স্বাধীনতার চেতনায় ফেরার ডাক-শোকাবহ ১৫ আগস্ট
হাজার বছরের বাঙালির জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতার স্থপতির নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সাল থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন করাচিকেন্দ্রিক নব্য উপনিবেশের বিরুদ্ধে; ১৯৪৮ সালে কারারুদ্ধ হন রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে।
প্রকৃতপক্ষে নিজের সারাটা জীবন তিনি উৎসর্গই করে দিয়েছিলেন এই দেশের মানুষের মুক্তি এবং তা অর্জনের প্রথম ধাপ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। তিনি যে তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা’—এটা কেবল কথার কথা নয়, এটা তিনি সারা জীবনের আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, কর্ম ও নেতৃত্ব দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন।
হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার মতো তাঁর ছিল মানুষকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা। ১৯৪৯ সালে, যখন আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানী, তখনো সদ্য কারামুক্ত তরুণ শেখ মুজিবের ভাষণ শোনার জন্য আরমানিটোলার জনসভায় সমবেত জনতা ভাসানীর উপস্থিতিতেই অধীর হয়ে উঠেছিল। মানুষকে তিনি ভালোবাসতেন, মানুষের ভালোবাসা পেয়েওছিলেন, সারা দেশ জাগিয়ে তুললেন ছয় দফা দিয়ে; তারপর সব দফা এসে মিলিত হলো একটিমাত্র দফায়—বাংলার স্বাধীনতা। কী অপূর্ব সুন্দরভাবে একদেহ একপ্রাণ হয়ে উঠেছিল পুরো জাতি, নক্ষত্রের আলোর মতো তাঁর উদ্যত তর্জনীর নির্দেশে—এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।
অন্তত দুবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তানিরা। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হিসেবে যখন আটক তিনি, তখন একবার। আরেকবার যখন তিনি একাত্তরে বন্দী পাকিস্তানের কারাগারে, তখন। কিন্তু পাকিস্তানিরা তাঁকে মারতে পারেনি। মারল যারা, ওই পরাজিত প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হয়ে, তারা বাঙালিই ছিল। শুধু কি বঙ্গবন্ধু মুজিবকে; তাঁর স্ত্রী, দুই পুত্র, পুত্রবধূদ্বয়, এমনকি শিশুপুত্র রাসেল, ভাই নাসের, আরও কত শিশু-নারী-পুরুষের রক্তে রঞ্জিত হলো সেদিন বাংলাদেশের মাটি! স্বাধীন দেশে নিহত হলেন স্বাধীনতার স্থপতি, যিনি কোনো দিনও বিশ্বাস করতে পারেননি কোনো বাঙালি তাঁকে হত্যা করতে পারে।
সেদিন শুধু যে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেন তা-ই নয়; ক্ষত-বিক্ষত হলো সাংবিধানিক শাসন, গণতন্ত্র; কক্ষচ্যুত হলো বাংলাদেশ তার জন্মের আদর্শ থেকে, মূলনীতি থেকে। ভূতের পায়ের মতোই উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
সেই উল্টোযাত্রা থেকে সোজা পথে, শুভ পথে রাষ্ট্রের ও স্বাধীনতার মূল চেতনার দিকে ফেরার ডাক নিয়ে আজ সারা দেশে পালিত হচ্ছে ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। এটা খুবই প্রণিধানযোগ্য যে জাতির জনকের হত্যার বিচার হয়েছে নিয়মতান্ত্রিকভাবে, সব নিয়মকানুন মেনে। বিচারের রায় আংশিক কার্যকর করা গেছে এবং সাজাপ্রাপ্ত যে আসামিরা পলাতক, তাদের দেশে এনে রায় কার্যকর করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। জাতির ওপর একটা কলঙ্কের বোঝা জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ছিল, বিচারের রায় ঘোষিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তা থেকে এ বছর আমরা মুক্ত।
তাঁর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। এটা কেবল কথার কথা নয়। আজকে যদি আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই, দেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করেই তা করতে হবে। সে জন্য দরকার হবে সুশাসন, দরকার হবে জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে একটা কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি। দরকার হবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আইনের শাসন। দরকার হবে দূরদর্শিতা। দরকার হবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা হাতে নেওয়া মানে অনেক বড় দায়িত্ব নেওয়া, এই কথাটা যেন আমরা ভুলে না যাই।
