নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় এক কিলোমিটারের মধ্যে গাংনাই ও করতোয়া নদীতে মাছ ধরতে বাঁশের বেড়া দিয়ে পৃথক চারটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে মাছের প্রজনন ব্যাহত হয়ে প্রচুর ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নদ-নদী ও খাল-বিলে মাছ চলাচলের পথে আড়াআড়ি বাঁধ বা স্থায়ীভাবে বেড়া দেওয়া মৎস্য আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া প্রতিবছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নয় ইঞ্চির ছোট নলা মাছ (রুই, কাতল, মৃগেল, কালবাউশ ও ঘনিয়া) এবং ৩০ সেন্টিমিটারের ছোট বোয়াল ও আইড় মাছ ধরা বা বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এ বিধি লঙ্ঘন করলে এক থেকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে। সরেজমিনে দেখা গেছে, শিবগঞ্জ পৌর এলাকার ভূরঘাটা মহল্লার কাছে গাংনাই নদীতে মাত্র ২০০ গজের মধ্যে বাঁশের চাটাই দিয়ে দুটি বেড়া দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আধা কিলোমিটারের মধ্যে করতোয়া নদীর এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত পুরোটাই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে মাছ ধরা হচ্ছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এভাবে মাছ ধরছে কিছু লোক। দীর্ঘদিন তারা এভাবে মাছ ধরে আসছে। পৌরসভা বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের কেউ কিছু বলছে না। গাংনাই নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত আহসান আলী বলেন, এভাবে মাছ ধরলে কী সমস্যা হয়, তা তিনি জানেন না। কেউ কোনো দিন এ নিয়ে তাঁকে কোনো কথাই বলেনি।
মৎস্যজীবী এনামুল হক আক্ষেপ করে বলেন, উপজেলার গাংনাই, করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বাঁশের খুঁটি, বানা ও জাল দিয়ে বিশেষ ধরনের ফাঁদ পেতে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এতে মাছের বংশ বৃদ্ধি ঘটছে না। এ কারণে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায় না; মৎস্যজীবীরাও বেকার হয়ে পড়ছেন। ভূরঘাটা এলাকার কাউন্সিলর এয়াকুব আলী বলেন, ‘নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ ধরা যায় না—এ কথা আমার জানা নেই।’
শিবগঞ্জ উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments