?
জলের গানের সঙ্গে আড্ডায় প্রশ্নচ্ছলে এভাবে কথা যখন শুরু হলো, তখন কনক আর রাহুলই যেন মূল কথক। বাকি সবাই শুনছেন। কেননা, জলের গান গড়ে ওঠার পেছনে চারুকলাপড়ুয়া এই দুই বন্ধুর অবদান তো কম নয়, তাঁদের দুজনের যুগলবন্দীতেই তো কত-শত গানের জন্ম! গিটারের ওপর হাত রেখে বলছিলেন রাহুল আনন্দ, ‘চারুকলায় কনক ও আমি একই ব্যাচে পড়তাম। এফ রহমান হলে থাকতাম পাশাপাশি ঘরে। দুজনই আগে থেকে একটু-আধটু গানবাজনা করতাম। সে সময় আমাদের বাদ্যযন্ত্র চেয়ার-টেবিল, ইট-কাঠ—দুর্দান্ত সেসব দিন! ওই সময় এক বন্ধুর জন্য গান লিখতে শুরু করলাম আমরা। প্রথমে গান লিখল আমাদের বন্ধু শাওন আকন্দ। ‘দূরে থাকা মেঘ’, ‘উড়ছি কেন কেউ জানে না’, ‘কাগজের নৌকা’—এ গানগুলো ওই সময়ে লেখা। মূলত শাওনের লেখা গান দিয়েই শুরু হলো আমাদের।’
একনাগাড়ে কথা বলতে বলতে এবার বন্ধু কনক আদিত্যের দিকে তাকালেন রাহুল। দুই বন্ধুর এই দৃষ্টি বিনিময়ের মধ্যে যেন কিছু একটা ছিল। কথা বলতে শুরু করলেন কনক, ‘শুরুটা হয়েছিল চারুকলায়। চারুকলার বিভিন্ন স্থানে হরহামেশাই গানের আসর বসাতাম আমরা—মনের খেয়ালে গাওয়ার মতো। একসময় দেখলাম, লোকজন আমাদের গান পছন্দ করছে। যখনই গান শুরু করি, দেখি অনুরোধ—অমুকটা গাও, তমুকটা গাও...। তত দিনে আমরা একটা দল হয়ে উঠেছি। তবে তখনো আমাদের গানের দলের কোনো নাম ছিল না! ‘জলের গান’ নাম হলো ২০০৬ সালে। সেও আরেক মজার ঘটনা।’
যোগ করলেন রাহুল, ‘স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো সুফি উৎসবে ডাক পেলাম। তখনই দরকার পড়ল নামের। আমিই নাম দিলাম—‘জলের গান।’
এরপর আপনাদের সেই জলের গানের ঢেউয়ে পাওয়া গেল বাংলা গানের কানাকড়ি—আমরা যেই এটুকু বলেছি, অমনি এবার কনকের মুখে কথা, ‘কথা ও সুর দিয়ে গানের মধ্যে আমরা আসলে চিত্রকল্প আঁকতে চেয়েছি। চারুকলায় পড়ালেখা করেছি। গানের মাধ্যমে তাই আমরা একটা ছবিও আঁকতে চাই। “সুয়া যাও যাওরে যাওরে তেপান্তর”, কিংবা “কাগজের নৌকা কেউ বানিয়েছে তা, চুপচাপ ভাসিয়েছে জলে, রেলগাড়ি ঝমাঝম, কেউ বেশি কেউ কম, নিজস্ব কথাটুকু বলে”—এসব গানের মধ্যে চিত্রকল্প আছে না?’
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সংগীতযন্ত্র বাজানোর পাশাপাশি তাঁরা নিজেরা বেশ কয়েকটি যন্ত্র তৈরি করেছেন—চন্দ্রবান, তারাবান—এমন মধুর সব নাম!
‘আমাদের পূর্বপুরুষ নিজেদের গানের যন্ত্র নিজেরা বানাতেন। তাঁদের মতো করে আমরাও একটু চেষ্টা করছি। সেটা অবশ্য গানের প্রয়োজনেই।’—এ কথা বলতে বলতে আবারও বললেন রাহুল, ‘এখন গান পরিবেশন করবেন অমুক, এই চেতনা নিয়ে আমরা গান করি না, সবুজ ঘাসের ওপর বসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে গান করতেই ভালোবাসি আমরা। অর্থের বিনিময়ে সিডিতে নয়, চাই নিজেদের গানগুলোকে ভিন্ন কোনো পন্থায় মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে।’
জলের গানের সদস্যদের সব কথা, সব জল কি ফুরাল? নিজেদের গানের মতো তাঁরাও তো দূরে থাকা মেঘ। দূরের মেঘের সব কথা, সব জল কখনোই হয়তো ফুরায় না।
No comments