জঙ্গী তৎপরতা

হঠাৎ করেই যেন দেশে জঙ্গী তৎপরতা বেড়ে গেলো। লস্কর-ই-তৈয়বা ও জঈশ-ই-মোহাম্মদ নামের পাকিস্তানভিত্তিক এই সংগঠনগুলোর সঙ্গে আছে আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। সরকারের শেষ পর্যায়ে এরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে চায়। স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে রয়েছে জঙ্গীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।


বহু আগে থেকেই বিদেশী জঙ্গীরা এ দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সহায়তা করছে বাংলাদেশের স্থানীয় কিছু জঙ্গী; এদের কেউ কেউ আফগানিস্তানে লড়াই শেষে বাংলাদেশে এসেছে। জঙ্গীরা একটি অবাধ বিচরণক্ষেত্র গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে। র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ কিছু জঙ্গীকে গ্রেফতারও করেছে। কিন্তু এদের সমূলে বিনাশ করা সম্ভব হয়নি। গ্রেফতারের পর কোন না কোনভাবে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে এদের সংশ্লিষ্টতার কথা উদ্ঘাটিত হয়েছে। তাই জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এদের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। জঙ্গীরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন, মানবাধিকার ও নারীর ক্ষমতায়নের পথে প্রধান বাধা।
রাজধানীসহ সারাদেশে ছড়িয়ে আছে এই জঙ্গীরা। কিছুদিন আগে ডিবি পুলিশ রাজধানীর টঙ্গী ও উত্তরা থেকে লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য তিনজন পাকিস্তানী নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, পাকিস্তানী জঙ্গীরা বাংলাদেশে সর্বস্তরে এখনও তৎপর। এরা যে কোন সময় বাংলাদেশে বড় ধরনের নাশকতামূলক হামলা চালাতে পারে। সামরিক ও কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের অনেক স্থাপনাই এদের হামলার লক্ষ্য হতে পারে।
জঙ্গীরা বেশকিছু কওমি মাদ্রাসার মাধ্যমেও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এরা বাংলা ভাষা ও বাঙালী সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপক্ষে। বাঙালী সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করাই এদের লক্ষ্য। সম্প্রতি মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করেছিল। বাংলাদেশ সরকার এবার পুশব্যাকের মাধ্যমে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে। রোহিঙ্গাদের একটি অংশের সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গী চক্রের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। জঙ্গীরা পার্বত্য জেলার দুর্গম অঞ্চল ও আরাকানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে তাদের অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে চায়। বাংলাদেশে সব ধরনের বেআইনী জঙ্গী তৎপরতা নিষিদ্ধ করা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.