মন্ত্রীদের জেলায় ডিসি হচ্ছেন বিশ্বস্ত পিএসরা by আশরাফুল হক রাজীব
নির্বাচনী প্রশাসন সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে মাঠ প্রশাসনসহ সব পর্যায়ে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হচ্ছে। গত সোমবার ১০ জেলায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওই প্রক্রিয়ায় চার মন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) ডিসি পদ পেয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে এক মন্ত্রী ও সংসদীয় উপনেতার পিএসকে পদায়ন করা হয়েছে মন্ত্রী ও উপনেতার নিজ জেলায়। শিগগিরই আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পিএসকে একইভাবে নিজ নিজ জেলায় পদায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদের নির্বাচনী এলাকা হবিগঞ্জ-৪। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকারের মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি উপসচিব মনিন্দ্র কিশোর মজুমদারকে পিএস হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ডিও লেটার (আধাসরকারি পত্র) দেন। মন্ত্রীর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মনিন্দ্র কিশোরকে পিএস হিসেবে নিয়োগ দেয়। চার বছর পর তাঁকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। একইভাবে সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর পিএস পদে নিয়োগ পান উপসচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। তাঁকেও গত সোমবার ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক করা হয়। সাজেদা চৌধুরী ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে বলেন, পিএসদের দায়িত্ব হচ্ছে মন্ত্রীর কাজের শিডিউল ঠিক রাখা। মন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে যে ফাইল আসে, তা উপস্থাপনের দায়িত্বও তাঁর। মোদ্দা কথা হলো, মন্ত্রীর সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন পিএস। এ কারণে বিশ্বস্ত লোককেই পিএস নিয়োগ দেওয়া হয়। মন্ত্রীরা প্রিভিলেজড স্টাফ হিসেবে একজন একান্ত সচিব (পিএস), সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস), দুজন অফিস সহকারী পান। একজন ক্যাবিনেট মিনিস্টার সর্বোচ্চ উপসচিব পদের একজন কর্মকর্তাকে পিএস হিসেবে পান। তবে অনেক মন্ত্রী সিনিয়র সহকারী সচিবকেও পিএস নিয়োগ দেন। এটা নির্ভর করে মন্ত্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর। মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন পিএস।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এম হাফিজউদ্দীন খান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, পিএসকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রীর জেলায় পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো আইন বা বিধিগত বাধা নেই। তবে এটা সাধারণত করা হয় না। কারণ, যিনি বিশ্বস্ততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তিনিই পিএস হিসেবে নিয়োগ পান। সেই তিনিই যখন মন্ত্রীর জেলার ডিসি হয়ে যান, তখনো মন্ত্রীর আজ্ঞাবহই থাকেন। সামনে নির্বাচন আসছে, তাই মন্ত্রীরাই হয়তো তাঁদের পিএসকে ডিসি হিসেবে পেতে চাইবেন। মন্ত্রীরা চাইলেও এখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বাধা দেওয়া উচিত। কারণ, নির্বাচনের সময় এই ডিসিরাই জেলা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তা ছাড়া বিরোধী দল ও সরকারি দলের মধ্যেও নানা টানাপড়েন চলছে। এখন এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিলে সেই টানাপড়েন আরো বাড়বে।
জানা গেছে, শিগগিরই আরো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পিএস ডিসি হচ্ছেন। তাঁদেরও পদায়ন হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর জেলায়। ডিসিরা যেন আগে থেকেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী মাঠ সাজাতে পারেন, সে জন্যই এক বছর আগেই তাঁদের জেলায় জেলায় পাঠানো হচ্ছে। আর ডিসিরা শুধু নির্বাচনের সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন না, তাঁদের আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকে। সামনে বিরোধী দল কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে। সেই সময় বিরোধী রাজনীতিকদের ধরপাকড় চলবে। ডিসিরা জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির প্রধান। এসব ক্ষেত্রে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনী প্রশাসন সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। সরকার সমর্থক কর্মকর্তাদেরই পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। নিরপেক্ষ ও মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েক শ কর্মকর্তাকে সরকারের শুরু থেকেই ওএসডি করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার সমর্থক বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে গিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকার শুধু জনপ্রশাসনেই আস্থাভাজনদের নিয়োগ দিচ্ছে না, পুলিশ প্রশাসনেও একই অবস্থা চলছে। মন্ত্রীদের আস্থাভাজনরাই এসপি হিসেবে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ পাচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোও সরকারের আস্থাভাজনরা দখল করে আছেন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদের নির্বাচনী এলাকা হবিগঞ্জ-৪। