জামাইবাবু প্রণব মুখার্জী ভারতের রাষ্ট্রপতি- নড়াইলে উৎসব by সাজেদ রহমান ও রিফাত-বিন-ত্বহা
নড়াইলের জামাইবাবু প্রণব মুখার্জী পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। বিভিন্ন মিডিয়াতে রবিবার বিকেলে সংবাদ প্রচার হবার সঙ্গে সঙ্গে দারুণ খুশি বাংলাদেশের নড়াইলের একটি নিভৃত পল্লীর মানুষ। আর ওই গ্রামটি হলো ভদ্রাবিলা। আনন্দিত হবার কারণ প্রণব বাবু এ গ্রামেরই জামাই।
ভারতীয় রাজনীতিতে তিনি এখন খুব ব্যস্ত। তাই শ্বশুরবাড়ি নড়াইল আসতে পারেন না। কিন্তু তার স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জী খোঁজ নেন নিজ গ্রামের। সেখানে তাঁর আত্মীয়স্বজনরাও আছেন।
নড়াইলের জামাইবাবু প্রণব মুখার্জী প্রথম বাঙালী হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। রবিবার বিকেলে এই সংবাদটি এসে পৌঁছায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামে। এরপর শুরু হয় আনন্দ উৎসব। স্থানীয় লোকজন আনন্দ র্যালির আয়োজন করে। র্যালিটি প্রণব মুখার্জীর শ্বশুরবাড়ি অমরেন্দ্র ঘোষের বাড়ি থেকে শুরু হয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ শেষে ভদ্রাবিলা বাজারে গিয়ে শেষ হয়। পরে র্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। নড়াইলের প্রিয় জামাইবাবুর জন্য ভদ্রবিলা গ্রামের মন্দিরে মন্দিরে চলছে পূজা অর্চনা। বিতরণ করা হচ্ছে মিষ্টি। তাঁর সাফল্যে আনন্দিত নড়াইলবাসী। ভদ্রবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন সিকদার বলেন, আমাদের এলাকার জামাইবাবু এখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভাবতেই ভাল লাগছে। শুভ্রা মুখার্জীর ভাই কানাইলাল ঘোষ বলেন, ভারতে চলে যাওয়ার পর ১৯৯৫ সালে সর্বশেষ নিজেদের বাড়িতে এসেছিলেন শুভ্রা মুখার্জী ও তাঁর কন্যা। আশা করছি আগামীতে দিদি-দাদা বাবু নড়াইলে আসবেন। শুভ্রা মুখার্জী ১৯৯৫ সালে নড়াইলে আসলে তাদের সঙ্গে ছিলেন নড়াইল জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে আমাদের জামাইবাবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছি।
শুভ্রা মুখার্জী এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। তার পরও তিনি মনে রেখেছেন তাঁর গ্রাম নড়াইলের ভদ্রাবিলা গ্রামকে। সর্বশেষ গ্রামে এসেছিলেন ১৯৯৫ সালে। শুভ্রা মুখার্জীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। পিতা অমরেন্দ্র ঘোষ ছিলেন জমিদার। মায়ের নাম মীরা রানী ঘোষ। নড়াইল শহর থেকে সোজা দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার দূরে নিভৃত ভদ্রবিলা। চিত্রা নদীর ধারে ছবির মতন সাজানো গোছানো গ্রামে পা রেখে সে বছর শুভ্রা মুখার্জী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁর পিতার কাছারি বাড়িতে এখন তহসিল অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও একটি পোস্ট অফিস। বাড়ি সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী শ্রীকৃষ্ণের মন্দির। বাড়ি এলে শুভ্রা মুখার্জীকে এলাকার অগণিত নারী-পুরুষ স্বাগত জানান। পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে তাঁকে বরণ করা হয়। শৈশবের স্মৃতিঘেরা নদীর তীর, প্রাচীন বৃক্ষ এগুলো গভীর আপন মমতা দিয়ে স্পর্শ করেন তিনি। শুভ্রা মুখার্জী শৈশবে কিছুদিন ছিলেন মামাবাড়ি নড়াইল সদরের তুলারামপুর গ্রামে। তাঁর মামা নিশিকান্ত ঘোষ ও হরিপদ ঘোষ। মামাত দাদারা এখনও ওই গাঁয়ে থাকেন। তুলারামপুর কাজলা নদীর তীরঘেঁেষ একটি সমৃদ্ধ জনপদ। পাশেই চাঁচড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি ২য় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। পাশে তুলারামপুর বালিকা বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি শুভ্রা মুখার্জীর মায়ের জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ে এসে সে সময় তিনি ১০ হাজার টাকার অনুদান দেন। ১৯৫৫ সালে শুভ্রা মুখার্জী ভারতে চলে যান। নড়াইলের কার্তিক ঘোষ শুভ্রা মুখার্জীর সম্পর্কে পিসতুত বোন। কার্তিক ঘোষ জানান, এখনও আমাদের সঙ্গে শুভ্রা মুখার্জীর নিয়মিত যোগাযোগ হয়। শুভ্রা মুখার্জী তাঁর ছোট বেলার কথা ভুলতে পারেন না।
