জেরায় সাক্ষী মুনতাসীর মামুন-জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক ও ধর্ম ব্যবসায়ী দল
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জেরায় বলেছেন, তিনি মনে করেন, জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক ও ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দল।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে দুই সদস্যের (এক সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গতকাল মঙ্গলবার মুনতাসীর মামুনকে জেরা করে আসামিপক্ষ। গত সোমবার তিনি জবানবন্দি দেন।
আসামির কাঠগড়ায় গোলাম আযমের উপস্থিতিতে এই জেরা শুরু হয়। তবে ঘণ্টা খানেক পর তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারাকক্ষে ফেরত পাঠানো হয়। কার্যক্রমের শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেয়াদ-আল-মালুম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, সাক্ষীর সত্যনিষ্ঠতা যাচাইয়ের নামে আসামিপক্ষ তাঁকে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সব বিষয়ে জেরা করতে পারেন না। মনে রাখতে হবে, এই মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধি ও সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য নয়।
জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার অধিকার তাঁদের আছে এ জন্য যে, মামলার অভিযোগ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষীকে কোনো অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করা হচ্ছে কি না, তা লক্ষ রাখা হবে।
এরপর জেরা শুরু হয়। একপর্যায়ে মিজানুল জানতে চান, ১৯৪৭-এর আগে পূর্ববঙ্গের কয়জন ব্যক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমিশন্ড কর্মকর্তা ছিলেন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য সাক্ষীর কাছে আছে কি না? জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘না।’ ভারতীয় ও বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা ছিলেন কতজন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, নেই। কারণ, এটা তাঁর বিষয় নয়। ১৯৪৭-এর আগে পূর্ববঙ্গে কোনো পাটকল ছিল কি না—এর জবাবে তিনি বলেন, তাঁর জানামতে কোনো পাটকল ছিল না এবং এটাও তাঁর বিষয় নয়।
এ সময় মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘যদি এটা প্রমাণ করার বিষয় হয় ১৯৪৭ সালের আগেও এ দেশে বঞ্চনা ছিল, তবে সেটা যৌক্তিক নয়। আমি একজন গবেষক, এ বয়সে পরীক্ষা দিতে আসিনি। এ ধরনের প্রশ্ন করলে আমি ফেল করব।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিশ্বাস, আসামিপক্ষের আইনজীবী কোনো বিব্রতকর প্রশ্ন করবেন না। যদি তা করেন, তবে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে সুরক্ষা দেবেন।
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, একাত্তরের আগে মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ ও কখনো সামরিক সরকার পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। সাক্ষী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক সরকারে ছিল, তবে সেটা যুক্তফ্রন্টের অংশ হিসেবে ধরা সঠিক হবে। ১৯৭০ সালে এলএফওর (লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার) অধীনে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিল কি না—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তাঁর জানা নেই। এই জাতীয় পরিষদের প্রধান ও প্রথম দায়িত্ব ছিল সংবিধান প্রণয়ন করা। এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এ বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই।’
স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য আওয়ামী লীগ তৎকালীন সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো বৈঠক করেছিল—এ প্রশ্নের জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, তা তিনি বলতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা তৎকালীন প্রচারমাধ্যমের দুর্বলতা এবং পাকিস্তান সরকারের সেন্সরশিপের কারণে দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি—এ বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, এ বক্তব্য সত্য নয়।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি মিথ্যা ছিল—এ প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী বলেন, ‘তা বলতে পারব না।’ মিজানুল বলেন, ‘এখন অনেকেই বলছেন এই মামলার অভিযোগ সত্য ছিল, তাঁর মধ্যে বর্তমান সংসদের ডেপুটি স্পিকারও আছেন।’ এ সময় সাক্ষী বলেন, ‘বলতে পারেন।’
মধ্যাহ্ন বিরতির পর জেরায় আসামিপক্ষের আইনজীবী জানতে চান, ১৯৯৬ সালে এ কে ফায়জুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন কি না? জবাবে সাক্ষী বলেন, এটা তিনি বলতে পারবেন না। একাত্তরে ফায়জুল হকের ভূমিকা কী ছিল—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাঁর ধারণা নেই।
মিজানুল প্রশ্ন করেন, কোনো বেসামরিক ব্যক্তি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতেন? জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, প্রভাবান্বিত করতেন। একাত্তরে শান্তি কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে এ দেশের কোনো বেসামরিক ব্যক্তির যোগাযোগ ছিল না—আইনজীবীর এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘আমার তা মনে হয় না।’
আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা যোগাযোগ করেছেন, এমন কোনো তথ্য সাক্ষীর কাছে আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘এমন তথ্য না থাকলেও এটা অনুমান করে বোঝা যায়, যোগাযোগ না থাকলে ৪ এপ্রিলের বৈঠক হতে পারত না।’
