বাচ্চু ও তাঁর সহযোগীদের নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী রঞ্জিত
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী রঞ্জিত কুমার নাথ ওরফে বাবু নাথ গতকাল মঙ্গলবার জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে বাচ্চু (আবুল কালাম আযাদ) ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে নির্যাতন করেন। মুজাহিদকে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখেছেন।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ রঞ্জিত এই জবানবন্দি দেন। তিনি মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সপ্তম ও আযাদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পঞ্চম সাক্ষী। আসামির কাঠগড়ায় মুজাহিদের উপস্থিতিতে রঞ্জিতের জবানবন্দি নেন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোকলেছুর রহমান। আযাদের বিরুদ্ধে মামলায় তাঁর জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাহিদুর রহমান।
সাক্ষী রঞ্জিত বলেন, তাঁর বাড়ি ফরিদপুরের সদর থানার গোয়ালচামটে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। একাত্তরের ২১ এপ্রিল ফরিদপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢুকলে তিনি শহরতলিতে আশ্রয় নেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজখবর নিতে শহরে যান। তিনি পূর্ব খাবাশপুরে হবি মাতব্বরের দোকানের সামনে গেলে হবি তাঁকে মুক্তিবাহিনী হিসেবে চিহ্নিত করে ধরে আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আবুল মিয়া ও কালু বিহারির হাতে তুলে দেন। তাঁরা তাঁকে মারধর করে ফরিদপুর সার্কিট হাউসে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা কোরাইশ, মুজাহিদসহ অনেক রাজাকার বৈঠক করছিলেন। মুজাহিদ বাচ্চুকে ইশারা করে তাঁকে সরিয়ে নিতে বলেন। তাঁকে চোখ বেঁধে বাচ্চু, আবুল ও কালু ফরিদপুর জিলা স্কুলে নিয়ে তালগাছের গোড়ায় বসিয়ে রাখেন। কয়েক মিনিট পর সেখানে একটি গাড়ি আসে। গাড়ি থেকে একজন উর্দুতে তাঁকে গুলি না করে বিহারিদের হাতে তুলে দিতে ও ভোরে জবাই করতে বলে।
সাক্ষী বলেন, পরে তাঁকে বিহারি কলোনি মোল্লা বাড়ি রোডে বছিরের দোকানের পাশে কদমগাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে ঘণ্টা খানেক মারধর করে। এতে তাঁর একটি দাঁত ও নাকের হাড় ভেঙে যায়। সেখান থেকে তাঁকে রশিদ মিয়ার একতলা বাড়ির একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। তখন জ্ঞান ছিল না। সন্ধ্যায় তাঁর জ্ঞান ফিরলে দলু মিয়া নামের একজন জানালা দিয়ে খাবার দেন। রাত দুইটার দিকে তিনি জানালার শিক ভেঙে পালিয়ে ফুলবাড়িয়া যান। সেখান থেকে বন্ধুরা তাঁকে নগরকান্দার একটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা দেন।
রঞ্জিত বলেন, ২১ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ফরিদপুরের রাজবাড়ী মোড়ে অবস্থানকালে মুজাহিদ ও বাচ্চু রাজাকার তাঁদের অভ্যর্থনা জানিয়ে জগৎবন্ধুর আঙিনায় নিয়ে আসেন। সেখানে মুজাহিদ ও বাচ্চুর উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনারা আট সাধুকে হত্যা করে। তিনি জানতে পারেন ফরিদপুর স্টেডিয়ামে পাকিস্তানি বাহিনী এবং বাচ্চু রাজাকার ও তাঁর সহযোগীরা মিলে স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষদের নির্যাতন করে পাশের পুকুরে জবাই করে ফেলে দিত। ওই স্থানটি এখন বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত।
জবানবন্দি শেষে মুজাহিদের পক্ষের আইনজীবী মুন্সি আহসান কবির সাক্ষীকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এই মামলার কার্যক্রম আজ বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল।
আযাদের বিরুদ্ধে মামলায় জবানবন্দি শেষে রঞ্জিতকে জেরা করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস শুকুর খান। বাচ্চুকে চিনতেন—আইনজীবীর এ প্রশ্নে সাক্ষী বলেন, ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না, তবে তাঁকে নির্যাতনের সময় তিনি বাচ্চুর পরিচয় জানেন। মুজাহিদ কি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সংঘের সভাপতি ও আলবদর নেতা ছিলেন? জবাবে সাক্ষী বলেন, হ্যাঁ।
