চারদিক-সাদা-কালো ছবির ফ্রেমে বঙ্গবন্ধু by মোছাব্বের হোসেন
একটি কবিতা লেখা হবে,
তার জন্য কী ব্যাকুল প্রতীক্ষা মানুষের!
কখন আসবে কবি? কখন আসবে কবি?
তার জন্য কী ব্যাকুল প্রতীক্ষা মানুষের!
কখন আসবে কবি? কখন আসবে কবি?
শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্তপায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, হূদয়ে লাগিল দোলা।
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা।
কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?
গণ-সূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি;
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।
কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার শেষের কয়েকটি পঙিক্ততে লেখা এই কবিতায় ১৯৭১ সালের সাতই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর কথাই বলা হয়েছে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি করে পুরো জাতিকে সংগঠিত করতে, লাখো বাঙালির স্বপ্নের স্বাধীনতাকে জিইয়ে রাখতে যিনি রাজপথে নেমেছিলেন একজন সাধারণ মানুষের বেশে। অবলীলায় কারাবরণ করেছেন অনেকবার বাংলাদেশের স্বাধিকারের কথা বলতে গিয়ে, অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি কখনো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জড়িয়ে আছেন বাংলার গণমানুষের হূদয়জুড়ে। এমন একজন মহান মানুষের কথা বলতে গিয়ে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে বারবার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এ রকম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড গোটা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। প্রতিবছরের মতো আমাদের সামনে আবার এসেছে সেই দিন। ১৫ আগস্ট এলেই সেই কালরাতের কথা বারবার পীড়া দেয় আমাদের। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমাদের গণমানুষের প্রিয় এই মহান নেতাকে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর ছবি দিয়ে তেমনই একটি আলেকাচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী রশীদ তালুকদারের ২৭টি ও পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত আলোকচিত্রশিল্পী অমিয় তরফদারের বাছাই করা ২২টি দুর্লভ ছবি নিয়ে যুগল আলোকচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে এই প্রদর্শনীতে। এ ছাড়া সেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ সময়কার বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্রিকার বিশেষ বিশেষ অংশ। ‘আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় বঙ্গবন্ধ’ু নামের এই বিশেষ প্রদর্শনীতে দেখা গেল বঙ্গবন্ধুর নানান ছবি। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের ছবিটি যেন সেদিনের কথাই বারবার মনে করিয়ে দেয়। এ ছাড়া ছয় দফা দাবি ঘোষণার পর একটি হয়রানিমূলক মামলায় ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ছবি, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়ার সময়কার ছবি, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের খবর শোনার ছবি, ১৯৭২ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেওয়ার ছবি, বঙ্গবন্ধুর একক ছবি, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তোলা ছবি দেখা যায় এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। বড় একটা ছবি আছে শেখ রাসেলের; পাশেই বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কয়েকজন সদস্যের ছবি রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। বঙ্গবন্ধু কীভাবে এক আশ্চর্য ক্ষমতায় সাধারণ মানুষের দলে মিশে যেতেন, আর সাধারণ মানুষের কাছে এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন অসাধারণ একজন। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ছবিতে যেন তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
এই প্রদর্শনী দেখতে এসেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্লাবন। জানতে চাই কেমন লাগল প্রদর্শনী? ‘আমরা যারা বঙ্গবন্ধুকে জীবিত দেখিনি, তাদের কাছে এসব ছবি দেখাটা এক সৌভাগ্যের বিষয়। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার জন্য যে কত বড় এক প্রেরণার নাম, তা কখনো ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ আমাদের তরুণসমাজের জন্য একটি ভালো অনুকরণীয় হতে পারে।’—বললেন প্লাবন।
জার্মান নাগরিক জেসপার টিলম্যান এসেছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর দেখতে। এখানে এসে জানলেন বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে প্রদর্শনী হচ্ছে। সেসব ছবি ঘুরে ঘুরে দেখার পর জিজ্ঞেস করি বঙ্গবন্ধুর কথা। তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন মহান নেতা; তাঁর ছবি এর আগে দেখেছি, কিন্তু একসঙ্গে এতগুলো ছবি দেখে ভালো লাগল।’
প্রদর্শনীর মন্তব্য খাতায় সাবরীমান রানা নামের একজন লিখেছেন, ‘৩৫ বছর হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু জীবিত নেই। অথচ আজও সাধারণ মানুষের হূদয়ে তাঁর উপস্থিতি কত সজীব আর প্রাণবন্ত। স্বাধীন বাংলাদেশ শেখ মুজিবুর রহমানের অমর সৃষ্টি। বাংলাদেশের মাঝেই অনাগত কাল ধরে বেঁচে রইবেন তিনি।’ বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের এই প্রদর্শনীটি ৩০ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে। আপনিও দেখতে যেতে পারেন। প্রদর্শনী কক্ষ থেকে বের হতে হতে মনে গেঁথে রয় বঙ্গবন্ধুর ছবিগুলো। কবি অন্নদাশঙ্কর রায়ের কবিতা মনে মনে আওড়াতে থাকি—
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা
গৌরী মেঘনা বহমান,
ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান
দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা
অশ্রুগঙ্গা বহমান
তবু নাহি ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবুর রহমান।
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্তপায়ে হেঁটে
অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, হূদয়ে লাগিল দোলা।
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা।
কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?
গণ-সূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি;
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।
কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার শেষের কয়েকটি পঙিক্ততে লেখা এই কবিতায় ১৯৭১ সালের সাতই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর কথাই বলা হয়েছে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি করে পুরো জাতিকে সংগঠিত করতে, লাখো বাঙালির স্বপ্নের স্বাধীনতাকে জিইয়ে রাখতে যিনি রাজপথে নেমেছিলেন একজন সাধারণ মানুষের বেশে। অবলীলায় কারাবরণ করেছেন অনেকবার বাংলাদেশের স্বাধিকারের কথা বলতে গিয়ে, অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি কখনো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জড়িয়ে আছেন বাংলার গণমানুষের হূদয়জুড়ে। এমন একজন মহান মানুষের কথা বলতে গিয়ে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে বারবার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এ রকম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড গোটা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। প্রতিবছরের মতো আমাদের সামনে আবার এসেছে সেই দিন। ১৫ আগস্ট এলেই সেই কালরাতের কথা বারবার পীড়া দেয় আমাদের। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি আমাদের গণমানুষের প্রিয় এই মহান নেতাকে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর ছবি দিয়ে তেমনই একটি আলেকাচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী রশীদ তালুকদারের ২৭টি ও পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত আলোকচিত্রশিল্পী অমিয় তরফদারের বাছাই করা ২২টি দুর্লভ ছবি নিয়ে যুগল আলোকচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে এই প্রদর্শনীতে। এ ছাড়া সেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ সময়কার বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পত্রিকার বিশেষ বিশেষ অংশ। ‘আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় বঙ্গবন্ধ’ু নামের এই বিশেষ প্রদর্শনীতে দেখা গেল বঙ্গবন্ধুর নানান ছবি। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের ছবিটি যেন সেদিনের কথাই বারবার মনে করিয়ে দেয়। এ ছাড়া ছয় দফা দাবি ঘোষণার পর একটি হয়রানিমূলক মামলায় ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ছবি, ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়ার সময়কার ছবি, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের খবর শোনার ছবি, ১৯৭২ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেওয়ার ছবি, বঙ্গবন্ধুর একক ছবি, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তোলা ছবি দেখা যায় এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। বড় একটা ছবি আছে শেখ রাসেলের; পাশেই বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কয়েকজন সদস্যের ছবি রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। বঙ্গবন্ধু কীভাবে এক আশ্চর্য ক্ষমতায় সাধারণ মানুষের দলে মিশে যেতেন, আর সাধারণ মানুষের কাছে এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন অসাধারণ একজন। বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ছবিতে যেন তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
এই প্রদর্শনী দেখতে এসেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্লাবন। জানতে চাই কেমন লাগল প্রদর্শনী? ‘আমরা যারা বঙ্গবন্ধুকে জীবিত দেখিনি, তাদের কাছে এসব ছবি দেখাটা এক সৌভাগ্যের বিষয়। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার জন্য যে কত বড় এক প্রেরণার নাম, তা কখনো ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ আমাদের তরুণসমাজের জন্য একটি ভালো অনুকরণীয় হতে পারে।’—বললেন প্লাবন।
জার্মান নাগরিক জেসপার টিলম্যান এসেছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর দেখতে। এখানে এসে জানলেন বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে প্রদর্শনী হচ্ছে। সেসব ছবি ঘুরে ঘুরে দেখার পর জিজ্ঞেস করি বঙ্গবন্ধুর কথা। তিনি বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন মহান নেতা; তাঁর ছবি এর আগে দেখেছি, কিন্তু একসঙ্গে এতগুলো ছবি দেখে ভালো লাগল।’
প্রদর্শনীর মন্তব্য খাতায় সাবরীমান রানা নামের একজন লিখেছেন, ‘৩৫ বছর হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু জীবিত নেই। অথচ আজও সাধারণ মানুষের হূদয়ে তাঁর উপস্থিতি কত সজীব আর প্রাণবন্ত। স্বাধীন বাংলাদেশ শেখ মুজিবুর রহমানের অমর সৃষ্টি। বাংলাদেশের মাঝেই অনাগত কাল ধরে বেঁচে রইবেন তিনি।’ বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের এই প্রদর্শনীটি ৩০ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে। আপনিও দেখতে যেতে পারেন। প্রদর্শনী কক্ষ থেকে বের হতে হতে মনে গেঁথে রয় বঙ্গবন্ধুর ছবিগুলো। কবি অন্নদাশঙ্কর রায়ের কবিতা মনে মনে আওড়াতে থাকি—
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা
গৌরী মেঘনা বহমান,
ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান
দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা
অশ্রুগঙ্গা বহমান
তবু নাহি ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবুর রহমান।
No comments