অনন্ত বেদনায় স্বজনহারারা by আশীষ-উর-রহমান
রিক্তা বানুর বয়স আট বছর। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। মায়ের সঙ্গে তার একটি খুব সুন্দর ছবি আছে। মা তাকে জড়িয়ে ধরে আছেন। লেমিনেটিং করা ছবিটি সে পেয়েছে মা-বাবা যে টিনের ঘরে ভাড়া থাকতেন, তার দেয়ালে। ঘরে মা-বাবার কাপড়চোপড়, থালা-বাসনসহ টুকিটাকি সবই আছে।
কেবল মা-বাবা নেই। আর আসবেনও না। ছবিটি বুকে চেপে ধরে রিক্তা ডুকরে উঠছিল, ‘মা কণ্ঠে গেলা, বাবা তুমি কণ্ঠে গেলা?’
রিক্তার প্রশ্নের উত্তর জানা ছিল সবারই। কিন্তু বলার মতো বাকশক্তি যেন ছিল না কারোই। রিক্তার মতোই চোখ দিয়ে তপ্ত অশ্রুধারা নেমে এসেছিল তাকে ঘিরে থাকা অনেকেরই।
গতকাল মঙ্গলবার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসের সামনে রিক্তাকে নিয়ে এসেছিলেন তার জ্যাঠা হাফিজুর রহমান। রংপুরের মিঠাপুকুরের মীর্জাপুরে তাঁদের বাড়ি। রিক্তা দাদা-দাদির কাছেই থাকত। গত সোমবার রিক্তার মা আনোয়ারা বেগমের (২৫) লাশ তাঁদের বাড়িতে নেওয়া হয়। দাফনের পর রাতেই রিক্তাকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দিয়েছেন তিনি। কারণ, ওর বাবা হাবিবুর রহমানকে (৩০) পাওয়া যাচ্ছে না। কারখানার পাশেই টিনের একটি ঘর ভাড়া করে থাকতেন। সেখানেই রিক্তাকে নিয়ে এসেছেন হাফিজুর।
রিক্তার ফুপু মঞ্জুআরা বেগমও আশুলিয়ায় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করেন। সোমবার ব্যাগে ভরা মৃতদেহগুলো খুঁজতে গিয়ে তিনি আনোয়ারা বেগমকে শনাক্ত করেন। ‘ভাবির শইলের এক পাশ ভালো আছিল। তার নাকের ফুল আর গায়ের জামা দেইখা চিনতে পারছি। ভাইরে পাই নাই’—বললেন তিনি।
অগ্নিকাণ্ডের পরপরই রিক্তার বাবা হাবিবুর রহমান ফোন করেছিলেন মঞ্জুআরার স্বামী ওয়াজেদ আলীকে। তিনি বলছিলেন, ‘হাবিব আমাক কলো গারমেনসে আগুন লাগিছে। হামারা ছুটি আলাম।’ ওয়াজেদ বললেন, ‘কিন্তুক পরে অনেকবার ফোন করিও আর তারে পালাম না।’
কোরবানির ঈদের সময় হাবিবুর-আনোয়ারা বাড়ি গিয়েছিলেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে সেই রিক্তার শেষ দেখা। সামনে ওর দীর্ঘ জীবন। বুক ভার হয়ে থাকবে সান্ত্বনাহীন, নিরাময়হীন অনন্ত বেদনায়।
জ্বলেছে ক্ষোভের আগুন: গতকাল সকাল থেকেই স্রোতের মতো মানুষ আসছিল নিশ্চিন্তপুরের সরু পথটি ধরে। পথের দুই ধারে গড়ে উঠেছে অনেক পোশাক তৈরির কারখানা। সেগুলোর দরজা বন্ধ। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা। উড়ছে কালো পতাকাও। জাতীয় শোক দিবস। কারখানা বন্ধ থাকায় হাজার হাজার শ্রমিক কালো ব্যাজ পরে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে আসছিলেন তাজরীন ফ্যাশনসের দিকে। কারখানাটির পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ভবনটি ঘিরে অগুনতি মানুষ। পুলিশ ভবনটি পাহারা দিয়ে রেখেছে।
দরজা-জানালা ভাঙা আধপোড়া নয়তলা ভবনটির ফটকে কালো পতাকাটি কেঁপে কেঁপে উঠছে মাঝে মাঝে—ভাষায় প্রকাশ করা যায় না এমন এক বিপন্নবোধের প্রতীক হয়ে।
পোড়া কটু গন্ধে ভারী হয়ে আছে এলাকার বাতাস। তার সঙ্গে মিশেছে স্বজনহারাদের কান্না-ফোঁপানি-দীর্ঘশ্বাস। চাপা গুঞ্জন। বিক্ষুব্ধ কণ্ঠের স্লোগান।