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকারের মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি উপসচিব মনিন্দ্র কিশোর মজুমদারকে পিএস হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ডিও লেটার (আধাসরকারি পত্র) দেন। মন্ত্রীর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মনিন্দ্র কিশোরকে পিএস হিসেবে নিয়োগ দেয়। চার বছর পর তাঁকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। একইভাবে সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর পিএস পদে নিয়োগ পান উপসচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। তাঁকেও গত সোমবার ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক করা হয়। সাজেদা চৌধুরী ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে বলেন, পিএসদের দায়িত্ব হচ্ছে মন্ত্রীর কাজের শিডিউল ঠিক রাখা। মন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে যে ফাইল আসে, তা উপস্থাপনের দায়িত্বও তাঁর। মোদ্দা কথা হলো, মন্ত্রীর সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন পিএস। এ কারণে বিশ্বস্ত লোককেই পিএস নিয়োগ দেওয়া হয়। মন্ত্রীরা প্রিভিলেজড স্টাফ হিসেবে একজন একান্ত সচিব (পিএস), সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস), দুজন অফিস সহকারী পান। একজন ক্যাবিনেট মিনিস্টার সর্বোচ্চ উপসচিব পদের একজন কর্মকর্তাকে পিএস হিসেবে পান। তবে অনেক মন্ত্রী সিনিয়র সহকারী সচিবকেও পিএস নিয়োগ দেন। এটা নির্ভর করে মন্ত্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর। মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন পিএস।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এম হাফিজউদ্দীন খান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, পিএসকে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রীর জেলায় পদায়নের ক্ষেত্রে কোনো আইন বা বিধিগত বাধা নেই। তবে এটা সাধারণত করা হয় না। কারণ, যিনি বিশ্বস্ততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তিনিই পিএস হিসেবে নিয়োগ পান। সেই তিনিই যখন মন্ত্রীর জেলার ডিসি হয়ে যান, তখনো মন্ত্রীর আজ্ঞাবহই থাকেন। সামনে নির্বাচন আসছে, তাই মন্ত্রীরাই হয়তো তাঁদের পিএসকে ডিসি হিসেবে পেতে চাইবেন। মন্ত্রীরা চাইলেও এখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বাধা দেওয়া উচিত। কারণ, নির্বাচনের সময় এই ডিসিরাই জেলা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তা ছাড়া বিরোধী দল ও সরকারি দলের মধ্যেও নানা টানাপড়েন চলছে। এখন এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিলে সেই টানাপড়েন আরো বাড়বে।
জানা গেছে, শিগগিরই আরো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পিএস ডিসি হচ্ছেন। তাঁদেরও পদায়ন হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর জেলায়। ডিসিরা যেন আগে থেকেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী মাঠ সাজাতে পারেন, সে জন্যই এক বছর আগেই তাঁদের জেলায় জেলায় পাঠানো হচ্ছে। আর ডিসিরা শুধু নির্বাচনের সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন না, তাঁদের আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকে। সামনে বিরোধী দল কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে। সেই সময় বিরোধী রাজনীতিকদের ধরপাকড় চলবে। ডিসিরা জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির প্রধান। এসব ক্ষেত্রে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনী প্রশাসন সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। সরকার সমর্থক কর্মকর্তাদেরই পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। নিরপেক্ষ ও মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েক শ কর্মকর্তাকে সরকারের শুরু থেকেই ওএসডি করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার সমর্থক বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে গিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকার শুধু জনপ্রশাসনেই আস্থাভাজনদের নিয়োগ দিচ্ছে না, পুলিশ প্রশাসনেও একই অবস্থা চলছে। মন্ত্রীদের আস্থাভাজনরাই এসপি হিসেবে বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ পাচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোও সরকারের আস্থাভাজনরা দখল করে আছেন।
No comments