ভারত দেড় লাখ কিউসেক পানি ছেড়েছে, উজানের ঢল আসে তিস্তায়-শুষ্ক মৌসুমে ধুধু বালুচর, বর্ষায় ভয়ঙ্কর গর্জন by তাহমিন হক ববি
উজানের দেশ ভারতের সঙ্গে শুস্ক মৌসুমে তিস্তা নদীর পানির হিস্যার চুক্তি এখনও ঝুলে রয়েছে। কবে এর সমাধান ঘটবে তা অনিশ্চিত। তবে প্রবাদ বাক্য রয়েছে মেঘ না চাইতে যেমন বৃষ্টি নামে তেমনি বর্ষা মৌসুমে তিস্তায় উজান থেকে যে পরিমাণ ঢল একের পর এক ধেয়ে আসছে তা অকল্পনীয়।
এবারে তিস্তা পর পর দুই দফায় বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। স্মরণকালের উজানের ঢল যেমন রেকড ভঙ্গ করেছে তেমনি নতুনভাবে বিপদসীমার লেবেল স্থাপনের পরও তিস্তা ভঙ্গ করেছে প্রথম দফায় একটানা দীর্ঘ ৪২ ঘণ্টা ও দ্বিতীয় দফায় ২৪ ঘণ্টা ধরে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে। এর আগে পুরনো লেবেলে ২০০৭ সালে তিস্তা একটানা ৩০ ঘন্টাব্যাপী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। যা তিস্তার সর্বকালের রেকড ছিল। এবার তা ভঙ্গ করেছে তিস্তা। পাশাপাশি বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারাজ থেকে উজানের ১১০ কিলোমিটার অদূরে ভারতের গজলডোবা ব্যারাজ হতে এই বর্ষায় সর্বকালের প্রায় দেড়লাখ কিউসেক পানি ছেড়ে দেয়া হয়। যা ধেয়ে এসে বাংলাদেশের তিস্তায় বন্যার সৃষ্টি করে তিস্তা দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে। সংশ্লিষ্টদের মতে গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে তিস্তা নদীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে চলে যাওয়ার পর থেকে তিস্তা একের পর এক রেকড ভঙ্গ করছে। শুস্ক মৌসুমে ধুধু বালু চর আর বর্ষা মৌসুমে ভয়ঙ্কর গর্জন।
তিস্তার ঢল অব্যাহত থাকলেও রবিবার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫২ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহ ছিল। তবে বিপদসীমার ঢলের পানি ভাটিতে গিয়ে বিভিন্ন নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোডের ডালিয়া ডিভিশনের সূত্র জানায় ১৯৭৯ সালে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ পরিমাপের জন্য বিপদসীমার লেবেলটি ছিল ৫২ মিটার ২৫ সেন্টিমিটার। কিন্তু গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে তিস্তা নদীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের সেচ কার্যক্রম চলে যাওয়ার পর তিস্তা নতুন রেকড সৃষ্টি করতে থাকে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় সর্বপ্রথম ৮৮ সালে ও ৯৬ সালে তিস্তার বন্যার সময় তিস্তা একটানা ১৬ ঘণ্টা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রেকড গড়েছিল। এরপরের বছরগুলোতে তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর গেলেও তা ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার উপর স্থায়ী ছিল না।
কিন্তু চলতি ২০১২ সালে এসে তিস্তা দীর্ঘ ৪২ ঘণ্টা একটানা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আগের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে দেয়। ডালিয়া বন্যাপুর্বাভাস সতর্কীকরণ সূত্র মতে উজানের ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ভয়াবহ ঢলে ১৫ জুলাই বিকেল ৬টায় তিস্তা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিসটার উপর দিয়ে প্রবাহিত থাকে। যা পরবর্তিতে আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু করে। একটানা ৪২ ঘণ্টা বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহের পর ১৭ জুলাই দুপুর ১২টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে।
বিপদসীমার নিচে চলে আসার ঠিক ৫১ ঘণ্টার মাথায় গত ১৯ জুলাই বিকেলে ৬টা থেকে তিস্তা দ্বিতীয় দফায় বিপদসীমা অতিক্রম করে। ২৪ ঘণ্টা বিপদসীমায় থাকার পর শুক্রবার বিকেলে তা পুনরায় নিচে নামে। তিস্তার উজানের এমন ঢল নিয়ে সরেজমিতে বেড়িয়ে আসে অনেক তথ্য। জানা যায় শিলিগুড়ির কাছে মহানন্দা নদীর বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় উজানে ভারতের বেশ কিছু নদ নদীর পানির প্রবাহ ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে তিস্তা তোর্সা নদী মুখী। আর পানির চাপ ধরে রাখতে না পারায় গজলডোবা ব্যারাজ থেকে প্রায় দেড়লাখ কিউসেক পানিও ছেড়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি উজানে হয়েছে ভারি বৃষ্টিপাত। সব মিলিয়ে পানির চাপ বেড়েছে প্রচ-ভাবে তিস্তায়। উজানের এই পানি বাংলাদেশের অংশের তিস্তায় প্রবেশ করার আগে ভারতের অংশের তিস্তার দো-মোহনী থেকে মেখলিগঞ্জ পর্যন্ত নদীর স্পার বাঁধ ও ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ধেয়ে আসে। প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার তিসÍার গতিপথ বর্তমান চলছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি জেলা ও কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ। এই জিরো পয়েন্ট থেকে তিসÍা ১২৪ কিলোমিটার পথ প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয়েছে কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্রে।
উত্তরবঙ্গের নীলফামারীর ডালিয়ায় অবস্থিত দেশের তিস্তা ব্যারাজ থেকে উজানে ৫০ কিলোমিটার অদূরে ভারতের দো-মোহনী। আর দো-মোহনী থেকে ৬০ কিলোমিটার উজানে ভারতের তিস্তার গজলডোবা ব্যারাজ।
শুক্রবার ভারতের সেচ দফতরের শিলিগুড়ির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সমর সরকারের বরাত দিয়ে নির্ভর যোগ্য সূত্র জানায়, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে মহানন্দার বিপুল জলরাশির ধাক্কা সামলাতে পারেনি মহানন্দার বাঁধ। ফলে এটি ভেঙ্গে গেলে নদীর স্রোত তিস্তা তোর্সায় ঘুরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহ¯পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত সর্বশেষ গজলডোবা ব্যারাজ থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। যা কিনা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তাতেই তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। সূত্রমতে, গজলডোবা থেকে যে ১ লাখ ৪২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয় তাতে তিস্তায় পানি বেড়ে যায় ৫৫ সেন্টিমিটার। ফলে তিস্তা ভয়ঙ্করভাবে গর্জে ওঠে। চলে যায় বিপদসীমার ওপর। উজানের এই পানি ধেয়ে আসায় বাংলাদেশ অংশে তিস্তা রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। সামনে যা কিছু পায় সব ল-ভ- করে দেয়।
অভিজ্ঞ মহলের মতে শুষ্ক মৌসুমে পানি চেয়েও পাওয়া যায় না। আর উজানের বন্যা সামলাতে সব পানি বর্ষার সময় বাংলাদেশের ওপর ঘুরিয়ে দেয়া হয়। এর সমাধান প্রয়োজন।
তিস্তার ঢল অব্যাহত থাকলেও রবিবার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫২ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহ ছিল। তবে বিপদসীমার ঢলের পানি ভাটিতে গিয়ে বিভিন্ন নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোডের ডালিয়া ডিভিশনের সূত্র জানায় ১৯৭৯ সালে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ পরিমাপের জন্য বিপদসীমার লেবেলটি ছিল ৫২ মিটার ২৫ সেন্টিমিটার। কিন্তু গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে তিস্তা নদীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের সেচ কার্যক্রম চলে যাওয়ার পর তিস্তা নতুন রেকড সৃষ্টি করতে থাকে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় সর্বপ্রথম ৮৮ সালে ও ৯৬ সালে তিস্তার বন্যার সময় তিস্তা একটানা ১৬ ঘণ্টা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রেকড গড়েছিল। এরপরের বছরগুলোতে তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর গেলেও তা ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার উপর স্থায়ী ছিল না।
