আমলে নিন বিশ্বব্যাংকের সতর্কবার্তা-উন্নয়ন প্রকল্পে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ
সঠিক সময়ে সঠিক প্রকল্প গ্রহণ এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নই টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দীর্ঘ এ প্রক্রিয়ার কোথাও অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে তার দায় বহন করতে হয় দেশ ও জনগণকে। এসব যে নীতিনির্ধারকদের অজানা, তা নয়। বিরোধী দলে থাকলে যাঁরা বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে সোচ্চার, ক্ষমতায় গেলে তাঁরা নির্বাক হয়ে যান। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের দেশভিত্তিক সহায়তা কৌশলপত্রে (সিএএস) বাংলাদেশের জন্য ২০১০-১১ থেকে ২০১৪-১৫ পর্যন্ত ৬৫৫ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ গত তিন বছরে বাংলাদেশে সংস্থাটির দেওয়া ঋণের দ্বিগুণ। এই ঘোষণা আমাদের আশ্বস্ত করতে পারত, যদি না এর সঙ্গে নানা শর্ত জুড়ে দিত। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের যেকোনো বড় উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের মুখে পড়ে। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি বিভিন্ন প্রকল্পে ৩১টি দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছে। সে সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার। দুর্নীতির দায়ও তাদের নিতে হবে। বিশেষ করে, জোট আমলে স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ খাতে যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে কারণে সংস্থাটি বিদ্যুৎ খাতে সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছিল।
এ ছাড়া তৎকালীন সরকার রাজনৈতিক কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়ে খারাপ নজির সৃষ্টি করেছিল।
আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছি বলে মনে হয় না। না হলে বর্তমান সরকারের আমলেও কেন উন্নয়ন প্রকল্পে অনুরূপ দুর্নীতির অভিযোগ উঠবে? দরপত্র আহ্বান নিয়ে অনিয়ম ও ত্রুটির কারণে কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ আটকে দেওয়া কিংবা এক মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিদেশি কোম্পানির স্থানীয় এজেন্টের তদবিরবাজির খবর আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা বিশ্বব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধিকে সরকারের প্রতি আস্থার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। তাতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু দরপত্রে অনিয়ম কিংবা তদবিরবাজির কারণে বরাদ্দ আটকে থাকলে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেই কী লাভ? এ ব্যাপারে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, কোনো প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সরকারেরই উচিত তদন্ত করা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব উন্নয়নের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে দাতা সংস্থাগুলো। সেটি অবশ্যই ইতিবাচক দিক। কিন্তু দেশব্যাপী বিদ্যুৎ-সংকট প্রকট হওয়া সত্ত্বেও দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক বা অন্য দাতা সংস্থার ঋণ বন্ধ থাকা উদ্বেগজনক।
আশা করি, সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন এবং বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ সম্পর্কে সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। ভবিষ্যতে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। অন্যথায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যেমন বাধাগ্রস্ত হবে, মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার স্বপ্নও অপূর্ণ থেকে যাবে।
এ ছাড়া তৎকালীন সরকার রাজনৈতিক কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়ে খারাপ নজির সৃষ্টি করেছিল।
আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছি বলে মনে হয় না। না হলে বর্তমান সরকারের আমলেও কেন উন্নয়ন প্রকল্পে অনুরূপ দুর্নীতির অভিযোগ উঠবে? দরপত্র আহ্বান নিয়ে অনিয়ম ও ত্রুটির কারণে কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ আটকে দেওয়া কিংবা এক মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিদেশি কোম্পানির স্থানীয় এজেন্টের তদবিরবাজির খবর আমাদের উদ্বিগ্ন না করে পারে না।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা বিশ্বব্যাংকের ঋণ বৃদ্ধিকে সরকারের প্রতি আস্থার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। তাতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু দরপত্রে অনিয়ম কিংবা তদবিরবাজির কারণে বরাদ্দ আটকে থাকলে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেই কী লাভ? এ ব্যাপারে সাবেক অর্থ উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, কোনো প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সরকারেরই উচিত তদন্ত করা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব উন্নয়নের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে দাতা সংস্থাগুলো। সেটি অবশ্যই ইতিবাচক দিক। কিন্তু দেশব্যাপী বিদ্যুৎ-সংকট প্রকট হওয়া সত্ত্বেও দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক বা অন্য দাতা সংস্থার ঋণ বন্ধ থাকা উদ্বেগজনক।
আশা করি, সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন এবং বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ সম্পর্কে সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। ভবিষ্যতে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের শিকার না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। অন্যথায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যেমন বাধাগ্রস্ত হবে, মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার স্বপ্নও অপূর্ণ থেকে যাবে।
No comments