যেন পুরাণের জতুগৃহ: মহাভারতে আছে, পাণ্ডবদের পুড়িয়ে মারার জন্য বারুদ দিয়ে একটি ঘর—যাকে বলে ‘জতুগৃহ’ তৈরি করেছিল কৌরবেরা। গতকাল তাজরীন ফ্যাশনসের পোড়া ভবনটির ভেতরে গিয়ে জতুগৃহের ছবিটিই যেন বাস্তব হয়ে উঠল চোখে। নয়তলা ভবনটির নিচতলায় ছিল গুদাম। সেখানে সুতা আর কৃত্রিম তন্তুর কাপড় বোঝাই। শোনা যাচ্ছে, এখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। বারুদের মতোই এসব দাহ্য পদার্থ দ্রুত জ্বলে উঠে ওপরের তলাগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। উত্তাপ এমন হয়েছিল যে দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা পর্যন্ত খসে গেছে। দোতলা, তিনতলা ও চারতলায় পৌঁছেছিল আগুনের লেলিহান জিভ। মেঝে ও দেয়ালের টাইলস খসে পড়েছে। ভেতরে বিকট চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেশিন রাখার লোহার দগ্ধ কাঠামোগুলো। মেঝে থকথক করছে দমকলের দেওয়া পানিতে মিশে থাকা ছাই-কয়লা-রক্তে। তার মধ্যে মেশিনের টুকরো-টাকরা যন্ত্রাংশ, আধপোড়া জ্যাকেট, প্যান্ট, কাপড়ের টুকরো আর মেঝের টাইলস মেটে হাঁড়ির কুচির মতো ছত্রখান হয়ে আছে। চারতলা পর্যন্ত বলতে গেলে পুরো অঙ্গার।
পঞ্চম থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত দহনের কোনো ছাপ নেই। তবে মেশিনপত্র আর বান্ডিল করা পোশাক ও কাপড়ের থান লন্ডভন্ড হয়ে আছে। আগুন না পৌঁছলেও ধোঁয়ায় ঘরগুলো ভরে গিয়েছিল। উত্তপ্তও হয়ে উঠেছিল প্রচণ্ড। তা বোঝা যায় গলে যাওয়া নানা ধরনের তার ও দেয়ালগুলো ধোঁয়ায় কালো হয়ে যাওয়ায়। আটতলার ওপরে ছাদে নতুন একটি তলার নির্মাণকাজ চলছে।
নাশকতা: সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর এসেছিলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। তিনি বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বলেন, এই অগ্নিকাণ্ড একটি নাশকতামূলক ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। বাইরে থেকে তাঁরা ‘মালিকের বিচার চাই’, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ এমন গগনবিদারী স্লোগান দিতে থাকেন। মন্ত্রী ভবনটি পরিদর্শন করেই এলাকা ত্যাগ করেন।
বেতন দেওয়া হবে: ‘তাজরীন ফ্যাশনসের নভেম্বর মাসের বেতন আগামী ০১/১২/১২ দেওয়া হবে’ লেখা একটি কালো ব্যানার টাঙানো হয়েছে কারখানার ফটকের পাশের দেয়ালে। গতকালই সকালবেলায় মালিকপক্ষের কেউ একজন এই ব্যানার টাঙিয়ে গেছে। কারখানার শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম জানালেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই সমস্যা হচ্ছিল। এ কারণে কোরবানির ঈদের পর অনেকে কাজ ছেড়ে চলে গেছেন।
মৃতের সংখ্যা কত: সরকারি হিসাবে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছে ১১১। তবে ওই এলাকার শ্রমিক ও সাধারণ লোকের সন্দেহ, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পরে। জাহাঙ্গীর জানালেন, সম্প্রতি নতুন লোক ও কাজ আসায় আটটি পালায় পুরোদমে কারখানা চলছিল। সেদিন উপস্থিত ছিলেন এক হাজার পাঁচ শর বেশি শ্রমিক। বেশির ভাগই নারী। তাঁদের পক্ষে জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসা কঠিন ছিল।
