পাহাড়ের নিচে জীবন পড়েছে চাপা by মেখ্যাইউ মারমা
পরনে একরঙা নীল শাড়ি। চোখেমুখেও বেদনার নীল ছাপ স্পষ্ট। মাথায় উষ্কখুষ্ক কাঁচাপাকা চুল। ১০-১২ বছর বয়সী নাতি সৌরভের হাত ধরে একবার ছুটছেন ত্রাণ দেওয়ার স্থানে, আবার কখনো ছুটে চলেছেন খোলা জায়গায়।দিগ্বিদিক হয়ে ছুটতে থাকা এই নারীর নাম আনোয়ারা বেগম। সবাই তাঁকে পাখি নামেই চেনে।
গত ২৬ জুন মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আকবর শাহ মাজার এলাকার ইয়াছিন কলোনিতে পাহাড়ধসে মারা যান সাতজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পাখির মেয়ে হাসনা বানু (২৮) ও নাতনি শানু (১৮)।
এটাই প্রথম নয়। এর আগেও পাখির সংসারে মৃত্যু হানা দিয়েছে বারবার। এক শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার বিপর্যয় নেমে আসে তাঁর জীবনে। গত বছর ট্রাকচাপায় মারা গেছেন পাখির ছেলে তৈয়ব। এবার মেয়ে আর নাতনি একসঙ্গে।
শোকে পাখি এখন পাগলপ্রায়। গত শনিবার বিকেলে কলোনির পাশে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। কখনো কাঁদেন, কখনো বিলাপ করেন।
একদিকে স্বজন হারানোর ব্যথা, অন্যদিকে বেঁচে থাকার রসদ না জোটায় মা-বাবাহারা সাত নাতি-নাতনিকে নিয়ে তিনি এখন দিশেহারা। তাঁর বুকফাটা আর্তনাদ শুনছিল আশপাশের সবাই। সবার চোখে করুণার দৃষ্টি। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিয়ে যান ঘটনাস্থলের কাছে।
ঘটনাস্থলের দিকে হাত দেখিয়ে পাখি বলেন, রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি আর বজ্রপাত। রান্নার জন্য মরিচ বাটছিলেন।
এ সময় পাশের ঘরেই পাহাড়ে থাকা গাছপালা মাটিসহ বাসার ওপরে এসে পড়ে। তড়িঘড়ি করে সবাই বের হয়ে গেলেও কাদামাটিতে আটকে যাওয়ায় পাখির নাতনি শানু বের হতে পারেননি। নিরাপদ স্থানে আসার পর হাসনা বানু জানতে পারেন, তাঁর ভাইঝি কাদামাটিতে আটকে পড়েছেন। তাঁকে উদ্ধারের জন্য বানু আবার ছুটে যান।
বৃষ্টি-বজ্রপাত, বন্যার পানি মিলিয়ে আরেক দফা মাটি পাহাড় থেকে ধসে পড়লে ফুফু-ভাইঝি দুজনই চাপা পড়েন।
বুক চাপড়িয়ে ওঠেন পাখি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার আর কেউ রইল না। স্বামীকে হারিয়েছি বহু আগে। সম্বল ছিল এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং তাদের সন্তানেরা। গত বছর হারিয়েছি ছেলেকে। এ বছর মেয়েকে। নাতি-নাতনি সবাই এতিম হয়ে গেল। ৩০ বছর হলো এই এলাকায় থাকছি, কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। আজ ছেলেমেয়ে আর নাতনিকে হারিয়ে অসহায়।’
পাখির নাতনি শানু বাবার অবর্তমানে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। ইউসেপ স্কুলে পড়ালেখা শেষে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে শানু সংসার চালাতেন। জুলাই মাসের ২ তারিখ শানুর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বরপক্ষ তাঁকে আংটিও পরিয়ে দিয়ে গেছে কিছুদিন আগে।
পাখির সঙ্গে কথা বলার সময় ছিল হাসনা বানুর ছেলে সৌরভ। মাকে হারিয়ে সৌরভও দিশেহারা। ছলছল চোখে চেয়েছিল অনিশ্চয়তার পথে। সৌরভের বাবা আজগর আলীও মাটিচাপা পড়েছিলেন সেদিন রাতে। মাটির নিচ থেকে আহতাবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাখির পাশাপাশি নাতনি জেসমিন, নাতি সৌরভরা এখন বাক্রুদ্ধ। কোথায় যাবে, কী করবে জানে না পাখি, সৌরভ কিংবা জেসমিনরা।
