স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান-তাজউদ্দীন যে প্রাপ্য সম্মান পাননি সেই দুর্ভাগ্য আমাদের সবার
‘তাজউদ্দীন আহমদ যে দেশের মানুষের কাছ থেকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান পাননি, সেই দুর্ভাগ্য যতটা তাঁর, তার চেয়ে বেশি আমাদের সকলের।’ কথাটি বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার ‘তাজউদ্দীন আহমদের স্বদেশভাবনা’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় তিনি অন্যতম জাতীয় নেতা সম্পর্কে এ মূল্যায়ন করেন।
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০১২’ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ বক্তৃতার আয়োজন করে তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড।
স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘তাজউদ্দীন কেবল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরিচালক। তিনি কেবল একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, ছিলেন পরিণত সমাজভাবনা ও রাষ্ট্রচিন্তার অধিকারী। এ দুইয়ের যোগফল খুব কমই দেখা যায়।’
আনিসুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহকর্মী হিসেবে তাজউদ্দীন ১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা পালন করেন। প্রথম বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন গঠন, আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদসমূহের প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের সামরিক শক্তির পুনর্বিন্যাস, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বহির্বিশ্বে কূটনৈতিক তৎপরতা, পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাঙালি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণায় উৎসাহদান, ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা—এসব বহু ক্ষেত্রে তাঁকে এককভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল।
আনিসুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাজউদ্দীনের নীতিগত মতান্তরের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা দুজনের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়। তাজউদ্দীন এরপর পদত্যাগ করেন। তাতে তাঁদের দুজনেরই ক্ষতি হয়। সর্বোপরি ক্ষতি হয় বাংলাদেশের।
গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে সমাজতন্ত্রে উত্তরণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি, বিরোধী দলের মধ্যে দায়িত্বের বোধ জাগিয়ে তোলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাজউদ্দীন আগ্রহী ও সচেষ্ট ছিলেন বলে উল্লেখ করেন আনিসুজ্জামান।
আনিসুজ্জামান বক্তৃতায় আরও বলেন, ‘তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য সঠিক শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারছি না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বিপ্লব পূর্ণ হবে না।” আমরা জানি, সেই লক্ষ্যে আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি। কাজেই লক্ষ্য যদি আমাদের স্থির থাকে, তবে সেই গন্তব্যের পথযাত্রায় তাজউদ্দীন আহমদের স্বদেশভাবনা আমাদের পক্ষে একই সঙ্গে প্রেরণাদায়ক ও পথনির্দেশক হবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীন আহমদসহ চার নেতার ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস জানার তাগিদ দেন।
মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের দাতা ও তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমেদ বলেন, ‘তাজউদ্দীন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর একজন মানুষ ছিলেন। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ তাঁকে ধারণ করতে পারেনি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সহিদ আকতার এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডালেম চন্দ্র বর্মণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের কৃতী ছাত্র অনুরাগ চাকমাকে ‘তাজউদ্দীন আহমদ পিস স্কলার স্বর্ণপদক’ এবং একই বিভাগের ছাত্রী ফারহানা ফেরদৌসকে সদাচরণ, উপস্থিতি ও ভালো ফলের জন্য ১২ হাজার টাকার ‘তাজউদ্দীন আহমদ’ বৃত্তি দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ‘সুশাসন, বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক উত্তরণ ও তাজউদ্দীন আহমদ’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘তাজউদ্দীন কেবল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরিচালক। তিনি কেবল একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, ছিলেন পরিণত সমাজভাবনা ও রাষ্ট্রচিন্তার অধিকারী। এ দুইয়ের যোগফল খুব কমই দেখা যায়।’
আনিসুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহকর্মী হিসেবে তাজউদ্দীন ১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা পালন করেন। প্রথম বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন গঠন, আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদসমূহের প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের সামরিক শক্তির পুনর্বিন্যাস, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বহির্বিশ্বে কূটনৈতিক তৎপরতা, পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাঙালি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণায় উৎসাহদান, ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা—এসব বহু ক্ষেত্রে তাঁকে এককভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল।
আনিসুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাজউদ্দীনের নীতিগত মতান্তরের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা দুজনের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়। তাজউদ্দীন এরপর পদত্যাগ করেন। তাতে তাঁদের দুজনেরই ক্ষতি হয়। সর্বোপরি ক্ষতি হয় বাংলাদেশের।
গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে সমাজতন্ত্রে উত্তরণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি, বিরোধী দলের মধ্যে দায়িত্বের বোধ জাগিয়ে তোলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাজউদ্দীন আগ্রহী ও সচেষ্ট ছিলেন বলে উল্লেখ করেন আনিসুজ্জামান।
আনিসুজ্জামান বক্তৃতায় আরও বলেন, ‘তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য সঠিক শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারছি না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বিপ্লব পূর্ণ হবে না।” আমরা জানি, সেই লক্ষ্যে আমরা এখনো পৌঁছাতে পারিনি। কাজেই লক্ষ্য যদি আমাদের স্থির থাকে, তবে সেই গন্তব্যের পথযাত্রায় তাজউদ্দীন আহমদের স্বদেশভাবনা আমাদের পক্ষে একই সঙ্গে প্রেরণাদায়ক ও পথনির্দেশক হবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দীন আহমদসহ চার নেতার ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস জানার তাগিদ দেন।
মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের দাতা ও তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমেদ বলেন, ‘তাজউদ্দীন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর একজন মানুষ ছিলেন। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ তাঁকে ধারণ করতে পারেনি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সহিদ আকতার এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডালেম চন্দ্র বর্মণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের কৃতী ছাত্র অনুরাগ চাকমাকে ‘তাজউদ্দীন আহমদ পিস স্কলার স্বর্ণপদক’ এবং একই বিভাগের ছাত্রী ফারহানা ফেরদৌসকে সদাচরণ, উপস্থিতি ও ভালো ফলের জন্য ১২ হাজার টাকার ‘তাজউদ্দীন আহমদ’ বৃত্তি দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ‘সুশাসন, বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক উত্তরণ ও তাজউদ্দীন আহমদ’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
No comments