অটিস্টিক শিশুদের অধিকার by আজমাল হোসেন মামুন
আজ চতুর্থ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। অন্যান্য বছরের মতো আজও দিবসটি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীদের অধিকার সম্বন্ধে অনেকে আজ সোচ্চার। এক সময় দৃষ্টি তথা অন্ধদের শুধু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে মানুষ জানত।
আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে মানুষ নতুন করে ভাবতে শিখেছে। তাই চিন্তা-ভাবনা করে মানুষের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করছে। ফলে নতুন নতুন প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিত হচ্ছে। অটিজম এর মধ্যে অন্যতম। অটিজম বিষয়ে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা নেই বললেই চলে। তাই অটিজম বিষয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য ২০০৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক 'বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস' পালিত হয়ে আসছে। এবারে দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে 'অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী উন্নয়নে পণবন্দি।'
চিকিৎসাশাস্ত্র মতে, এটি একটি রোগ। তবে কোনো মানসিক রোগ নয়। আর যেসব শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয় তাদের বলা হয় অটিস্টিক। শিশু অবস্থায় এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। সাধারণত তিন বছর হওয়ার আগেই শিশুর অটিজম সম্বন্ধে লক্ষণ দেখা যায়। এদের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অটিস্টিক শিশু ও কিশোরদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার ভয়াবহ। জানা যায়, প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে একজন শিশু অটিস্টিক হয়ে জন্ম গ্রহণ করে বা অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে। ছেলেরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। ছেলেমেয়ের আনুপাতিক হার ৪:১। আবার প্রতি ১০ অটিস্টিক শিশুর মধ্যে ২ জনের মধ্যে অত্যন্ত দক্ষতা দেখা যায় ছবি আঁকা, গান, নৃত্য অথবা কম্পিউটার বা গণিতসহ নানা ক্ষেত্রে। অটিস্টিক শিশু-কিশোরদের দেখতে অন্য সব স্বাভাবিক শিশু-কিশোরদের মতোই। কারণ শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা থাকে না। বাস্তব তথা তাদের কার্যক্রম ও আচরণ দেখে উপলব্ধি করতে পারা যায়। এদের প্রধান সমস্যা হলো যোগাযোগ ও গঠনমূলক খেলাধুলা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, গর্ভকালীন মায়েদের ভাইরাস জ্বর, জন্মের সময় শিশুর অক্সিজেনের অভাব, পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ এবং বংশগত কারণ হচ্ছে এর মূল কারণ।
অটিস্টিক শিশুর সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতি। এসব শিশু আলাদা পরিবেশে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারে না। এরা স্বাভাবিক শিশুর মতো মানসিক প্রক্রিয়াসম্পন্ন করতে পারে না। মাঝে মধ্যে খুব চিৎকার করে, লাফালাফি করে ও রাগান্বিত হয়। অনেক সময় নিজেকে আঘাত করে। তাই অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, নীতিনির্ধারকসহ সব সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে ওদের উন্নয়নের জন্য। এ প্রতিশ্রুতিও হতে হবে নিঃস্বার্থ। অনেক এনজিও এদের নামে বিদেশি অনুদান আনলেও কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ রাখে। বাস্তবে কোনো কাজ হয় না। অথচ সরকারও ওইসব এনজির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। এখন প্রতিবন্ধীদের স্বার্থে সে সময় এসেছে। কারণ, এদের দিকে নজর দিলে হয়তো এরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা স্পষ্ট উল্লেখ করেছে। বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক দলিলেও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের জন্য স্বাক্ষর করেছে। এই অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া অসম্ভব। সে জন্য ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে প্রতিবন্ধিতা ও অটিজমের পাশে নিজ উদ্যোগে দাঁড়াতে হবে। তবে করুণা হিসেবে নয়। মনে রাখতে হবে, এটা তাদের অধিকার।
azmal22@gmail.com
চিকিৎসাশাস্ত্র মতে, এটি একটি রোগ। তবে কোনো মানসিক রোগ নয়। আর যেসব শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয় তাদের বলা হয় অটিস্টিক। শিশু অবস্থায় এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। সাধারণত তিন বছর হওয়ার আগেই শিশুর অটিজম সম্বন্ধে লক্ষণ দেখা যায়। এদের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অটিস্টিক শিশু ও কিশোরদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার ভয়াবহ। জানা যায়, প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে একজন শিশু অটিস্টিক হয়ে জন্ম গ্রহণ করে বা অটিজমে আক্রান্ত হচ্ছে। ছেলেরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। ছেলেমেয়ের আনুপাতিক হার ৪:১। আবার প্রতি ১০ অটিস্টিক শিশুর মধ্যে ২ জনের মধ্যে অত্যন্ত দক্ষতা দেখা যায় ছবি আঁকা, গান, নৃত্য অথবা কম্পিউটার বা গণিতসহ নানা ক্ষেত্রে। অটিস্টিক শিশু-কিশোরদের দেখতে অন্য সব স্বাভাবিক শিশু-কিশোরদের মতোই। কারণ শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা থাকে না। বাস্তব তথা তাদের কার্যক্রম ও আচরণ দেখে উপলব্ধি করতে পারা যায়। এদের প্রধান সমস্যা হলো যোগাযোগ ও গঠনমূলক খেলাধুলা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, গর্ভকালীন মায়েদের ভাইরাস জ্বর, জন্মের সময় শিশুর অক্সিজেনের অভাব, পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ এবং বংশগত কারণ হচ্ছে এর মূল কারণ।
অটিস্টিক শিশুর সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতি। এসব শিশু আলাদা পরিবেশে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারে না। এরা স্বাভাবিক শিশুর মতো মানসিক প্রক্রিয়াসম্পন্ন করতে পারে না। মাঝে মধ্যে খুব চিৎকার করে, লাফালাফি করে ও রাগান্বিত হয়। অনেক সময় নিজেকে আঘাত করে। তাই অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, নীতিনির্ধারকসহ সব সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে ওদের উন্নয়নের জন্য। এ প্রতিশ্রুতিও হতে হবে নিঃস্বার্থ। অনেক এনজিও এদের নামে বিদেশি অনুদান আনলেও কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ রাখে। বাস্তবে কোনো কাজ হয় না। অথচ সরকারও ওইসব এনজির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। এখন প্রতিবন্ধীদের স্বার্থে সে সময় এসেছে। কারণ, এদের দিকে নজর দিলে হয়তো এরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা স্পষ্ট উল্লেখ করেছে। বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক দলিলেও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের জন্য স্বাক্ষর করেছে। এই অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া অসম্ভব। সে জন্য ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে প্রতিবন্ধিতা ও অটিজমের পাশে নিজ উদ্যোগে দাঁড়াতে হবে। তবে করুণা হিসেবে নয়। মনে রাখতে হবে, এটা তাদের অধিকার।
azmal22@gmail.com
No comments