প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে যখন বিয়ে হয় তখন শুভ্রা মুখার্জীর বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। আর ২২ বছরের যুবক প্রণব মুখার্জী। প্রণব বাবুর বাড়ি ভারতের বীরভূমের মীরাটি বা কীর্ণহার। তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত গান্ধীবাদী নেতা কামদা কিংকর মুখার্জী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন প্রণব বাবু একটি মর্নিং স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।
প্রণব মুখার্জীর এ রাজনৈতিক উত্তরণের পেছনে শুভ্রা মুখার্জীর অবদানও কম নয়। বিভিন্ন সময় সুচিন্তিত মতামত দিয়ে তিনি স্বামীকে সাহায্য করেছেন। তবে শুভ্রা মুখার্জী স্বামীর প্রভাবপ্রতিপত্তিকে কখনও নিজের বা পারিবারিক স্বার্থে ব্যবহার করেননি। তিনি একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গীতাঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার। এ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে তিনি বহু দেশে ঘুরেছেন এবং এর মাধ্যমেই সাধ্যমতো তিনি তুলে ধরেছেন জন্মভূমির কথা। শুভ্রা মুখার্জী পরিচালিত ও হিন্দীতে রূপান্তরিত ‘চন্ডালিকা’ ভারতের হিন্দী বলয়ে জনপ্রিয়। গল্প, প্রবন্ধ ও নানা বিষয়ের ওপর অসংখ্য ফিচারও তিনি লিখেছেন। পুত্র অভিজিৎ মুখার্জী এবং কন্যা তাঁর কাজে বিভিন্ন সময় সাহায্য করেছেন। অভিজিৎ মুখার্জী বর্তমানে ভারতের এমএলএ।
রাজনৈতিক জীবন শুভ্রা মুখার্জীর ততটা পছন্দের নয়, কিন্তু স্বামী যেহেতু ব্যস্ত রাজনীতিক, ভারতের মতো বড় একটি দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন, সে জন্য স্ত্রী হিসেবে তাঁকেও কিছু দায়িত্ব¡ পালন করতে হয়। অবশ্য এখন থেকে নয়, প্রণব বাবু যেদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পান, সেদিন থেকেই দিল্লীর রাজনৈতিক জগতের রহস্যময় আঙ্গিনায় পা রাখতে হয় তাঁকেও। ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে শুভ্রা মুখার্জীর গভীর সখ্য ছিল। বাংলাদেশের রান্না পছন্দ করতেন ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী। শুভ্রা মুখার্জী নিজ হাতে বাংলাদেশের রান্না করে ইন্দিরা গান্ধীকে আপ্যায়িত করতেন প্রায়ই।
নড়াইলের জামাইবাবু প্রণব মুখার্জী প্রথম বাঙালী হিসেবে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। রবিবার বিকেলে এই সংবাদটি এসে পৌঁছায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামে। এরপর শুরু হয় আনন্দ উৎসব। স্থানীয় লোকজন আনন্দ র্যালির আয়োজন করে। র্যালিটি প্রণব মুখার্জীর শ্বশুরবাড়ি অমরেন্দ্র ঘোষের বাড়ি থেকে শুরু হয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ শেষে ভদ্রাবিলা বাজারে গিয়ে শেষ হয়। পরে র্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। নড়াইলের প্রিয় জামাইবাবুর জন্য ভদ্রবিলা গ্রামের মন্দিরে মন্দিরে চলছে পূজা অর্চনা। বিতরণ করা হচ্ছে মিষ্টি। তাঁর সাফল্যে আনন্দিত নড়াইলবাসী। ভদ্রবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন সিকদার বলেন, আমাদের এলাকার জামাইবাবু এখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভাবতেই ভাল লাগছে। শুভ্রা মুখার্জীর ভাই কানাইলাল ঘোষ বলেন, ভারতে চলে যাওয়ার পর ১৯৯৫ সালে সর্বশেষ নিজেদের বাড়িতে এসেছিলেন শুভ্রা মুখার্জী ও তাঁর কন্যা। আশা করছি আগামীতে দিদি-দাদা বাবু নড়াইলে আসবেন। শুভ্রা মুখার্জী ১৯৯৫ সালে নড়াইলে আসলে তাদের সঙ্গে ছিলেন নড়াইল জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে আমাদের জামাইবাবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছি।
শুভ্রা মুখার্জী এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। তার পরও তিনি মনে রেখেছেন তাঁর গ্রাম নড়াইলের ভদ্রাবিলা গ্রামকে। সর্বশেষ গ্রামে এসেছিলেন ১৯৯৫ সালে। শুভ্রা মুখার্জীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। পিতা অমরেন্দ্র ঘোষ ছিলেন জমিদার। মায়ের নাম মীরা রানী ঘোষ। নড়াইল শহর থেকে সোজা দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার দূরে নিভৃত ভদ্রবিলা। চিত্রা নদীর ধারে ছবির মতন সাজানো গোছানো গ্রামে পা রেখে সে বছর শুভ্রা মুখার্জী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁর পিতার কাছারি বাড়িতে এখন তহসিল অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও একটি পোস্ট অফিস। বাড়ি সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী শ্রীকৃষ্ণের মন্দির। বাড়ি এলে শুভ্রা মুখার্জীকে এলাকার অগণিত নারী-পুরুষ স্বাগত জানান। পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে তাঁকে বরণ করা হয়। শৈশবের স্মৃতিঘেরা নদীর তীর, প্রাচীন বৃক্ষ এগুলো গভীর আপন মমতা দিয়ে স্পর্শ করেন তিনি। শুভ্রা মুখার্জী শৈশবে কিছুদিন ছিলেন মামাবাড়ি নড়াইল সদরের তুলারামপুর গ্রামে। তাঁর মামা নিশিকান্ত ঘোষ ও হরিপদ ঘোষ। মামাত দাদারা এখনও ওই গাঁয়ে থাকেন। তুলারামপুর কাজলা নদীর তীরঘেঁেষ একটি সমৃদ্ধ জনপদ। পাশেই চাঁচড়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি ২য় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। পাশে তুলারামপুর বালিকা বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি শুভ্রা মুখার্জীর মায়ের জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ে এসে সে সময় তিনি ১০ হাজার টাকার অনুদান দেন। ১৯৫৫ সালে শুভ্রা মুখার্জী ভারতে চলে যান। নড়াইলের কার্তিক ঘোষ শুভ্রা মুখার্জীর সম্পর্কে পিসতুত বোন। কার্তিক ঘোষ জানান, এখনও আমাদের সঙ্গে শুভ্রা মুখার্জীর নিয়মিত যোগাযোগ হয়। শুভ্রা মুখার্জী তাঁর ছোট বেলার কথা ভুলতে পারেন না।
প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে যখন বিয়ে হয় তখন শুভ্রা মুখার্জীর বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। আর ২২ বছরের যুবক প্রণব মুখার্জী। প্রণব বাবুর বাড়ি ভারতের বীরভূমের মীরাটি বা কীর্ণহার। তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত গান্ধীবাদী নেতা কামদা কিংকর মুখার্জী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন প্রণব বাবু একটি মর্নিং স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।
প্রণব মুখার্জীর এ রাজনৈতিক উত্তরণের পেছনে শুভ্রা মুখার্জীর অবদানও কম নয়। বিভিন্ন সময় সুচিন্তিত মতামত দিয়ে তিনি স্বামীকে সাহায্য করেছেন। তবে শুভ্রা মুখার্জী স্বামীর প্রভাবপ্রতিপত্তিকে কখনও নিজের বা পারিবারিক স্বার্থে ব্যবহার করেননি। তিনি একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গীতাঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার। এ প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে তিনি বহু দেশে ঘুরেছেন এবং এর মাধ্যমেই সাধ্যমতো তিনি তুলে ধরেছেন জন্মভূমির কথা। শুভ্রা মুখার্জী পরিচালিত ও হিন্দীতে রূপান্তরিত ‘চন্ডালিকা’ ভারতের হিন্দী বলয়ে জনপ্রিয়। গল্প, প্রবন্ধ ও নানা বিষয়ের ওপর অসংখ্য ফিচারও তিনি লিখেছেন। পুত্র অভিজিৎ মুখার্জী এবং কন্যা তাঁর কাজে বিভিন্ন সময় সাহায্য করেছেন। অভিজিৎ মুখার্জী বর্তমানে ভারতের এমএলএ।
রাজনৈতিক জীবন শুভ্রা মুখার্জীর ততটা পছন্দের নয়, কিন্তু স্বামী যেহেতু ব্যস্ত রাজনীতিক, ভারতের মতো বড় একটি দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন, সে জন্য স্ত্রী হিসেবে তাঁকেও কিছু দায়িত্ব¡ পালন করতে হয়। অবশ্য এখন থেকে নয়, প্রণব বাবু যেদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান পান, সেদিন থেকেই দিল্লীর রাজনৈতিক জগতের রহস্যময় আঙ্গিনায় পা রাখতে হয় তাঁকেও। ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে শুভ্রা মুখার্জীর গভীর সখ্য ছিল। বাংলাদেশের রান্না পছন্দ করতেন ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী। শুভ্রা মুখার্জী নিজ হাতে বাংলাদেশের রান্না করে ইন্দিরা গান্ধীকে আপ্যায়িত করতেন প্রায়ই।
No comments