জেরার শেষ পর্যায়ে একাত্তরে শান্তি কমিটি গঠন-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করেন মিজানুল ইসলাম। মুনতাসীর মামুনকে জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় বিকেলে মামলার কার্যক্রম আজ বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
আসামির কাঠগড়ায় গোলাম আযমের উপস্থিতিতে এই জেরা শুরু হয়। তবে ঘণ্টা খানেক পর তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারাকক্ষে ফেরত পাঠানো হয়। কার্যক্রমের শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জেয়াদ-আল-মালুম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, সাক্ষীর সত্যনিষ্ঠতা যাচাইয়ের নামে আসামিপক্ষ তাঁকে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সব বিষয়ে জেরা করতে পারেন না। মনে রাখতে হবে, এই মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধি ও সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য নয়।
জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার অধিকার তাঁদের আছে এ জন্য যে, মামলার অভিযোগ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষীকে কোনো অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করা হচ্ছে কি না, তা লক্ষ রাখা হবে।
এরপর জেরা শুরু হয়। একপর্যায়ে মিজানুল জানতে চান, ১৯৪৭-এর আগে পূর্ববঙ্গের কয়জন ব্যক্তি ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমিশন্ড কর্মকর্তা ছিলেন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য সাক্ষীর কাছে আছে কি না? জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘না।’ ভারতীয় ও বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা ছিলেন কতজন, এ বিষয়ে কোনো তথ্য আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, নেই। কারণ, এটা তাঁর বিষয় নয়। ১৯৪৭-এর আগে পূর্ববঙ্গে কোনো পাটকল ছিল কি না—এর জবাবে তিনি বলেন, তাঁর জানামতে কোনো পাটকল ছিল না এবং এটাও তাঁর বিষয় নয়।
এ সময় মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘যদি এটা প্রমাণ করার বিষয় হয় ১৯৪৭ সালের আগেও এ দেশে বঞ্চনা ছিল, তবে সেটা যৌক্তিক নয়। আমি একজন গবেষক, এ বয়সে পরীক্ষা দিতে আসিনি। এ ধরনের প্রশ্ন করলে আমি ফেল করব।’ ট্রাইব্যুনাল বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিশ্বাস, আসামিপক্ষের আইনজীবী কোনো বিব্রতকর প্রশ্ন করবেন না। যদি তা করেন, তবে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে সুরক্ষা দেবেন।
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, একাত্তরের আগে মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ ও কখনো সামরিক সরকার পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। সাক্ষী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক সরকারে ছিল, তবে সেটা যুক্তফ্রন্টের অংশ হিসেবে ধরা সঠিক হবে। ১৯৭০ সালে এলএফওর (লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার) অধীনে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিল কি না—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তাঁর জানা নেই। এই জাতীয় পরিষদের প্রধান ও প্রথম দায়িত্ব ছিল সংবিধান প্রণয়ন করা। এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এ বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই।’
স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য আওয়ামী লীগ তৎকালীন সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো বৈঠক করেছিল—এ প্রশ্নের জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, তা তিনি বলতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা তৎকালীন প্রচারমাধ্যমের দুর্বলতা এবং পাকিস্তান সরকারের সেন্সরশিপের কারণে দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি—এ বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, এ বক্তব্য সত্য নয়।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি মিথ্যা ছিল—এ প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী বলেন, ‘তা বলতে পারব না।’ মিজানুল বলেন, ‘এখন অনেকেই বলছেন এই মামলার অভিযোগ সত্য ছিল, তাঁর মধ্যে বর্তমান সংসদের ডেপুটি স্পিকারও আছেন।’ এ সময় সাক্ষী বলেন, ‘বলতে পারেন।’
মধ্যাহ্ন বিরতির পর জেরায় আসামিপক্ষের আইনজীবী জানতে চান, ১৯৯৬ সালে এ কে ফায়জুল হক আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন কি না? জবাবে সাক্ষী বলেন, এটা তিনি বলতে পারবেন না। একাত্তরে ফায়জুল হকের ভূমিকা কী ছিল—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাঁর ধারণা নেই।
মিজানুল প্রশ্ন করেন, কোনো বেসামরিক ব্যক্তি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতেন? জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, প্রভাবান্বিত করতেন। একাত্তরে শান্তি কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে এ দেশের কোনো বেসামরিক ব্যক্তির যোগাযোগ ছিল না—আইনজীবীর এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘আমার তা মনে হয় না।’
আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা যোগাযোগ করেছেন, এমন কোনো তথ্য সাক্ষীর কাছে আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘এমন তথ্য না থাকলেও এটা অনুমান করে বোঝা যায়, যোগাযোগ না থাকলে ৪ এপ্রিলের বৈঠক হতে পারত না।’
জেরার শেষ পর্যায়ে একাত্তরে শান্তি কমিটি গঠন-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করেন মিজানুল ইসলাম। মুনতাসীর মামুনকে জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় বিকেলে মামলার কার্যক্রম আজ বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
No comments