বলিভিয়া-আদিবাসী অধিকার এবং একজন ইভো মোরালেস by ফজলুল হালিম
আদিবাসীদের মোরালেসবিরোধী কিছু ক্ষোভ থাকলেও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০০০ এবং ২০০৩ সালের ব্যাপক আন্দোলনের পর বলিভিয়া একটি ক্রমপরিবর্তনশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। একবিংশ শতকের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত একটি নতুন মডেলের জাতি গঠনের প্রক্রিয়া বলিভিয়াতে বহমান
অনেক দূরের দেশ বলিভিয়ার কথা বলছি। এ বছরের এপ্রিলে ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশটিতে বিপ্লবের ৬০ বছর উদযাপন করা হয়েছে। ছয় দশক আগে ঘটে যাওয়া এ বিপ্লব মূলত বিভিন্ন শ্রেণীর সঙ্গে তৎকালীন বলিভিয়ান সরকারের যুদ্ধ; যেখানে ভূমি এবং এর সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন পেশার মানুষ দি পিপলস রেভলিউশনারি মুভমেন্টকে (এমএনআর) সমর্থন করেছিল। বিপ্লবের চালিকাশক্তি ছিল আদিবাসী, বিশেষত খনি শ্রমিক।
বলিভিয়ায় আদিবাসীদের আন্দোলনের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ১৮২৫ সাল থেকে বলিভিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে এসেছেন ৮৪ জন প্রেসিডেন্ট এবং বহুবার সংঘটিত হয়েছে সামরিক অভ্যুত্থান। ইভো মোরালেসের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত শোষিত হয়েছে পৃথিবীর আদি সন্তান পরিচয়ধারী এই মানুষগুলো। অথচ বলিভিয়ার জনসংখ্যার ৬০ ভাগই আদিবাসী। আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত বিদ্রোহের পেছনে মূল বিশ্বাস হলো কলম্বাস-পূর্ববর্তী সময়ের এই অঞ্চলের মানুষের নিজেদের স্বকীয় সত্তা এবং ঊনবিংশ শতকে এই আন্দোলনে তাদের শ্রেষ্ঠ পরিব্রাজক টুপ্যাক কাটারির মর্মান্তিক শিরশ্ছেদ এবং তার রেখে যাওয়া স্মৃতি ও সংগ্রামের আহ্বান।
২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর চট করে বদলে গিয়েছিল সবকিছু। ইভো মোরালেসের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বলিভিয়ার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আদি ও মূল জনগোষ্ঠীর একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে এক সোয়েটার গায়ে গোটা ইউরোপ ভ্রমণ করে এই আদিবাসী নেতা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন নিজের সততার কথা। মোরালেসের বক্তব্য অনুযায়ী, রাতের আকাশের হাজার তারার হোটেল ছিল আমার আশ্রয়স্থল। ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করা মুভমেন্ট টুওয়ার্ডস সোশ্যালিজমের এই শীর্ষ নেতা ক্ষমতা হাতে আসার পর একের পর এক জনহিতকর নীতি প্রণয়ন করতে শুরু করেন।
পরিবর্তনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় লিঙ্গ স্বচ্ছতা। জানুয়ারি
২০১০ সালে মোরালেস পুনর্নির্বাচিত হয়ে তার মন্ত্রিসভায় ১০ নারীকে মন্ত্রিপরিষদে নেন। তাদের মধ্যে তিনজন আদিবাসী নারী সমাজকর্মী। এই তিন নারীর মধ্যে একজনকে তিনি বলিভিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আদিবাসীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার দিকেও মনোনিবেশ করেছেন মোরালেস। ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে সুপ্রিম ডিক্রি জারি করে হাইড্রোকার্বন প্রকল্প থেকে তহবিল সংগ্রহ করে তিনটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির উদ্যোগ নেয় তার সরকার, যার কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। এই বিশ্ববিদ্যলয়গুলো তিনটি আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল আয়মারা, কুচুয়া এবং গুয়ারানিতে স্থাপিত হয়। এখানে আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব ভাষায় পড়ালেখা করতে পারবে।
সম্প্র্রতি রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস রাষ্ট্রের সংবিধানসাপেক্ষে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বলিভিয়ায় বৃহৎ জমির মালিকানার চূড়ান্ত বিলোপের ঘোষণা করেছেন। যার ফলে ধারণা করা হয়, আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের ভূমি সংক্রান্ত দাবির একটা সমাধান হবে। অ্যাল্টিপ্যানো মালভূমি অঞ্চলে আদিবাসীদের এই ভূমির মালিকানার লড়াই চলছে প্রায় ৫শ' বছর ধরে।