এই সন্দেহের কারণেই স্বজনহারাদের অনেকেই আসছেন নিশ্চিন্তপুরে প্রিয়জনের খোঁজ নিতে। ব্যথাতুর চোখ তুলে তাকিয়ে থাকেন পোড়া ভবনটির দিকে, যার ভেতরে মিশে আছে তাঁদের কাছের মানুষটির আর্তি, যন্ত্রণা।
রিক্তার প্রশ্নের উত্তর জানা ছিল সবারই। কিন্তু বলার মতো বাকশক্তি যেন ছিল না কারোই। রিক্তার মতোই চোখ দিয়ে তপ্ত অশ্রুধারা নেমে এসেছিল তাকে ঘিরে থাকা অনেকেরই।
গতকাল মঙ্গলবার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসের সামনে রিক্তাকে নিয়ে এসেছিলেন তার জ্যাঠা হাফিজুর রহমান। রংপুরের মিঠাপুকুরের মীর্জাপুরে তাঁদের বাড়ি। রিক্তা দাদা-দাদির কাছেই থাকত। গত সোমবার রিক্তার মা আনোয়ারা বেগমের (২৫) লাশ তাঁদের বাড়িতে নেওয়া হয়। দাফনের পর রাতেই রিক্তাকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দিয়েছেন তিনি। কারণ, ওর বাবা হাবিবুর রহমানকে (৩০) পাওয়া যাচ্ছে না। কারখানার পাশেই টিনের একটি ঘর ভাড়া করে থাকতেন। সেখানেই রিক্তাকে নিয়ে এসেছেন হাফিজুর।
রিক্তার ফুপু মঞ্জুআরা বেগমও আশুলিয়ায় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করেন। সোমবার ব্যাগে ভরা মৃতদেহগুলো খুঁজতে গিয়ে তিনি আনোয়ারা বেগমকে শনাক্ত করেন। ‘ভাবির শইলের এক পাশ ভালো আছিল। তার নাকের ফুল আর গায়ের জামা দেইখা চিনতে পারছি। ভাইরে পাই নাই’—বললেন তিনি।
অগ্নিকাণ্ডের পরপরই রিক্তার বাবা হাবিবুর রহমান ফোন করেছিলেন মঞ্জুআরার স্বামী ওয়াজেদ আলীকে। তিনি বলছিলেন, ‘হাবিব আমাক কলো গারমেনসে আগুন লাগিছে। হামারা ছুটি আলাম।’ ওয়াজেদ বললেন, ‘কিন্তুক পরে অনেকবার ফোন করিও আর তারে পালাম না।’
কোরবানির ঈদের সময় হাবিবুর-আনোয়ারা বাড়ি গিয়েছিলেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে সেই রিক্তার শেষ দেখা। সামনে ওর দীর্ঘ জীবন। বুক ভার হয়ে থাকবে সান্ত্বনাহীন, নিরাময়হীন অনন্ত বেদনায়।
জ্বলেছে ক্ষোভের আগুন: গতকাল সকাল থেকেই স্রোতের মতো মানুষ আসছিল নিশ্চিন্তপুরের সরু পথটি ধরে। পথের দুই ধারে গড়ে উঠেছে অনেক পোশাক তৈরির কারখানা। সেগুলোর দরজা বন্ধ। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা। উড়ছে কালো পতাকাও। জাতীয় শোক দিবস। কারখানা বন্ধ থাকায় হাজার হাজার শ্রমিক কালো ব্যাজ পরে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে আসছিলেন তাজরীন ফ্যাশনসের দিকে। কারখানাটির পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া ভবনটি ঘিরে অগুনতি মানুষ। পুলিশ ভবনটি পাহারা দিয়ে রেখেছে।
দরজা-জানালা ভাঙা আধপোড়া নয়তলা ভবনটির ফটকে কালো পতাকাটি কেঁপে কেঁপে উঠছে মাঝে মাঝে—ভাষায় প্রকাশ করা যায় না এমন এক বিপন্নবোধের প্রতীক হয়ে।
পোড়া কটু গন্ধে ভারী হয়ে আছে এলাকার বাতাস। তার সঙ্গে মিশেছে স্বজনহারাদের কান্না-ফোঁপানি-দীর্ঘশ্বাস। চাপা গুঞ্জন। বিক্ষুব্ধ কণ্ঠের স্লোগান।
