পবিত্র কোরআনের আলো-মুনাফিকদের সম্পর্কে আল্লাহই সঠিকভাবে জানেন রাসুল (সা.) ও সব জানতেন না
১০০. ওয়াচ্ছা-বিক্বূনাল আওয়্যালূনা মিনাল মুহা-জিরীনা ওয়ালআনসা-রি ওয়াল্লা যীনাত্তাবাঊ'হুম বিইহ্ছা-নির্ রাদ্বিইয়াল্লা-হু আ'নহুম ওয়ারাদ্বূ আন'হু ওয়াআআ'দ্দা লাহুম জান্না-তিন তাজরী তাহ্তাহাল আনহা-রু খা-লিদীনা ফীহা আবাদা; যা-রিকাল ফাওযুল আ'যীম।
১০১. ওয়ামিম্মান হাওলাকুম্ মিনাল আ'রা-বি মুনা-ফিক্বূন; ওয়ামিন আহ্লিল মাদিনাতি মারাদূ আ'লান্ নিফা-ক্ব; লা-তা'লামুহুম; নাহ্নু না'লামুহুম; ছানুআ'য্যিবুহুম্ মার্রাতাইনি ছুম্মা ইউরাদ্দূনা ইলা- আ'যা-বিন আ'যীম।
১০২. ওয়াআ-খারূনা'তারাফূ বিযুনূবিহিম খালাত্ব আ'মালান সা-লিহাওঁ ওয়াআ-খারা ছায়্যিআ; আ'ছা ল্লা-হু আইঁ ইয়্যাতূবা আ'লাইহিম; ইন্নাল্লা-হা গাফুরুর্ রাহীম।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১০০-১০২]
অনুবাদ : ১০০. মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথমে ইমান এনেছে এবং যারা নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ তাদের সবার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যান তৈরি করে রেখেছেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। এতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই পরম সাফল্য।
১০১. তোমাদের আশপাশে যেসব বেদুইনগোষ্ঠী বাস করে, তাদের মধ্যেও মুনাফিক আছে এবং মদিনাবাসীদের মধ্যেও আছে। (হেনরি) তারা মুনাফিকিতে এতটাই পারদর্শী যে আপনি তাদের জানেন না, আমি তাদের জানি। আমি তাদের দুবার শাস্তি দেব। এরপর তাদের এক ভয়ংকর শাস্তির দিকে তাড়িয়ে নেওয়া হবে।
১০২. অন্য কিছু লোক এমন, যারা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে। তারা মিশ্র ধরনের কাজ করে। কিছু ভালো আবার কিছু মন্দ। আশা করা যায়, হয়তো আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
ব্যাখ্যা : ১০০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ সেই সব মুহাজির ও আনসারদের কথা বলা হয়েছে, যাঁরা ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় ইমান এনেছেন। তাঁদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টির কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সন্তুষ্টির খবর দেওয়া হয়েছে তাঁদের জন্য, যাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের অনুসরণ করেছেন। তাঁদের জন্য পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সম্মান অর্জিত হয়েছে তো বটেই; আল্লাহ তাঁদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদও দিয়েছেন।
১০১ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে মুনাফিক যেমন বেদুইনদের মধ্যে আছে, তেমনি মদিনাবাসীর মধ্যেও আছে। অর্থাৎ মুনাফিকিটা স্থান-কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আর এই মদিনাবাসীর মধ্যে এবং মদিনার আশপাশের বেদুইনদের মধ্যে এমন ধুরন্ধর মুনাফিকরাও রয়েছে, যাদের ধূর্তামির সঙ্গে রাসুল (সা.) নিজেও পরিচিত নন। আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে তাঁর রাসুলকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে আমি তাদের জানি, আপনি তাদের সম্পূর্ণ জানেন না। এই আয়াতে বর্ণিত দুবার শাস্তি প্রদানের অর্থ দ্বিগুণ শাস্তিও হতে পারে। অথবা এর অর্থ এই হতে পারে যে তারা তাদের আশা পূর্ণ না হওয়ায় এবং মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যাওয়ায় একবার শাস্তি পেল আবার শাস্তি পাবে জাহান্নামে।
