ক্ষমতায়ন
মহাকাশে যাওয়ার ব্যাপারটি স্বপ্নের মতোই। মহাশূন্যে ভ্রমণকারী অনেক পুরুষের সঙ্গে নারীরাও আছেন। ১৯৬৩ সালে প্রথম একজন নারী মহাকাশে গিয়ে নারীদের পদচিহ্ন এঁকে দিলেন। এর পর থেকে অনেক নারীই গেছেন মহাশূন্য ভ্রমণে। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীদের মধ্যে প্রথম নারী হিসেবে মহাশূন্যে ভ্রমণকারী তিনজনকে নিয়ে এবারের আয়োজন।
ভালেন্তিনা তেরেশকোভা
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া)
বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে একজনকে মহাশূন্যে ভ্রমণে পাঠানো হবে। এ জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করা হলো। চার শতাধিক আবেদনকারীর মধ্যে নির্বাচিত হলেন ভালেন্তিনা তেরেশকোভা। আর সুযোগ পেলেন প্রথম নারী এবং প্রথম অসামরিক হিসেবে মহাশূন্য ভ্রমণের। পুরো নাম ভালেন্তিনা ভ্লাদিমিরোভনা তেরেশকোভা। রাশিয়ার প্রথম নারী হিসেবে ১৯৬৩ সালের ১৬ জুন মহাশূন্য ভ্রমণ করেন তিনি। টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভালেন্তিনা প্যারাশুট চালানোর ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষ ছিলেন। প্রথমবারের মতো কোনো নারী এ অভিযানে যাচ্ছেন—এ নিয়ে ছিল বিস্তর গবেষণা। আর তাই তিন দিনের এ অভিযানে ভালেন্তিনা নিজের ওপর বেশ কিছু পরীক্ষা করেছেন আর মহাকাশযানে নারীদের কী কী সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। সাধারণ একটি পরিবারের সদস্য ভালেন্তিনার জন্ম মধ্য রাশিয়ার মাসলিনিকোভা গ্রামে ১৯৩৭ সালের ৬ মার্চ। ট্রাকচালক বাবা ও টেক্সটাইল কারখানায় কাজ করা মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই প্যারাশুটে ওড়ার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী থাকা ভালেন্তিনা ১৯৫৯ সালের ২১ মে মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রথম প্যারাশুট নিয়ে ওড়েন। প্যারশুটে ওড়ার দক্ষতা তাঁকে প্রথম নারী হিসেবে মহাশূন্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচিত হতে সাহায্য করেছিল। ঝুকোভস্কোই এয়ারফোর্স একাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা ভালেন্তিনা সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং ১৯৬৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। নিজের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য দেশে-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
হেলেন শারমান
যুক্তরাজ্য
মহাশূন্যে পাঠানোর বিষয় নিয়ে যুক্তরাজ্যে ঘোষণা করা হয় প্রজেক্ট জুনো। প্রথম ব্রিটিশ মহাকাশচারী নারী হিসেবে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়। আর এতে ১৩ হাজার আবদেনকারীর মধ্যে হেলেন শারমান নির্বাচিত হন প্রথম ব্রিটিশ নারী হিসেবে মহাশূন্য ভ্রমণের। রসায়নবিদ হিসেবে পরিচিত হেলেন শারমান যুক্তরাজ্যে শেফিল্ডে ১৯৬৩ সালের ৩০ মে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম নারী মহাকাশচারী ভালেন্তিনা তেরেসকোভার পর মাত্র ২৭ বছর বয়সী মহাশূন্যে যাওয়া হেলেনের পুরো নাম হেলেন পেট্রিসিয়া শারমান। রসায়নে স্নাতক শেষ করে শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। মহাকাশ পাড়ি দিয়ে পরবর্তী সময়ে হেলেন বিজ্ঞানশিক্ষায় প্রভাষক হিসেবে কাজ শুরু করার পাশাপাশি ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কাজের স্বীকৃতি ও মহাশূন্যে ভ্রমণকারী হিসেবে পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার।
শেলি রাইড
যুক্তরাষ্ট্র
বিজ্ঞানের প্রতি ছোটবেলা থেকে আগ্রহ থাকায় স্বপ্ন দেখতেন কাজ করবেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায়। মহাকাশবিষয়ক একটি প্রকল্পের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় সংবাদপত্রে। সেখানে আট হাজার আবেদনকারীর মধ্যে সঠিক উত্তর দিয়ে ১৯৭৮ সালে নাসায় যোগ দেন শেলি রাইড এবং ১৯৮৩ সালে প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে মহাশূন্যে ভ্রমণ করেন। আমেরিকান এ প্রকৃতিবিজ্ঞানী বিজ্ঞান ছাড়াও ছিলেন জাতীয় টেনিস দলের তালিকাভুক্ত সদস্য। ১৯৫১ সালের ২৬ মে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেওয়া শেলির পুরো নাম শেলি ক্রিস্টিন রাইড। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি ও পদার্থবিদ্যায় স্নাতক শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ১৯৮৭ সালে নাসার চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড আর্মস কন্ট্রোলের দায়িত্ব নেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ক্যালিফোর্নিয়া স্পেস ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। নাসা স্পেস ফ্লাইট পদকসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
