সমঝোতা হয়নি ফিরে গেছে বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধি দল
দুদকের সঙ্গে সমঝোতা হয়নি। ফিরে গেছে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। দু’দিনের আলোচনার ফল শূন্য। গতকাল দুদকের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে প্রতিনিধি দলের প্রধান ওকাম্পো সাংবাদিকদের কাছে শুধু বললেন, খোলামেলা আলোচনা হয়েছে, আমরা আজ চলে যাচ্ছি।
এর কিছুক্ষণ পর দুদক চেয়ারম্যান বললেন, আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে তা বলা যাবে না। আলোচনা সফল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কোন মন্তব্য করেননি। সূত্র জানায়, অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর সেটা নিয়ে আলোচনায় বসে কমিশন।
ওই আলোচনায় সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে আসামি করা না করা নিয়ে বিরোধ বাধে দুদকের ভেতর। শেষ পর্যন্ত ৪ঠা ডিসেম্বর বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনাকালে দুদক আবুল হোসেনকে বাদ দিয়ে মামলা নিয়ে আলোচনা করে। এতে দ্বিমত পোষণ করে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। ওই অমতের মধ্য দিয়েই বৈঠক শেষ হয়। গতকাল আবার এই বিষয়ে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসে দুদক। সেখানেও সৈয়দ আবুল হোসেনকে বাদ দিয়ে মামলা করার যুক্তি তুলে ধরে দুদক, আর এতে আপত্তি তোলে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। গতকাল বিকাল ৩টা ৪০ মিনেটে দুদক কার্যালয়ে আসে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। স্বল্প সময় পর বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে তারা বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি এ্যালেন গোল্ডস্টেইন বলেন, আলোচনা চলছে। আমরা আবার এখানে ফিরো আসবো। ওই সময় তারা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসায় যান। সেখান থেকে ফিরে আসেন ৬টা ৩৫ মিনিটে। বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলের তিন সদস্য আবার দুদকে এলেও ফিরে আসেননি আবাসিক প্রতিনিধি এ্যালেন গোল্ডস্টেইন। এবার মাত্র ১০ মিনিট দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে আসেন বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দলের তিন সদস্য। যাওয়ার সময় প্রতিনিধি দলের প্রধান গাব্রিয়েল ওকাম্পো সাংবাদিকদের বলেন, খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা চলে যাচ্ছি। তাকে আরও প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। আলোচনা শেষে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, ওরা ওদের ভিউ থেকে কথা বলেছে। আমরা আমাদের ভিউ থেকে কথা বলেছি। অনেক আলোচনা হয়েছে, তার অনেক কিছুই এখন বলা যাচ্ছে না। তারা বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল, তাদের কথা আমরা শুনবো। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো আমাদের আইনে আমাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক। আইনি ব্যবস্থা নিতে কয়েকদিন দেরি হলে তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।
সূত্রমতে তিনটি বিষয়ে বিশ্বব্যাংক প্যানেলের সঙ্গে দ্বিমত হয় দুদকের। এক, ড. মশিউর রহমানকে আসামি করা নিয়ে, দুই. সৈয়দ আবুল হোসেনকে আসামি করা নিয়ে ও কানাডিয়ান নাগরিক কেভেন ওয়ালিস, রমেশ সাহা ও ইসমাইল হোসেনকে আসামি করা নিয়ে। বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল যুক্তি তুলে দেখায় ড. মশিউর রহমান ছিলেন পদ্মা সেতুর সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। এখানে ষড়যন্ত্র হলে তিনি দায় এড়াতে পারেন না। দ্বিতীয়ত, সৈয়দ আবুল হোসেন ওই দপ্তরের মন্ত্রী, তিনি সবকিছু জানেন। তাকে বাদ দেয়া ঠিক হবে না। অন্যদিকে দুদক যে আসামির তালিকা তৈরি করে বিশ্বব্যাংক প্যানেলের সঙ্গে আলোচনায় বসে সেখানে কানাডিয়ান নাগরিক এসএনসি লাভালীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভেন ওয়ালিস ও সে দেশের নাগরিক রমেশ সাহা ও ইসমাইলকে আসামি রাখা হয়। এখানে বিশ্বব্যাংক প্রশ্ন