এবার মালয়েশিয়ায় আগুনে পুড়ে পাঁচ বাংলাদেশির মৃত্যু

মালয়েশিয়ায় আগুনে পুড়ে দুই সহোদরসহ পাঁচ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন সৌরভ বাবু, রুমন, আবদুল্লাহ আল ফরহাদ, মোহাম্মদ বশীর ও তাঁর ভাই মোহাম্মদ ফারুক। তাঁদের বয়স ২৪ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাঁরা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বাসিন্দা।


সেলানগর রাজ্যের তামান পুচং পারদানা এলাকার দোতলা একটি বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাত ৩টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) ওই বাড়িতে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগলে তাঁরা আটকা পড়ে মারা যান। তবে সে সময় ওই বাড়িতে অবস্থান করা আরো দুই বাংলাদেশি জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। তাঁরা আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওই দুর্ঘটনার ব্যাপারে অবগত থাকার কথা স্বীকার করে ঢাকা ও মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সূত্রগুলো গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বলেছে, এ ব্যাপারে আরো জানার চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ হলে মৃতদেহগুলো ফিরিয়ে আনা হবে। উল্লেখ্য, গত ২৬ মে বাহরাইনে শর্টসার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে ১০ বাংলাদেশি মারা যান।
মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক স্টারের অনলাইন সংস্করণে গতকাল মঙ্গলবার আগুনে পুড়ে পাঁচ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়। সেলানগর ফায়ার সার্ভিসের প্রধান মোহাম্মদ সানি হারউল ওই পত্রিকাটিকে বলেছেন, দোতলা ওই বাড়িতে সাত বাংলাদেশি থাকতেন। আগুন লেগে গেলে দুজন বের হতে পারলেও অন্যরা পারেননি।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগ সূত্র গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জানিয়েছে, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানানোর জন্য মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনকে বলা হয়েছে। অন্যদিকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সিলর মন্টু কুমার বিশ্বাস গতকাল দুপুরে টেলিফোনে বলেছেন, হাইকমিশনের একজন প্রতিনিধিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গত মে মাসে বাহরাইনে আগুনে ১০ বাংলাদেশির মৃত্যুর পর এবার মালয়েশিয়ায় পাঁচজনের মৃত্যুর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক গতকাল দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, মালয়েশিয়ার দুর্ঘটনার কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো তিনি জানেন না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই অভিবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা খরচ বাঁচাতে বা একটু বেশি সঞ্চয়ের জন্য ছোট ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে থাকেন। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষও এই অমানবিক পরিস্থিতির জন্য অনেক ক্ষেত্রে দায়ী।
তিনি বলেন, বাহরাইনে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পর দেশটির সরকার কর্মীদের বাসস্থানের পরিবেশের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। মালয়েশিয়ায় ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর বলা যাবে।
উল্লেখ্য, গত বছর বিভিন্ন দেশ থেকে দুই হাজার ৬১৮ বাংলাদেশি কর্মীর মৃতদেহ দেশে এসেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই অপমৃত্যু বা দুর্ঘটনার শিকার।

No comments

Powered by Blogger.