বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-নতুন স্থাপত্য-ভাবনা by এন্য়াম রাব্বি আদনান
স্থাপত্য ভবনের নকশা কাটা দেয়ালের ফাঁক গলে আসা সূর্যের আলো সারা দিন রূপ বদল করে। দিনের আলো নিভে গেলেও ভবনের প্রাণের স্পন্দন কমে না, বরং স্টুডিওগুলোতে জ্বলে ওঠে আলো। প্যারালাল বার, ড্রাফটিং পেন আর কাগজে ফুটে ওঠে নতুন নতুন স্থাপত্যভাবনা।
ছোট বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে রেখা, তারপর ত্রিমাত্রিক জগতে পরিণতি স্থাপত্যের। তরুণ স্থপতিদের জীবন বাইরের জগতের কাছে তুলে ধরতেই স্থাপত্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেন এক অনন্য প্রদর্শনী ‘বিষুব’।
২৮ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত চলা এ প্রদর্শনীর আয়োজকদের অন্যতম হলেন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা। প্রদর্শনীর নাম বিষুব কেন, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘স্থাপত্য জীবনের ১০টি টার্মের মধ্যে পাঁচটি টার্ম আমরা শেষ করেছি। যাত্রার ঠিক মধ্যপথে আমাদের এই উদ্যোগ যেন এক মেরু থেকে যাত্রা শুরু করে বিষুবরেখায় পৌঁছে একটিবার পেছন ফিরে তাকানো। তবে এ কোনো স্মৃতি রোমন্থন নয়, বরং নতুন উদ্যমে সামনে চলার জন্য পেছন ফিরে দেখা।’
এই প্রদর্শনী আয়োজনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন উদ্যোক্তা ব্যাচ ‘অষ্টক ০৮’ ও স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান জেবুন নাসরীন আহমেদ শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন।
‘বিষুব’-এর অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘অষ্টক’ নামের বইটি, যা বিগত পাঁচটি টার্মের সব প্রজেক্ট, ভ্রমণ আর ছোট ছোট অসংখ্য স্মৃতির সংকলন। বইয়ের গ্রাফিকস, লেখা, স্কেচ—সবকিছুই শিক্ষার্থীদের নিজেদের হাতে করা। বইটি নিয়ে কথা হচ্ছিল তিন বন্ধু অনি, আরিফ ও তন্ময়ের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ‘বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এ ধরনের বই হরহামেশাই বের হয়, তারা প্রচুর পৃষ্ঠপোষকতাও পায়। আমাদের এখানে যেহেতু সে চর্চা নেই, তাই প্রথমে খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু যখন বইটা হাতে এল, তখস সব কষ্ট ভুলে যাই।’
বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ‘অষ্টক’ সারা বিশ্বের স্থপতিদের কাছে পৌঁছে যাবে, এমনই আশা তাঁদের। শুধু প্রজেক্ট প্রদর্শনী আর বই প্রকাশনাই নয়, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রথমবারের মতো ‘স্টুডিও ওয়ার্কস’ সংযোজনের কাজটিও তাঁরা করেছেন ওয়েবসাইট উদ্বোধনের মাধ্যমে। বাংলাদেশের ৩৩টি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সাইটে তাঁরা ন্যাচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার ডিজাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন। www.buet.ac.bd/arch লিংকে গেলেই পাওয়া যাবে এই সম্পর্কিত সব তথ্য। অধ্যাপক জাকীউল ইসলাম স্বপ্ন নিয়েকে জানান, শিক্ষার্থীরা নিজের সারা দেশের সাইট ঘুরে এ ডিজাইনগুলো করেছেন। তাঁদের এই উদ্দীপনাকে সাহসের সঙ্গে কাজে পরিণত করার যে প্রয়াস তাঁরা দেখিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তা প্রশংসার দাবিদার।
প্রদর্শনীর পাঁচটি দিনই ছিল খ্যাতনামা পেশাজীবী স্থপতিদের সেমিনার। শেষ দিনে শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে অনুপ্রাণিত করতে এসেছিলেন দেশের নামকরা স্থপতি বশীরুল হক ও সাইফুল হক। এ ছাড়া প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন শিল্পী রফিকুন নবী (রনবী) ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান। স্থাপত্য ভবনের নিচতলার পুরোটায় ছিল অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্যের প্রদর্শনী। সন্ধ্যার পর বর্ণিল আলোয় তা হয়ে উঠত আরও মনোমুগ্ধকর। প্রদর্শনী দেখতে এসে রফিকুন নবী জানান, শিক্ষার্থীদের নিজেদের নকশায় করা এই উদ্যোগ সৃজনশীলতা ও নান্দনিক উপস্থাপনার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। স্থাপত্য বিভাগে ভবিষ্যতেও এ চর্চা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা করেন।