তোলে- তারা বিদেশী নাগরিক, আপনাদের টেরিটরির বাইরের লোক। তাছাড়া এই মামলার আসামি হয়ে তারা কানাডিয়ান আদালতে বিচারের সম্মুখীন, একই অপরাধে একই লোকের দুই বার বিচার হতে পারে না। দুদকের পক্ষে পাল্টা বলা হয় ড. মশিউর রহমান পদ্মা সেতুর কোন কিছুর সঙ্গে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। একইভাবে বলা হয়, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধেও কোন দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রমাণ ছাড়া মামলা করে কি লাভ? তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে হেরে যাবে দুদক। সূত্রমতে দুদকের ওই যুক্তির সঙ্গে একমত হতে পারেনি প্রতিনিধি দল। এ অবস্থায় গতকাল দু’দফায় অতি স্বল্প সময়ে দুদকের সঙ্গে বসার পর বৈঠক ত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে দুদক তদ্বির শুরু করে পদ্মা সেতুতে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে। গত ৪ঠা ডিসেম্বর তাদের অনুসন্ধান শেষ হলে প্রতিবেদন জমা দেয়। এর আগে গত বছর জুন মাসে বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে দুর্নীতির বিষয়ে নালিশ জানায়। পরে তারা দুর্নীতির কাগজপত্র পাঠায় দুদকের কাছে। এর মাঝে জুন মাসেই বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে। পরে শর্তসাপেক্ষে তারা টাকা দিতে রাজি হয়, তবে এ পর্যায়ে দুদক আবার অনুসন্ধান শুরু করে। গতকাল তার অবসান ঘটলো পদ্মার অর্থায়নের চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে।
সূত্রমতে তিনটি বিষয়ে বিশ্বব্যাংক প্যানেলের সঙ্গে দ্বিমত হয় দুদকের। এক, ড. মশিউর রহমানকে আসামি করা নিয়ে, দুই. সৈয়দ আবুল হোসেনকে আসামি করা নিয়ে ও কানাডিয়ান নাগরিক কেভেন ওয়ালিস, রমেশ সাহা ও ইসমাইল হোসেনকে আসামি করা নিয়ে। বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল যুক্তি তুলে দেখায় ড. মশিউর রহমান ছিলেন পদ্মা সেতুর সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। এখানে ষড়যন্ত্র হলে তিনি দায় এড়াতে পারেন না। দ্বিতীয়ত, সৈয়দ আবুল হোসেন ওই দপ্তরের মন্ত্রী, তিনি সবকিছু জানেন। তাকে বাদ দেয়া ঠিক হবে না। অন্যদিকে দুদক যে আসামির তালিকা তৈরি করে বিশ্বব্যাংক প্যানেলের সঙ্গে আলোচনায় বসে সেখানে কানাডিয়ান নাগরিক এসএনসি লাভালীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভেন ওয়ালিস ও সে দেশের নাগরিক রমেশ সাহা ও ইসমাইলকে আসামি রাখা হয়। এখানে বিশ্বব্যাংক প্রশ্ন তোলে- তারা বিদেশী নাগরিক, আপনাদের টেরিটরির বাইরের লোক। তাছাড়া এই মামলার আসামি হয়ে তারা কানাডিয়ান আদালতে বিচারের সম্মুখীন, একই অপরাধে একই লোকের দুই বার বিচার হতে পারে না। দুদকের পক্ষে পাল্টা বলা হয় ড. মশিউর রহমান পদ্মা সেতুর কোন কিছুর সঙ্গে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। একইভাবে বলা হয়, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধেও কোন দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রমাণ ছাড়া মামলা করে কি লাভ? তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে হেরে যাবে দুদক। সূত্রমতে দুদকের ওই যুক্তির সঙ্গে একমত হতে পারেনি প্রতিনিধি দল। এ অবস্থায় গতকাল দু’দফায় অতি স্বল্প সময়ে দুদকের সঙ্গে বসার পর বৈঠক ত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি দল। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে দুদক তদ্বির শুরু করে পদ্মা সেতুতে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে। গত ৪ঠা ডিসেম্বর তাদের অনুসন্ধান শেষ হলে প্রতিবেদন জমা দেয়। এর আগে গত বছর জুন মাসে বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে দুর্নীতির বিষয়ে নালিশ জানায়। পরে তারা দুর্নীতির কাগজপত্র পাঠায় দুদকের কাছে। এর মাঝে জুন মাসেই বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে। পরে শর্তসাপেক্ষে তারা টাকা দিতে রাজি হয়, তবে এ পর্যায়ে দুদক আবার অনুসন্ধান শুরু করে। গতকাল তার অবসান ঘটলো পদ্মার অর্থায়নের চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে।
No comments