বেসরকারি কলেজ-জ্ঞানের প্রতিষ্ঠানে এত আঁধার
বেসরকারি কলেজগুলোর সমস্যা নিয়ে বুধবার সমকালে 'বেসরকারি কলেজ : অন্তহীন সমস্যা' শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। উপজেলা এমনকি গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত তিন হাজার ৯৪টি কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় ১৩ লাখ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৭৬ হাজার।
কলেজ ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা উৎসাহব্যঞ্জক, কিন্তু শিক্ষার মান নিয়ে সব মহলেই রয়েছে গভীর হতাশা। মোটা দাগে যেসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হলো : যোগ্য শিক্ষকের অভাব, দুর্বল অবকাঠামো এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব। দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগও বিস্তর। তবে এসব সমস্যার বেশিরভাগ পরিলক্ষিত হয় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে। রাজধানীতে নামিদামি কলেজগুলো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয় এবং সেখানকার চিত্র বলা যায় বিপরীত। কয়েকটি জেলায়ও রয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মানসম্পন্ন কলেজ। অন্যদিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ কলেজের মতো উপজেলা পর্যায়ের অনেক কলেজে শিক্ষার্থীর অভাবে ক্লাস হয় না। অনেক কলেজ রয়েছে যেখানে 'শিক্ষার্থীর চেয়েও এমপিওভুক্ত শিক্ষক সংখ্যা বেশি'। অন্যদিকে রাজধানীর হলিক্রস কলেজ, নটর ডেম কলেজ, সিটি কলেজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে একটি আসনের জন্য অর্ধশত পর্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থীকে প্রতিবছর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হয়। প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের খবরের সঙ্গে অবধারিতভাবেই আরেকটি উদ্বেগের খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় :এত বিপুলসংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী কোথায় ভর্তি হবে? বেসরকারিভাবে পরিচালিত বিপুলসংখ্যক কলেজে শিক্ষার যথাযথ মানের অভাবের কারণেই এ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়ে থাকে। এ সমস্যার সমাধান করা জরুরি।
কলেজেই উচ্চতর পর্যায়ে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভিত রচিত হয়। কিন্তু সীমিত সুযোগ-সুবিধা, নিয়োগ পদ্ধতির ত্রুটি এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির দুর্নীতি প্রভৃতি কারণে যোগ্য শিক্ষকের অভাব ঘটলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী মেধার ঘাটতি নিয়েই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ভিড় জমাবে। এ সমস্যা কিন্তু এক বছরের নয়, বরং ধারাবাহিক। সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে : 'প্রকৃত মেধাবীরা কলেজ শিক্ষক হিসেবে আসছে না।' শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি কলেজগুলোর শিক্ষার মান বাড়ানো এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সংকল্পের কথা বলেছেন। শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল এবং তাদের মান-মর্যাদার জন্য সরকারের আগ্রহও ব্যক্ত হয়েছে তার কথায়। এ কাজে যত বিলম্ব ঘটবে, মানসম্মত শিক্ষার প্রত্যাশা পূরণ ততই সোনার হরিণ হয়ে থাকবে। শিক্ষামন্ত্রী প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে গুরুতর একটি সমস্যা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের কাজে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ। জনপ্রতিনিধিরাও অনেক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দলীয় স্বার্থ বড় করে দেখেন। স্কুল-কলেজ সর্বত্রই এ সমস্যা প্রকট। আবার অনেক শিক্ষকের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িয়ে পড়াও সমস্যা সৃষ্টি করে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে রাজনৈতিক দলের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন প্রত্যাশিত।
দেশে নতুন শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর চাহিদার উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার তাগিদ রয়েছে সর্বত্র। কিন্তু এ লক্ষ্য অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বেসরকারি কলেজগুলোর যে শোচনীয় চিত্র সমকালে প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটে 'সর্বোচ্চ বরাদ্দও' কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে ব্যর্থ হবে। মানসম্পন্ন শিক্ষার তাগিদ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই সরকারকে করতে হবে। একই সঙ্গে অভিভাবক ও নাগরিক সমাজকেও তাদের দায়িত্ব বিস্মৃত হলে চলবে না।
কলেজেই উচ্চতর পর্যায়ে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভিত রচিত হয়। কিন্তু সীমিত সুযোগ-সুবিধা, নিয়োগ পদ্ধতির ত্রুটি এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির দুর্নীতি প্রভৃতি কারণে যোগ্য শিক্ষকের অভাব ঘটলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী মেধার ঘাটতি নিয়েই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ভিড় জমাবে। এ সমস্যা কিন্তু এক বছরের নয়, বরং ধারাবাহিক। সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে : 'প্রকৃত মেধাবীরা কলেজ শিক্ষক হিসেবে আসছে না।' শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি কলেজগুলোর শিক্ষার মান বাড়ানো এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সংকল্পের কথা বলেছেন। শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল এবং তাদের মান-মর্যাদার জন্য সরকারের আগ্রহও ব্যক্ত হয়েছে তার কথায়। এ কাজে যত বিলম্ব ঘটবে, মানসম্মত শিক্ষার প্রত্যাশা পূরণ ততই সোনার হরিণ হয়ে থাকবে। শিক্ষামন্ত্রী প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে গুরুতর একটি সমস্যা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের কাজে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ। জনপ্রতিনিধিরাও অনেক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দলীয় স্বার্থ বড় করে দেখেন। স্কুল-কলেজ সর্বত্রই এ সমস্যা প্রকট। আবার অনেক শিক্ষকের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িয়ে পড়াও সমস্যা সৃষ্টি করে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে রাজনৈতিক দলের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন প্রত্যাশিত।
দেশে নতুন শিক্ষানীতি প্রণীত হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীর চাহিদার উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার তাগিদ রয়েছে সর্বত্র। কিন্তু এ লক্ষ্য অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বেসরকারি কলেজগুলোর যে শোচনীয় চিত্র সমকালে প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটে 'সর্বোচ্চ বরাদ্দও' কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে ব্যর্থ হবে। মানসম্পন্ন শিক্ষার তাগিদ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই সরকারকে করতে হবে। একই সঙ্গে অভিভাবক ও নাগরিক সমাজকেও তাদের দায়িত্ব বিস্মৃত হলে চলবে না।
No comments