জেরা শেষে এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আজ দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ রঞ্জিত এই জবানবন্দি দেন। তিনি মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সপ্তম ও আযাদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পঞ্চম সাক্ষী। আসামির কাঠগড়ায় মুজাহিদের উপস্থিতিতে রঞ্জিতের জবানবন্দি নেন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোকলেছুর রহমান। আযাদের বিরুদ্ধে মামলায় তাঁর জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাহিদুর রহমান।
সাক্ষী রঞ্জিত বলেন, তাঁর বাড়ি ফরিদপুরের সদর থানার গোয়ালচামটে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। একাত্তরের ২১ এপ্রিল ফরিদপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢুকলে তিনি শহরতলিতে আশ্রয় নেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজখবর নিতে শহরে যান। তিনি পূর্ব খাবাশপুরে হবি মাতব্বরের দোকানের সামনে গেলে হবি তাঁকে মুক্তিবাহিনী হিসেবে চিহ্নিত করে ধরে আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আবুল মিয়া ও কালু বিহারির হাতে তুলে দেন। তাঁরা তাঁকে মারধর করে ফরিদপুর সার্কিট হাউসে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা কোরাইশ, মুজাহিদসহ অনেক রাজাকার বৈঠক করছিলেন। মুজাহিদ বাচ্চুকে ইশারা করে তাঁকে সরিয়ে নিতে বলেন। তাঁকে চোখ বেঁধে বাচ্চু, আবুল ও কালু ফরিদপুর জিলা স্কুলে নিয়ে তালগাছের গোড়ায় বসিয়ে রাখেন। কয়েক মিনিট পর সেখানে একটি গাড়ি আসে। গাড়ি থেকে একজন উর্দুতে তাঁকে গুলি না করে বিহারিদের হাতে তুলে দিতে ও ভোরে জবাই করতে বলে।
সাক্ষী বলেন, পরে তাঁকে বিহারি কলোনি মোল্লা বাড়ি রোডে বছিরের দোকানের পাশে কদমগাছে উল্টো করে ঝুলিয়ে ঘণ্টা খানেক মারধর করে। এতে তাঁর একটি দাঁত ও নাকের হাড় ভেঙে যায়। সেখান থেকে তাঁকে রশিদ মিয়ার একতলা বাড়ির একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। তখন জ্ঞান ছিল না। সন্ধ্যায় তাঁর জ্ঞান ফিরলে দলু মিয়া নামের একজন জানালা দিয়ে খাবার দেন। রাত দুইটার দিকে তিনি জানালার শিক ভেঙে পালিয়ে ফুলবাড়িয়া যান। সেখান থেকে বন্ধুরা তাঁকে নগরকান্দার একটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা দেন।
রঞ্জিত বলেন, ২১ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ফরিদপুরের রাজবাড়ী মোড়ে অবস্থানকালে মুজাহিদ ও বাচ্চু রাজাকার তাঁদের অভ্যর্থনা জানিয়ে জগৎবন্ধুর আঙিনায় নিয়ে আসেন। সেখানে মুজাহিদ ও বাচ্চুর উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনারা আট সাধুকে হত্যা করে। তিনি জানতে পারেন ফরিদপুর স্টেডিয়ামে পাকিস্তানি বাহিনী এবং বাচ্চু রাজাকার ও তাঁর সহযোগীরা মিলে স্বাধীনতাকামী নারী-পুরুষদের নির্যাতন করে পাশের পুকুরে জবাই করে ফেলে দিত। ওই স্থানটি এখন বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত।
জবানবন্দি শেষে মুজাহিদের পক্ষের আইনজীবী মুন্সি আহসান কবির সাক্ষীকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এই মামলার কার্যক্রম আজ বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল।
আযাদের বিরুদ্ধে মামলায় জবানবন্দি শেষে রঞ্জিতকে জেরা করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস শুকুর খান। বাচ্চুকে চিনতেন—আইনজীবীর এ প্রশ্নে সাক্ষী বলেন, ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না, তবে তাঁকে নির্যাতনের সময় তিনি বাচ্চুর পরিচয় জানেন। মুজাহিদ কি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সংঘের সভাপতি ও আলবদর নেতা ছিলেন? জবাবে সাক্ষী বলেন, হ্যাঁ।
জেরা শেষে এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আজ দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
No comments