১৫ আগস্টের সব শহীদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই আন্তরিকভাবে।
হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার মতো তাঁর ছিল মানুষকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা। ১৯৪৯ সালে, যখন আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানী, তখনো সদ্য কারামুক্ত তরুণ শেখ মুজিবের ভাষণ শোনার জন্য আরমানিটোলার জনসভায় সমবেত জনতা ভাসানীর উপস্থিতিতেই অধীর হয়ে উঠেছিল। মানুষকে তিনি ভালোবাসতেন, মানুষের ভালোবাসা পেয়েওছিলেন, সারা দেশ জাগিয়ে তুললেন ছয় দফা দিয়ে; তারপর সব দফা এসে মিলিত হলো একটিমাত্র দফায়—বাংলার স্বাধীনতা। কী অপূর্ব সুন্দরভাবে একদেহ একপ্রাণ হয়ে উঠেছিল পুরো জাতি, নক্ষত্রের আলোর মতো তাঁর উদ্যত তর্জনীর নির্দেশে—এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।
অন্তত দুবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তানিরা। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হিসেবে যখন আটক তিনি, তখন একবার। আরেকবার যখন তিনি একাত্তরে বন্দী পাকিস্তানের কারাগারে, তখন। কিন্তু পাকিস্তানিরা তাঁকে মারতে পারেনি। মারল যারা, ওই পরাজিত প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হয়ে, তারা বাঙালিই ছিল। শুধু কি বঙ্গবন্ধু মুজিবকে; তাঁর স্ত্রী, দুই পুত্র, পুত্রবধূদ্বয়, এমনকি শিশুপুত্র রাসেল, ভাই নাসের, আরও কত শিশু-নারী-পুরুষের রক্তে রঞ্জিত হলো সেদিন বাংলাদেশের মাটি! স্বাধীন দেশে নিহত হলেন স্বাধীনতার স্থপতি, যিনি কোনো দিনও বিশ্বাস করতে পারেননি কোনো বাঙালি তাঁকে হত্যা করতে পারে।
সেদিন শুধু যে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেন তা-ই নয়; ক্ষত-বিক্ষত হলো সাংবিধানিক শাসন, গণতন্ত্র; কক্ষচ্যুত হলো বাংলাদেশ তার জন্মের আদর্শ থেকে, মূলনীতি থেকে। ভূতের পায়ের মতোই উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
সেই উল্টোযাত্রা থেকে সোজা পথে, শুভ পথে রাষ্ট্রের ও স্বাধীনতার মূল চেতনার দিকে ফেরার ডাক নিয়ে আজ সারা দেশে পালিত হচ্ছে ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। এটা খুবই প্রণিধানযোগ্য যে জাতির জনকের হত্যার বিচার হয়েছে নিয়মতান্ত্রিকভাবে, সব নিয়মকানুন মেনে। বিচারের রায় আংশিক কার্যকর করা গেছে এবং সাজাপ্রাপ্ত যে আসামিরা পলাতক, তাদের দেশে এনে রায় কার্যকর করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। জাতির ওপর একটা কলঙ্কের বোঝা জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ছিল, বিচারের রায় ঘোষিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তা থেকে এ বছর আমরা মুক্ত।
তাঁর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। এটা কেবল কথার কথা নয়। আজকে যদি আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই, দেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করেই তা করতে হবে। সে জন্য দরকার হবে সুশাসন, দরকার হবে জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে একটা কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি। দরকার হবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আইনের শাসন। দরকার হবে দূরদর্শিতা। দরকার হবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পতাকা হাতে নেওয়া মানে অনেক বড় দায়িত্ব নেওয়া, এই কথাটা যেন আমরা ভুলে না যাই।
১৫ আগস্টের সব শহীদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই আন্তরিকভাবে।
No comments