১০২ নম্বর আয়াতে ওই সব লোকের কথা বলা হয়েছে, যারা সরল মনের ও দুর্বলচিত্ত হওয়ার কারণে মুনাফিকদের প্ররোচনায় পড়ে তাবুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিল। তারা আসলে মুনাফিক ছিল না; ছিল দুর্বল চিত্তের মুসলিম। তাদের আচার-আচরণ ছিল মিশ্র ধরনের। তবে তাদের মধ্যে যখন চৈতন্যের উদয় হয়, তখন তারা অনুশোচনায় দগ্ধ হয়। বর্ণিত আছে, তাদের মধ্যে অন্তত সাতজন অনুশোচনায় মসজিদে গিয়ে নিজেদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কসম করে বলল, যতক্ষণ আল্লাহর হুকুম না হবে, ততক্ষণ কেউ যেন তাদের খুলে না দেয়। এরপর এই আয়াতটি নাজিল হয়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১০২. ওয়াআ-খারূনা'তারাফূ বিযুনূবিহিম খালাত্ব আ'মালান সা-লিহাওঁ ওয়াআ-খারা ছায়্যিআ; আ'ছা ল্লা-হু আইঁ ইয়্যাতূবা আ'লাইহিম; ইন্নাল্লা-হা গাফুরুর্ রাহীম।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১০০-১০২]
অনুবাদ : ১০০. মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথমে ইমান এনেছে এবং যারা নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ তাদের সবার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যান তৈরি করে রেখেছেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। এতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই পরম সাফল্য।
১০১. তোমাদের আশপাশে যেসব বেদুইনগোষ্ঠী বাস করে, তাদের মধ্যেও মুনাফিক আছে এবং মদিনাবাসীদের মধ্যেও আছে। (হেনরি) তারা মুনাফিকিতে এতটাই পারদর্শী যে আপনি তাদের জানেন না, আমি তাদের জানি। আমি তাদের দুবার শাস্তি দেব। এরপর তাদের এক ভয়ংকর শাস্তির দিকে তাড়িয়ে নেওয়া হবে।
১০২. অন্য কিছু লোক এমন, যারা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে। তারা মিশ্র ধরনের কাজ করে। কিছু ভালো আবার কিছু মন্দ। আশা করা যায়, হয়তো আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
ব্যাখ্যা : ১০০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ সেই সব মুহাজির ও আনসারদের কথা বলা হয়েছে, যাঁরা ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় ইমান এনেছেন। তাঁদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টির কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সন্তুষ্টির খবর দেওয়া হয়েছে তাঁদের জন্য, যাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের অনুসরণ করেছেন। তাঁদের জন্য পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সম্মান অর্জিত হয়েছে তো বটেই; আল্লাহ তাঁদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদও দিয়েছেন।
১০১ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে মুনাফিক যেমন বেদুইনদের মধ্যে আছে, তেমনি মদিনাবাসীর মধ্যেও আছে। অর্থাৎ মুনাফিকিটা স্থান-কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আর এই মদিনাবাসীর মধ্যে এবং মদিনার আশপাশের বেদুইনদের মধ্যে এমন ধুরন্ধর মুনাফিকরাও রয়েছে, যাদের ধূর্তামির সঙ্গে রাসুল (সা.) নিজেও পরিচিত নন। আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে তাঁর রাসুলকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে আমি তাদের জানি, আপনি তাদের সম্পূর্ণ জানেন না। এই আয়াতে বর্ণিত দুবার শাস্তি প্রদানের অর্থ দ্বিগুণ শাস্তিও হতে পারে। অথবা এর অর্থ এই হতে পারে যে তারা তাদের আশা পূর্ণ না হওয়ায় এবং মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যাওয়ায় একবার শাস্তি পেল আবার শাস্তি পাবে জাহান্নামে।
১০২ নম্বর আয়াতে ওই সব লোকের কথা বলা হয়েছে, যারা সরল মনের ও দুর্বলচিত্ত হওয়ার কারণে মুনাফিকদের প্ররোচনায় পড়ে তাবুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিল। তারা আসলে মুনাফিক ছিল না; ছিল দুর্বল চিত্তের মুসলিম। তাদের আচার-আচরণ ছিল মিশ্র ধরনের। তবে তাদের মধ্যে যখন চৈতন্যের উদয় হয়, তখন তারা অনুশোচনায় দগ্ধ হয়। বর্ণিত আছে, তাদের মধ্যে অন্তত সাতজন অনুশোচনায় মসজিদে গিয়ে নিজেদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কসম করে বলল, যতক্ষণ আল্লাহর হুকুম না হবে, ততক্ষণ কেউ যেন তাদের খুলে না দেয়। এরপর এই আয়াতটি নাজিল হয়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments