অশনাক্ত ৫৩ জনের ঠিকানা জুরাইনে
আগুনে অঙ্গার হয়ে যাওয়া অশনাক্ত পোশাকশ্রমিকদের শেষ ঠিকানা হয়েছে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা এই মানুষগুলো একসঙ্গে কাজ করতেন নিশ্চিন্তপুরে। মৃত্যুর পরও তাঁদের ঠিকানা হলো পাশাপাশি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অশনাক্ত ৫৩ জনের লাশ দাফন করা হয়। দাফনের সময় কবরের পাশেই ছিলেন কয়েকজনের স্বজন। কিন্তু শত চেষ্টায়ও শনাক্ত করতে না পারায় বেওয়ারিশ হিসেবেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাঁদের। ভবিষ্যতে শনাক্ত করার জন্য কবরগুলোতে দেওয়া হয়েছে কোড নম্বর।
গত শনিবার রাতে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে উড়ালসড়কের গার্ডার ধসের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের জন্য গতকাল রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়। এ উপলক্ষে সব সরকারি-আধা সরকারি কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ছুটি ছিল দেশের সব পোশাক কারখানায়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জোহরের নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সারা দেশের মসজিদেও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের আত্মার সদ্গতি ও আহত ব্যক্তিদের আরোগ্য কামনা করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা হয়। বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনও বিশেষ প্রার্থনা করেন।
তোবা গ্রুপের তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লেগে ১১১ জন পোশাকশ্রমিক মারা যান। তাঁদের মধ্যে ৬০ জনের লাশ স্বজনেরা শনাক্ত করতে না পারায় সেগুলো বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের জন্য আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দেওয়া হয়। পরে এর মধ্যে সাতজনের লাশ নিয়ে যান তাঁদের স্বজনেরা। বাকিদের ডিএনএ সংগ্রহ করে রাখে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ।
আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের উপপরিচালক সারোয়ার জাহান জানান, দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে লাশবাহী পাঁচটি গাড়ি বেলা সোয়া তিনটায় জুরাইন কবরস্থানে পৌঁছায়। সাড়ে তিনটার দিকে লাশসহ গাড়িগুলোকে সামনে রেখে জানাজা হয়। জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ। পরে একে একে ৫৩ জনের লাশ দাফন করা হয়।
লাশ দাফনের কার্যক্রম তদারকিতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন তালুকদার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ সানজিদা খানমও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আবুল ফজল মীর জানান, কবরগুলোতে নির্দিষ্ট কোড নম্বর দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রাখা হয়েছে কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্যও। কারও স্বজন পরে ডিএনএ কোড ধরে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করতে পারলে কবর থেকে তুলে নিজেদের পছন্দমতো স্থানে দাফনের জন্য দেহাবশেষ নিয়ে যেতে পারবেন। এসব লাশের মধ্যে কেউ অন্য ধর্মের হলে তাঁদের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আঞ্জুমানের সহযোগী হিসেবে এসব লাশ দাফনের ব্যয়ভার বহন করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
স্বজনকে খুঁজে ফেরা: আগুনে মা, বাবা, ভাই ও ভাবিকে হারিয়ে উদ্ভ্রান্ত পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র লিয়ন জুরাইন কবরস্থানেও ঘুরে ঘুরে খুঁজছিল নিহত স্বজনদের। সঙ্গে তাঁদের ছবি। গতকাল সকালে প্রতিবেশীদের সঙ্গে লিয়ন প্রথমে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। না, লিয়ন খুঁজে পায়নি বাবা নজরুল ইসলাম (৪৮), মা আমেনা বেগম (৩৫), ভাই নয়ন (২২) ও ভাবি মুনিরা আক্তারের (১৯) লাশ।
লিয়নের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ওই চারজনই তাজরীনের তৃতীয় তলায় কর্মরত ছিলেন। তৃতীয় তলা থেকেই ৬৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ওর বাবা ছিলেন মেশিনম্যান, মা ও বড় ভাই সুইং অপারেটর এবং ভাবি ছিলেন হেলপার।
লিয়ন জানায়, তাদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর বড়বাড়িতে। নিশ্চিন্তপুরে তাজরীনের অদূরেই ছিল তাদের বাসা।
