পবিত্র কোরআনের আলো-কত জনপদই তো ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের উচ্ছৃঙ্খলতার কারণে
সূরা আল-আ'রাফ (মক্কায় অবতীর্ণ)
আয়াত সংখ্যা ২০৬
বিস্মিল্লা-হির্ রাহমা-নির রাহীম
আয়াত সংখ্যা ২০৬
বিস্মিল্লা-হির্ রাহমা-নির রাহীম
১. আলিফ লা-ম মী-ম ছোয়া-দ। ২. কিতা-বুন উনযিলা ইলাইকা ফালা-ইয়াকুন ফী সাদ্রিকা হারাজুম্ মিনহু লিতুনযিরা বিহী ওয়া যিকরা- লিলমু'মিনীন।
৩. ইত্তাবিঊ' মা উনযিলা ইলাইকুম্ মির্ রাবি্বকুম ওয়া লা তাত্তাবিঊ' মিন দূনিহী আওলিইয়াআ; ক্বালীলাম্ মা- তাযাক্কারূন।
৪. ওয়া কাম্ মিন ক্বারইয়াতিন আহ্লাকনা-হা ফাজা-আহা বা'ছুনা বাইয়া-তান আও হুম ক্বা-য়িলূন। ৫. ফামা কা-না দা'ওয়া-হুম ইয্ জা-আহুম বা'ছুনা- ইল্লা আন ক্বা-লূ ইন্না কুন্না যা-লিমীন।
৬. ফালানাছআলান্নাল্লাযীনা উরছিলা ইলাইহিম ওয়া লানাছআলান্নাল মুরছালীন।
[সুরা আল-আ'রাফ, আয়াত : ১-৬]
অনুবাদ
রাহমান-রাহিম আল্লাহর নামে শুরু করছি।
১. আলিফ লা-ম মী-ম ছোয়া-দ।
২. (হে নবী!) এটা এক মহাগ্রন্থ, যা আপনার ওপর নাজিল করা হয়েছে। এই দায়িত্ব অর্পণের ফলে আপনার মনে যেন কোনো দুশ্চিন্তা না আসে, যখন আপনি এর মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করবেন, আর এটা মুমিনদের জন্য উপদেশবাণী।
৩. (হে মানবজাতি!) তোমাদের ওপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যে কিতাব নাজিল করা হয়েছে এর অনুসরণ করো এবং তাকে ছেড়ে অন্য কোনো অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই তো উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।
৪. কত জনপদকেই তো আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। আমার শাস্তি তাদের ওপর এসে পড়ত রাতের বেলায় অথবা দুপুরে, যখন তারা বিশ্রাম করত।
৫. যখন তাদের কাছে আমার শাস্তি আসত, তখন তো তাদের বলার কিছুই ছিল না, কেবল বলত, আমরা তো আসলেই জালেম ছিলাম। ৬. যাদের কাছে নবী পাঠানো হয়েছিল, অবশ্যই আমি তাদের সে ব্যাপারে প্রশ্ন করব, রাসুলদেরও আমি প্রশ্ন করব।
ব্যাখ্যা : সুরাটির নাম আল-আ'রাফ। এর শাব্দিক অর্থ উচ্চস্থান। পরিভাষায় 'আ'রাফ' শব্দটি দ্বারা ঠিক কোন স্থানকে বোঝানো হয় সে ব্যাপারে দুই রকম ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। 'আ'রাফ' জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী একটি স্থান। কারো কারো মতে, যেসব লোকের পাপ ও পুণ্য সমান-সমান হবে, তাদের কিছুকালের জন্য সেখানে রাখা হবে। অতঃপর ইমানের কারণে তারাও জান্নাতে প্রবেশ করবে। অন্য মতটি হলো, আ'রাফ শব্দের অর্থ যে রকম উচ্চস্থান, সেভাবেই এই স্থানে অবস্থান করবে আল্লাহর সানি্নধ্য লাভকারী উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। সুরাটির শিরোনাম এই সুরার ৪৬ নম্বর আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে। ৪৬ নম্বর আয়াত থেকে এর পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে আ'রাফে অবস্থানকারীদের অবস্থা বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। সেই বর্ণনা থেকে মনে হয়, তাঁরা উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ, তাঁরা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে ঝুলে থাকা কেউ নন। নবী-রাসুল, শহীদ, আল্লাহর ওলি ও সমাজ-সংস্কারকরা আল্লাহর নির্দেশিত শিক্ষা ও আদর্শে উচ্চমর্যাদার অধিকারী। তাঁদেরই সম্ভবত আ'রাফের অধিবাসী বলে অভিহিত করা হয়েছে। সংক্ষেপে সুরা আ'রাফে এমন কিছু মহান ব্যক্তিত্বের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, যাঁদের জীবন ছিল মহৎ ও আধ্যাত্মিক মর্যাদাসম্পন্ন।
১ নম্বর আয়াতে যে বিচ্ছিন্ন হরফগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলোকে 'আল হুরুফুল মুকাত্তাআত' বলে। এর অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। আর এর অর্থ বোঝার ওপর দ্বীনের কোনো বিষয় নির্ভরশীলও নয়। ২ নম্বর আয়াতে রাসুল মুহাম্মদ (সা.)-কে উদ্দেশ করে বলা হচ্ছে, মানুষকে সত্য ধর্মের পথে কিভাবে আনবেন তা নিয়ে আপনার কোনো দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কেননা আপনার কর্তব্য কেবল তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের সতর্ক করা। তাদের মানা-না মানার জিম্মাদারি আপনার নয়। ৪ ও ৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহর নাফরমানির কারণে যেসব জাতিকে আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দিয়েছেন, সেসব উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যায়, অবিচার ও উচ্ছৃঙ্খলতার কারণেই এদের ধ্বংস করা হয়েছিল।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৩. ইত্তাবিঊ' মা উনযিলা ইলাইকুম্ মির্ রাবি্বকুম ওয়া লা তাত্তাবিঊ' মিন দূনিহী আওলিইয়াআ; ক্বালীলাম্ মা- তাযাক্কারূন।
