বিয়ের পর রিমান্ডে ইমন by মবিনুল ইসলাম
জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমনকে একদিনের রিমান্ডে নিয়েছে রমনা থানাপুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে নারী নির্যাতন ও মাদক সংক্রান্ত দু’টি পৃথক মামলায় আদালতে হাজির করা হয় ইমনকে।
নারী নির্যাতন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজী শরীফুল ইসলাম ইমনকে ৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে আবেদন করেন।ইমনের পক্ষে মামলার শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গাজী শাহ আলম ও মাহবুব হোসেন জয়। আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, “মামলার বাদী জিনাত কবির ও আসামি ইমনের বিয়ে আগেই হয়েছিল। কিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রি না হওয়ায় জিনাত ক্ষুব্ধ হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। বাদী আদালতে উপস্থিত আছেন, তার জামিনে আপত্তি নেই।”
আসামিকে এ সময় রিমান্ডে নেওয়ার বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন জানান আইনজীবীদ্বয়। বিয়ের কাবিননামা ও বিবাহের সমর্থনে করা হলফনামাও আদালতে দাখিল করেন তারা।
এ সময় জিনাত কবিরও আদালতে হাজির ছিলেন। তিনি আদালতে বলেন, ‘“আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকেই মামলাটি হয়েছে। আমরা বিষয়টি কম্প্রোমাইজ করে ফেলেছি। তার জামিন হলে আমার কোনো আপত্তি নাই।
জিনাতের আইনজীবী নুর ইসলাম খানও ‘ইমনের জামিনে আপত্তি নাই’ মর্মে আদালতকে জানান।
শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম ইমনকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে দু’দিনের মধ্যে জেলগেটে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে পুলিশকে অনুমতি দেন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পরই মাদকের মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট এমএ সালামের আদালতে নেওয়া হয় ইমনকে। মাদকের মামলায় ইমনকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে একদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার দুপুর ১টায় ধর্ষণের অভিযোগে রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন ইমনের মেয়ে বন্ধু জিনাত কবির।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পুলিশের হেফাজতে জিনাত ও ইমনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়।বিয়েতে শওকত আলী ইমনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ইমনের বড় ভাই সুমন এবং গীতিকার-সাংবাদিক কবির বকুল।
এ প্রসঙ্গে জিনাত বাংলানিউজকে জানান, ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে তারা বিয়ে করেছেন। জিনাত বলেন ‘“যেহেতু সে ভুল বুঝতে পেরেছে, আমাকে বিয়ে করে আমার সম্মান দিয়েছে তাই আমি এখন মামলা প্রত্যাহার করে নেবো।‘
‘মামলা থেকে বাঁচার জন্যই ইমন আপনাকে বিয়ে করেছে কি?’-- জানতে চাইলে জিনাত বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘হতেও পারে। তবে সেসব নিয়ে আমি এখন ভাবছি না। আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমার উচিত এখন ইমনকে ‘সেভ’ করা।’’
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রমনা থানার ভেতরে শওকত আলী ইমন ও তার প্রেমিকা জিনাত কবীরের বিয়ে পড়ানো হয়, আসামিপক্ষে এমন দাবি করা হলেও আদালতে দাখিল করা কাবিননামায় বিয়ে পড়ানোর স্থান হিসাবে লেখা হয়েছে ১০ নম্বর কোর্ট হাউজ স্ট্রিট। যা কিনা ঢাকা জজকোর্টের পার্শ্ববর্তী কাজী অফিস। সাক্ষী হিসাবে জনৈক মো. আলী ও মঈন রেজা এবং মেয়ের পক্ষের অভিভাবক হিসাবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষর করেন।
কাবিননামায় ইমনের জন্মতারিখ দেওয়া হয়েছে ৩ মার্চ, ১৯৭১ এবং জিনাতের জন্মতারিখ দেয়া হয়েছে ২১ মে, ১৯৮৭।
উল্লেখ্য, বুধবার জিনাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রমনা থানার ওসি শাহ আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নিজের বাসা থেকে ইমনকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে ইয়াবা ও ৬ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ইমনের নামে নারী নির্যাতন ও মাদক সংক্রান্ত ধারায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
No comments