স্থপতি হওয়ার এই পথ কখনো বন্ধুর, কখনো সাদা-কালো, কখনো নানা রঙে রঙিন। একজন তরুণ স্থপতির জীবনের রেশ যেন ফুটে ওঠে প্রদর্শনীর মাঝের আলোকচিত্রগুলোয়। স্থাপত্যযাত্রার এই পথ আরও মসৃণ হোক, স্থপতিদের হাতে পূর্ণতা পাক বাংলাদেশ। প্রদর্শনী দেখতে আসা মানুষের হাজারো কোলাহলের মধ্যেও দেয়ালে ঝুলতে থাকা বাংলাদেশের বিশাল মানচিত্র যেন সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল বারবার।
২৮ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত চলা এ প্রদর্শনীর আয়োজকদের অন্যতম হলেন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্যা। প্রদর্শনীর নাম বিষুব কেন, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘স্থাপত্য জীবনের ১০টি টার্মের মধ্যে পাঁচটি টার্ম আমরা শেষ করেছি। যাত্রার ঠিক মধ্যপথে আমাদের এই উদ্যোগ যেন এক মেরু থেকে যাত্রা শুরু করে বিষুবরেখায় পৌঁছে একটিবার পেছন ফিরে তাকানো। তবে এ কোনো স্মৃতি রোমন্থন নয়, বরং নতুন উদ্যমে সামনে চলার জন্য পেছন ফিরে দেখা।’
এই প্রদর্শনী আয়োজনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন উদ্যোক্তা ব্যাচ ‘অষ্টক ০৮’ ও স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান জেবুন নাসরীন আহমেদ শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন।
‘বিষুব’-এর অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘অষ্টক’ নামের বইটি, যা বিগত পাঁচটি টার্মের সব প্রজেক্ট, ভ্রমণ আর ছোট ছোট অসংখ্য স্মৃতির সংকলন। বইয়ের গ্রাফিকস, লেখা, স্কেচ—সবকিছুই শিক্ষার্থীদের নিজেদের হাতে করা। বইটি নিয়ে কথা হচ্ছিল তিন বন্ধু অনি, আরিফ ও তন্ময়ের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ‘বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এ ধরনের বই হরহামেশাই বের হয়, তারা প্রচুর পৃষ্ঠপোষকতাও পায়। আমাদের এখানে যেহেতু সে চর্চা নেই, তাই প্রথমে খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু যখন বইটা হাতে এল, তখস সব কষ্ট ভুলে যাই।’
বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ‘অষ্টক’ সারা বিশ্বের স্থপতিদের কাছে পৌঁছে যাবে, এমনই আশা তাঁদের। শুধু প্রজেক্ট প্রদর্শনী আর বই প্রকাশনাই নয়, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রথমবারের মতো ‘স্টুডিও ওয়ার্কস’ সংযোজনের কাজটিও তাঁরা করেছেন ওয়েবসাইট উদ্বোধনের মাধ্যমে। বাংলাদেশের ৩৩টি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সাইটে তাঁরা ন্যাচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার ডিজাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন। www.buet.ac.bd/arch লিংকে গেলেই পাওয়া যাবে এই সম্পর্কিত সব তথ্য। অধ্যাপক জাকীউল ইসলাম স্বপ্ন নিয়েকে জানান, শিক্ষার্থীরা নিজের সারা দেশের সাইট ঘুরে এ ডিজাইনগুলো করেছেন। তাঁদের এই উদ্দীপনাকে সাহসের সঙ্গে কাজে পরিণত করার যে প্রয়াস তাঁরা দেখিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তা প্রশংসার দাবিদার।
প্রদর্শনীর পাঁচটি দিনই ছিল খ্যাতনামা পেশাজীবী স্থপতিদের সেমিনার। শেষ দিনে শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে অনুপ্রাণিত করতে এসেছিলেন দেশের নামকরা স্থপতি বশীরুল হক ও সাইফুল হক। এ ছাড়া প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন শিল্পী রফিকুন নবী (রনবী) ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান। স্থাপত্য ভবনের নিচতলার পুরোটায় ছিল অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্যের প্রদর্শনী। সন্ধ্যার পর বর্ণিল আলোয় তা হয়ে উঠত আরও মনোমুগ্ধকর। প্রদর্শনী দেখতে এসে রফিকুন নবী জানান, শিক্ষার্থীদের নিজেদের নকশায় করা এই উদ্যোগ সৃজনশীলতা ও নান্দনিক উপস্থাপনার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। স্থাপত্য বিভাগে ভবিষ্যতেও এ চর্চা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা করেন।
স্থপতি হওয়ার এই পথ কখনো বন্ধুর, কখনো সাদা-কালো, কখনো নানা রঙে রঙিন। একজন তরুণ স্থপতির জীবনের রেশ যেন ফুটে ওঠে প্রদর্শনীর মাঝের আলোকচিত্রগুলোয়। স্থাপত্যযাত্রার এই পথ আরও মসৃণ হোক, স্থপতিদের হাতে পূর্ণতা পাক বাংলাদেশ। প্রদর্শনী দেখতে আসা মানুষের হাজারো কোলাহলের মধ্যেও দেয়ালে ঝুলতে থাকা বাংলাদেশের বিশাল মানচিত্র যেন সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল বারবার।
No comments