৪. ওয়া কাম্ মিন ক্বারইয়াতিন আহ্লাকনা-হা ফাজা-আহা বা'ছুনা বাইয়া-তান আও হুম ক্বা-য়িলূন। ৫. ফামা কা-না দা'ওয়া-হুম ইয্ জা-আহুম বা'ছুনা- ইল্লা আন ক্বা-লূ ইন্না কুন্না যা-লিমীন।
৬. ফালানাছআলান্নাল্লাযীনা উরছিলা ইলাইহিম ওয়া লানাছআলান্নাল মুরছালীন।
[সুরা আল-আ'রাফ, আয়াত : ১-৬]
অনুবাদ
রাহমান-রাহিম আল্লাহর নামে শুরু করছি।
১. আলিফ লা-ম মী-ম ছোয়া-দ।
২. (হে নবী!) এটা এক মহাগ্রন্থ, যা আপনার ওপর নাজিল করা হয়েছে। এই দায়িত্ব অর্পণের ফলে আপনার মনে যেন কোনো দুশ্চিন্তা না আসে, যখন আপনি এর মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করবেন, আর এটা মুমিনদের জন্য উপদেশবাণী।
৩. (হে মানবজাতি!) তোমাদের ওপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যে কিতাব নাজিল করা হয়েছে এর অনুসরণ করো এবং তাকে ছেড়ে অন্য কোনো অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই তো উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।
৪. কত জনপদকেই তো আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। আমার শাস্তি তাদের ওপর এসে পড়ত রাতের বেলায় অথবা দুপুরে, যখন তারা বিশ্রাম করত।
৫. যখন তাদের কাছে আমার শাস্তি আসত, তখন তো তাদের বলার কিছুই ছিল না, কেবল বলত, আমরা তো আসলেই জালেম ছিলাম। ৬. যাদের কাছে নবী পাঠানো হয়েছিল, অবশ্যই আমি তাদের সে ব্যাপারে প্রশ্ন করব, রাসুলদেরও আমি প্রশ্ন করব।
ব্যাখ্যা : সুরাটির নাম আল-আ'রাফ। এর শাব্দিক অর্থ উচ্চস্থান। পরিভাষায় 'আ'রাফ' শব্দটি দ্বারা ঠিক কোন স্থানকে বোঝানো হয় সে ব্যাপারে দুই রকম ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। 'আ'রাফ' জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী একটি স্থান। কারো কারো মতে, যেসব লোকের পাপ ও পুণ্য সমান-সমান হবে, তাদের কিছুকালের জন্য সেখানে রাখা হবে। অতঃপর ইমানের কারণে তারাও জান্নাতে প্রবেশ করবে। অন্য মতটি হলো, আ'রাফ শব্দের অর্থ যে রকম উচ্চস্থান, সেভাবেই এই স্থানে অবস্থান করবে আল্লাহর সানি্নধ্য লাভকারী উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। সুরাটির শিরোনাম এই সুরার ৪৬ নম্বর আয়াত থেকে নেওয়া হয়েছে। ৪৬ নম্বর আয়াত থেকে এর পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে আ'রাফে অবস্থানকারীদের অবস্থা বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। সেই বর্ণনা থেকে মনে হয়, তাঁরা উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ, তাঁরা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে ঝুলে থাকা কেউ নন। নবী-রাসুল, শহীদ, আল্লাহর ওলি ও সমাজ-সংস্কারকরা আল্লাহর নির্দেশিত শিক্ষা ও আদর্শে উচ্চমর্যাদার অধিকারী। তাঁদেরই সম্ভবত আ'রাফের অধিবাসী বলে অভিহিত করা হয়েছে। সংক্ষেপে সুরা আ'রাফে এমন কিছু মহান ব্যক্তিত্বের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, যাঁদের জীবন ছিল মহৎ ও আধ্যাত্মিক মর্যাদাসম্পন্ন।
১ নম্বর আয়াতে যে বিচ্ছিন্ন হরফগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলোকে 'আল হুরুফুল মুকাত্তাআত' বলে। এর অর্থ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। আর এর অর্থ বোঝার ওপর দ্বীনের কোনো বিষয় নির্ভরশীলও নয়। ২ নম্বর আয়াতে রাসুল মুহাম্মদ (সা.)-কে উদ্দেশ করে বলা হচ্ছে, মানুষকে সত্য ধর্মের পথে কিভাবে আনবেন তা নিয়ে আপনার কোনো দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কেননা আপনার কর্তব্য কেবল তাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের সতর্ক করা। তাদের মানা-না মানার জিম্মাদারি আপনার নয়। ৪ ও ৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহর নাফরমানির কারণে যেসব জাতিকে আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দিয়েছেন, সেসব উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যায়, অবিচার ও উচ্ছৃঙ্খলতার কারণেই এদের ধ্বংস করা হয়েছিল।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments