ফারুক শেখ- ‘শিল্পী অর্থের দিকে ঝুঁকে পড়লে অনেক অনর্থ তৈরি হয়’
ভারতীয় নতুন চলচ্চিত্রের অন্যতম গুণী অভিনয়শিল্পী ফারুক শেখ। সরল, মার্জিত ও রোমান্টিক চরিত্রে তিনি সবার প্রশংসাধন্য। জটিল চরিত্রগুলো তিনি অনায়াস ভঙ্গিতে মূর্ত করে তোলেন। অভিনয় শুরু করেছেন কলেজের মঞ্চনাটকের মাধ্যমে, পরে যুক্ত হন আইপিটি-এর (ভারতীয় গণনাট্য সংঘ) নাট্য আন্দোলনের সঙ্গে।
কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়, ঋষিকেশ মুখার্জি, মোজাফফর আলী, কেতন মেহতার মতো খ্যাতিমান নির্মাতাদের সঙ্গে। ভারতীয় কাহিনিচিত্রের ১০০ বছর পূর্তিতে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ চলচ্চিত্র উৎসবে ফারুক শেখ তাঁর অভিনীত ছবি ওমরাও জান নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। সদাহাস্য, বিনয়ী এ অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কথা বলেছেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন।
জাহিদুর রহিম: প্রথম থেকেই শুরু করি, অভিনয়ে আপনার আগ্রহ তৈরি হলো কীভাবে?
ফারুক শেখ: আমি যে অভিনয় করব, এমন কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু করিনি। অন্য যেকোনো তরুণের মতো আমারও অনেক বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল; এমনকি ক্রিকেট খেলায় পর্যন্ত। আমি মুম্বাইয়ের ‘সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে’ পড়াশোনা করেছি। ওখানে নিয়মিত মঞ্চে নাটক হতো। কিছুদিন পর লক্ষ করলাম, আমি ক্লাসরুমের থেকে রিহার্সেল রুমে বেশি সময় কাটাচ্ছি। এভাবেই শুরু বলা যায়। পরে আইপিটিএর সঙ্গে যুক্ত হলাম। প্রথম প্রথম চা-টা এনে দিতাম। আস্তে আস্তে ছোটখাটো রোল পেতে শুরু করলাম। ওখানেই এম এস সাত্থুর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। পরে উনি আমাকে তাঁর প্রথম ছবি গরম হাওয়ার জন্য অভিনয় করতে বলেন।
জা. র.: প্রথম চলচ্চিত্রেই তো সাফল্য পেলেন?
ফারুক: গরম হাওয়া চলচ্চিত্রটি অনেক ভালো হয়েছিল। এর সঙ্গে যাঁরাই যুক্ত ছিলেন, তাঁরাই এর সাফল্যের ভাগ পেয়েছেন। সম্ভবত গরম হাওয়া দেখেই সত্যজিৎ রায় আমাকে শতরঞ্জ কা খিলাড়ির জন্য নির্বাচন করেছিলেন।
জা. র.: সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আপনার কাজ করার অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন...
ফারুক: শতরঞ্জ কা খিলাড়ির কাজ যখন শুরু হবে, তখন আমি কানাডায়। দুই মাসের ছুটি কাটাতে গেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁকে চিনতাম না, তবে ওইভাবে তখন সত্যজিৎ রায়কে কে না চেনে! একদিন তিনি আমাকে কানাডায় ফোন করলেন। বললেন, ‘আপনি কি আমার ছবিতে কাজ করবেন?’ আমার তখন কানাডা থেকে ফেরার উপায় নেই, আগে থেকে সব ঠিকঠাক হয়ে আছে। মন খারাপ করে বললাম, আমার তো ফিরতে দেরি হবে, প্রায় দুই মাস। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, ‘ঠিক আছে, দুই মাস পরই না হয় শুটিং শুরু করব।’ আমার জন্য সেটা অনেক সম্মানের ছিল।
জা. র.: সত্যজিৎ রায়ের কাজ করার ধরন কেমন ছিল?
ফারুক: এটা তো এখন সবাই জানেন, উনি সবকিছু ভীষণ পরিকল্পনামতো করার চেষ্টা করতেন। কী চাইছেন, সেটা পরিষ্কারভাবে তাঁর জানা ছিল। অভিনেতা নতুন কিছু করলে উনি অনেক প্রশংসা করতেন, কিন্তু আস্তে আস্তে তিনি যা চাইছেন তার কাছাকাছি নিয়ে যেতেন। ফলে ইম্প্রোভাইজ করার বিশেষ কিছু ছিল না। প্রত্যেক পরিচালকই তাঁর নিজস্ব পদ্ধতিতে চলচ্চিত্র তৈরি করেন। যেমন, মোজাফফর আলী একেবারেই অন্য রকম। তিনি শুধু আপনাকে দৃশ্য বুঝিয়ে দেবেন, অভিনেতা সেটাকে ফুটিয়ে তুলবেন—এটাই তিনি চান। পরিশেষে চলচ্চিত্রটি পরিচালকেরই শিল্প, অভিনেতা তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মাত্র।
জা. র.: তা হলে তো পরিচালকের ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে অভিনেতার ভালো-মন্দ?
ফারুক: আমি মনে করি, চলচ্চিত্রে দুজন মানুষের ওপর অভিনেতাকে নির্ভর করতে হয়। প্রথমজন হচ্ছেন চিত্রনাট্যকার, যিনি কাহিনি লেখেন, চরিত্র তৈরি করেন, সংলাপ রচনা করেন; আর অন্যজন অবশ্যই পরিচালক। যিনি তাঁকে নির্দেশনা দেবেন। লেখক-পরিচালক যদি উঁচু মানের হন, তবে অভিনেতাও ভালো অভিনয় করেন, না হলে একজন ভালো অভিনেতাও সাধারণ মানের হয়ে পড়েন।
ভালো অভিনয়ের জন্য পরিবেশটা খুব জরুরি। ঋষিকেশ মুখার্জির ছবিতে অভিনয় করার জন্য আমরা মুখিয়ে থাকতাম। গল্প, আড্ডা আর আনন্দের মধ্যে সময় পার হয়ে যেত। কাজ শেষ হয়ে গেলে সবার মন খারাপ হয়ে যেত। তাঁরা ছিলেন প্রকৃত শিল্পী। দুঃখের ব্যাপার, দিন দিন এমন লোকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
জা. র.: আপনার প্রিয় অভিনয়শিল্পী কারা?
ফারুক: আমি বিষয়টা এভাবে দেখতে চাই না। আমার সহশিল্পীরা সবাই আমার প্রিয়। তাঁদের সঙ্গে আমার প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক। নাসিরউদ্দীন শাহ, ওমপুরি, স্মিতা পাতিল, রেখাজি, দীপ্তি নাভাল, শাবানা আজমি—তাঁরা প্রত্যেকেই উঁচু মানের শিল্পী। সে জন্যই তাঁরা এখনো দাপটের সঙ্গে টিকে আছেন, নিজেদের পছন্দের চরিত্রে অভিনয় করতে পারছেন। আমি সব সময় চেষ্টা করেছি নিজেকে ওঁদের উচ্চতায় নিয়ে যেতে। ভালো অভিনয় অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। যখন এটা সত্যি সত্যিই ঘটে, তখন ‘এক মাহাল বন্ যাতা হ্যায়’।
জা. র.: আপনি তো সব মাধ্যমে কাজ করেছেন, রেডিও, মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র প্রায় সব মাধ্যমেই...
ফারুক: যেখানে অভিনয়ের সুযোগ আছে, আমি সেখানেই কাজ করতে চাই, সে যে মাধ্যমেই হোক। প্রতিটি মাধ্যমই আলাদা ধরনের—সেটা শিল্পীর জন্য বোঝাটা জরুরি। তবে আজকাল টেলিভিশনের অবস্থা খুবই খারাপ। অবান্তর, আজগুবি জগৎ তৈরি করেছে টেলিভিশন। মুশকিল হচ্ছে, এটা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। আমাদের বাচ্চাদের এতে বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমি নিজে টেলিভিশনে কাজ করেছি, উপস্থাপনা করেছি। অভিনেতা হিসেবে টেলিভিশন আপনাকে একেবারে শুষে নেবে। দুই বছর সময়ের মধ্যে আপনি হয়তো কোটি টাকা উপার্জন করবেন, কিন্তু অভিনেতা হিসেবে তত দিনে আপনিও প্রায় নিঃশেষ। শিল্পী অর্থের দিকে ঝুঁকে পড়লে অনেক অনর্থ তৈরি হয়।
প্রতিদিন অভিনয় করার কথা আমি ভাবতেই পারি না। আমি একসঙ্গে দুটো ছবিতে কাজ করি না। দিনে ১৬ ঘণ্টা কাজ করলে আপনি কখনোই ভালো অভিনয় করতে পারবেন না। আমি যেসব গুণী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছি তাঁরা শিখিয়েছেন, কাজকে ভালো না বাসলে সেটা কখনোই সুন্দর হবে না। শিল্পীকে পরিশেষে মানুষ ও সমাজের জন্য কাজ করতে হয়, সেটা আপনি যেভাবেই দেখেন না কেন।
জা. র.: বাংলাদেশের কোন চলচ্চিত্র দেখলেন?
ফারুক: সেভাবে আসলে দেখা হয়নি। মাটির ময়না ভালো লেগেছে। নিশ্চয়ই আরও ভালো ছবি এখানে তৈরি হচ্ছে। আমাদের ওখানে বাংলাদেশের ছবি দেখার তেমন কোনো সুযোগ নেই। এক দেশের ভালো ছবি অন্য দেশে প্রদর্শিত হওয়া উচিত। এটাই চলচ্চিত্রের আসল কাজ, ছবির মাধ্যমে যোগাযোগ সৃষ্টি করা, অপরকে জানা। জানাশোনার মধ্য দিয়েই আমরা একে অপরের কাছে আসতে পারি, ভালোবাসতে পারি, একে অপরের বন্ধু হতে পারি। এটাই শিল্পের সবচেয়ে বড় মাহাত্ম্য।
জাহিদুর রহিম: প্রথম থেকেই শুরু করি, অভিনয়ে আপনার আগ্রহ তৈরি হলো কীভাবে?
ফারুক শেখ: আমি যে অভিনয় করব, এমন কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু করিনি। অন্য যেকোনো তরুণের মতো আমারও অনেক বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল; এমনকি ক্রিকেট খেলায় পর্যন্ত। আমি মুম্বাইয়ের ‘সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে’ পড়াশোনা করেছি। ওখানে নিয়মিত মঞ্চে নাটক হতো। কিছুদিন পর লক্ষ করলাম, আমি ক্লাসরুমের থেকে রিহার্সেল রুমে বেশি সময় কাটাচ্ছি। এভাবেই শুরু বলা যায়। পরে আইপিটিএর সঙ্গে যুক্ত হলাম। প্রথম প্রথম চা-টা এনে দিতাম। আস্তে আস্তে ছোটখাটো রোল পেতে শুরু করলাম। ওখানেই এম এস সাত্থুর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। পরে উনি আমাকে তাঁর প্রথম ছবি গরম হাওয়ার জন্য অভিনয় করতে বলেন।
জা. র.: প্রথম চলচ্চিত্রেই তো সাফল্য পেলেন?
ফারুক: গরম হাওয়া চলচ্চিত্রটি অনেক ভালো হয়েছিল। এর সঙ্গে যাঁরাই যুক্ত ছিলেন, তাঁরাই এর সাফল্যের ভাগ পেয়েছেন। সম্ভবত গরম হাওয়া দেখেই সত্যজিৎ রায় আমাকে শতরঞ্জ কা খিলাড়ির জন্য নির্বাচন করেছিলেন।
জা. র.: সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আপনার কাজ করার অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন...
ফারুক: শতরঞ্জ কা খিলাড়ির কাজ যখন শুরু হবে, তখন আমি কানাডায়। দুই মাসের ছুটি কাটাতে গেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁকে চিনতাম না, তবে ওইভাবে তখন সত্যজিৎ রায়কে কে না চেনে! একদিন তিনি আমাকে কানাডায় ফোন করলেন। বললেন, ‘আপনি কি আমার ছবিতে কাজ করবেন?’ আমার তখন কানাডা থেকে ফেরার উপায় নেই, আগে থেকে সব ঠিকঠাক হয়ে আছে। মন খারাপ করে বললাম, আমার তো ফিরতে দেরি হবে, প্রায় দুই মাস। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, ‘ঠিক আছে, দুই মাস পরই না হয় শুটিং শুরু করব।’ আমার জন্য সেটা অনেক সম্মানের ছিল।
জা. র.: সত্যজিৎ রায়ের কাজ করার ধরন কেমন ছিল?
ফারুক: এটা তো এখন সবাই জানেন, উনি সবকিছু ভীষণ পরিকল্পনামতো করার চেষ্টা করতেন। কী চাইছেন, সেটা পরিষ্কারভাবে তাঁর জানা ছিল। অভিনেতা নতুন কিছু করলে উনি অনেক প্রশংসা করতেন, কিন্তু আস্তে আস্তে তিনি যা চাইছেন তার কাছাকাছি নিয়ে যেতেন। ফলে ইম্প্রোভাইজ করার বিশেষ কিছু ছিল না। প্রত্যেক পরিচালকই তাঁর নিজস্ব পদ্ধতিতে চলচ্চিত্র তৈরি করেন। যেমন, মোজাফফর আলী একেবারেই অন্য রকম। তিনি শুধু আপনাকে দৃশ্য বুঝিয়ে দেবেন, অভিনেতা সেটাকে ফুটিয়ে তুলবেন—এটাই তিনি চান। পরিশেষে চলচ্চিত্রটি পরিচালকেরই শিল্প, অভিনেতা তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মাত্র।
জা. র.: তা হলে তো পরিচালকের ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে অভিনেতার ভালো-মন্দ?
ফারুক: আমি মনে করি, চলচ্চিত্রে দুজন মানুষের ওপর অভিনেতাকে নির্ভর করতে হয়। প্রথমজন হচ্ছেন চিত্রনাট্যকার, যিনি কাহিনি লেখেন, চরিত্র তৈরি করেন, সংলাপ রচনা করেন; আর অন্যজন অবশ্যই পরিচালক। যিনি তাঁকে নির্দেশনা দেবেন। লেখক-পরিচালক যদি উঁচু মানের হন, তবে অভিনেতাও ভালো অভিনয় করেন, না হলে একজন ভালো অভিনেতাও সাধারণ মানের হয়ে পড়েন।
ভালো অভিনয়ের জন্য পরিবেশটা খুব জরুরি। ঋষিকেশ মুখার্জির ছবিতে অভিনয় করার জন্য আমরা মুখিয়ে থাকতাম। গল্প, আড্ডা আর আনন্দের মধ্যে সময় পার হয়ে যেত। কাজ শেষ হয়ে গেলে সবার মন খারাপ হয়ে যেত। তাঁরা ছিলেন প্রকৃত শিল্পী। দুঃখের ব্যাপার, দিন দিন এমন লোকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
জা. র.: আপনার প্রিয় অভিনয়শিল্পী কারা?
ফারুক: আমি বিষয়টা এভাবে দেখতে চাই না। আমার সহশিল্পীরা সবাই আমার প্রিয়। তাঁদের সঙ্গে আমার প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক। নাসিরউদ্দীন শাহ, ওমপুরি, স্মিতা পাতিল, রেখাজি, দীপ্তি নাভাল, শাবানা আজমি—তাঁরা প্রত্যেকেই উঁচু মানের শিল্পী। সে জন্যই তাঁরা এখনো দাপটের সঙ্গে টিকে আছেন, নিজেদের পছন্দের চরিত্রে অভিনয় করতে পারছেন। আমি সব সময় চেষ্টা করেছি নিজেকে ওঁদের উচ্চতায় নিয়ে যেতে। ভালো অভিনয় অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। যখন এটা সত্যি সত্যিই ঘটে, তখন ‘এক মাহাল বন্ যাতা হ্যায়’।
জা. র.: আপনি তো সব মাধ্যমে কাজ করেছেন, রেডিও, মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র প্রায় সব মাধ্যমেই...
ফারুক: যেখানে অভিনয়ের সুযোগ আছে, আমি সেখানেই কাজ করতে চাই, সে যে মাধ্যমেই হোক। প্রতিটি মাধ্যমই আলাদা ধরনের—সেটা শিল্পীর জন্য বোঝাটা জরুরি। তবে আজকাল টেলিভিশনের অবস্থা খুবই খারাপ। অবান্তর, আজগুবি জগৎ তৈরি করেছে টেলিভিশন। মুশকিল হচ্ছে, এটা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। আমাদের বাচ্চাদের এতে বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমি নিজে টেলিভিশনে কাজ করেছি, উপস্থাপনা করেছি। অভিনেতা হিসেবে টেলিভিশন আপনাকে একেবারে শুষে নেবে। দুই বছর সময়ের মধ্যে আপনি হয়তো কোটি টাকা উপার্জন করবেন, কিন্তু অভিনেতা হিসেবে তত দিনে আপনিও প্রায় নিঃশেষ। শিল্পী অর্থের দিকে ঝুঁকে পড়লে অনেক অনর্থ তৈরি হয়।
প্রতিদিন অভিনয় করার কথা আমি ভাবতেই পারি না। আমি একসঙ্গে দুটো ছবিতে কাজ করি না। দিনে ১৬ ঘণ্টা কাজ করলে আপনি কখনোই ভালো অভিনয় করতে পারবেন না। আমি যেসব গুণী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছি তাঁরা শিখিয়েছেন, কাজকে ভালো না বাসলে সেটা কখনোই সুন্দর হবে না। শিল্পীকে পরিশেষে মানুষ ও সমাজের জন্য কাজ করতে হয়, সেটা আপনি যেভাবেই দেখেন না কেন।
জা. র.: বাংলাদেশের কোন চলচ্চিত্র দেখলেন?
ফারুক: সেভাবে আসলে দেখা হয়নি। মাটির ময়না ভালো লেগেছে। নিশ্চয়ই আরও ভালো ছবি এখানে তৈরি হচ্ছে। আমাদের ওখানে বাংলাদেশের ছবি দেখার তেমন কোনো সুযোগ নেই। এক দেশের ভালো ছবি অন্য দেশে প্রদর্শিত হওয়া উচিত। এটাই চলচ্চিত্রের আসল কাজ, ছবির মাধ্যমে যোগাযোগ সৃষ্টি করা, অপরকে জানা। জানাশোনার মধ্য দিয়েই আমরা একে অপরের কাছে আসতে পারি, ভালোবাসতে পারি, একে অপরের বন্ধু হতে পারি। এটাই শিল্পের সবচেয়ে বড় মাহাত্ম্য।
No comments