যেন পুরাণের জতুগৃহ: মহাভারতে আছে, পাণ্ডবদের পুড়িয়ে মারার জন্য বারুদ দিয়ে একটি ঘর—যাকে বলে ‘জতুগৃহ’ তৈরি করেছিল কৌরবেরা। গতকাল তাজরীন ফ্যাশনসের পোড়া ভবনটির ভেতরে গিয়ে জতুগৃহের ছবিটিই যেন বাস্তব হয়ে উঠল চোখে। নয়তলা ভবনটির নিচতলায় ছিল গুদাম। সেখানে সুতা আর কৃত্রিম তন্তুর কাপড় বোঝাই। শোনা যাচ্ছে, এখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। বারুদের মতোই এসব দাহ্য পদার্থ দ্রুত জ্বলে উঠে ওপরের তলাগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। উত্তাপ এমন হয়েছিল যে দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা পর্যন্ত খসে গেছে। দোতলা, তিনতলা ও চারতলায় পৌঁছেছিল আগুনের লেলিহান জিভ। মেঝে ও দেয়ালের টাইলস খসে পড়েছে। ভেতরে বিকট চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেশিন রাখার লোহার দগ্ধ কাঠামোগুলো। মেঝে থকথক করছে দমকলের দেওয়া পানিতে মিশে থাকা ছাই-কয়লা-রক্তে। তার মধ্যে মেশিনের টুকরো-টাকরা যন্ত্রাংশ, আধপোড়া জ্যাকেট, প্যান্ট, কাপড়ের টুকরো আর মেঝের টাইলস মেটে হাঁড়ির কুচির মতো ছত্রখান হয়ে আছে। চারতলা পর্যন্ত বলতে গেলে পুরো অঙ্গার।
পঞ্চম থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত দহনের কোনো ছাপ নেই। তবে মেশিনপত্র আর বান্ডিল করা পোশাক ও কাপড়ের থান লন্ডভন্ড হয়ে আছে। আগুন না পৌঁছলেও ধোঁয়ায় ঘরগুলো ভরে গিয়েছিল। উত্তপ্তও হয়ে উঠেছিল প্রচণ্ড। তা বোঝা যায় গলে যাওয়া নানা ধরনের তার ও দেয়ালগুলো ধোঁয়ায় কালো হয়ে যাওয়ায়। আটতলার ওপরে ছাদে নতুন একটি তলার নির্মাণকাজ চলছে।
নাশকতা: সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর এসেছিলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। তিনি বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বলেন, এই অগ্নিকাণ্ড একটি নাশকতামূলক ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। বাইরে থেকে তাঁরা ‘মালিকের বিচার চাই’, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ এমন গগনবিদারী স্লোগান দিতে থাকেন। মন্ত্রী ভবনটি পরিদর্শন করেই এলাকা ত্যাগ করেন।
বেতন দেওয়া হবে: ‘তাজরীন ফ্যাশনসের নভেম্বর মাসের বেতন আগামী ০১/১২/১২ দেওয়া হবে’ লেখা একটি কালো ব্যানার টাঙানো হয়েছে কারখানার ফটকের পাশের দেয়ালে। গতকালই সকালবেলায় মালিকপক্ষের কেউ একজন এই ব্যানার টাঙিয়ে গেছে। কারখানার শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম জানালেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই সমস্যা হচ্ছিল। এ কারণে কোরবানির ঈদের পর অনেকে কাজ ছেড়ে চলে গেছেন।
মৃতের সংখ্যা কত: সরকারি হিসাবে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছে ১১১। তবে ওই এলাকার শ্রমিক ও সাধারণ লোকের সন্দেহ, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পরে। জাহাঙ্গীর জানালেন, সম্প্রতি নতুন লোক ও কাজ আসায় আটটি পালায় পুরোদমে কারখানা চলছিল। সেদিন উপস্থিত ছিলেন এক হাজার পাঁচ শর বেশি শ্রমিক। বেশির ভাগই নারী। তাঁদের পক্ষে জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসা কঠিন ছিল।
এই সন্দেহের কারণেই স্বজনহারাদের অনেকেই আসছেন নিশ্চিন্তপুরে প্রিয়জনের খোঁজ নিতে। ব্যথাতুর চোখ তুলে তাকিয়ে থাকেন পোড়া ভবনটির দিকে, যার ভেতরে মিশে আছে তাঁদের কাছের মানুষটির আর্তি, যন্ত্রণা।
No comments