মোরালেস সরকারের সময় আদিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় কাজটি করা হয় ২০০৯ সালে। বেশ কিছু বিরোধিতা সত্ত্বেও রেফারেন্ডামের মাধ্যমে জনগণের মতামত নিয়েই আদিবাসী গ্রুপগুলোর জন্য সংবিধানে নতুন অধিকারগুলো প্রদান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ওই সংশোধিত সংবিধানে জাতির সংজ্ঞা পুনরায় নির্ধারণ করে আদিবাসীদের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। তবে এসব উদ্যোগের পরেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন মোরালেস সরকার। ২০০৮ সালে আমাজন বনের মধ্য দিয়ে সড়ক নির্মাণের যে প্রকল্প ব্রাজিলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওএএসের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল, তা আদিবাসীদের চাপের মুখে বাতিল করতে বাধ্য হয় সরকার।
এ ছাড়া ২০১০ সালের শেষ দিকের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। তখন জ্বালানি খাতের ভর্তুকি দূরীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোরালেস। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল এভাবে রাজস্বের অপচয় রোধ করা। সে সময় জ্বালানি পণ্যের দাম ক্রমেই বাড়ছিল আন্তর্জাতিক বাজারে। এটি বাজারমূল্যে কিনতে গিয়ে রাজস্ব থেকে খরচ হয়ে যাচ্ছিল অনেক অর্থ। অথচ দেশে তা বিক্রি করতে হচ্ছিল ১০ বছর আগের দামে। তাই মোরালেস ভর্তুকি দূরীকরণের সিদ্ধান্ত নিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই সেটি আবার পরিবর্তন করতে হলো। কারণ তার দলের আদিবাসীরাই রাজপথে নেমে আন্দোলন শুরু করল। মাথা নোয়ালেন তিনি।
পরে বলিভিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খনি জাতীয়করণের প্রস্তাব দেন মোরালেস। সমস্যা হলো, আদিবাসী খনি শ্রমিকরা সেটিও মানতে রাজি নয়। কারণ জাতীয়করণ সম্বন্ধে রয়েছে তাদের মিশ্র অভিজ্ঞতা। আর তাই তো তারা এর বিরোধিতা করে। ফলে ভেস্তে যায় মোরালেসের এ উদ্যোগ।
আদিবাসীদের মোরালেসবিরোধী কিছু ক্ষোভ থাকলেও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০০০ এবং ২০০৩ সালের ব্যাপক আন্দোলনের পর বলিভিয়া একটি ক্রমপরিবর্তনশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। একবিংশ শতকের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত একটি নতুন মডেলের জাতি গঠনের প্রক্রিয়া বলিভিয়াতে বহমান। আর এই পরিবর্তনের পথে সমান অংশীদার বলিভিয়ার আদিবাসী সম্প্রদায় এবং ইভো মোরালেস সরকার। বাংলাদেশের জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় আদিবাসীদের ক্রমশ প্রান্তিক অবস্থানেই চলে যেতে দেখেছি আমরা। অনেক দূরের দেশ হলেও বলিভিয়া সে ক্ষেত্রে আমাদের জন্য অনুসরণযোগ্য হতে পারে।
ফজলুল হালিম :শিক্ষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
redpen_ju@yahoo.com
বলিভিয়ায় আদিবাসীদের আন্দোলনের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ১৮২৫ সাল থেকে বলিভিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে এসেছেন ৮৪ জন প্রেসিডেন্ট এবং বহুবার সংঘটিত হয়েছে সামরিক অভ্যুত্থান। ইভো মোরালেসের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত শোষিত হয়েছে পৃথিবীর আদি সন্তান পরিচয়ধারী এই মানুষগুলো। অথচ বলিভিয়ার জনসংখ্যার ৬০ ভাগই আদিবাসী। আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত বিদ্রোহের পেছনে মূল বিশ্বাস হলো কলম্বাস-পূর্ববর্তী সময়ের এই অঞ্চলের মানুষের নিজেদের স্বকীয় সত্তা এবং ঊনবিংশ শতকে এই আন্দোলনে তাদের শ্রেষ্ঠ পরিব্রাজক টুপ্যাক কাটারির মর্মান্তিক শিরশ্ছেদ এবং তার রেখে যাওয়া স্মৃতি ও সংগ্রামের আহ্বান।
২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর চট করে বদলে গিয়েছিল সবকিছু। ইভো মোরালেসের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বলিভিয়ার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আদি ও মূল জনগোষ্ঠীর একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে এক সোয়েটার গায়ে গোটা ইউরোপ ভ্রমণ করে এই আদিবাসী নেতা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন নিজের সততার কথা। মোরালেসের বক্তব্য অনুযায়ী, রাতের আকাশের হাজার তারার হোটেল ছিল আমার আশ্রয়স্থল। ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করা মুভমেন্ট টুওয়ার্ডস সোশ্যালিজমের এই শীর্ষ নেতা ক্ষমতা হাতে আসার পর একের পর এক জনহিতকর নীতি প্রণয়ন করতে শুরু করেন।
পরিবর্তনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় লিঙ্গ স্বচ্ছতা। জানুয়ারি