গ্রন্থনা: নুরুন্নবী চৌধুরী তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও ওয়েবসাইট
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া)
বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে একজনকে মহাশূন্যে ভ্রমণে পাঠানো হবে। এ জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করা হলো। চার শতাধিক আবেদনকারীর মধ্যে নির্বাচিত হলেন ভালেন্তিনা তেরেশকোভা। আর সুযোগ পেলেন প্রথম নারী এবং প্রথম অসামরিক হিসেবে মহাশূন্য ভ্রমণের। পুরো নাম ভালেন্তিনা ভ্লাদিমিরোভনা তেরেশকোভা। রাশিয়ার প্রথম নারী হিসেবে ১৯৬৩ সালের ১৬ জুন মহাশূন্য ভ্রমণ করেন তিনি। টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভালেন্তিনা প্যারাশুট চালানোর ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষ ছিলেন। প্রথমবারের মতো কোনো নারী এ অভিযানে যাচ্ছেন—এ নিয়ে ছিল বিস্তর গবেষণা। আর তাই তিন দিনের এ অভিযানে ভালেন্তিনা নিজের ওপর বেশ কিছু পরীক্ষা করেছেন আর মহাকাশযানে নারীদের কী কী সমস্যা হতে পারে, সে বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। সাধারণ একটি পরিবারের সদস্য ভালেন্তিনার জন্ম মধ্য রাশিয়ার মাসলিনিকোভা গ্রামে ১৯৩৭ সালের ৬ মার্চ। ট্রাকচালক বাবা ও টেক্সটাইল কারখানায় কাজ করা মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই প্যারাশুটে ওড়ার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী থাকা ভালেন্তিনা ১৯৫৯ সালের ২১ মে মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রথম প্যারাশুট নিয়ে ওড়েন। প্যারশুটে ওড়ার দক্ষতা তাঁকে প্রথম নারী হিসেবে মহাশূন্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচিত হতে সাহায্য করেছিল। ঝুকোভস্কোই এয়ারফোর্স একাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা ভালেন্তিনা সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং ১৯৬৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। নিজের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য দেশে-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
হেলেন শারমান
যুক্তরাজ্য
মহাশূন্যে পাঠানোর বিষয় নিয়ে যুক্তরাজ্যে ঘোষণা করা হয় প্রজেক্ট জুনো। প্রথম ব্রিটিশ মহাকাশচারী নারী হিসেবে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়। আর এতে ১৩ হাজার আবদেনকারীর মধ্যে হেলেন শারমান নির্বাচিত হন প্রথম ব্রিটিশ নারী হিসেবে মহাশূন্য ভ্রমণের। রসায়নবিদ হিসেবে পরিচিত হেলেন শারমান যুক্তরাজ্যে শেফিল্ডে ১৯৬৩ সালের ৩০ মে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম নারী মহাকাশচারী ভালেন্তিনা তেরেসকোভার পর মাত্র ২৭ বছর বয়সী মহাশূন্যে যাওয়া হেলেনের পুরো নাম হেলেন পেট্রিসিয়া শারমান। রসায়নে স্নাতক শেষ করে শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। মহাকাশ পাড়ি দিয়ে পরবর্তী সময়ে হেলেন বিজ্ঞানশিক্ষায় প্রভাষক হিসেবে কাজ শুরু করার পাশাপাশি ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কাজের স্বীকৃতি ও মহাশূন্যে ভ্রমণকারী হিসেবে পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার।
শেলি রাইড
যুক্তরাষ্ট্র
বিজ্ঞানের প্রতি ছোটবেলা থেকে আগ্রহ থাকায় স্বপ্ন দেখতেন কাজ করবেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায়। মহাকাশবিষয়ক একটি প্রকল্পের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় সংবাদপত্রে। সেখানে আট হাজার আবেদনকারীর মধ্যে সঠিক উত্তর দিয়ে ১৯৭৮ সালে নাসায় যোগ দেন শেলি রাইড এবং ১৯৮৩ সালে প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে মহাশূন্যে ভ্রমণ করেন। আমেরিকান এ প্রকৃতিবিজ্ঞানী বিজ্ঞান ছাড়াও ছিলেন জাতীয় টেনিস দলের তালিকাভুক্ত সদস্য। ১৯৫১ সালের ২৬ মে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেওয়া শেলির পুরো নাম শেলি ক্রিস্টিন রাইড। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি ও পদার্থবিদ্যায় স্নাতক শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন। ১৯৮৭ সালে নাসার চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড আর্মস কন্ট্রোলের দায়িত্ব নেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ক্যালিফোর্নিয়া স্পেস ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। নাসা স্পেস ফ্লাইট পদকসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
গ্রন্থনা: নুরুন্নবী চৌধুরী তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও ওয়েবসাইট
No comments