মন্ত্রিসভায় সাত নতুন মুখ, আজ শপথ by পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য

চতুর্থবারের মতো পরিবর্তন ঘটছে মহাজোট মন্ত্রিসভায়। আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের অন্য দুই শরিক দলের কয়েকজন প্রবীণ সদস্য মন্ত্রিসভায় ঢুকছেন। কয়েকজন মন্ত্রীর দপ্তরও বদল হবে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর অফিস সূত্রে জানা গেছে।


সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মুজিবুল হক; ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন। এ ছাড়া রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক এবং ঝিনাইদহের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবদুল হাই প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন।
মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টির কেউ নতুন করে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন না বলে সূত্র জানিয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির জি এম কাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। মুজিবুল হক জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন।
মন্ত্রিসভায় এই পরিবর্তন সেই সময়েই আসছে, যখন সরকার নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের মেয়াদের আর বেশি বাকি নেই। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি বর্তমান সরকার গঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আসতে পারে। তবে কারা অন্তর্ভুক্ত হবেন তা তাঁর জানা নেই। সূত্র জানিয়েছে, সাতজনকে শপথ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ফোন করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। ১০ মাস পর চতুর্থবারের মতো পরিবর্তন ঘটছে মহাজোট মন্ত্রিসভায়। এ পরিবর্তনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়াবে ৫১ জনে। সূত্র জানায়, নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদ শিল্প, রাশেদ খান মেনন রেলপথ, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর পরিকল্পনা এবং হাসানুল হক ইনু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন। মুজিবুল হকের দপ্তরের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওমর ফারুক ও আবদুল হাই প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় একজন পূর্ণ মন্ত্রী পেতে যাচ্ছে। এ মন্ত্রণালয়ে অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে দুই ভাগ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। বর্তমানে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন ড. আবদুর রাজ্জাক। দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নতুন করে দায়িত্ব পাচ্ছেন না বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই রদবদলে মন্ত্রিসভা থেকে কেউ বাদ পড়ছেন না বলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আজ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। মন্ত্রী হতে হলে রাশেদ খান মেননের পলিটব্যুরোর অনুমোদন লাগবে। এ কারণে এই সভা আহ্বান করা হয়েছে বলে পার্টি সূত্রে জানা গেছে।
মহাজোট মন্ত্রিসভায় সর্বশেষ পরিবর্তন আসে গত বছরের ২৮ নভেম্বর। সে সময় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী হন হাছান মাহমুদ।
চতুর্থবারের এই পরিবর্তনের আগে মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন ৪৬ জন। এর মধ্যে মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩২ সদস্যের মন্ত্রিসভা শপথ নেয়। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীসহ ২৪ জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং আটজন প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। ১৮ দিন পর ২৪ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা প্রথমবারের মতো সম্প্রসারণ করা হয়। ওই দফায় ছয়জন প্রতিমন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর ওই বছরের ৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ছয়জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজন পূর্ণ মন্ত্রী; বাকিরা প্রতিমন্ত্রী।

No comments

Powered by Blogger.