শেষ মুহূর্তে লাশ শনাক্তের আশায় কবরস্থানে এসেছিলেন তাজরীন ফ্যাশনসের নিখোঁজ সুইং অপারেটর রোকসানার স্বামী জিয়ারুল ও সুইং অপারেটর ঝর্ণার বাবা মোহাম্মদ আলী। মোহাম্মদ আলী জানান, টানা তিন দিনের ক্লান্তিহীন খোঁজাখুঁজির অবসান ঘটিয়ে রাতেই ফিরে যাবেন গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে।
গত শনিবার রাতে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে উড়ালসড়কের গার্ডার ধসের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের জন্য গতকাল রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়। এ উপলক্ষে সব সরকারি-আধা সরকারি কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ছুটি ছিল দেশের সব পোশাক কারখানায়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জোহরের নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সারা দেশের মসজিদেও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের আত্মার সদ্গতি ও আহত ব্যক্তিদের আরোগ্য কামনা করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা হয়। বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনও বিশেষ প্রার্থনা করেন।
তোবা গ্রুপের তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লেগে ১১১ জন পোশাকশ্রমিক মারা যান। তাঁদের মধ্যে ৬০ জনের লাশ স্বজনেরা শনাক্ত করতে না পারায় সেগুলো বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের জন্য আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দেওয়া হয়। পরে এর মধ্যে সাতজনের লাশ নিয়ে যান তাঁদের স্বজনেরা। বাকিদের ডিএনএ সংগ্রহ করে রাখে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ।
আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের উপপরিচালক সারোয়ার জাহান জানান, দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে লাশবাহী পাঁচটি গাড়ি বেলা সোয়া তিনটায় জুরাইন কবরস্থানে পৌঁছায়। সাড়ে তিনটার দিকে লাশসহ গাড়িগুলোকে সামনে রেখে জানাজা হয়। জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ। পরে একে একে ৫৩ জনের লাশ দাফন করা হয়।
লাশ দাফনের কার্যক্রম তদারকিতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন তালুকদার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ সানজিদা খানমও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আবুল ফজল মীর জানান, কবরগুলোতে নির্দিষ্ট কোড নম্বর দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রাখা হয়েছে কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্যও। কারও স্বজন পরে ডিএনএ কোড ধরে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করতে পারলে কবর থেকে তুলে নিজেদের পছন্দমতো স্থানে দাফনের জন্য দেহাবশেষ নিয়ে যেতে পারবেন। এসব লাশের মধ্যে কেউ অন্য ধর্মের হলে তাঁদের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আঞ্জুমানের সহযোগী হিসেবে এসব লাশ দাফনের ব্যয়ভার বহন করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
স্বজনকে খুঁজে ফেরা: আগুনে মা, বাবা, ভাই ও ভাবিকে হারিয়ে উদ্ভ্রান্ত পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র লিয়ন জুরাইন কবরস্থানেও ঘুরে ঘুরে খুঁজছিল নিহত স্বজনদের। সঙ্গে তাঁদের ছবি। গতকাল সকালে প্রতিবেশীদের সঙ্গে লিয়ন প্রথমে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। না, লিয়ন খুঁজে পায়নি বাবা নজরুল ইসলাম (৪৮), মা আমেনা বেগম (৩৫), ভাই নয়ন (২২) ও ভাবি মুনিরা আক্তারের (১৯) লাশ।
লিয়নের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ওই চারজনই তাজরীনের তৃতীয় তলায় কর্মরত ছিলেন। তৃতীয় তলা থেকেই ৬৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ওর বাবা ছিলেন মেশিনম্যান, মা ও বড় ভাই সুইং অপারেটর এবং ভাবি ছিলেন হেলপার।
লিয়ন জানায়, তাদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর বড়বাড়িতে। নিশ্চিন্তপুরে তাজরীনের অদূরেই ছিল তাদের বাসা।
শেষ মুহূর্তে লাশ শনাক্তের আশায় কবরস্থানে এসেছিলেন তাজরীন ফ্যাশনসের নিখোঁজ সুইং অপারেটর রোকসানার স্বামী জিয়ারুল ও সুইং অপারেটর ঝর্ণার বাবা মোহাম্মদ আলী। মোহাম্মদ আলী জানান, টানা তিন দিনের ক্লান্তিহীন খোঁজাখুঁজির অবসান ঘটিয়ে রাতেই ফিরে যাবেন গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে।
No comments