কিন্তু চলতি ২০১২ সালে এসে তিস্তা দীর্ঘ ৪২ ঘণ্টা একটানা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আগের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে দেয়। ডালিয়া বন্যাপুর্বাভাস সতর্কীকরণ সূত্র মতে উজানের ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ভয়াবহ ঢলে ১৫ জুলাই বিকেল ৬টায় তিস্তা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিসটার উপর দিয়ে প্রবাহিত থাকে। যা পরবর্তিতে আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু করে। একটানা ৪২ ঘণ্টা বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহের পর ১৭ জুলাই দুপুর ১২টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে।
বিপদসীমার নিচে চলে আসার ঠিক ৫১ ঘণ্টার মাথায় গত ১৯ জুলাই বিকেলে ৬টা থেকে তিস্তা দ্বিতীয় দফায় বিপদসীমা অতিক্রম করে। ২৪ ঘণ্টা বিপদসীমায় থাকার পর শুক্রবার বিকেলে তা পুনরায় নিচে নামে। তিস্তার উজানের এমন ঢল নিয়ে সরেজমিতে বেড়িয়ে আসে অনেক তথ্য। জানা যায় শিলিগুড়ির কাছে মহানন্দা নদীর বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় উজানে ভারতের বেশ কিছু নদ নদীর পানির প্রবাহ ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে তিস্তা তোর্সা নদী মুখী। আর পানির চাপ ধরে রাখতে না পারায় গজলডোবা ব্যারাজ থেকে প্রায় দেড়লাখ কিউসেক পানিও ছেড়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি উজানে হয়েছে ভারি বৃষ্টিপাত। সব মিলিয়ে পানির চাপ বেড়েছে প্রচ-ভাবে তিস্তায়। উজানের এই পানি বাংলাদেশের অংশের তিস্তায় প্রবেশ করার আগে ভারতের অংশের তিস্তার দো-মোহনী থেকে মেখলিগঞ্জ পর্যন্ত নদীর স্পার বাঁধ ও ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ধেয়ে আসে। প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার তিসÍার গতিপথ বর্তমান চলছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি জেলা ও কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ। এই জিরো পয়েন্ট থেকে তিসÍা ১২৪ কিলোমিটার পথ প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয়েছে কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্রে।
উত্তরবঙ্গের নীলফামারীর ডালিয়ায় অবস্থিত দেশের তিস্তা ব্যারাজ থেকে উজানে ৫০ কিলোমিটার অদূরে ভারতের দো-মোহনী। আর দো-মোহনী থেকে ৬০ কিলোমিটার উজানে ভারতের তিস্তার গজলডোবা ব্যারাজ।
শুক্রবার ভারতের সেচ দফতরের শিলিগুড়ির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সমর সরকারের বরাত দিয়ে নির্ভর যোগ্য সূত্র জানায়, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে মহানন্দার বিপুল জলরাশির ধাক্কা সামলাতে পারেনি মহানন্দার বাঁধ। ফলে এটি ভেঙ্গে গেলে নদীর স্রোত তিস্তা তোর্সায় ঘুরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহ¯পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত সর্বশেষ গজলডোবা ব্যারাজ থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। যা কিনা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তাতেই তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। সূত্রমতে, গজলডোবা থেকে যে ১ লাখ ৪২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয় তাতে তিস্তায় পানি বেড়ে যায় ৫৫ সেন্টিমিটার। ফলে তিস্তা ভয়ঙ্করভাবে গর্জে ওঠে। চলে যায় বিপদসীমার ওপর। উজানের এই পানি ধেয়ে আসায় বাংলাদেশ অংশে তিস্তা রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। সামনে যা কিছু পায় সব ল-ভ- করে দেয়।
অভিজ্ঞ মহলের মতে শুষ্ক মৌসুমে পানি চেয়েও পাওয়া যায় না। আর উজানের বন্যা সামলাতে সব পানি বর্ষার সময় বাংলাদেশের ওপর ঘুরিয়ে দেয়া হয়। এর সমাধান প্রয়োজন।
No comments