২০১০ সালে মোরালেস পুনর্নির্বাচিত হয়ে তার মন্ত্রিসভায় ১০ নারীকে মন্ত্রিপরিষদে নেন। তাদের মধ্যে তিনজন আদিবাসী নারী সমাজকর্মী। এই তিন নারীর মধ্যে একজনকে তিনি বলিভিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আদিবাসীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার দিকেও মনোনিবেশ করেছেন মোরালেস। ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে সুপ্রিম ডিক্রি জারি করে হাইড্রোকার্বন প্রকল্প থেকে তহবিল সংগ্রহ করে তিনটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির উদ্যোগ নেয় তার সরকার, যার কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। এই বিশ্ববিদ্যলয়গুলো তিনটি আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল আয়মারা, কুচুয়া এবং গুয়ারানিতে স্থাপিত হয়। এখানে আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব ভাষায় পড়ালেখা করতে পারবে।
সম্প্র্রতি রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস রাষ্ট্রের সংবিধানসাপেক্ষে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বলিভিয়ায় বৃহৎ জমির মালিকানার চূড়ান্ত বিলোপের ঘোষণা করেছেন। যার ফলে ধারণা করা হয়, আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের ভূমি সংক্রান্ত দাবির একটা সমাধান হবে। অ্যাল্টিপ্যানো মালভূমি অঞ্চলে আদিবাসীদের এই ভূমির মালিকানার লড়াই চলছে প্রায় ৫শ' বছর ধরে।
মোরালেস সরকারের সময় আদিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় কাজটি করা হয় ২০০৯ সালে। বেশ কিছু বিরোধিতা সত্ত্বেও রেফারেন্ডামের মাধ্যমে জনগণের মতামত নিয়েই আদিবাসী গ্রুপগুলোর জন্য সংবিধানে নতুন অধিকারগুলো প্রদান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ওই সংশোধিত সংবিধানে জাতির সংজ্ঞা পুনরায় নির্ধারণ করে আদিবাসীদের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। তবে এসব উদ্যোগের পরেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন মোরালেস সরকার। ২০০৮ সালে আমাজন বনের মধ্য দিয়ে সড়ক নির্মাণের যে প্রকল্প ব্রাজিলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওএএসের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল, তা আদিবাসীদের চাপের মুখে বাতিল করতে বাধ্য হয় সরকার।
এ ছাড়া ২০১০ সালের শেষ দিকের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। তখন জ্বালানি খাতের ভর্তুকি দূরীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোরালেস। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল এভাবে রাজস্বের অপচয় রোধ করা। সে সময় জ্বালানি পণ্যের দাম ক্রমেই বাড়ছিল আন্তর্জাতিক বাজারে। এটি বাজারমূল্যে কিনতে গিয়ে রাজস্ব থেকে খরচ হয়ে যাচ্ছিল অনেক অর্থ। অথচ দেশে তা বিক্রি করতে হচ্ছিল ১০ বছর আগের দামে। তাই মোরালেস ভর্তুকি দূরীকরণের সিদ্ধান্ত নিলেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই সেটি আবার পরিবর্তন করতে হলো। কারণ তার দলের আদিবাসীরাই রাজপথে নেমে আন্দোলন শুরু করল। মাথা নোয়ালেন তিনি।
পরে বলিভিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খনি জাতীয়করণের প্রস্তাব দেন মোরালেস। সমস্যা হলো, আদিবাসী খনি শ্রমিকরা সেটিও মানতে রাজি নয়। কারণ জাতীয়করণ সম্বন্ধে রয়েছে তাদের মিশ্র অভিজ্ঞতা। আর তাই তো তারা এর বিরোধিতা করে। ফলে ভেস্তে যায় মোরালেসের এ উদ্যোগ।
আদিবাসীদের মোরালেসবিরোধী কিছু ক্ষোভ থাকলেও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ২০০০ এবং ২০০৩ সালের ব্যাপক আন্দোলনের পর বলিভিয়া একটি ক্রমপরিবর্তনশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। একবিংশ শতকের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত একটি নতুন মডেলের জাতি গঠনের প্রক্রিয়া বলিভিয়াতে বহমান। আর এই পরিবর্তনের পথে সমান অংশীদার বলিভিয়ার আদিবাসী সম্প্রদায় এবং ইভো মোরালেস সরকার। বাংলাদেশের জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় আদিবাসীদের ক্রমশ প্রান্তিক অবস্থানেই চলে যেতে দেখেছি আমরা। অনেক দূরের দেশ হলেও বলিভিয়া সে ক্ষেত্রে আমাদের জন্য অনুসরণযোগ্য হতে পারে।
ফজলুল হালিম :শিক্ষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
redpen_ju@yahoo.com
No comments