চরাচর-আজ যশোর মুক্ত দিবস by ফখরে আলম
আজ ৬ ডিসেম্বর। যশোর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশের প্রথম জেলা যশোরের আকাশে স্বাধীনতার সূর্য ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় মিত্রবাহিনী আর মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা ও কুষ্টিয়া জেলাকে হানাদারমুক্ত করে।
যশোর জয়ের উষ্ণতায় ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে লাল-সবুজের বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। যশোর মুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ সকালে বিজয় শোভাযাত্রা বের করা হবে।
যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছিল পাকিস্তানিদের অন্যতম সুরক্ষিত দুর্গ। এই দুর্গ রক্ষার জন্য পাকিস্তানিরা বিভিন্ন রণকৌশল গ্রহণ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেনি। অস্ত্র, গোলা-বারুদ, ভাত-রুটি, পোশাক-আশাক সব ফেলে রেখে ভীরু কাপুরুষের মতো যশোর ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা। একাত্তরের নভেম্বরেই পাকিস্তানিদের পালানোর পথ তৈরিতে আটঘাট বেঁধে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মিত্রবাহিনী আর বীর যোদ্ধার দল। ১৩ নভেম্বর মিত্রবাহিনী বয়রা সীমান্ত হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে পড়ে। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী তা জানতে পারেনি। ১৯ নভেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী এ খবর জানতে পেরে ২২ ও ৩৮ ফ্রন্টিয়ার ফোর্সকে আক্রমণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে পিছু হটে যায় তারা। পরবর্তী সময়ে ৬ পাঞ্জাব, ১২ পাঞ্জাব, ২১ পাঞ্জাব ও ২২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স পাকিস্তানি নবম ডিভিশনের সব শক্তি নিয়ে চৌগাছার জগন্নাথপুর (বর্তমান নাম মুক্তিনগর) রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্যদিকে মিত্রবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন, চতুর্থ মাউনটেন ডিভিশন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। ২১ নভেম্বরের যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ছয়টি ট্যাংক মিত্রবাহিনী ধ্বংস করে। ২২ নভেম্বর আরো সাতটি ট্যাংক ধ্বংস করা হয়। ওই দিন দুপুরে হানাদার বাহিনী বিমান হামলা চালায়। মিত্রবাহিনী তিনটি স্যাভার জেট ভূপাতিত করে। একপর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি যুদ্ধ। ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধে সামরিক-বেসামরিক মিলে কমপক্ষে এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জগন্নাথপুরের যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনী কাগুজে বাঘে পরিণত হয়। ৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী ক্যান্টনমেন্ট দুর্গের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। চূড়ান্ত আক্রমণের লক্ষ্যে ক্যান্টনমেন্টকে টার্গেট করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ৬ ডিসেম্বর বিকেলে হানাদার বাহিনী যশোর ক্যান্টনমেন্টের ব্রিগেড সদর দপ্তর ছেড়ে দু্ই ভাগে ভাগ হয়ে ঢাকা ও খুলনার দিকে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে মিত্রবাহিনী কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই যশোর শহরে প্রবেশ করে। ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে দেখা যায়, পাকিস্তানের একজন সেনাও নেই। রান্না করা খাবার টেবিলে পড়ে আছে। পড়ে আছে সামরিক পোশাক, হানাদারদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গোলাবারুদ। একটি গুলি খরচ না করেও যৌথ বাহিনী যশোরে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেয়। হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে আসে। 'জয় বাংলা, বাংলার জয়' স্লোগানে কেঁপে উঠে যশোরের আকাশ-বাতাস। ৬ ডিসেম্বর দেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা হিসেবে যশোরের বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
ফখরে আলম
যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছিল পাকিস্তানিদের অন্যতম সুরক্ষিত দুর্গ। এই দুর্গ রক্ষার জন্য পাকিস্তানিরা বিভিন্ন রণকৌশল গ্রহণ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেনি। অস্ত্র, গোলা-বারুদ, ভাত-রুটি, পোশাক-আশাক সব ফেলে রেখে ভীরু কাপুরুষের মতো যশোর ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা। একাত্তরের নভেম্বরেই পাকিস্তানিদের পালানোর পথ তৈরিতে আটঘাট বেঁধে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মিত্রবাহিনী আর বীর যোদ্ধার দল। ১৩ নভেম্বর মিত্রবাহিনী বয়রা সীমান্ত হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে পড়ে। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী তা জানতে পারেনি। ১৯ নভেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী এ খবর জানতে পেরে ২২ ও ৩৮ ফ্রন্টিয়ার ফোর্সকে আক্রমণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে পিছু হটে যায় তারা। পরবর্তী সময়ে ৬ পাঞ্জাব, ১২ পাঞ্জাব, ২১ পাঞ্জাব ও ২২ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স পাকিস্তানি নবম ডিভিশনের সব শক্তি নিয়ে চৌগাছার জগন্নাথপুর (বর্তমান নাম মুক্তিনগর) রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্যদিকে মিত্রবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন, চতুর্থ মাউনটেন ডিভিশন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। ২১ নভেম্বরের যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ছয়টি ট্যাংক মিত্রবাহিনী ধ্বংস করে। ২২ নভেম্বর আরো সাতটি ট্যাংক ধ্বংস করা হয়। ওই দিন দুপুরে হানাদার বাহিনী বিমান হামলা চালায়। মিত্রবাহিনী তিনটি স্যাভার জেট ভূপাতিত করে। একপর্যায়ে শুরু হয় হাতাহাতি যুদ্ধ। ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধে সামরিক-বেসামরিক মিলে কমপক্ষে এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জগন্নাথপুরের যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনী কাগুজে বাঘে পরিণত হয়। ৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী ক্যান্টনমেন্ট দুর্গের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। চূড়ান্ত আক্রমণের লক্ষ্যে ক্যান্টনমেন্টকে টার্গেট করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ৬ ডিসেম্বর বিকেলে হানাদার বাহিনী যশোর ক্যান্টনমেন্টের ব্রিগেড সদর দপ্তর ছেড়ে দু্ই ভাগে ভাগ হয়ে ঢাকা ও খুলনার দিকে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে মিত্রবাহিনী কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই যশোর শহরে প্রবেশ করে। ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে দেখা যায়, পাকিস্তানের একজন সেনাও নেই। রান্না করা খাবার টেবিলে পড়ে আছে। পড়ে আছে সামরিক পোশাক, হানাদারদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গোলাবারুদ। একটি গুলি খরচ না করেও যৌথ বাহিনী যশোরে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেয়। হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে আসে। 'জয় বাংলা, বাংলার জয়' স্লোগানে কেঁপে উঠে যশোরের আকাশ-বাতাস। ৬ ডিসেম্বর দেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা হিসেবে যশোরের বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
ফখরে আলম
No comments