নিত্যপণ্য ও দৈনন্দিন জীবন-বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে
পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে নাগরিক জীবনে। বিত্তবান মানুষের কথা আলাদা, অর্থনীতির কোনো সূত্রই এখন আর সাধারণ মানুষের জন্য খাটছে না। চাপে আছে সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণী। নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের অবস্থা শোচনীয়।
পূরণ হয়নি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উলি্লখিত 'নিত্যপণ্যের দাম জনগণের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার' প্রতিশ্রুতি। নিয়ন্ত্রণে নেই মূল্যস্ফীতি। চালের বাজার আপাতত স্থির থাকলেও অস্থিতিশীল তরকারির বাজার। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ছে। তার ওপর যাতায়াত, বাড়িভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি মিলিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর চাপটাই বেশি। দেশের সিংহভাগ মানুষের অবস্থা অসহনীয় হলেও সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করে, নিত্যপণ্যের মূল্য পরিস্থিতি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় সহনীয়। এমনকি প্রকারান্তরে রমজান মাসে পণ্যমূল্য বৃদ্ধিকেও যৌক্তিক মনে করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক খবরে তেমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তাঁর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকের কার্যপত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওসব পণ্যের দাম বাড়ার 'যৌক্তিকতা' তুলে ধরে। ওই কার্যপত্রে বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশির ভাগ পণ্যের মূল্য পরিস্থিতি সাম্প্রতিক যেকোনো সময়ের তুলনায় সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। অথচ কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১২.৭৭ শতাংশ। এর প্রভাবে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১১.৯৬ শতাংশ। ২০১১ সালে গড়ে বাড়িভাড়া বেড়েছে ১৫.৮৩ শতাংশ। একই সঙ্গে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত এপ্রিলে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮০ শতাংশ এবং পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট (আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়) ৯.৯৩ শতাংশ। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, খাদ্যবহির্ভূত খাতে এখন মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। খাদ্যপণ্যের বাজারে সরকারের কিছুটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা দেখা গেলেও খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো সংস্থারই নিয়ন্ত্রণ কিংবা তদারকি নেই। যে কারণে খাদ্যবহির্ভূত খাতে ব্যয় বাড়ছে। পুরো চাপটাই সইতে হচ্ছে সমাজের সিংহভাগ মানুষকে। এমন একটি অবস্থায় দ্রব্যমূল্যের চাপে যখন দৈনন্দিন জীবন সংকুচিত হয়ে পড়েছে, মানুষ নিত্যপণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে, তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সহনীয় মূল্যস্ফীতি-সূত্র খোঁজা কতটা যৌক্তিক?
অর্থনীতি বিষয়ের বিশিষ্টজনদের মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বর্তমান মূল্য পরিস্থিতিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহনীয় বললেও অবস্থা মোটেও সে রকম নয়। দেশে এখনো মূল্যস্ফীতির হার ৯ থেকে ১০ শতাংশের মতো। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটা মোটেই সহনীয় নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরো কমাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। এই উদ্যোগ অতিদ্রুত নেওয়া দরকার বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করলেও এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্বেগ নেই। গত মার্চে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, খাদ্যের মূল্য ১০ শতাংশ বাড়লে বাংলাদেশে আড়াই শতাংশ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়, আর ৩০ শতাংশ দাম বাড়লে দারিদ্র্যসীমার নিচে নামে সাড়ে ৭ শতাংশ মানুষ। ক্যাবের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বাঁচার তাগিদে গত বছর অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। অনেকে অতিকষ্টের সঞ্চয়ও ভেঙে ফেলে। ফলে বাড়ছে ধার-কর্জনির্ভর জীবন।'
পণ্যমূল্যবৃদ্ধিকে 'যৌক্তিক' প্রমাণ করতে যেসব যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে, তা কতটা যৌক্তিক- সেটাই এখন বিবেচনার বিষয়। বাজারে তদারকি বাড়িয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিকল্প বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। যে নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত এই সরকারের শুরুতে ছিল, তা এখন অনেকটাই দুরাশা। সাধারণের জীবন-যাপন সহজ করতে না পারলে অনেক সম্ভাবনাই নষ্ট হয়ে যাবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে উপযুক্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতেই হবে।
খবরে বলা হয়েছে, গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তাঁর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকের কার্যপত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওসব পণ্যের দাম বাড়ার 'যৌক্তিকতা' তুলে ধরে। ওই কার্যপত্রে বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশির ভাগ পণ্যের মূল্য পরিস্থিতি সাম্প্রতিক যেকোনো সময়ের তুলনায় সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। অথচ কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১২.৭৭ শতাংশ। এর প্রভাবে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১১.৯৬ শতাংশ। ২০১১ সালে গড়ে বাড়িভাড়া বেড়েছে ১৫.৮৩ শতাংশ। একই সঙ্গে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত এপ্রিলে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮০ শতাংশ এবং পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট (আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়) ৯.৯৩ শতাংশ। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, খাদ্যবহির্ভূত খাতে এখন মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। খাদ্যপণ্যের বাজারে সরকারের কিছুটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা দেখা গেলেও খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো সংস্থারই নিয়ন্ত্রণ কিংবা তদারকি নেই। যে কারণে খাদ্যবহির্ভূত খাতে ব্যয় বাড়ছে। পুরো চাপটাই সইতে হচ্ছে সমাজের সিংহভাগ মানুষকে। এমন একটি অবস্থায় দ্রব্যমূল্যের চাপে যখন দৈনন্দিন জীবন সংকুচিত হয়ে পড়েছে, মানুষ নিত্যপণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে, তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এই সহনীয় মূল্যস্ফীতি-সূত্র খোঁজা কতটা যৌক্তিক?
অর্থনীতি বিষয়ের বিশিষ্টজনদের মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বর্তমান মূল্য পরিস্থিতিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহনীয় বললেও অবস্থা মোটেও সে রকম নয়। দেশে এখনো মূল্যস্ফীতির হার ৯ থেকে ১০ শতাংশের মতো। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটা মোটেই সহনীয় নয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরো কমাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। এই উদ্যোগ অতিদ্রুত নেওয়া দরকার বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করলেও এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্বেগ নেই। গত মার্চে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, খাদ্যের মূল্য ১০ শতাংশ বাড়লে বাংলাদেশে আড়াই শতাংশ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়, আর ৩০ শতাংশ দাম বাড়লে দারিদ্র্যসীমার নিচে নামে সাড়ে ৭ শতাংশ মানুষ। ক্যাবের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বাঁচার তাগিদে গত বছর অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। অনেকে অতিকষ্টের সঞ্চয়ও ভেঙে ফেলে। ফলে বাড়ছে ধার-কর্জনির্ভর জীবন।'
পণ্যমূল্যবৃদ্ধিকে 'যৌক্তিক' প্রমাণ করতে যেসব যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে, তা কতটা যৌক্তিক- সেটাই এখন বিবেচনার বিষয়। বাজারে তদারকি বাড়িয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিকল্প বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। যে নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত এই সরকারের শুরুতে ছিল, তা এখন অনেকটাই দুরাশা। সাধারণের জীবন-যাপন সহজ করতে না পারলে অনেক সম্ভাবনাই নষ্ট হয়ে যাবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে উপযুক্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতেই হবে।
No comments