কোথায় উঠেছেন, জানতে চাইলে পাখি বলেন, ‘মাথা গোঁজার মতো ঠাঁই নাই কোথাও। পাহাড়ের মাটির নিচে চাপা পড়েছে সবকিছু। কিন্তু থাকার কোনো জায়গা নাই। রোদে পুড়ছি, বৃষ্টিতে ভিজছি। এক গ্লাস পানি খাওয়ার সামর্থ্য নাই। সরকারি এবং স্থানীয় লোকজনের দেওয়া টাকা, ত্রাণ পেয়েছি কিছু।’ কিন্তু সাত নাতি-নাতনিকে নিয়ে পাখি এখন ভাসছেন দুঃখের অথৈ সাগরে।
এটাই প্রথম নয়। এর আগেও পাখির সংসারে মৃত্যু হানা দিয়েছে বারবার। এক শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার বিপর্যয় নেমে আসে তাঁর জীবনে। গত বছর ট্রাকচাপায় মারা গেছেন পাখির ছেলে তৈয়ব। এবার মেয়ে আর নাতনি একসঙ্গে।
শোকে পাখি এখন পাগলপ্রায়। গত শনিবার বিকেলে কলোনির পাশে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। কখনো কাঁদেন, কখনো বিলাপ করেন।
একদিকে স্বজন হারানোর ব্যথা, অন্যদিকে বেঁচে থাকার রসদ না জোটায় মা-বাবাহারা সাত নাতি-নাতনিকে নিয়ে তিনি এখন দিশেহারা। তাঁর বুকফাটা আর্তনাদ শুনছিল আশপাশের সবাই। সবার চোখে করুণার দৃষ্টি। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিয়ে যান ঘটনাস্থলের কাছে।
ঘটনাস্থলের দিকে হাত দেখিয়ে পাখি বলেন, রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি আর বজ্রপাত। রান্নার জন্য মরিচ বাটছিলেন।
এ সময় পাশের ঘরেই পাহাড়ে থাকা গাছপালা মাটিসহ বাসার ওপরে এসে পড়ে। তড়িঘড়ি করে সবাই বের হয়ে গেলেও কাদামাটিতে আটকে যাওয়ায় পাখির নাতনি শানু বের হতে পারেননি। নিরাপদ স্থানে আসার পর হাসনা বানু জানতে পারেন, তাঁর ভাইঝি কাদামাটিতে আটকে পড়েছেন। তাঁকে উদ্ধারের জন্য বানু আবার ছুটে যান।
বৃষ্টি-বজ্রপাত, বন্যার পানি মিলিয়ে আরেক দফা মাটি পাহাড় থেকে ধসে পড়লে ফুফু-ভাইঝি দুজনই চাপা পড়েন।
বুক চাপড়িয়ে ওঠেন পাখি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার আর কেউ রইল না। স্বামীকে হারিয়েছি বহু আগে। সম্বল ছিল এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং তাদের সন্তানেরা। গত বছর হারিয়েছি ছেলেকে। এ বছর মেয়েকে। নাতি-নাতনি সবাই এতিম হয়ে গেল। ৩০ বছর হলো এই এলাকায় থাকছি, কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। আজ ছেলেমেয়ে আর নাতনিকে হারিয়ে অসহায়।’
পাখির নাতনি শানু বাবার অবর্তমানে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। ইউসেপ স্কুলে পড়ালেখা শেষে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে শানু সংসার চালাতেন। জুলাই মাসের ২ তারিখ শানুর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বরপক্ষ তাঁকে আংটিও পরিয়ে দিয়ে গেছে কিছুদিন আগে।
পাখির সঙ্গে কথা বলার সময় ছিল হাসনা বানুর ছেলে সৌরভ। মাকে হারিয়ে সৌরভও দিশেহারা। ছলছল চোখে চেয়েছিল অনিশ্চয়তার পথে। সৌরভের বাবা আজগর আলীও মাটিচাপা পড়েছিলেন সেদিন রাতে। মাটির নিচ থেকে আহতাবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাখির পাশাপাশি নাতনি জেসমিন, নাতি সৌরভরা এখন বাক্রুদ্ধ। কোথায় যাবে, কী করবে জানে না পাখি, সৌরভ কিংবা জেসমিনরা।
কোথায় উঠেছেন, জানতে চাইলে পাখি বলেন, ‘মাথা গোঁজার মতো ঠাঁই নাই কোথাও। পাহাড়ের মাটির নিচে চাপা পড়েছে সবকিছু। কিন্তু থাকার কোনো জায়গা নাই। রোদে পুড়ছি, বৃষ্টিতে ভিজছি। এক গ্লাস পানি খাওয়ার সামর্থ্য নাই। সরকারি এবং স্থানীয় লোকজনের দেওয়া টাকা, ত্রাণ পেয়েছি কিছু।’ কিন্তু সাত নাতি-নাতনিকে নিয়ে পাখি এখন ভাসছেন দুঃখের অথৈ সাগরে।
No comments